মসজিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ও অন্যান্য সংশোধন
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Quba.jpg|thumb|200px|মদীনার কুবা মসজিদ বিশ্বের প্রাচীনতম মসজিদ]]
{{তথ্যছক-ইসলাম}}
'''মসজিদ''' ({{lang-ar| مسجد}} <small>উচ্চরণ:</small>ˈmæsdʒɪd)<ref name="US2008">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |urlইউআরএল= http://www.merriam-webster.com/dictionary/mosque |titleশিরোনাম= Mosque |accessdateসংগ্রহের-তারিখ=2010-08-19 |workকর্ম= |publisherপ্রকাশক= Merriam-Webster Online Dictionary |yearবছর=2010}}</ref> [[মুসলমান|মুসলমানদের]] দলবদ্ধভাবে [[নামাজ]] পড়ার জন্য নির্মিত স্থাপনা। শব্দটির উৎপত্তি আরবি "السجود" থেকে, যার আভিধানিক অর্থ ''শ্রদ্ধাভরে মাথা অবনত করা'' অর্থৎ ''সিজদাহ করা''। সাধারণভাবে, যেসব ইমারত বা স্থাপনায় মুসলমানেরা একত্র হয়ে প্রাত্যহিক পাঁচ ওয়াক্ত [[নামাজ]] ({{lang-ar|صلاة}} ''সালাত'') আদায় করেন, তাকে মসজিদ বলে। আবার যেসব বড় আকারের মসজিদগুলো নিয়মিত নামাজের সাথে সাথে শুক্রবারের [[জুম'আ|জুম'আর]] নামাজ আদায় হয় এবং অন্যান্য ইসলামিক কার্যাবলী (যেমন: [[কোরআন]] শিক্ষা দেওয়া) সম্পাদিত হয়, সেগুলো ''জামে মসজিদ'' (مسجد جامع) নামে অভিহিত। [[ইমাম]] নামাজের ইমামতি করেন বা নেতৃত্ব দেন।
 
মসজিদ মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর প্রাণকেন্দ্র। এখানে প্রার্থণা করা ছাড়াও শিক্ষা প্রদান, তথ্য বিতর়ণ এবং বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
১১ নং লাইন:
 
=== বিস্তার ও বিবর্তন ===
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের আভিযানের সাথে সাথে মসজিদ আরব উপদ্বীপের সীমা ছাড়িয়ে বিস্তারলাভ করতে থাকে। [[৬৪০]] খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে [[মিসর|মিসরে]] অনেক মুসলমানের সমাগম ঘটে। তখন এই দেশে এতো মসজিদ নির্মিত হয় যে, রাজধানী [[কায়রো|কায়রোকে]] ডাকা হত ''হাজার মিনারের শহর'' বলে।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://travel.independent.co.uk/africa/article253491.ece |titleশিরোনাম=Cairo, Egypt |accessdateসংগ্রহের-তারিখ=September 22, 2007 |publisherপ্রকাশক=The Independent | locationঅবস্থান=London | firstপ্রথমাংশ=Robin | lastশেষাংশ=Barton | dateতারিখ=February 19, 2001}}</ref>
 
মিশরীয় মসজিদগুলোতে সু্যোগ-সুবিধার ভিন্নতা ছিলো, যেমন, কিছু মসজিদে ছিলো মাদ্রাসার মতো স্কুল, আবার অন্য মসজিদগুলোতে হাসপাতাল কিংবা কবরস্থান।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Budge's Egypt: A Classic 19th Century Travel Guide |lastশেষাংশ=Budge |firstপ্রথমাংশ=E.A. Wallis |publisherপ্রকাশক=Courier Dover Publications |dateতারিখ=June 13, 2001 |pagesপাতাসমূহ=123–128 |isbnআইএসবিএন=0-486-41721-2}}</ref>
 
[[সিসিলি]] এবং [[স্পেন|স্পেনের]] মসজিদগুলোতে তাদের পূর্বতন ভিসিগোথিক স্থাপত্যশৈলীর চিহ্ন মিলে না, বরং মোরদের ইসলামী স্থাপত্যের প্রতিফলন দেখা যায়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://www.muslimheritage.com/topics/default.cfm?ArticleID=278| titleশিরোনাম=Theoretical Issues of Islamic Architecture|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=April 7, 2006|publisherপ্রকাশক=Foundation for Science Technology and Civilisation}}</ref>
 
