মৈমনসিংহ গীতিকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
দরকার নাই। এই নামে আর নিবন্ধ নাই।
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১৩ নং লাইন:
* কাজলরেখা
* রূপবতী
== উল্লেখযোগ্য পালা ==
=== মহুয়া পালা ===
মহুয়ার পালার রচয়িতা [[দ্বিজ কানাই]]। সংগ্রাহক: ড: দীনেশ চন্দ্র সেন। এর চরিত্রগুলো হল:- নদের চাঁদ, মহুয়া, হুমরা বেদে।
মহুয়ার পালার রচয়িতা [[দ্বিজ কানাই]]। রসের দিক থেকে রোমান্টিক ট্র‍্যাজেডি ঘরানার কাব্য ''মহুয়া পালা''র সংগ্রাহক দীনেশচন্দ্র সেন। এর চরিত্রগুলো হলো- নদের চাঁদ, মহুয়া, হুমরা বেদে। এর রচনাকাল ধরা হয় ১৬৫০ সাল। এই পালায় মোট ৭৮৯টি ছত্র আছে। দীনেশচন্দ্র সেন মহুয়া পালাকে ২৪টি অধ্যায়ে বিভক্ত করেন।<ref name="সপ্তসিন্ধু">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শিরোনাম=সপ্তসিন্ধু: পালাগানের নায়িকারা|প্রকাশক=প্র অন্য আলো, প্রথম আলো|লেখক=অনার্য তাপস|পৃষ্ঠা=৪, ৫|তারিখ=১২ এপ্রিল ২০১৯}}</ref>
 
সংক্ষিপ্ত কাহিনী:
নদের চাঁদের বসতভিটা সুসং দুর্গাপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে এবং ঝাঞ্ছাজাইল বাজার থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে বাউরতলা গ্রামের পাশে। সুদর্শন পুরুষ নদের চাঁদ ছিলেন এক জমিদারের দেওয়ান। অপর পক্ষে রূপবতি মহুয়া বেদে সরদার হুমরা বেদের পালিত কন্যা, যাকে শিশুকালে হুমরা বেদে নেত্রকোণার কাঞ্চণপুর থেকে ডাকাতি করে নিয়ে আসে। জানা যায়, বেদে মহুয়াও এক সভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে ছিলেন। বেদেরা ঘাটে ঘাটে নোঙ্গর ফেলত ও হাট বাজারে পাড়ায় সাপের খেলা দেখাত। বেদে মহুয়া যখন নদের চাঁদের গ্রামে সাপের খেলা দেখাতে আসেন তখন মহুয়ার রূপে মুগ্ধ হয়ে নদের চাঁদ তাকে প্রণয় নিবেদন করেন। মহুয়াও নদের চাঁদের প্রণয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। কিন্তু দুজনের প্রণয়ের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সরদার হুমরা বেদে। এক দিন নদের চাঁদ মহুয়াকে নিয়ে পালিয়ে যান। এদিকে হুমরা বেদে তা জানতে পেরে দলবল নিয়ে তাঁদের পিছু ধাওয়া করে। অবশেষে তারা মহুয়া এবং নদের চাঁদকে ধরে ফেলে। হুমরা বেদে নদের চাঁদকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। সরদার মহুয়ার হাতে বিষলক্ষা ছুরি দিয়ে বলে ‘‘যাও নদের চাঁদকে মেরে ফেল’’। বিষলক্ষা ছুরি নিয়ে মহুয়া নদের চাঁদের দিকে এগিয়ে যান। নদের চাঁদের সম্মুখে পৌছে বিষলক্ষা ছুরি দিয়ে তিনি তাঁর নিজের বক্ষ বিদীর্ণ করেন এবং মাটিতে ঢলে পড়েন। প্রণয় পিয়াসী নদের চাঁদ মহুয়ার এই আত্মত্যাগ সহ্য করতে না পেরে প্রেমের প্রতিদান সরূপ বিষলক্ষা ছুরি দিয়ে নিজ জীবন আত্মহুতি দেন। মহুয়া ও নদের চাঁদের এই আত্ম ত্যাগ চিরন্তন প্রেমকে মহিমান্বিত করেছে। আজও সেই প্রেমের অমর কহিনী লোক মুখে মুখে বিরাজমান<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|1=|শিরোনাম=মৈমনসিংহ গীতিকার ‘মহুয়া’|ইউআরএল=http://bonikbarta.com/news/2015-10-02/51231/%E0%A6%AE%E0%A7%88%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B9-%E0%A6%97%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E2%80%98%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A7%81%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E2%80%99/|ওয়েবসাইট=bonikbarta.com|তারিখ=অক্টোবর ০২, ২০১৫}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=এপ্রিল ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি||শিরোনাম='মহুয়া সুন্দরী'|ইউআরএল=http://archive.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDRfMTFfMTRfNF8yNF8xXzEyMjM4Ng|ওয়েবসাইট=ittefaq.com.bd|প্রকাশক=''[[দৈনিক ইত্তেফাক]]''|তারিখ=অক্টোবর ০২, ২০১৫}}</ref>
 
