দুর্গাবতী দেবী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

ভারতীয় বিপ্লবী
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Suporna95 (আলোচনা | অবদান)
"Durgawati Devi" পাতাটি অনুবাদ করে তৈরি করা হয়েছে
(কোনও পার্থক্য নেই)

১১:৫০, ৪ মার্চ ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

দূর্গাবতী দেবী (দূর্গা ভাবী) (৭ অক্টোবর ১৯০৭ – ১৫ অক্টোবর ১৯৯৯) একজন ভারতীয় বিপ্লবী ও মুক্তি সংগ্রামী। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী নারীদের একজন। তিনি ভগত সিং কে ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার জন সান্ডারসকে হত্যার পর ছদ্মবেশে পালাতে সাহায্য করেন, এবং এ কাজের জন্যই তিনি সর্বাধিক পরিচিত[১]। তিনি "হিন্দুস্থান সমাজতান্ত্রিক রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন (HSRA)" এর সদস্য ভগবতীচরণ ভোহ্রার স্ত্রী হওয়ায় অন্যান্য সদস্যগণ তাকে ভাবী বলে সম্বোধন করতেন এবং ভারতীয় বিপ্লবী মহলে তিনি দূর্গা ভাবী নামে পরিচিত ছিলেন।

দুর্গাবতী দেবী
জন্ম(১৯০৭-১০-০৭)৭ অক্টোবর ১৯০৭
মৃত্যু১৫ অক্টোবর ১৯৯৯(1999-10-15) (বয়স ৯২)
প্রতিষ্ঠানহিন্দুস্থান সমাজতান্ত্রিক রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন, নওজওয়ান ভারত সভা
আন্দোলনভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন
দাম্পত্য সঙ্গীভগবতীচরণ ভোহ্রা
সন্তানশচীন্দ্র ভোহ্রা

জীবনী

দুর্গাবতী দেবীর এগারো বছর বয়সে ভগবতী চরণ ভোহ্রার সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

তিনি "নওজওয়ান ভারত সভা" এর একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে প্রথম নজরে আসেন যখন সভার পক্ষ থেকে ১৬ নভেম্বর ১৯২৬ তারিখে লাহোরে শহীদ করতার সিং সারভা এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আয়োজন করা হয়। জে. পি সান্ডারসকে হত্যার পর তিনি ভগত সিংশিবরাম রাজগুরু কে পালাতে সাহায্য করার ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

তিনি যতীন্দ্রনাথ দাস এর জেলবন্দি অবস্থায় ৬৩ দিনের অনশনের কারণে মৃত্যুর পর লাহোর থেকে কলকাতা পর্যন্ত তার শবমিছিল এ নেতৃত্ব দেন। এ সময় সমস্ত পথ জুড়েই অগণিত মানুষ এই শবযাত্রায় যোগ দেন।[১]

বিপ্লবী কার্যক্রম

ভগত সিং ১৯২৯ সালে নয়া দিল্লীর কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমানিক্ষেপের ঘটনায় আত্মসমর্পণ করার পর, দূর্গাবতী দেবী লর্ড হেইলিকে হত্যার চেষ্টা করেন। হেইলি পালিয়ে যান কিন্তু তার বহু সহযোগী মারা যান। দূর্গাবতী পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং তার তিন বছরের কারাদণ্ড হয়। তিনি ভগত সিং ও তার সঙ্গীদের বন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করতে তার ৩,০০০ রুপি মূল্যমানের গহনা বিক্রি করে দেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

দূর্গাবতী ও তার স্বামী কুতুব রোদ, দিল্লিতে বিমলপ্রসাদ জৈন নামে এক HSRA সদস্যকে "হিমালয়ান টয়লেট" (বোমা তৈরির প্রসঙ্গ গোপন করতে একটি ছদ্মনাম) নামে একটি বোমা কারখানা চালাতে সাহায্য করতেন। এই কারখানায় তারা মূলত পিকরিক অ্যাসিড, নাইট্রোগ্লিসারিন ও মার্কারি ফালমিনেট নিয়ে কাজ করতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

