কর্মযোগ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
{{কাজ চলছে/২০১৮}}
{{কাজ চলছে/২০১৮}}হিন্দু ধর্মের আধ্যাত্মিক পথের অন্যতম একটি হল '''কর্মযোগ''', যা কিনা '''কর্ম মার্গ''' নামেও পরিচিত, এটি "ক্রিয়ার যোগ"-এর ওপর প্রতিষ্ঠিত। একজন ''কর্ম যোগী''র কাছে শুদ্ধ কাজ উত্তমরূপে সম্পাদন করা হল প্রার্থনারই অন্যতর প্রতিরূপ। এটি হিন্দুদের আধ্যাত্মিক ক্রিয়াকলাপের মধ্যে অন্যতম একটি পথ, অন্যান্য পথগুলি হল [[রাজযোগ]], [[জ্ঞানযোগ]] (জ্ঞানের পথ) এবং ভক্তিযোগ (ব্যক্তিগত ঈশ্বরের কাছে প্রেমভক্তি নিবেদন)। হিন্দুধর্মে এই তিনটি পথ পরস্পর স্বতন্ত্র নয়, কিন্তু একজন ব্যক্তি কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের মধ্যে কোনটিতে বেশি গুরুত্ব দেবে, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।
[[চিত্র:Hitopadesha.jpg|থাম্ব|[[কুরুক্ষেত্র|কুরুক্ষেত্রে]], [[ভগবদ্গীতা|কৃষ্ণ ও অর্জুনের বাক্যালাপ]] প্রদর্শিত ব্রোঞ্জ মূর্তি। ]]
{{কাজ চলছে/২০১৮}}হিন্দু ধর্মের আধ্যাত্মিক পথের অন্যতম একটি হল '''কর্মযোগকর্ম যোগ''', যা কিনা '''কর্ম মার্গ''' নামেও পরিচিত, এটি "ক্রিয়ার যোগ"-এর ওপর প্রতিষ্ঠিত। একজন ''কর্ম যোগী''র কাছে শুদ্ধ কাজ উত্তমরূপে সম্পাদন করা হল প্রার্থনারই অন্যতর প্রতিরূপ। এটি হিন্দুদের আধ্যাত্মিক ক্রিয়াকলাপের মধ্যে অন্যতম একটি পথ, অন্যান্য পথগুলি হল [[রাজযোগ]], [[জ্ঞানযোগ]] (জ্ঞানের পথ) এবং ভক্তিযোগ (ব্যক্তিগত ঈশ্বরের কাছে প্রেমভক্তি নিবেদন)। হিন্দুধর্মে এই তিনটি পথ পরস্পর স্বতন্ত্র নয়, কিন্তু একজন ব্যক্তি কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের মধ্যে কোনটিতে বেশি গুরুত্ব দেবে, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।
 
হিন্দুধর্মে আধ্যাত্মিক মুক্তির পথগুলির মধ্যে, কর্মযোগ হল নিঃস্বার্থ ক্রিয়ার পথ। এতে বলা হয়, একজন অধ্যাত্ম-সন্ধানীর উচিত ব্যক্তিগত ফলাফলের প্রতি আসক্ত না হয়ে ধর্ম অনুযায়ী কাজ করে চলা। কর্মযোগেকর্ম যোগে বলা হয়, ''ভগবদ্‌ গীতা''ই মনকে পরিশুদ্ধ করে। এইভাবে একজন উপলব্ধি করেন কর্মের মধ্যে ধর্ম এবং নিজের ধর্মের পথে কর্মকে, অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রতি কর্মের মধ্যে দিয়ে এবং এই মর্মে তাঁর জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে তিনি "ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মত" হতে চলেছেন এবং হয়ে যাচ্ছেন।
 
