বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
স্বাগতম!
 
→‎আমাদের গ্রাম: নতুন অনুচ্ছেদ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
২৭ নং লাইন:
[[উইকিপিডিয়া:অভ্যর্থনা কমিটি|বাংলা উইকিপিডিয়া অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৯:২৫, ২০ এপ্রিল ২০২০ (ইউটিসি)
|} --[[ব্যবহারকারী:অভ্যর্থনা কমিটি বট|অভ্যর্থনা কমিটি বট]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:অভ্যর্থনা কমিটি বট|আলাপ]]) ০৯:২৫, ২০ এপ্রিল ২০২০ (ইউটিসি)
 
== আমাদের গ্রাম ==
 
স্কুল থেকে সহপাঠীদের সাথে গালাগলি করে বাড়ি ফিরতাম মহা খুশি আর হৈ হুল্লুর করে। স্কুল ছুটি হলেই মনে হতো পৃথিবীর সমস্ত ডিগ্রি নিয়ে যেন বাড়ি ফিরছি। ক্ষুদায় ক্লান্ত দেহটা সেই দুরন্তপনার কাছে যেন হার মেনেই চলেছে। পায়ে হেটে দীর্ঘ পথ পারি দেয়া তারুণ্যের কাছে যেন কিছুই না। মায়ের সপ্নের সেই ছেলেটির জন্য প্রতিক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না ! ভাত বেড়ে দিত মা, দৈর্যের বাঁধ মানত না; কখন আবার বেড়িয়ে পরবো সেই মাঠের উদ্দেশ্যে, যেখানে সমবেত হবে সারা গ্রামের সব তরুণ আর মধ্য বয়সিরা। খেলার মাঝে চিৎকার চেঁচামেচি, পাখির কলরব আর কৃষকের ঘরে ফেরার আনন্দে পুরো গ্রামটা যেন নেচে উঠতো। বর্ষায় সমস্ত মাঠ ডুবে যেত; থৈ থৈ পানিতে গ্রামের পুর্ব পাশের বিলটা একেবারে টই টুম্বুর। তখন খেলার মাঠ বলতে এক মাত্র প্রাইমারী স্কুলের সেই ছোট মাঠ; সেখানে সবার খেলার জায়গা হতো না বলে আমরা জমিয়ে আডডা দিতাম সেই কাঠের সেতুর উপর। কুঠি'র বাজার আর আমাদের গ্রামের মাঝখানে বিশাল জলরাশি; তার উপর বয়ে চলা পালতোলা নৌকা ছোট ছোট ঢেউয়ের উপর নৃত্য করে বয়ে যেত গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। অনেক দূর থেকে আসা স্নিগ্ধ এলোমেলো বাতাশ আমাদের তারুণ্যের পাগলামিকে আরো বাড়িয়ে দিত। গাঙ থেকে আসা অনেক গুলো ছোট বড় খাল গুলিতে জলস্রোতে জ্যোৎস্নার মায়া খেলা করতো। শৈশবে সব বন্ধুরা মিলে সারাদিন সেই খাল গুলোর উপর সাকু বানিয়ে যে আত্মতৃপ্তি অনুভব করতাম, তা আজও মনকে নাড়া দেয়। গ্রামের মনোলোভা সৌন্দর্যের আরো একটি হলো খালের উপর কাঠের সেই সেতুটি; সেখানে এখন মস্ত বড় পাকা ব্রিজ তৈরি হয়েছে। বিশাল জলরাশি এখন নেই, পালতোলা নৌকাও এখন আর চোখে পরে না। গ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন আমাদের কাঁচা সড়কটি এখন পাকা হয়ে গেছে। পিচ ঢালা পথ, পাকা ব্রিজ, জীবন যাত্রাকে গতিশীল করেছে। আর বৈদ্যুতিক আলোতে আলোকিত হয়েছে সমস্ত গ্রাম। শুধু আধারের বাসিন্দা হয়েই থাকলাম আমরা, "তরুণরা" ; সেই আলোর পেছনে এখন নেশায় বিভোর থাকে তরুণদের একাংশ......
