চীনা লিখন পদ্ধতি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
→উদ্ভব ও বিবর্তন: অনুবাদ, সংশোধন |
||
৫৫ নং লাইন:
[[Image:Shang_dynasty_inscribed_tortoise_plastron.jpg|thumb|left|একটি প্রাচীন চীনা [[দৈববাণী অস্থি]]]]
চীনা লিখন পদ্ধতিটি আদি যুগ থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্নভাবে ব্যবহার হয়ে আসা সবচেয়ে পুরনো লিখন পদ্ধতিগুলির একটি।{{sfnp|Norman|1988|p=ix}}
এটা সাধারণভাবে গৃহীত যে এপর্যন্ত প্রাপ্ত সবচেয়ে প্রাচীন চীনা লেখার নমুনাটি শাং রাজবংশের রাজা উ তিংয়ের শাসনামলে (১২৫০ থেকে ১১৯২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রচিত হয়। এগুলি ছিল কচ্ছপের খোল বা ষাঁড়ের স্কন্ধাস্থির উপর দৈববাণীমূলক খোদাই করা লেখা, যেগুলিকে সহজ ভাষায় [[দৈববাণী অস্থি]] নামে ডাকা হয়। অক্ষরগুলিকে প্রশ্নের আকারে অস্থির উপরে খোদাই করা হত। এরপর অস্থিগুলিকে আগুনে উত্তপ্ত করা হত। আগুনের উত্তাপে অস্থিতে যে চিড় ধরত, সেগুলির ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে প্রশ্নটির উত্তর বের করা হত। এই আদি চীনা অক্ষরগুলির নাম দেওয়া হয়েছে চিয়া
২০০৩ সালে চীনের হনান প্রদেশের চিয়াহু নামক প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকাতে কচ্ছপের খোলের উপরে খোদাই করা ১১টি বিচ্ছিন্ন প্রতীকের সন্ধান পাওয়া যায়, যেগুলির কতগুলির সাথে কিছু আধুনিক চীনা অক্ষরের উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে, যেমন মু
[[Image:Western Zhou Ritual Containers3.jpg|thumb|right|200px|বামে: ব্রোঞ্জ-নির্মিত “ফাংসুন” 方樽 ''fāngzūn'' বা [[চীনা অনুষ্ঠানকৃত্যমূলক কৃত্যমূলক ব্রোঞ্জনির্মিত বস্তু| অনুষ্ঠানকৃত্যমূলক ওয়াইন পাত্র]] যা আনুমানিক ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ব্যবহৃত হত। পাত্রটির উপর [[ব্রোঙ্কসামগ্রী লিপি|খোদাই করা লিপি]]তে চৌ রাজবংশের শাসনকালীন সমাজে ব্যবহৃত কড়ির একটি উপহারকে স্মরণ করা হয়েছে। পাত্রটির গায়ে প্রায় ১৮০টি চীনা অক্ষর দুইবার লেখা হয়েছে, যেখানে রাজদরবারের আনুষ্ঠানিক কৃত্যগুলির উপরে মন্তব্য করা হয়েছে।]]
শাং রাজবংশের শাসনামলের শেষভাগে চীনা লিখন পদ্ধতি বিবর্তিত হয়ে [[চীনা অনুষ্ঠানকৃত্যমূলক ব্রোঞ্জনির্মিত বস্তু]]গুলির গায়ে [[চীনা ব্রোঞ্জ খোদাইলিপি|খোদাই করা]] রূপটি ধারণ করে; এগুলি পশ্চিমা [[চৌ রাজবংশ|চৌ রাজবংশের]] শাসনামলে (আনুমানিক ১০৬৬ থেকে ৭৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) নির্মিত হয়। এরপরে এটি চীনের ইতিহাসের [[বসন্ত ও শরৎ পর্ব|বসন্ত ও শরৎ পর্বে]] (৭৭০-৪৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) চিন
সীলমোহর লিপিটিও পরে বিবর্তিত হয় এবং বিভিন্ন লিখনশৈলীর জন্ম দেয়, যেগুলি আজও বেঁচে আছে। প্রথম যে লিখনশৈলীটির উদ্ভব ঘটে, সেটি হল [[করণিক লিখনশৈলী]]।{{sfnp|Norman|1988|pp=64–65}}{{sfnp|Norman|1988|pp=65–70}} ছিন রাজবংশের শাসনামলে দৈনন্দিন ব্যবহারের উপযোগী একটি লিখিত রূপ সৃষ্টি করতে গিয়ে এই লিখনশৈলীটির উদ্ভব ঘটে। সাধারণভাবে করণিক লিপির অক্ষরগুলি দেখতে সীলমোহর লিপির তুলনায় একটু “চ্যাপ্টা” হয়, অন্যদিকে সীলমোহর লিপির অক্ষরগুলি লম্বায় বেশি কিন্তু কম চওড়া হয়ে থাকে। সীলমোহর লিপির সাথে তুলনা করলে করণিক লিপির অক্ষরগুলি চোখে পড়ার মত আয়তাকার। এর পরবর্তী ধাপে [[চলন্ত লিপি]] বা অর্ধ-টানা-লেখা লিপিতে অক্ষরগুলি মোটামুটি আলাদা করে লেখা হলেও একেকটি অক্ষরের ভেতরের উপাদানগুলি একটানে জড়িয়ে লেখা শুরু হয়। অর্ধ-টানা-লেখা লিপিটি শেষ পর্যন্ত পূর্ণ টানা লিপিতে বিবর্তিত হয়, যার আরেক নাম [[তৃণ লিপি]]; এই লিপিতে অক্ষরগুলিকে তাদের আদি ঐতিহ্যবাহী রূপের সাথে মেলানোই দুষ্কর। তৃণলিপি দেখতে মনে হতে পারে কোন নিয়ম কানুন ছাড়াই এর অক্ষরগুলিকে লেখা হয়েছে। এটা সত্যি যে এই লিপির লেখকদের যথেষ্ট স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা অনেক সময় অক্ষরগুলির সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করতেন, যা রীতিতে পরিণত হয়।
সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত চীনা লিপিটি হল [[নিয়মিত লিপি]]। এই লিপিতে প্রতিটি অক্ষরের প্রতিটি আঁচড় পরিস্কারভাবে একটির পর একটি টানা হয়। যদিও চলন্ত লিপি ও তৃণ লিপিকে দেখে মনে হয় এগুলি নিয়মিত লিপি থেকে এগুলির উদ্ভব হয়েছে, আসলে নিয়মিত লিপিটিই সবার শেষে বিকাশলাভ করে।
৭০ ⟶ ৭২ নং লাইন:
|[[Image:KaishuOuyangxun.jpg|150x200px]]
|-
|<center>
|<center>
|<center>
|<center>
|<center>
|}
নিয়মিত লিপিটি চীনা লেখ্য ভাষার মূল আদর্শ হিসেবে গণ্য করা হয়। বেশির ভাগ মুদ্রিত চীনা লেখাতে অক্ষরের রূপগুলি এই লিপিটিকে ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়মিত লিপিতে আঁচড়ের ক্রমের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলা হয়, এবং এই নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করে সঠিকভাবে অক্ষরগুলি লিখতে হয়।
{{sfnp|McNaughton|Ying|1999|p=24}} (অন্যান্য পূর্বতন লিপিগুলিতে আঁচড়ের ক্রম থাকলেও সেগুলি এত কঠোরভাবে মানা হত না)। উদাহরণস্বরূপ 木 ''mù''
===সরলীকৃত এবং ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষর ===
{{main article|সরলীকৃত চীনা অক্ষর |ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষর |ঐতিহ্যবাহী এবং সরলীকৃত চীনা অক্ষর বিতর্ক }}
২০শ শতকে এসে চীনা লিখন পদ্ধতি দুইটি আদর্শ রূপে বিভক্ত হয়ে যায়, [[সরলীকৃত চীনা লিখন পদ্ধতি]] এবং [[ঐতিহ্যবাহী চীনা লিখন পদ্ধতি]]। সরলীকৃত চীনা অক্ষরগুলি মূল চীন ভূখণ্ডে সৃষ্টি করা হয়; এগুলির লক্ষ্য ছিল অক্ষরগুলি লেখার গতি বৃদ্ধি করা (কিছু কিছু অক্ষর লিখতে কয়েক ডজন আঁচড়ের প্রয়োজন হত) এবং এগুলি মুখস্থ করা সহজতর করা। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার দাবি করেন যে উভয় লক্ষ্যই পূরণ হয়েছে, তবে কিছু বহিঃস্থ পর্যবেক্ষক এর সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। সরলীকৃত চীনা অক্ষরের ব্যবহার চীনা জনগণের সাক্ষরতা বৃদ্ধিতে কতটুকু ভূমিকা রেখেছে, এ নিয়ে নিয়মমাফিক গবেষণা খুবই কম হয়েছে। মূল চীন ভূখণ্ডে সরলীকৃত অক্ষরগুলির প্রমিতকরণের আগে এগুলিকে নিয়ে যে কয়েকটি গবেষণা সম্পাদিত হয়েছিল, সেগুলি মূলত ছিল পরিসংখ্যানিক ধরনের; এগুলিতে বিভিন্ন পাঠ্য বা লিখিত বিষয়বস্তুর নমুনাতে গড়ে কতগুলি আঁচড় কম প্রয়োজন হয়, তা নিয়ে গবেষণা করা হয়।{{sfnp|Ramsey|1987|p=151}}
সরলীকৃত চীনা অক্ষরগুলি সামঞ্জস্যের অভাবের জন্য সমালোচিত হয়েছে। যেমন ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষর 讓 ''
সরলীকৃত চীনা অক্ষরগুলি মূল চীন ভূখণ্ডে, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতে আদর্শ ধরা হয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষরগুলিকে হংকং, মাকাও, তাইওয়ান ও প্রবাসী চীনা সম্প্রদায়গুলিতে (হংকং ও মালয়েশিয়া ব্যতীত) এখনও সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।<ref name=Bruggeman2006>{{Cite journal|author=Sebastien Bruggeman|title=Chinese Language Processing and Computing|year=2006}}</ref>
==প্রয়োগ==
|