মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
আইএসবিএন টেমপ্লেট যোগ
৯০ নং লাইন:
'''মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র''' ({{lang-en|United States of America}} ''ইউনাইটেড্ স্টেইট্‌স্ অফ্ আমেরিকা'') [[উত্তর আমেরিকা|উত্তর আমেরিকায়]] অবস্থিত [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যসমূহ|পঞ্চাশটি রাজ্য]] ও একটি [[ওয়াশিংটন, ডি.সি.|যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা]] নিয়ে গঠিত এক [[যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র|যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র]]। এই দেশটি '''ইউনাইটেড স্টেটস''', '''ইউ. এস. ''', '''যুক্তরাষ্ট্র''' ও '''আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র''' নামেও পরিচিত। মধ্য উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও [[ওয়াশিংটন, ডি.সি.|রাজধানী অঞ্চল]] সহ [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ড|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি]] পশ্চিমে [[প্রশান্ত মহাসাগর|প্রশান্ত]] ও পূর্বে [[আটলান্টিক মহাসাগর]]দ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তর ও দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত যথাক্রমে [[কানাডা]] ও [[মেক্সিকো]] রাষ্ট্রদ্বয়। [[আলাস্কা]] রাজ্যটি অবস্থিত মহাদেশের উত্তর-পশ্চিমে; এই রাজ্যের পূর্ব সীমায় কানাডা ও পশ্চিমে [[বেরিং প্রণালী]] পেরিয়ে [[রাশিয়া]]। [[হাওয়াই]] রাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি [[দ্বীপপুঞ্জ]]। এছাড়াও [[ক্যারিবীয়]] ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-শাসিত অঞ্চল|অনেক অঞ্চল]] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকারভুক্ত।
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তন ৩.৭৯ মিলিয়ন বর্গমাইল (৯.৮৩ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার)। দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৩০৯ মিলিয়ন। সামগ্রিক আয়তনের হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় অথবা চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র। আবার স্থলভূমির আয়তন ও জনসংখ্যার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বৈচিত্র্যমণ্ডিত [[বহুজাতিক সমাজ|বহুজাতিক সমাজব্যবস্থা]]। [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিনিবেশ|বহু দেশ থেকে বিভিন্ন জাতির মানুষের অভিনিবেশের]] ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজ একটি [[বহুসংস্কৃতিবাদ|বহুসংস্কৃতিবাদী]] দেশ।<ref name="DD">Adams, J.Q., and Pearlie Strother-Adams (2001). ''Dealing with Diversity''. Chicago: Kendall/Hunt. ISBN {{আইএসবিএন|0-7872-8145-X}}.</ref> [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি]] বিশ্বের বৃহত্তম জাতীয় অর্থনীতি। ২০০৮ সালে দেশের আনুমানিক [[জিডিপি]] হার ছিল ১৪.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (নামমাত্র বিশ্ব জিডিপির এক চতুর্থাংশ এবং [[ক্রয় ক্ষমতা সমতা]]য় বিশ্ব জিডিপির এক পঞ্চমাংশ)।<ref name="IMF GDP">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.imf.org/external/pubs/ft/weo/2008/02/weodata/index.aspx|publisher=International Monetary Fund|title=World Economic Outlook Database|month=October|year=2008|accessdate=2008-10-27}}</ref><ref>The [[European Union]] has a larger collective economy, but is not a single nation.</ref>
 
[[আমেরিকার আদিম অধিবাসী|আমেরিকার আদিম অধিবাসীরা]] সম্ভবত [[নতুন পৃথিবীতে অভিনিবেশের মডেল|এশীয় বংশোদ্ভুত]]। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে এরা কয়েক হাজার বছর ধরে বসবাস করছে। তবে [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেটিভ আমেরিকান|নেটিভ আমেরিকানদের]] জনসংখ্যা [[আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপন|ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনের]] পর থেকে মহামারী ও যুদ্ধবিগ্রহের প্রকোপে ব্যাপক হ্রাস পায়। প্রাথমিক পর্যায়ে [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল|আটলান্টিক মহাসাগর তীরস্থ]] উত্তর আমেরিকার [[তেরোটি উপনিবেশ|তেরোটি ব্রিটিশ উপনিবেশ]] নিয়ে গঠিত হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই এই উপনিবেশগুলি একটি [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র|স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র]] জারি করে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে উপনিবেশগুলি তাঁদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ঘোষণা করে এবং একটি সমবায় সংঘের প্রতিষ্ঠা করে। [[আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ|আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে]] এই বিদ্রোহী রাজ্যগুলি [[গ্রেট ব্রিটেন রাজ্য|গ্রেট ব্রিটেনকে]] পরাস্ত করে। এই যুদ্ধ ছিল [[ঔপনিবেশিকতার ইতিহাস|ঔপনিবেশিকতার ইতিহাসে]] প্রথম সফল ঔপনিবেশিক স্বাধীনতা যুদ্ধ।