কারন, তরুণ সমাজকে নিয়ে তো কেউ আর স্বপ্ন দেখেনি ! তাই আমরা আজ মুলহীন, সতন্ত্র। দুঃস্বপ্নে বিভাজিত হয়ে আমরা আত্ম প্রশংসিত; আলোহীন সমাজের বাসিন্দা।
"সত্য ন্যায় আর ঐক্য" শব্দ গুলো সেই গ্রামের শিশু কিশোরেরা বই পুস্তকে রুপকথার গল্প হিসেবই জানে হয়তো; কালের আবর্তনে তরুণদের কাছে শব্দগুলো এক দুঃস্বপ্নের নাম। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে তারা ভয় পায়; যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের সমালোচনা ও তিরস্কার করে, হয়ে উঠে অসীম সাহসী। অনেক ছোট বলা থেকেই, বাবার স্নেহ কপালে জোটেনি আমার; মা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন কি না তা আজও জানা হয়নি ; তবে আমার সন্তানকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি। আমার মনে হয়, প্রতিটা বাবাই তার সন্তানকে ঘিরে স্বপ্নে বিভোর থাকে। নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশে অপার সম্ভাবনায় অসম্ভবকে সম্ভব করে, মা বাবা'র মুখ উজ্জ্বল করবে; এরকম স্বপ্ন কে না দেখ ? সেই স্বপ্ন পুরণ করতে সৎ ও সাহসি সন্তানেরা কেউ কেউ পারি দিচ্ছে সাত সমুদ্র তের নদী। হয়ে উঠেছে কিংবদন্তি। সেই প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে তাদের নামের আগে পরে যুক্ত হয়েছে নানান পদবী " ডঃ,ডাঃ,মাষ্টার, মেম্বার" আরো কত কি ; সেই সাথে সরকার,খন্দকার, খনকার, মীর, ছাড়াও নতুন নতুন বংশ পদমর্যাদা অলংকৃত করেছে গ্রামের প্রতিটা মানুষকে। এরকম পরিচয়ে নিঃসন্দেহে আমরা গর্ভবোধ করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, তারা কেউই যুব সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে কোন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেনি; কিংবা দায়িত্ব পালন করেননি। যা যুব সমাজের দুর্ভাগ্যের অন্যতম প্রধান কারন বলে আমি মনে করি। তাই যুব সংঘের কোন পদে সেই সব ব্যক্তিদের অভিশেকও ঘটেনি। এই হলো যুবকদের সাথে সমাজ পতিদের প্রধান দূরত্ব। সেই সুযোগটাই লুফে নিয়েছে সমাজের কিছু স্বার্থানেশী মহল। আর কিছু অকর্মা, কুলাঙ্গার সন্তানেরা নিজেদের ভাগ্য বদলের জন্য কোমলমতি উদীয়মান তরুণদের হাতে তুলে দিচ্ছে মাদকদ্রব্য। পরিবার গুলোতে নেমে আসছে অশান্তি আর বিশৃঙ্খলা। অপরাধ, অপকর্ম ছড়িয়ে যাচ্ছে সাড়া গ্রামে। নষ্ট হয়ে যাচেছ গ্রামের ঐতিহ্য। আদরের সন্তানকে ঘিরে মা বাবার স্বপ্নে আজ কালো মেঘের হাতছানি; তাদের মনে দুঃচিন্তা আর উৎকন্ঠা।
সমস্যা সমাধানে এখনি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে, আমার আপনার সন্তানই হবে আমাদের পরবর্তি জীবনের অশান্তির কারন।
 
-বুলবুল
০৬ নভেম্বর ২০১৯
ঢাকা [[ব্যবহারকারী:বুলবুল রিয়েল|বুলবুল রিয়েল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:বুলবুল রিয়েল#top|আলাপ]]) ১৬:৫৩, ২১ এপ্রিল ২০২০ (ইউটিসি)