দীনেশচন্দ্র সেন মৈমনসিংহ গীতিকার প্রথম খণ্ডের ভূমিকায় লিখেছেন, ”মহুয়ার প্রেম কী নির্ভীক, কী আনন্দপূর্ণ! শ্রাবণের শতধারার ন্যায় অশ্রু আসিতেছে, কিন্তু প্রেমের মুক্তাহার কণ্ঠে পরিয়া মহুয়া চিরজীবী, মৃত্যুকে বরণ করিয়া মৃত্যুঞ্জয়ী হইয়াছে।"<ref name="সপ্তসিন্ধু"/>
=== গুরুত্বপূর্ণ পঙক্তি ===
 
=== মলুয়া পালা ===
জল ভর সুন্দরী কইন্যা, জলে দিছ ঢেউ
প্রধান চরিত্র মলুয়ার নামে পালার নামকরণ করা হয়েছে "মলুয়া পালা"। মলুয়া পালার রচয়িতা অজ্ঞাত। তবে রচনার শুরুতে কবি [[চন্দ্রাবতী]]র একটি ভণিতা থাকার কারণে ধারণা করা হয় এটি চন্দ্রাবতীর রচনা।<ref name="সপ্তসিন্ধু"/> কিন্তু দীনেশচন্দ্র সেন মৈমনসিংহ গীতিকার প্রথম খণ্ডে এই ধারণা অসত্য বলে মন্তব্য করেন।<ref name="সপ্তসিন্ধু"/> কিন্তু ''বাংলার পুরনারী'' নামের বইয়ে মলুয়া চন্দ্রাবতীর রচনা বলা মন্তব্য করেন। মলুয়া গাথার মোট ছত্রসংখ্যা ১২৪৭। পালাটি মোট ১৯টি অঙ্কে বিভক্ত।
 
মলুয়া ও চাঁদ বিনোদের দাম্পত্য সম্পর্ক, কাজির ক্ষমতায় বিচ্ছেদ, উত্থান-পতন, ক্ষমতাবান কাজির দাপট ও তার কাছে হার না মানা এক বাঙালি নারীর কাহিনী হলো "মলুয়া পালা"।<ref name="সপ্তসিন্ধু"/> মলুয়া চরিত্র সম্পর্কে দীনেশচন্দ্র সেন মন্তব্য করেন, " রাগে উজ্জ্বল, বিরাগে উজ্জ্বল, সহিষ্ণুতায় উজ্জ্বল এই মহিয়সী প্রেমের মহাসম্রাজ্ঞীর তুলনা কোথায়?"<ref name="সপ্তসিন্ধু"/>
হাসি মুখে কওনা কথা, সঙ্গে নাই মোর কেউ।
 
=== কমলা পালা ===
মূল চরিত্র কমলার নাম থেকে পালার নামকরণ করা হয়েছে। পালাটির রচয়িতা দ্বিজ কানাই। কমলা পালায় মোট ১৩২০টি ছত্র এবং ১৭টি অঙ্কে বিভক্ত।
 
প্রিয়তমা স্ত্রীর শখ পূরণে রাজা জানকীনাথ মল্লিক তার স্ত্রীর নামে ''কমলা সায়র'' দিঘি খনন করান। কিন্তু দিঘিতে জল না উঠায় রাজা নরকপ্রাপ্ত হওয়ার ভয় পেলে রানি কমলা স্বামীকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। তিনি তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে দাসীদের হাতে সমর্পণ করে সদ্যখোঁড়া দিঘিতে দিঘিতে নিজেকে উৎসর্গ করে চিরতরে হারিয়ে যান। রাণিকে হারানোর শোকে কিছিদিনের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন। মৈমনসিংহ গীতিকার ভূমিকায় দীনেশচন্দ্র সেন বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা আলোচনা করে ধারণা করেন এই কাহিনীর মূল ঘটনা সত্য।<ref name="সপ্তসিন্ধু"/>
 
=== কাজল রেখা ===
মৈমনসিংহ গীতিকায় যুক্ত হওয়া একমাত্র রূপকথা ''কাজল রেখা'' পালা। এই পালার রচয়িতা অজ্ঞাত। এই পালার কিছুটা সংক্ষিপ্ত রূপ সংকলিত হয়েছে [[দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার|দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের]] ''[[ঠাকুরমার ঝুলি]]''তে।<ref name="সপ্তসিন্ধু"/>
 
ধনেশ্বর তার অর্থনৈতিক দুর্ভাগ্যের কারণের শুকপাখির উপদেশে কন্যা কাজল রেখাকে এক গভীর নির্জন বনের ভাঙা মন্দিরে রেখে আসে। সেই মন্দিরে এক সন্ন্যাসী কোনো এক মৃতপ্রায় রাজপুত্রের জীবন ফিরিয়ে আনার জন্য সূঁচ বিঁধিয়ে রেখেছিলেন। পিতা ও সন্ন্যাসীর কথায় কাজল রেখা সেই সূচরাজপুত্রকে স্বামী হিসেবে স্বীকার করে নেয়। তার সূচ তুলে রাজরানী হয়ে থাকার সময় আবার এক দূর্ঘটনা ঘটে। হাতে কাঁকন দ্বারা কিনে নেওয়া দাসীর কৃতঘ্নতায় কাজন রেখা দাসী হয়ে স্বামীর রাজ্যে বাস করতে থাকে। এক সময় সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে কাজল রেখা।<ref name="সপ্তসিন্ধু"/>
 
== তথ্যসূত্র ==