মৌলিক পদার্থ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
৩ নং লাইন:
এদের একটি [[অণু]] একই রকম এক বা একাধিক [[পরমাণু|পরমাণুর]] সমন্বয়ে তৈরী। যেমন, একটি মৌলিক পদার্থ, [[অক্সিজেন|অক্সিজেনের]] অণু O<sub>2</sub> দুটি একইরকম অক্সিজেন পরমাণু O এর সমন্বয়ে গঠিত।
 
এ পর্যন্ত মোট ১১৮টি মৌল চিহ্নিত হয়েছে যার মধ্যে ৯৪টি প্রকৃতিতে পাওয়া যায়, বাকী ২৪টি কৃত্রিম উপায়ে তৈরী করা হয়। সাধারণত, একটি মৌলের পরমানুতেপরমাণুতে [[প্রোটন]] সংখ্যা নির্দিষ্ট বা একই মৌলের প্রতিটি পরমানুতেপরমাণুতে সমান সংখ্যা প্রোটন থাকে (অর্থাৎ, তাদের প্রত্যেকের [[পারমানবিক সংখ্যা]] একই এবং ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পারমানবিকপারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন)। তাই, সাধারণভাবে প্রোটন সংখ্যা দ্বারা কোন মৌল চেনা যায়। তবে, একই মৌলের ভিন্ন প্রোটন সংখ্যা বিশিষ্ট পরমানুওপরমাণুও রয়েছে, যাদেরকে [[আইসোটোপ]] বলে। পারমানবিকপারমাণবিক সংখ্যার উর্ধ্বক্রমানুসারে সাজালে, ১১৮ টি মৌলের প্রথম ৮০টির অন্তত একটি করে আইসোটোপের স্থায়ী রূপ রয়েছে (কয়েকটি ব্যতীক্রম ছাড়া), বাকী ৩৮টি মৌলের আইসোটোপ তেজষ্ক্রিয়, যা সময়ের সাথে ক্ষীয়মান।
 
প্রকৃতিতে যে মৌলগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর ৩২টি মুক্তভাবে অর্থাৎ মৌলিক [[খনিজ]] রূপে থাকে (যেমন, [[তামা]], [[সোনা]], [[রূপা]], [[কার্বন]], [[গন্ধক]] ইত্যাদি)। বাকীগুলো বিভিন্ন যৌগ গঠন করে অর্থাৎ যৌগিক খনিজ রূপে বিদ্যমান।
৯১ নং লাইন:
প্রাচীনকালে মনে করা হতো সমস্ত কিছু চারটি মৌলিক উপাদান থেকে এসেছে; মাটি, পানি, বায়ু ও আগুন। গ্রীক দার্শনিক [[প্লেটো]] এই মতামতকে সমর্থন করতেন। আরেক গ্রীক দার্শনিক [[এরিস্টটল]] এগুলোর পাশাপাশি ইথার নামক আরও একটি মৌলিক উপাদানের ধারণা দেন এবং মনে করতেন স্বর্গ তা দ্বারা তৈরী।আধুনিক যুগে, রবার্ট বয়েল সর্বপ্রথম মৌলিক পদার্থ সম্পর্কে ধারণা দেন, যা আমাদের অনেকেরই অজানা। ১৭৮৯ সালে মৌলসমূহের প্রথম আধুনিক তালিকা দেন বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিঁয়ে। তার তালিকায় তেত্রিশটি মৌল স্থান পায়, যার মধ্যে [[আলো]] এবং ক্যালরিক নামক এক বিশেষ পদার্থেরও উল্লেখ ছিল।ক্যালরিক সম্পর্কে ধারণা করা হত, ইহা কোন কোন বস্তুতে তাপের সঞ্চার করে, অর্থাৎ কোন বস্তুতে ক্যালরিক প্রবেশ করলে বস্তুটি উত্তপ্ত হয়।
 
