টোকারীয় ভাষাসমূহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Nirban Nandy (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Nirban Nandy (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
তোচারিয়,বা উচ্চারণভেদে তোখারিয়,ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর একটি বিলুপ্ত শাখা।এই ভাষার নিদর্শনস্বরূপ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দী সময়কালের কিছু পুঁথি পাওয়া গিয়েছে উত্তর-পশ্চিম চিনের তারিম নদী-উপত্যকা, ঝিংজিয়াং-এর উত্তরতটরেখা-সংলগ্ন মরূদ্যানসমূহ থেকে।বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে তোখারিয় ভাষাসমূহ আবিষ্কৃত হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী-সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে নবদিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।বহুকালব্যাপী পোষিত প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিভেদের ধারণার পরিবর্তে কেন্টুম-সতেম সমবাকের ধারণার ভিত্তিতে ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনা নবদিশা লাভ করেছে।পূর্বে মনে করা হত যে এটি প্রাচীন ব্যাক্ট্রিয়ার(তোখারিস্তান) তোখারোজ জনজাতির ভাষা ছিল এবং সেই কারণেই ভাষাগুলির তোখারিয় নামাকরণ করা হয়েছে।যদিও ইদানীং অনেকে ভাষাটির এই পরিচয় বিভ্রান্তিকর বলে মনে করেন।তবে নামটি সার্বজনীন হয়ে উঠেছে।
 
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তোখারিয় ভাষাসমূহকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়--- তোখারিয়-A(পূর্বী তোখারিয়;অগ্নিয়ানঅগ্নিয় বা তুরফানিয়ানতুরফানিয়) এবং তোখারিয়-B(পশ্চিমা তোখারিয়;কুচিয়ানকুচিয়)।প্রাপ্ত নিদর্শন অনুসারে মনে করা হয় যে তোখারিয়-A প্রাচীনতর এবং এটি বৌদ্ধ সাধনা-সাহিত্য লিপিবদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত হত।তোখারিয়-B তুলনামূলকভাবে পরবর্তীকালের এবং তুরফান ও তুমশক অঞ্চলে কথ্য ভাষা হিসেবে বহুল-প্রচলিত ছিল।প্রাকৃত ভাষায় প্রাপ্ত বেশ কিছু আগন্তুক শব্দ ও নামবাচক শব্দকে একসাথে তোখারিয়-C(ক্রোরেরিয়ানক্রোরেরিয়) নামকরণ করা হয়েছে।
তোখারিয় ভাষা ও লিপি অতলান্ত বিস্মৃতির কবল থেকে মুক্তি পায় বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অরেল স্টেনের(Aurel Stein) হাত ধরে।তিনি চিনের তারিম উপত্যকা অঞ্চলে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা চালানোর সময় প্রথম অজানা কোনো ভাষায় লিখিত কতকগুলি পাণ্ডুলিপি উদ্ধার করেন।শীঘ্রই বোঝা যায় যে নবলব্ধ নিদর্শনগুলি কোনো অজানা ভাষার দু'টি স্বতন্ত্র উপভাষিক নিদর্শন এবং সম্ভবত মূল ভাষাটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর একটি শাখা।তোখারিয় ভাষা আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনা-ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়।ঊনবিংশ শতাব্দীতে মনে করা হত যে কেন্টুম-সতেম বিভাজন সম্পূর্ণভাবেই একটি ভৌগোলিক বিভাজন, অর্থাৎ কেন্টুম ভাষাগুলি পাশ্চাত্য ও সতেম ভাষাগুলি প্রাচ্য-দেশীয়।কিন্তু বিংশ শতাব্দীতে পরপর হিট্টিয় এবং তোখারিয় ভাষা আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে সমবাকের ধারণা জন্মলাভ করে।কারণ তাৎপর্যপূর্ণভাবে হিট্টিয় এবং তোখারিয় উভয়ই কেন্টুম গোষ্ঠী-ভুক্ত অথচ প্রাচ্যদেশীয়।য়োহানেজ শ্মিডট(Johannes Schmidt) 'তরঙ্গ'(Wave) নামক একটি প্রকল্প মডেলের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন।ভাল্টের ব্রিউনো হেনিঙ্গ(Walter Bruno Henning) আবার আঃ দ্বাবিংশ শতাব্দী খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইরানিয় মালভূমি অঞ্চলে ব্যবহৃত গুতিয়ানগুতিয়,বা নামান্তরে কুতিয়ানকুতিয়,ভাষা ও তোখারিয় ভাষার যোগসূত্রের কথা বলেছেন।কিন্তু অধিকাংশ পণ্ডিতই হেনিঙ্গের মতামত খারিজ করে দিয়েছেন।
 
তোখারিয় লিপির বিষয়ে কিছু আলোচনা অবশ্যই করা প্রয়োজন।যে সমস্ত পাণ্ডুলিপি তারিম উপত্যকা অঞ্চল থেকে পাওয়া গেছে,সেগুলি প্রধানত খণ্ডিতাবস্থায় পাওয়া গেছে।পুঁথিগুলি লেখা হয়েছিল ভূর্জপত্র,তালপত্র,কাঠ বা চৈনিক কাগজের উপর।অত্যন্ত শুষ্ক জলবায়ু এই পুঁথিগুলি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।হয়েছে।প্রাপ্ত নিদর্শনের অধিকাংশই ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা।তবে কিছুকিছু নিদর্শনের লিপি মণিচিন।সেসব নিদর্শনগুলি মূলত প্রাচীন ইরানের সন্ত মণি কর্তৃক প্রচারিত মণিচিন ধর্মের গ্রন্থাবশেষ।প্রাপ্ত নিদর্শনসমূহের সিংহভাগ পরিচিত বৌদ্ধ গ্রন্থাবলির অনুবাদ।বৌদ্ধ ও মণিচিনীয় গ্রন্থ ছাড়াও মঠের কার্যবিবরণী এবং হিসাবনিকাশ,কারবারি নথিপত্র,শোভাযাত্রার অনুমতিপত্র,চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র,যাদুবিদ্যার পুঁথি এবং কেবল একটি প্রেমের কবিতা নিদর্শন হিসাবে পাওয়া গেছে।
১৯৯৮ সালে চৈনিক ভাষাবিদ জি ঝিয়ানলিন ১৯৭৪ সালে য়ংকি থেকে প্রাপ্ত ''মৈত্রেয়সমিতি-নাটক''-এর অনুবাদ প্রকাশ করেছেন।নাটকটি পূর্বী তোখারিয়-তে রচিত।