<ref>Dull, Jonathan R. (2003). "Diplomacy of the Revolution, to 1783," p. 352, chap. in ''A Companion to the American Revolution'', ed. Jack P. Greene and J. R. Pole. Maiden, Mass.: Blackwell, pp. 352–361. ISBN {{আইএসবিএন|1-4051-1674-9}}.</ref> ১৭৮৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর [[ক্যালিফোর্নিয়া কনভেনশন]] বর্তমান [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান|মার্কিন সংবিধানটি]] গ্রহণ করে। পরের বছর এই সংবিধান সাক্ষরিত হলে যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার সহ একক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ১৭৯১ সালে সাক্ষরিত এবং দশটি [[মার্কিন সংবিধান সংশোধনের তালিকা|সংবিধান সংশোধনী]] সম্বলিত [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিল অফ রাইটস|বিল অফ রাইটস]] একাধিক [[স্বাভাবিক অধিকার|মৌলিক নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা]] সুনিশ্চিত করে।
 
ঊনবিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্র [[লুসিয়ানা ক্রয়|ফ্রান্স]], [[অ্যাডামস-ওনিস চুক্তি|স্পেন]], [[ওরেগন কান্ট্রি|যুক্তরাজ্য]], [[মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধ|মেক্সিকো]] ও [[আলাস্কা ক্রয়|রাশিয়ার]] থেকে জমি অধিগ্রহণ করে এবং [[টেক্সাস প্রজাতন্ত্র]] ও [[হাওয়াই প্রজাতন্ত্র]] অধিকার করে নেয়। ১৮৬০-এর দশকে [[রাজ্যসমূহের অধিকার]] ও [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথা|দাসপ্রথার বিস্তারকে]] কেন্দ্র করে [[দক্ষিণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|গ্রামীণ দক্ষিণাঞ্চল]] ও [[উত্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|শিল্পোন্নত উত্তরাঞ্চলের]] বিবাদ [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ|এক গৃহযুদ্ধের]] জন্ম দেয়। উত্তরাঞ্চলের বিজয়ের ফলে দেশের চিরস্থায়ী বিভাজন রোধ করা সম্ভব হয়। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে [[মার্কিন সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী|দাসপ্রথা আইনত রদ]] করা হয়। ১৮৭০-এর দশকেই মার্কিন অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির শিরোপা পায়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|author=Maddison, Angus|url=http://www.ggdc.net/maddison/Historical_Statistics/horizontal-file_09-2008.xls|title=Historical Statistics for the World Economy|publisher=The Groningen Growth and Development Centre, Economics Department of the University of Groningen|year=2006|accessdate=2008-11-06}}</ref> [[স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ]] ও [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ]] সামরিক শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা দান করে। [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের]] সময় এই দেশ [[পারমানবিক অস্ত্র ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|প্রথম পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র]] হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং [[রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ|রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে]] স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। [[ঠান্ডা যুদ্ধ|ঠান্ডা যুদ্ধের]] শেষভাগে এবং [[সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাস (১৯৮৫–১৯৯১)|সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর]] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র [[মহাশক্তিধর রাষ্ট্র|মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে]] পরিণত হয়। বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের দুই-পঞ্চমাংশ খরচ করে এই দেশ। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিধর রাষ্ট্র।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|author=Cohen, Eliot A.|url=http://www.foreignaffairs.org/20040701faessay83406/eliot-a-cohen/history-and-the-hyperpower.html|title=History and the Hyperpower|work=Foreign Affairs|date=July/August 2004|accessdate=2006-07-14}} {{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://news.bbc.co.uk/2/hi/americas/country_profiles/1217752.stm|title=Country Profile: United States of America|publisher=BBC News|date=2008-04-22|accessdate=2008-05-18}}</ref> ১৯৩০ এর দশকে ও একবিংশ শতকের প্রথম দশকের শেষে আমেরিকার অর্থনীতি 'অর্থনেতিক মহামন্দা' বা 'গ্রেট ডিপ্রেশন'র স্বীকার হয়।
৯৯ নং লাইন:
১৫০৭ সালে জার্মান মানচিত্রকর মার্টিন ওয়াল্ডসিম্যুলার বিশ্বের একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন। এই মানচিত্রে তিনি ইতালীয় আবিষ্কারক ও মানচিত্রকর আমেরিগো ভেসপুচির নামানুসারে পশ্চিম গোলার্ধের নামকরণ করেন [[আমেরিকা|"আমেরিকা"]]।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.usatoday.com/news/nation/2007-04-24-america-turns-500_N.htm?csp=34|title=Cartographer Put 'America' on the Map 500 years Ago|work=USA Today|date=2007-04-24|accessdate=2008-11-30}}</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে পূর্বতন ব্রিটিশ কলোনিগুলি প্রথম দেশের আধুনিক নামটি ব্যবহার করে। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই "unanimous Declaration of the thirteen united States of America" নামে এই ঘোষণাপত্রটি "Representatives of the united States of America" কর্তৃক গৃহীত হয়।<!--Do not uppercase "united" here: it is unambiguously lowercased in the Declaration--><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.archives.gov/exhibits/charters/charters.html|title=The Charters of Freedom|publisher=National Archives|accessdate=2007-06-20}}</ref> ১৭৭৭ সালের ১৫ নভেম্বর দ্বিতীয় মহাদেশীয় কংগ্রেসে আর্টিকলস অফ কনফেডারেশন বিধিবদ্ধকরণের মাধ্যমে বর্তমান নামটি চূড়ান্ত হয়। এই আর্টিকেলে বলা হয়েছিল: "The Stile of this Confederacy shall be 'The United States of America.'" সংক্ষিপ্ত নাম হিসেবে ''the United States'' নামটি প্রামাণ্য। অন্যান্য প্রচলিত নামগুলি হল ''the U.S.'', ''the USA'', ও ''America''। কথ্য নামগুলি হল ''the U.S. of A.'' ও ''the States''। [[ক্রিস্টোফার কলম্বাস|ক্রিস্টোফার কলম্বাসের]] নামানুসারে ''কলম্বিয়া'' নামটি এককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হত। "ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া" নামের মধ্যে এই নামটির আজও অস্তিত্ব রয়েছে।
 
মার্কিন নাগরিকেরা সাধারণভাবে "আমেরিকান" নামে পরিচিত। যদিও সরকারিভাবে বিশেষণ হিসেবে "ইউনাইটেড স্টেটস" কথাটি ব্যবহৃত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংক্রান্ত বিশেষণ হিসেবে "আমেরিকান" ও "ইউ. এস. " দুইই প্রচলিত (আমেরিকান মূল্যবোধ বা ইউ. এস. সামরিক বাহিনী) ইংরেজি ভাষায় খুব অল্প ক্ষেত্রেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ব্যতীত অন্যদের বিশেষণ হিসেবে "আমেরিকা" কথাটি ব্যবহৃত হয়।<ref>Wilson, Kenneth G. (1993). ''The Columbia Guide to Standard American English''. New York: Columbia University Press, pp. 27–28. ISBN {{আইএসবিএন|0-231-06989-8}}.</ref> আমেরিকার অধিবাসী বা আমেরিকা সম্বন্ধীয় বোঝাতে বাংলায় 'মার্কিন' শব্দটি ব্যবহৃত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.ovidhan.org/b2b/মার্কিন|title=Meaning of মার্কিন}}</ref>
 
পূর্বে "দ্য ইউনাইটেড স্টেটস" কথাটি বহুবচনে ব্যবহৃত হত ("the United States are")। গৃহযুদ্ধের পর ১৮৬৫ সালে মার্কিন সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে শব্দটিকে একবচন হিসেবে ঘোষণা করা হয় ("the United States is")। বর্তমানে একবচন রূপটিই প্রামাণ্য। বহুবচন রূপটি কেবল বাগধারা "these United States" কথাটিতেই ব্যবহৃত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://itre.cis.upenn.edu/~myl/languagelog/archives/002663.html|author=Zimmer, Benjamin|date=2005-11-24|title=Life in These, Uh, This United States|publisher=University of Pennsylvania—Language Log|accessdate=2008-02-22}}</ref>