পরবর্তীতে, ১৮১৮ সালে বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস ঊনপঞ্চাশটি মৌলের একটি তালিকা প্রদান করেন, ১৮৬৪ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন নিউল্যান্ড মৌলগুলোকে তাদের ভর অনুসারে সাজিয়ে মৌলগুলোর প্রতি অষ্টম মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের মধ্যে মিল পান । তবে, এরূপ তালিকার মাইলফলক আসে ১৮৬৯ সালে, যখন রাশিয়ান বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্দেলিভ মৌলসমূহকে তাদের পারমানবিকপারমাণবিক ভরের ক্রমানুসারে সাজিয়ে তৈরী করেন প্রথম [[পর্যায় সারণী]]। সেখানে ষেষট্টিটি মৌলের নাম উল্লেখ ছিল। ১৮৭১ সালে তিনি আরও পরিমার্জিত একটি তালিকা দেন এবং বেশ কিছু মৌলের ব্যাপারে বিষদভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করেন।
 
১৯১৩ সালে প্রথমবারের মত পারমানবিকপারমাণবিক সংখ্যার ক্রমানুসারে মৌলসমূহকে পর্যায় সারণীতে সজ্জিত করা হয়। এক বছরের মধ্যে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত বাহাত্তরটি মৌলের সন্ধান মেলে এবং কৃত্রিমভাবেও বেশ কিছু মৌল তৈরী করা হয়। ১৯৫৫ সালে ১০১তম মৌলটি আবিষ্কৃত হয় এবং পর্যায় সারণী তৈরীতে দিমিত্রি মেন্দেলিভের অবদানের জন্য তার নামানুসারে মৌলটির নাম রাখা হয় মেন্দেলিভিয়াম।
 
কার্বন, তামা, সোনা, রূপা, লোহা, গন্ধক, [[সীসা]], [[পারদ]], [[টিন]] ও [[দস্তা]], এই দশটি মৌলের ব্যবহার চলে আসছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে। ১৫০০ সালের দিকে আরও তিনটি পদার্থ, [[আর্সেনিক]], [[অ্যান্টিমনি]] ও [[বিসমাথ|বিসমাথকে]] মৌল হিসাবে সনাক্ত করা হয়। এরপর, ১৭৫০ সালের দিকে আবিষ্কৃত হয় [[ফসফরাস]], [[কোবাল্ট]] ও [[প্লাটিনাম]]। ১৯০০ সালের মধ্যে আবিষ্কৃত হয় মৌলিক গ্যাসসমূহ (হাইড্রোজেন, আক্সিজেন, হিলিয়াম, [[নিয়ন]], আর্গন), হ্যালোজেনসমূহ ([[ফ্লোরিন]], [[ক্লোরিন]], [[ব্রোমিন]] ও [[আয়োডিন]]), কিছু তেজষ্ক্রিয় মৌল ([[ইউরেনিয়াম]], [[থোরিয়াম]], [[রেডিয়াম]] ও [[রেডন]]), কিছু বিরল মৃত্তিকা মৌল (সেরিয়াম, নিওডাইমিয়াম, ল্যান্থানাম ইত্যাদি), [[লিথিয়াম]], [[সোডিয়াম]], পটাশিয়াম, [[ক্যালসিয়াম]], ম্যাগনেসিয়াম, [[অ্যালুমিনিয়াম]], সিলিকন, [[ক্রোমিয়াম]], নিকেল, [[টাংস্টেন]] ইত্যাদি। ১৯০০ সালের পর আবিষ্কৃত হয় [[ফ্রান্সিয়াম]], [[প্লুটোনিয়াম]], [[নেপচুনিয়াম]], হাফনিয়াম, অ্যাস্টেটিন ইত্যাদি। পরে, একবিংশ শতাব্দীতে কৃত্রিমভাবে অনেকগুলো মৌল তৈরী হয়েছে। যেমন, ২০০৬ সালের অক্টোবরে রাশিয়ায় তৈরী হয়েছে ১১৮তম মৌল, ২০০৯ সালে তৈরী হয়েছে ১১২তম মৌল যা ২০১০ সালে কোপারনিসিয়াম নামে স্বীকৃতি পায়, ২০১১ সালে ১১৪ ও ১১৬তম মৌলদ্বয় আবিষ্কৃত হয় এবং ২০১২ সালে তাদেরকে যথাক্রমে ফ্লেরোভিয়াম ও লিভারমোরিয়াম নামে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ১১৩, ১১৫, ১১৭ ও ১১৮তম মৌলগুলোকে চিহ্নিত করা হয়, যদিও এগুলো এখনও অনুমোদিত নয়।