== ধারণা ==
জেমস লোচেফেল্ডের মতে, কর্ম যোগ (কর্ম মার্গও বলা হয়) হল “পরের হিতার্থে নিঃস্বার্থ কর্ম সম্পাদন” – এর আধ্যাত্মিক চর্চা। কর্মের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক মোক্ষ (মুক্তি) লাভই হল কর্ম যোগের পথ। ফলের প্রতি আসক্ত না হয়ে অথবা ফলাফল কি হতে পারে তার দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে ন্যায্যপথ অবলম্বন হল এই কর্মযোগ, এটি হল একজনের কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়া, এবং সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার মত পুরস্কার বা পরিণামের প্রতি নিরপেক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব চেষ্টা করে যাওয়া।
 
হিন্দু শাস্ত্রমতে, মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হল কর্মফলের প্রতি অনুসন্ধিৎসু হয়ে পড়া, কিন্তু শুধুমাত্র ফলের প্রতি আসক্তি এবং এর ইতিবাচক আশু ফল কিন্তু ধর্মের (নৈতিক, ন্যায্য কর্ম) সঙ্গে আপস করতে পারে। বিলিনোরিয়া বলেন, কর্ম যোগ হল “নৈতিকভাবে, সূক্ষ্যভাবে নিয়ন্ত্রিত কর্ম”। এশিয়ান স্টাডিজ এবং দর্শনের অধ্যাপক স্টিফেন ফিলিপসের মতে, “একমাত্র ধার্মিক কর্মই” হল কর্ম যোগের উপযোগি, যেখানে একজন তার নিজস্ব ভূমিকাকে অথবা তার নিজস্ব আগ্রহকে গুরুত্বহীন করে তোলে। পরিবর্তে, একজন কর্ম যোগী সমস্ত দলকেই, সমস্ত প্রাণীকে, প্রকৃতির সমস্ত পদার্থকে পক্ষপাতিত্বহীন হিসেবে বিবেচনা করেন এবং তারপর সঠিক কাজটি করেন। ফিলিপস্‌ বলেন, যদিও কিছু ভাষ্যকার আছেন যাঁরা এটি মানেন না এবং তাঁরা বলেন “কর্ম যোগের মাধ্যমে যেকোন কাজই করা যায়” এবং সেই কাজকে ধর্মানুসারী হতে হবে এমন কোন কথা নেই।{{Quote box|quote=''কর্ম যোগ'''
<poem>
তোমার কর্মই তোমার দায়,
ফলাফল নয়।
কখনোই তোমার কর্মের ফলকে
তোমার উদ্দেশ্য হতে দিও না।
অকর্মকেও দিও না।
 
নিজের মধ্যে স্থির থাকো, নিজের কর্ম সম্পাদন কর,
কিছুর প্রতিই আসক্ত থেকো না।
সাফল্যে স্থির থাকো,
এবং থাকো ব্যর্থতায়ও।
স্থিরমনস্ক হওয়াই প্রকৃত যোগ।
</poem>|source=—''ভগবদ্‌ গীতা'', ২.৪৭-৪৯<ref name="Klostermaier2007p65">{{cite book|author=Klaus K. Klostermaier|title=Hinduism: A Beginner's Guide|url=https://books.google.com/books?id=d9avAgAACAAJ|year=2007|publisher=Oxford: Oneworld|isbn=978-1-85168-538-7|pages=63–66}}</ref><ref name="Chapple2010p124">{{cite book|author=Winthrop Sargeant|editor=Christopher Key Chapple|title=The Bhagavad Gita: Twenty-fifth–Anniversary Edition|url=https://books.google.com/books?id=COuy5CDAqt4C|year=2010|publisher=State University of New York Press|isbn=978-1-4384-2840-6|pages=124–135 with footnotes}}</ref><ref name="Coward2012p142"/>|bgcolor=#FFE0BB|align=right}}বিলিমোরিয়া বলেন, কর্ম যোগের অর্থ আবেগ কিংবা বাসনার বর্জন নয়, বরঞ্চ এর অর্থ “মানসিক স্থিরতা এবং সমতার” দ্বারা পরিচালিত হয়ে কর্ম সম্পাদন করা এবং “একদেশদর্শিতা, ভীতি, উদগ্র কামনা, নিজের অথবা একটি গোষ্ঠীর বা একটি দলের পক্ষপাতিত্ব, আত্মদুঃখকাতরতা, নিজের অতিরঞ্জন অথবা যেকোন ধরনের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীলতা” প্রভৃতিকে বর্জন করে ‘বৈরাগ্য, নিরাসক্তি’র পথে চলা। ভারতীয় ধর্মকেন্দ্রিক ধর্মীয় পাঠের অধ্যাপক হ্যারল্ড কাওয়ার্ড বলেন, একজন কর্ম যোগী “গৃহকর্মী, মাতা, পরিষেবিকা বা নার্স, ছুতোর অথবা জঞ্জাল সংগ্রাহক হিসেবে নিজের খ্যাতি, সুবিধা অথবা আর্থিক পুরস্কারের কথা না ভেবে, শুধু ঈশ্বরের কাছে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে” কাজ করতে পারে।
 
