বাংলা ব্যাকরণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ratulhasan14789 (আলোচনা | অবদান)
→‎ইতিহাস: বানান ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
Ratulhasan14789 (আলোচনা | অবদান)
→‎ইতিহাস: বানান ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
৫৩৩ নং লাইন:
উনিশ শতকের মধ্যভাগে স্কুলপাঠ্য হিসেবে যেসব বাংলা ব্যাকরণ রচিত হয়, সেসবের অধিকাংশই ছিল সংস্কৃত ব্যাকরণের বঙ্গানুবাদ; বাংলা ভাষার স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য সেগুলিতে বিশ্লেষিত হয়নি। কিন্তু বীমস্, হর্নলে বা ভান্ডারকর এ সময়ে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব চর্চার যে সূত্রপাত করেন, তাতে বেশ কিছু ব্যাকরণবিদ নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলা ব্যাকরণ রচনার তাগিদ অনুভব করেন। তাঁদের মধ্যে চিন্তামণি গঙ্গোপাধ্যায় (বাঙ্গালা ব্যাকরণ, ১৮৮১), নকুলেশ্বর বিদ্যাভূষণ (ভাষাবোধ বাঙ্গালা ব্যাকরণ, ১৮৯৮) ও হূষিকেশ শাস্ত্রী (বাঙ্গালা ব্যাকরণ, ১৯০০) রচিত ব্যাকরণ উল্লেখযোগ্য। এঁরা বাংলা ব্যাকরণ রচনায় সম্পূর্ণরূপে সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রভাবমুক্ত ছিলেন না বটে, কিন্তু সংস্কৃত ব্যাকরণের বিষয়গুলি প্রথমে আলোচনা করে পরে বাংলা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলি তাতে যুক্ত করেন।
 
বাংলা ব্যাকরণ রচনার ক্ষেত্রে উনিশ শতকের তুলনায় বিশ শতক বহুমাত্রায় বৈচিত্র্যপূর্ণ। উনিশ শতকে এ বিষয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলেও কোন অনুসরণীয় আদর্শ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বিশ শতকে ভাষার আদর্শের মতো ব্যাকরণ রচনারও একটি আদর্শ রূপ ও পদ্ধতির অনুসন্ধানে বেশ কিছু প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে। সেগুলির মধ্যে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাংলা ভাষা চর্চায় পরিষদের নিরন্তর উৎসাহ প্রদান এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর পাঠ্য তালিকায় বাংলা ব্যাকরণ অন্তর্ভুক্তকরণের ফলে বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া গ্রিয়ারসনের The Linguistic Survey of India-য় বাংলা ভাষার স্বরূপ ও প্রকৃতি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সন্নিবেশিত হওয়ায় এবং  নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় (১৯১৩) বাংলা ভাষা বিদেশেও পরিচিতি লাভ করে। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ ও ভাষা আন্দোলন (১৯৪৮-৫২) এবং সেই প্রেরণায় বাংলা একাডেমীর প্রতিষ্ঠা (১৯৫৫) বাংলা ভাষা চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি (১৯৮৫) বাংলা ভাষা চর্চায় যে গুরুত্ব দিয়েছে তার প্রভাব বাংলা ব্যাকরণ চর্চার ক্ষেত্রেও পড়েছে। এ শতকে একাডেমিক ব্যাকরণ রচনার চেষ্টা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় এবং ব্যাকরণ প্রণয়নে ভাষা বিজ্ঞানের কলাকৌশলও প্রয়োগ করা হয়।
 
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের একটি সভায় (১৯০১) পঠিত ‘বাঙ্গালা ব্যাকরণ’ প্রবন্ধে সমগ্র উনিশ শতকের ব্যাকরণকে মূলত দুই ধরনের ‘প্যাটেন্টে’ চিহ্নিত করেছিলেন: মুগ্ধবোধ প্যাটেন্ট এবং হাইলি-প্যাটেন্ট। প্রথম ধরনের লেখকরা ছিলেন সংস্কৃত পন্ডিত, আর দ্বিতীয় ধরনের লেখকরা ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এছাড়া তৃতীয় এক ধরনের প্যাটেন্ট ব্যাকরণের কথাও তিনি বলেছিলেন, যাতে এই দুই ধরনের রচনার মিশ্রণ ঘটেছে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী উক্ত প্রবন্ধে বাংলা ভাষার প্যাটেন্ট ব্যাকরণ রচনার পরিবর্তে প্রকৃত বাংলা ব্যাকরণ রচনার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশনাকে যথার্থ অর্থে কর্মে প্রয়োগ করেছেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।