[[চিত্র:Chinese-style minaret of the Great Mosque.jpg|left|thumb|[[চীন|চীনের]] জি-এন মসজিদের মিনারে চীনা স্থাপত্যিক নিদর্শন]]
[[চীন|চীনে]] অষ্টম শতাব্দিতে প্রথম জি-আন মসজিদটি নির্মিত হয়। সচরাচর মসজিদগুলোর আদল যেমন হয়, জি-আন মসজিদটি তার ব্যতিক্রম। এতে অনেক সনাতন চীনা স্থাপত্যিক ঐতিহ্য পরিস্ফুটিত হয়েছে। এর সবুজ ছাদের জন্য সহজেই অন্যান্য ইমারত থেকে একে আলাদাভাবে চেনা যায়। চীনের পশ্চিমের মসজিদগুলোতে আনেক প্রথাগত উপকরণের ব্যবহার হয় যা বিশ্বের আর অন্য কোথাও দেখা যায় না। এই মসজিদগুলোতে মিনার এবং গম্বুজের বহুল উপস্থিতি রয়েছে, অন্যদিকে পূর্ব চীনের মসজিদগুলো দেখতে অনেকটা [[প্যাগোডা|প্যাগোডার]] মতো।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|urlইউআরএল= http://www.saudiaramcoworld.com/issue/198504/muslims.in.china-the.mosques.htm|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=April 8, 2006|lastশেষাংশ=Cowen|firstপ্রথমাংশ=Jill S.|dateতারিখ=July/August 1985|pagesপাতাসমূহ=30–35|publisherপ্রকাশক=Saudi Aramco World|titleশিরোনাম=Muslims in China: The Mosque}}</ref>
 
[[চিত্র:DSCN0338.JPG|left|left|thumb|জাভানিজ আদলে ওগিয়াকারতা জামে মসজিদ, ইন্দোনেশিয়া।]]
২৭ নং লাইন:
[[চিত্র:MosqueeKairouan 4.jpg|thumb|left|[[৬৭০]] খ্রিস্টাব্দে নির্মিত কাইরোয়ান জামে মসজিদ, কাইরোয়ান, [[তিউনেশিয়া]]। এটি পশ্চিমা মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন মসজিদ।]]
[[চিত্র:GD-FR-Paris-Mosquée012.JPG|right |thumb|220px| প্যারিস জামে মসজিদ, [[ফ্রান্স]]।]]
এগারো শতাব্দিতে, [[অটোম্যান সাম্রাজ্য|অটোম্যান সাম্রাজ্যের]] সময় তুরস্কের অনেক স্থানীয় বাসিন্দা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তখন সেখানে অনেক মসজিদের আবির্ভাব ঘটে। অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রথমদিকের বেশকিছু মসজিদ (যেমন: হায়া সফিয়া মসজিদ, ইস্তাম্বুল) তৈরি হয়, যা পূর্বে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের [[চার্চ]] বা [[ক্যাথেড্রাল]] ছিলো। অটোম্যানরা এই মসজিদগুলোতে তাদের নিজস্ব ডিজাইন ব্যবহার করেন, যেমন: বিশাল কেন্দ্রীয় গম্ভুজ, একাধিক মিনার, খোলা সম্মুখভাগ, ইত্যাদি। তাদের মসজিদগুলোতে কারুকাজময় থাম, এর মাঝে সুপরিসর স্থান, উঁচু ছাদ এবং মিহরাবও দেখা যায়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|urlইউআরএল= http://www.ccds.charlotte.nc.us/History/MidEast/04/Jpitts/Jpitts.htm|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=April 7, 2006|titleশিরোনাম=Mosques|publisherপ্রকাশক=Charlotte Country Day School|archiveurlআর্কাইভের-ইউআরএল = http://web.archive.org/web/20060507204557/http://www.ccds.charlotte.nc.us/History/MidEast/04/Jpitts/Jpitts.htm |archivedateআর্কাইভের-তারিখ = May 7, 2006|deadurlঅকার্যকর-ইউআরএল=yes}}</ref> বর্তমান তুরস্কের অনেক মসজিদই অটোম্যানদের সেই স্থাপত্যশৈলীর ধারক।
 