ফিলিপসের মতে, কর্ম যোগ “যেকোন পেশায় অথবা পারিবারিক ক্ষেত্রে যেকোন কাজে” প্রয়োগ করা যেতে পারে, যেখানে যোগী নিঃস্বার্থভাবে অন্যের উপকারের জন্য কাজ করে যান। যোগের অন্যান্য প্রকারগুলির সাথে কর্ম যোগের পার্থক্য এখানেই যে অন্যান্য যোগে কেবল বিচ্ছিন্নভাবে এবং ধ্যানমগ্ন অবস্থায় আত্মোন্নতি এবং আত্মোপলব্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। ফিলিপ বলেন, “নিরাসক্ত কর্মের” ধারণাটি কেবলমাত্র হিন্দুধর্মেই নেই, এবং বৌদ্ধ ও জৈনধর্মের সাধু ও সাধ্বীদের মধ্যেও একইধরনের নিরাসক্ত, নির্লিপ্ততার কথা পাওয়া যায়।
 
== ভগবদ্‌ গীতা ==
ভগবদ্‌ গীতা অনুসারে, সৎ অনুভব এবং সৎ আচরণের দ্বারা সৎ উদ্দেশ্যে এবং সমমনস্ক অন্যান্য ব্যক্তিদের জন্য নিঃস্বার্থ সেবাই হল উপাসনা এবং আধ্যাত্মিকতার একটি রূপ। <ref name="mcdermott228" /><ref>{{cite book|author=Stephen Phillips|title=Yoga, Karma, and Rebirth: A Brief History and Philosophy|url=https://books.google.com/books?id=uLqrAgAAQBAJ&pg=PA99|year=2009|publisher=Columbia University Press|isbn=978-0-231-14485-8|pages=99–100}}</ref>{{refn|The first six chapters of the ''Bhagavad Gita'' discuss Karma yoga, chapters 7-12 focus on [[Bhakti yoga]], while chapters 13-18 describe the [[Jnana yoga]].<ref>{{cite book|author=Brian Hodgkinson|title=The Essence of Vedanta|url=https://books.google.com/books?id=SIQEAwAAQBAJ|year=2006|publisher=London: Arcturus|isbn=978-1-84858-409-9|pages=91–93}}</ref>|group=note}}
 
