তপন সিংহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৫২ নং লাইন:
১৯৬৪ সালে তপন সিংহ সুবোধ ঘোষের ছোটগল্প জতুগৃহ - এর চিত্র রূপ দেন। সুবোধ ঘোষের ছোট গল্পটি এক মধ্যবিত্ত মাঝ বয়সী দম্পতির বিবাহ বিচ্ছিন্নতার কাহিনী। সংযত আবেগের হীরক দ্যুতিতে উজ্জ্বল এই ছোটগল্পটিকে ছবির প্রয়োজনে পরিচালক অনেকখানি বাড়িয়ে নিলেন, পাশাপাশি আরও দুটি দম্পতির কাহিনীও জুড়ে দিলেন। সুবোধ ঘোষের কাহিনী তার তীক্ষ্ণতা কিছুটা হারালেও, ছবিটি একটি পরিচ্ছন্ন আবেগধর্মী শিল্পসৃষ্টি হতে পেরেছিল। মধ্যবিত্ত পরিশীলিত দর্শক এই ছবিটিকে মর্যাদার সঙ্গে গ্রহণ করেছিল। শতদল ও মাধুরীর মত দুটি সৎ এবং হৃদয়বান চরিত্রে উত্তম কুমার এবং অরুন্ধতী দেবীর অভিনয় অসাধারণ।
 
১৯৬৬ সালে তপন সিংহ এর নিজের লেখা গল্প নিয়ে মজাদার ফ্যান্টাসি গল্প হলেও সত্যি এক সমাজমনস্ক শিল্পীর রূপক ধর্মী ইচ্ছাপূরণের কাহিনী, জনগণকে যা প্রচুর পরিমাণে নির্মল আনন্দ দিতে পেরেছিল।এই ছবিতে বিখ্যাত অভিনেতা রবি ঘোষ শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। গল্প হলেও সত্যি শেষ পর্যন্ত প্রতিপন্ন হয় ভাঙ্গনশীল সাবেকি একান্নবর্তী পরিবারব্যবস্থার ইউটোপিয়াকে টিকিয়ে রাখার মরিয়া প্রয়াস রূপে। ধনঞ্জয় (চরিত্রায়নে রবি ঘোষ) যে তপন সিংহের বয়ানে আদপে কোন চরিত্র নয়, নিছকই এক আইডিয়ামাত্র (যার আবির্ভাব এবং অন্তর্ধান উভয়ই কুয়াশার প্রেক্ষাপটে)।
== ছবির তালিকা ==
 
১৯৬৭ সালে তপন সিংহ নির্মাণ করেন বনফুলের উপন্যাস অবলম্বনে হাটে বাজারে। অশোককুমার এবং বৈজয়ন্তিমালার মত সর্বভারতীয় গ্ল্যামারস অভিনেতা নিলেও তাদের দিয়ে পরিচালক অভিনয় করিয়েছিলেন একেবারে চরিত্রপোযোগী । নাটকের জগতের মানুষ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, খলনায়কের ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন। হাটে বাজারে সর্বভারতীয় শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক পায় এবং ক্যাম্বোডিয়ার নমপেন-এ এশিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে গভীর মানবিক আবেদনের জন্য একটি রৌপ্যপদক পায়।
 
১৯৭০ সালে তপন সিংহ নির্মাণ করেন সাগিনা মাহাতো, কাহিনীকার গৌরকিশোর ঘোষ। চিত্র সমালোচক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়ের ক্রুদ্ধ আক্রমণ.... "এরপর তপন সিংহ আরেকটি কীর্তি করলেন গৌরকিশোর ঘোষের কুখ্যাত এবং অসদুদ্দেশ্য-প্রণোদিত গ্রন্থ সাগিনা মাহাতো অবলম্বনে ছবি তুলতে গিয়ে। ছবিতে শ্রমিক আন্দোলনকে যেভাবে চিত্রিত করা হয়, তার সঙ্গে বাস্তবের কোন মিল নেই। বোম্বে থেকে আমদানি করা হলো "স্টার"দের। মূল গল্প থেকে চিত্রনাট্য অনেক পালটাতে হলো রাজনৈতিক চাপে পড়ে। তবুও সত্যিকারের সংগ্রামী শ্রমিক চরিত্র সৃষ্টি হলো না। শ্রমিক আন্দোলনের বিকৃত চেহারা এবং সবাইকে ছেড়ে একজনকে "হিরো" বানাবার অযৌক্তিক প্রয়াস দেখা গেল।" ছবিটি প্রথমে বামপন্থী দর্শকের মনে একটা ধাক্কা দিলও তপন সিংহ কিন্তু নিজের জীবন দর্শন থেকে কোনদিনই একচুল বিচ্যুত হননি। আজীবন যা বিশ্বাস করেছেন তাঁর শিল্পকর্মেও তারই প্রতিফলন ঘটেছে। নিজের বিশ্বাসের জগতে তিনি সৎ এবং নীতিনিষ্ঠ ।মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই ছবি অ্যাফ্রো-এশিয়ান অ্যাওয়ার্ড পায়।
 
১৯৮০ সালে মনোজ মিত্রের লেখা নাটক “সাজানো বাগান” -অবলম্বনে তপন সিনহা ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ ছবি বানান৷ তাতে বাঞ্ছারামের ভূমিকায় তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মনোজ মিত্র।
 
১৯৮১ সালে তপন সিংহ পরিচালনা করেন আদালত ও একটি মেয়ে। কাহিনীকার তপনবাবু নিজেই। আদালত ও একটি মেয়ে একটি সামাজিক অবক্ষয়ের ছবি। ছবির বিষয়বস্তু ধর্ষণ এবং তার বিচার। মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন তনুজা। এই ছবিটি শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে।
 
১৯৯১ সালে ডক্টর সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জীবন ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে লেখা রমাপদ চৌধুরীর উপন্যাস 'অভিমন্যু' নিয়ে ছবি করেন তপন সিনহা। তাঁর জীবনর ঘটনা নিয়ে তপন সিনহা এক ডক্টর কি মউত নামক হিন্দি চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন।
 
১৯৯৪ সালে তপন সিংহ পরিচালনা করেন হুইল চেয়ার। হুইল চেয়ারে রয়েছে প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে অপরাজেয় মানুষের দুঃসাহসিক সংগ্রামের কাহিনী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অক্ষমতার বিরুদ্ধে অসীম মনোবল নিয়ে লড়াই চালিয়ে বেঁচে থাকার আনন্দ খুঁজে নিয়েছেন এই ছবির দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র। হুইল চেয়ার বুক থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত বিকলাঙ্গ একটি যুবতী মেয়েকে স্বাভাবিক করে তোলার এক অমানুষিক যুদ্ধের কাহিনী।
 
== ছবির তালিকা ==
 
# ডটার্স অফ দিস সেঞ্চুরি (Daughters of This Century) (২০০১)
# আনোখা মোতি (২০০০)