[[ইউরোপ|ইউরোপের]] বিভিন্ন স্থানে মসজিদের বিস্তার ধীরে ধীরে হয়। তবে বিগত শতাব্দিতে অনেক মসুলমানদের আগমনের ফলে এই অঞ্চলে মসজিদের দ্রুত প্রসার ঘটে। ইউরোপের প্রধান শহরগুলোতে (যেমন: [[রোম]], [[লন্ডন]], [[মউনিখ]]) গতানুগতিক গম্ভুজ আর মিনারবিশিষ্ট অনেক মসজিদই তাদের স্থান করে নিয়েছে। শহর অঞ্চলের এই সুবিশাল মসজিদগুলো এখানকার বিপুলসংখ্যক মুসলমান সম্প্রদায়ের সামাজিক কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে পরিগণিত। তবে যেসব মফস্বল কিংবা গ্রামাঞ্চলে মুসলমানদের সংখ্যা বেশি, সেখানেও অনেক মসজিদের দেখা মিলে। [[যুক্তরাজ্য|যুক্তরাজ্যের]] ওয়কিংয়ে অবস্থিত এধরণের প্রথম মসজিদটি হল শাহ জাহান মসজিদ।
৪০ নং লাইন:
== ধর্মীয় কার্যাবলী ==
=== প্রার্থণা ===
ইসলামের দুইটি বড় ধর্মীয় উৎসব ([[ঈদুল ফিতর]] এবং [[ঈদুল আজহা]]) দিনে মসজিদগুলোতে সকাল বেলায় বিশেষ নামাজ পড়া হয়। এই ঈদের নামাজে বহু নামাজির সমাবেশ হয় এবং বড় মসজিদ্গুলো এই ঈদের জামাতের আয়োজন করে। এর জন্য কিছু মসজিদ বড় সমাবেশ কেন্দ্র কিংবা সধারন জনগনের জন্য সহজগম্য এমন ইমারত ভাড়া করে নেয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশের মসজিদগুলো সাধারণত বড় মাঠে বা শহরের প্রধান প্রাঙ্গনে ঈদের নামাজের আয়োজন করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://www.usc.edu/dept/MSA/fundamentals/pillars/prayer/Eid-Prayers_1.html |accessdateসংগ্রহের-তারিখ=April 8, 2006 |titleশিরোনাম='Id Prayers (Salatul 'Idain) |publisherপ্রকাশক=University of Southern California |workকর্ম=Compendium of Muslim Texts}}</ref>
 
=== রমজান পর্ব ===
ইসলামের পবিত্র মাস [[রমজান|রমজানে]] মুসলমানেরা দিনের বেলায় [[রোজা]] রাখে। তাই আনেক মসজিদে সূর্যাস্তের পর মাগরিব নামাজের শেষে [[ইফতার|ইফতারের]] আয়োজন থাকে। এই ইফতারের খাদ্য সাধারণত এলাকার জনসাধারণ নিয়ে আসে এবং একত্রে বসেই খাওয়া দাওয়া হয়। রমজানে দান-খয়রাত করা আনেক ফজিলতপূর্ণ বলে আনেকেই মসজিদে অর্থ দান করে এবং তা দিয়ে গরীব দুঃস্থদের জন্য সেহেরী ও ইফতারের আয়োজন হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://www.usc.edu/dept/MSA/fundamentals/pillars/fasting/tajuddin/fast_51.html| accessdateসংগ্রহের-তারিখ=April 17, 2006| titleশিরোনাম=Charity| publisherপ্রকাশক=University of Southern California |workকর্ম=Compendium of Muslim Texts}}</ref>
 
রমজান মাসে প্রতিরাতের এশার নামাজের পর বিশেষ নামাজ (তারাবিহ নামাজ) পড়া হয়। এই নামজে ঘন্টাখানেক সময় নেয়। সাধারণত যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ আল কোরান মুখস্থ রাখেন (এদেরকে কোরানে হাফেজ বলে) তিনি ইমামিত করেন এবং প্রতিদিন ক্রমানুসারে কোরানের আংশবিশেষ তেলোয়াত (আবৃতি করা) করেন।<ref name="teach-islam">{{বই উদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Teach Yourself Islam |lastশেষাংশ=Maqsood |firstপ্রথমাংশ=Ruqaiyyah Waris |isbnআইএসবিএন=0-07-141963-2 |dateতারিখ=April 22, 2003 |editionসংস্করণ=2nd |publisherপ্রকাশক=McGraw-Hill |pagesপাতাসমূহ=57–8, 72–5, 112–120 |locationঅবস্থান=Chicago}}</ref> কখনো কখনো একাধিক ব্যক্তি উপরোক্ত কাজটি পালাক্রমে সম্পূর্ণ করেন।
 
রমজানের শেষ দশদিনে বড় মসজিদগুলোতে লাইলাতুল কদরের সারারাতব্যপী ইবাদত বন্দিগীর করা হয়। লাইলাতুল কদরের রাত্রে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর প্রথম কোরআন অবতীর্ণ হয়। <ref name="teach-islam" /> তাই সূর্যাস্তের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত, মসজিদগুলোতে সমবেত মুসলমানদের সারা রাতব্যাপী বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামী শিক্ষা দেওয়া হয় এবং পালাক্রমে খাদ্য সরবরাহ করা হয়।
 
ইসলামের বিধান অনুসারে, বড় মসজিদগুলোতে, আশেপাশের মুসলমান সম্প্রদায় থেকে অন্তত একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই [[ইতিকাফ]] করতে হয়। ইতিকাফকারী রমজানের শেষ দশদিন মসজিদেই অবস্থান করেন এবং প্রার্থণা ও ইসলামী শিক্ষা গ্রহণে নিয়োজিত থাকেন। তাই সম্প্রদায়ের অন্যান্য মুসলিমরা এইসময় তার খাদ্য বা অন্যান্য প্রয়োজন মিটানোর দায়িত্ব পালন করে।<ref name="teach-islam" />