ভগবদ্‌ গীতার ৩.৪ মণ্ডলে বলা হয়েছে, যেমন জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সাধুর পোশাক পরিধান করলেই একজন আধ্যাত্মিক হন না, তেমনই কর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হলে অথবা কর্ম শুরু না করলে কেউ দাসত্ব থেকে মুক্তিলাভ করতে পারেন না। ভগবদ্‌ গীতার ৩.৫ নং মণ্ডলে বলা হয়েছে, কাজ না করাও একধরনের কাজ যাতে ফল থাকে এবং কর্মীয় প্রভাব থাকে, এবং মানুষের অস্তিত্বের প্রকৃতি এমনই যে সে সর্বদাই তার প্রকৃতিতে, শরীরে অথবা মনে কাজ করে চলে, এবং এক মূহুর্তের জন্যও সে কর্মহীন থাকতে পারে না। ভগবদ্‌ গীতার ৩.৬ থেকে ৩.৮ নং মণ্ডলে বলা হয়েছে, শরীরের দ্বারা অথবা বহির্জগতের প্রভাব দ্বারা কর্ম অনুপ্রাণিত হয়। পক্ষান্তরে, একজনের অন্তরের প্রতিরূপ এবং নিজস্ব সত্ত্বার (আত্মা, আত্মন্‌, ব্রাহ্মণ) দ্বারাও তা প্রভাবিত হতে পারে। প্রথমটি দাসত্বের জন্ম দেয়, শেষেরটি দেয় মুক্তির। আধ্যাত্মিক পথে সুখে মুক্তি পাওয়ার উপায় হল, পরিণতি, ফলাফল, সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ নিরাসক্ত হয়ে যতদূর সম্ভব কাজ করে যাওয়া। ভাউক বলেন, যে কর্ম যোগী এই নিষ্কর্মা কর্ম অনুশীলন করেন, তিনি “সহজাত পরিপূর্ণ এবং পরিতৃপ্তির পথে একটি অন্তর্মুখীন যাত্রা করেন”।
 
“নিরাসক্ত কর্মের” সূত্রের একটি অংশ হল, একজন যত বেশী পরিমাণে পুরস্কারের আশায় কাজ করবে, ততই সে হতাশা, অবসাদ অথবা আত্ম-ধ্বংসকারী আচরণের শিকার হবে। এছাড়াও, এই সূত্রের অন্য একটি অংশ হল যে ব্যক্তি যত “নিরাসক্ত কর্মের” প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে, ততই সে নিজেকে ধর্মের পথে (নৈতিক মাত্রায়) চালিত করবে, কর্মের অন্যান্য অংশগুলির ওপর মনঃসংযোগ করতে পারবে, নিজের সেরা কর্ম সম্পাদন করতে পারবে এবং এইভাবে তার আত্ম-ক্ষমতায়নের পথে মুক্তিলাভ ঘটবে।
 
ভগবদ্‌ গীতার ৫ নং অধ্যায় অনুসারে, সন্ন্যাস (ত্যাগ, সন্ন্যাস জীবন) এবং কর্ম যোগ উভয়েই মুক্তির উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই দুয়ের মধ্যে, ভগবদ্‌ গীতা কর্ম যোগের পক্ষেই সুপারিশ করে এবং এতে বলা হয় যে একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্ম যোগী ঘৃণাও করেন না, বাসনাও করেন না এবং তাই সেই ব্যক্তিই “চিরত্যাগী” হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
 
ভগবদ্‌ গীতায় কর্ম যোগের পদ্ধতির সারাংশ দেওয়া রয়েছে। গীতা নিজেই মহাভারত মহাকাব্যের একটি অধ্যায়, যেখানে রাজকুমার অর্জুন এবং তাঁর বন্ধু ও রথের সারথী ভগবান কৃষ্ণের মধ্যে রাজবংশীয় মহাযুদ্ধের প্রাক্কালে একটি কথোপকথন লেখা রয়েছে। তাঁদের এই কথোপকথন অর্জুনই শুরু করেছিলেন; আসন্ন যুদ্ধের উভয় পক্ষে তিনি বন্ধু এবং আত্মীয়দের দেখে দুঃখ ও আশঙ্কায় মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলেন। প্রত্যুত্তরে, কৃষ্ণ তখন কয়েকটি দার্শনিক যোগ ব্যবস্থা এবং অভ্যাস (কর্ম যোগ নিয়ে) সম্বন্ধে বিশদে ব্যাখ্যা করেছিলেন যার দ্বারা অর্জুন ধর্মের পথে তাঁর যুদ্ধ চালিয়ে গেছিলেন।
 
ভগবদ্‌গীতায়, কৃষ্ণ বলেছিলেনঃ
 
'''''“তস্মদাসক্তঃ সততম্‌ কার্যম্‌ কর্ম সমাচর।'''''
 