১৯শে ডিসেম্বর ১৯২৮ তারিখে, সান্ডারস হত্যার দুদিন পর শুকদেব দূর্গাবতীর কাছে সাহায্য চান ও তিনি টা করতে রাজি হন। তারা লাহোর থেকে ভাটিন্ডাগামী ট্রেনে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন যেটি পরদিন সকালে হাওড়া, কলকাতায় থামবে। তিনি ভগত সিং এর স্ত্রীর ছদ্মবেশ নেন ও নিজপুত্র শচীন্দ্রকে ভগত সিং এর কোলে দিয়ে চলতে থাকেন। তখন রাজগুরু তাদের চাকর সেজে মালপত্র বহন করতে থাকেন। ধরা না পড়তে ভগত সিং আগের দিনই তার দাঁড়ি কামান, চুল ছোট করে ফেলেন আর পাশ্চাত্য পোশাক পরিধান করেন। আসলে ১৯শে ডিসেম্বর রাতে যখন ভগত সিং আর শুকদেব দূর্গাবতীর বাড়ি যান তখন শুকদেব ভগত সিংকে একজন নতুন বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। দূর্গাবতী মোটেও ভগত সিংকে চিনতে পারেননি। তখন শুকদেব দূর্গাবতীকে ভগত সিং এর আসল পরিচয় দেন আর বলেন যে যদি দূর্গাবতী ভগত সিংকে আগে থেকে ভালমতো চেনার পরেও যদি তার ছদ্মবেশ ধরতে না পারেন, তাহলে পুলিশও তাকে চিনতে পারবে না কারন তারা একজন দাঁড়িওয়ালা শিখকে খুঁজতে থাকবে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পরদিন ভোরে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। লাহোর স্টেশনে ছদ্মবেশী ভগত সিং কানপুরের উদ্দেশে তার এবং দূর্গাবতীর জন্য দুটি ফার্স্টক্লাস আর রাজগুরুর জন্য একটি থার্ডক্লাস টিকেট কেনেন। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা সামাল দিতে ভগত সিং আর রাজগুরু উভয়েই কাছে লোড করা বন্দুক ছিল। সেই সময় প্ল্যাটফর্মে ভগত সিংএর খোঁজে প্রায় ৫০০ পুলিশ নিয়োজিত ছিল। পুলিশের সন্দেহ এড়িয়ে তারা ট্রেনে ওঠেন। কানপুরে নেমে তারা লখ্নৌগামী ট্রেনে ওঠেন কারণ হাওড়া স্টেশনে সিআইডি সরাসরি লাহোর থেকে আসা যাত্রীদের সাধারণত তল্লাশি করত। লখ্নৌএ রাজগুরু বেনারস এর উদ্দেশ্যে রওনা দেন আর ভগত সিং, দূর্গাবতী আর তার সন্তান হাওড়ায় চলে আসেন। প্রফেসর ভগবতীচরণ ভোহ্রা এবং তার বোন সুশিলা দেবী আগে থেকেই হাওড়ায় তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দূর্গাবতী তার সন্তানকে নিয়ে কয়েকদিন পর লাহোরে ফিরে যান।[২]

পরবর্তী জীবন

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পর দূর্গাবতী গাজিয়াবাদে একজন সাধারণ নাগরিকের মত নিভৃতে বসবাস করতে থাকেন, যা অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের থেকে ব্যাতিক্রম। পরবর্তীতে তিনি লখ্নৌ এ দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

দূর্গাবতী দেবী ১৫ অক্টোবর ১৯৯৯ তারিখে ৯২ বছর বয়সে গাজিয়াবাদে মারা যান।[১]

  1. "The Tribune...Sunday Reading"। Tribuneindia.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১২ 
  2. Bakshi, S. R. (১৯৮৮)। Revolutionaries and the British Raj। Atlantic Publishers। পৃষ্ঠা 61।