মা (উপন্যাস): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
দ্ব্যর্থতা নিরসন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
EditBangla (আলোচনা | অবদান)
অনুচ্ছেদ যোগ ‘সমালোচনা’
২১ নং লাইন:
 
==সারসংক্ষেপ==
উপন্যাসের কাহিনী মুক্তিযোদ্ধা মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে । শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। তিনি ছিলেনআত্মমর্যাদাসম্পন্ন আত্মমর্যাদাবান।নারী। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপআকর্ষণ পেরিয়েউপেক্ষা করে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধের তিনি ছিলেন সফল যোদ্ধা। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । ঢাকায় [[ক্র্যাক প্লাটুন|ক্র্যাক প্লাটুনের]] এরএক দলেজন তিনিযোদ্ধা ছিলেন তিনি। এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে অসংখ্যবেশ কিছু সংখ্যক আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয় , আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায় ।চায়। প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেওমুখেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না । না। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে ।হবে। আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে,কারাগারে। কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। ইতোমধ্যে আজাদকে হত্যা করা হয়েছে। আজাদকে ভাত খাওয়াতে না পেরে আজাদের মা নিজে জীবনে আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান, নিঃস্ব, রিক্ত-বেশে।অবস্থায়। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি ।
 
==প্রশংসা==
উপন্যাসটি প্রকাশের পর পাঠক মহলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয় । সাহিত্য সমালোচকেরা এই উপন্যাসটিকে মুক্তিযুদ্ধের উপরপর এবং মাকে নিয়ে যেকোন সময়ে লেখা একটি প্রধান উপন্যাসের মর্যাদা দিয়েছেন । বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক [[সরদার ফজলুল করিম]] বলেছেন , "আমি বলি দুই মা; ম্যাক্সিম গোর্কির [[''মা'']] আর আনিসুল হকের ''মা'' : ......... এই দুই মা যথার্থ মা হয়ে উঠেছেন আমার কাছে ।"{{cn}} সরোজিনী সাহু মন্তব্য করেছেন , "One of the best novels of Indian sub-continent.It made my eyes watery. Perhaps the success lies behind the strong theme of humanity." {{cn}} শেখর ইমতিয়াজ উপন্যাসের ইতিহাস ও প্রেক্ষাপটের আঙ্গিকে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেছেন "প্রায় ৩০ বছর আগে ম্যাক্সিম গোর্কির ''মা'' উপন্যাসটি পড়ে কৈশোরিক দুরন্ত সাহস অর্জন করেছিলাম , আজ আনিসুল হকের ''মা'' উপন্যাসটি পড়ে নিজেদের ইতিহাসের বিস্মৃতির লীলায় প্রৌঢ়ত্বের বুকে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।"{{cn}}
== সমালোচনা ==
শেখর ইমতিয়াজ উপন্যাসের ইতিহাস ও প্রেক্ষাপটের আঙ্গিকে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেছেন "প্রায় ৩০ বছর আগে ম্যাক্সিম গোর্কির ''মা'' উপন্যাসটি পড়ে কৈশোরিক দুরন্ত সাহস অর্জন করেছিলাম , আজ আনিসুল হকের ''মা'' উপন্যাসটি পড়ে নিজেদের ইতিহাসের বিস্মৃতির লীলায় প্রৌঢ়ত্বের বুকে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।"{{cn}}
আনিসুল হকের ''মা'' উপন্যাসটি জনপ্রিয়তা পেলেও কাহিনী হিসেবে এর দুর্বলতা হলো অতিনাটকিয়তা যদিও আখ্যানভাগ বাস্তব ঘটনাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠেছে। আধুনিক উপন্যাসের অন্যতম গুণ হলো পাত্রপাত্রীর চরিত্র থেকে লেখকের প্রশ্নাতীত দূরত্ব। বিপরীতে এ উপন্যাসে লেখকের ব্যক্তিগত আবেগ সর্বাংশে প্রকটিত হয়ে রচনাশৈলীকে তরল করে তুলেছে। এ উপন্যাসে যতটা সাংবাদিকতা আছে ততটা ঔপন্যাসিকতা নেই; ফলে আজাদের মা চরিত্রটি বিশ্বজনীন হয়ে উঠতে পারে নি। একাত্তুরের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস হিসেবে এ গ্রন্থটির দালিলিক অবদান থাকলেও এর শিল্পমান বিশ্বসাহিত্যের সমশ্রেণীর অন্যান্য উপন্যাসের তুলনায় উচ্চ মাত্রায় উন্নীত হয় নি। এর বাস্তব কাহিনীটি চমকপ্রদ ও মর্মস্পর্শী হলেও একটি আধুনিকতা উপন্যাস যে ধরণের মন:স্তাত্ত্বিক অনুসন্ধিৎসা আশা করে তা এতে অনুপস্থিত। লেখক তাঁর কল্পনাশক্তিকে প্রয়োগ করে কাঠামোকে আরো ঘনবদ্ধ করতে পারতেন, অন্যদিকে মূল কাহিনীকে অক্ষূণ্ন রেখেই আখ্যানভাগকে আরও বৈচিত্রময় করে তুলতে পারতেন ও মানব চরিত্রের যুদ্ধকালীন বিবর্তনকে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। কাহিনীর একরৈখিকতা উপন্যাসটির মহৎ সম্ভাবনাকে সংকুচিত করে ফেলেছে।
 
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}