'''''অসক্তো হ্যাচরণকর্ম পরমাপ্নোতি পুরুষঃ।।”'''''
 
অতএব, কর্মের ফলাফলের প্রতি আসক্ত না হয়ে, একজন কর্ত্তব্য হিসেবে কর্ম সম্পাদন করবেন, যেহেতু আসক্তি বিনা কর্মেই একজন পরম বা ঈশ্বরকে লাভ করেন।
 
== অন্যান্য হিন্দু শাস্ত্র ==
ভগবদ্‌ গীতার আগে যেসকল পুরাতন শাস্ত্র কর্ম যোগের ধারণা এনেছিল সেগুলি হল প্রাচীন উপনিষদ, যেমন, বৃহদারণ্যক উপনিষদ। অন্যান্য বৈদিক সাহিত্যসহ হিন্দু দর্শনের মীমাংসা সূত্রের মত পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে কর্ম মার্গের উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু এগুলিতে ধর্মীয় আচারের প্রসঙ্গ রয়েছে। রাজুর বক্তব্য অনুসারে, মীমাংসা সূত্রের ধারণাগুলি সাবেকি হলেও, পরবর্তীকালে কর্ম যোগের যে ধারণা গড়ে উঠেছিল এটি তার জমি প্রস্তুত করে যায়।
 
কর্ম যোগ সম্বন্ধে অন্যান্য অনেক হিন্দু সাহিত্যে আলোচনা করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ভগবত পুরাণের ১১.২০ বিভাগে বলা হয়েছে, আধ্যাত্মিক মুক্তির জন্য কেবলমাত্র তিনটি উপায় রয়েছেঃ জ্ঞান যোগ (জ্ঞান), কর্ম যোগ (কর্ম) এবং ভক্তি যোগ (ভক্তি) যাঁরা দর্শনের প্রতি আসক্ত, তাঁরা “জ্ঞান পথ”ই পছন্দ করেন। যাঁরা শিল্পের কার্যকরী প্রয়োগ, দক্ষতা এবং জ্ঞানের দিকে ঝুঁকে থাকেন, তাঁরা “কর্ম পথ”কেই পছন্দ করেন। যাঁরা আবেগীয় সম্পর্কে আস্থাশীল, তাঁরা “ভক্তির পথে” যান। এই তিনটি পথ, ভিন্ন ভিন্ন আপেক্ষিক অভিঘাতের সঙ্গে, পরস্পরের ওপর উপরিপাতিত হয়।
 
নারদ পুরাণের ৩৩ নং অধ্যায়েও কর্ম যোগের ওপর আলোচনা করা হয়েছে।
 
পরবর্তীকালে, হিন্দুধর্মের মধ্যে নব্য আন্দোলনের ফলে রাজ যোগ সংযোজিত হয়, যাকে চতুর্থ আধ্যাত্মিক পথ বলা হয়, কিন্তু এটি অন্যান্য তিনটি পথের থেকে স্বতন্ত্রভাবে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়নি।
 
== কর্ম যোগ বনাম ক্রিয়া যোগ ==
কন্ট্যান্স জোনস্‌ এবং জেমস রিয়ানের মতে, কর্ম যোগ হল “কাজের যোগ” এবং ক্রিয়া যোগ হল “আনুষ্ঠানিক যোগ”। ক্রিয়া যোগের কথা তান্ত্রিক পাঠে পাওয়া যায়, এবং এর অনুশীলনকারীরা মনে করেন তাঁরা নিজেদের শরীরে চক্র এবং শক্তি কেন্দ্রকে সক্রিয় করে তুলছেন।
 
== আরো দেখুন ==
* প্রবাহ (মনস্তত্ত্ববিদ্যা)
* টান - লোভ, আসক্তি
* [[ত্রিবিষ]] - বৌদ্ধশাস্ত্র অনুসারে তিনপ্রকার দুঃখ যার ফলে মানুষ পুনর্জন্ম এবং যন্ত্রণার চক্রে আবদ্ধ হয়
* ত্রুল খোর