পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
২০ নং লাইন:
এরপর [[১৯১৪]] সালে তদনীন্তন বাংলা সরকার একটি জেলা প্রশাসন কমিটি বা ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি সুপারিশ করেন গ্রামাঞ্চলে এমন এক শাসন কর্তৃপক্ষ গড়ে তুলতে যার মধ্যে একাধারে ইউনিয়ন কমিটি ও চৌকিদারি পঞ্চায়েতের কাজ করবে এবং একটি গ্রামীণ বিচারব্যবস্থাও তার অন্তর্ভুক্ত হবে। মূলত এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে [[১৯১৯]] সালে পাস হয় বঙ্গীয় গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন আইন বা বেঙ্গল ভিলেজ সেল্ফ-গভর্নমেন্ট অ্যাক্ট। এই আইনবলে চৌকিদারি পঞ্চায়েত ও ইউনিয়ন কমিটি অবলুপ্ত করা হয় এবং উভয়ের ক্ষমতা একাধিক গ্রাম নিয়ে গঠিত ইউনিয়ন বোর্ডের হাতে ন্যস্ত করা হয়। এই বোর্ডগুলি গ্রামবাসীদের প্রয়োজনে নিজ নিজ এলাকায় কর ধার্য করার ক্ষমতা রাখত। এছাড়া এই আইনের ছোটোখাটো দেওয়ানি মামলা বিচারের জন্য ইউনিয়ন কোর্ট ও ছোটোখাটো ফৌজদারি মামলা বিচারের জন্য ইউনিয়ন বেঞ্চও গঠন করা হয়। এই বিচারব্যবস্থার বিচারকগণও ইউনিয়ন বোর্ডের সদস্যদের মধ্য থেকেই নিযুক্ত হতেন।
 
তবে এইসব ইউনিয়ন ও জেলা বোর্ডের কাজকর্ম প্রাথমিক শিক্ষা, জল সরবরাহ, সড়ক ও সেতু নির্মাননির্মাণ এবং জনস্বাস্থ্যরক্ষা মতো কাজেই সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থ ও কর্মীর অভাবে এগুলির দ্বারা গ্রামীণ জীবনের ন্যূনতম চাহিদাগুলি পূরণ করা সম্ভব হত না। যদিও গ্রামবাংলার জনসাধারণকে ভাবী গণতন্ত্রের পথে অনেকটাই শিক্ষিত করে তুলতে সক্ষম হয়েছিল এগুলি।
 
=== স্বাধীনোত্তর কাল - 'প্রথম প্রজন্ম' (১৯৪৭-১৯৭৭) ===
১০৪ নং লাইন:
* অন্যদিকে গ্রাম পঞ্চায়েতের উপর ন্যস্ত ও ঐচ্ছিক কাজগুলি সাধারণ উন্নয়ন ও গ্রাম পুনর্গঠন সংক্রান্ত। রাজ্য সরকারও কিছু কিছু দায়িত্ব গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উপর ন্যস্ত করে থাকেন। সেক্ষেত্রে এই কাজগুলির সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সরকারই গ্রাম পঞ্চায়েতকে দিয়ে থাকেন। এই কাজগুলি হল, প্রাথমিক, সামাজিক, বৃত্তিমূলক ও বয়স্ক শিক্ষা, মাতৃ ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র, খেয়াঘাট পরিচালনা, সেচ, কৃষি, জ্বালানি, পশু চিকিৎসা, ভূমি সংস্কার, সমবায়, গ্রামীণ গৃহ প্রকল্প ইত্যাদি। তবে এই সকল কাজের গতিপ্রকৃতি দেখে সন্তুষ্ট না হলে সরকার এই কাজগুলি প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।
* গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বেচ্ছাধীন কাজগুলি হল – রাস্তার আলোর ব্যবস্থা, বৃক্ষরোপন ও রক্ষণাবেক্ষণ, কূপ খনন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমবায় প্রথার প্রবর্তন, হাট-বাজার স্থাপন, দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্প গ্রহণ, গ্রন্থাগার স্থাপন, সাংস্কৃতিক কাজকর্ম, সামাজিক ও শিক্ষাগত ক্ষেত্রে অনগ্রসর শ্রেণির কল্যাণসাধন ইত্যাদি। স্থানীয় জনহিতকর যে-কোনও প্রকল্প গ্রাম পঞ্চায়েত স্বেচ্ছায় গ্রহণ করতে পারে।
* এছাড়াও গৃহনির্মানগৃহনির্মাণ, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতিকরণ, রাস্তা ও জলপথ রক্ষণাবেক্ষণ, দূষিত জলসরবরাহ নিয়ন্ত্রণ, সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব হলে তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণের ক্ষমতাও গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে ন্যস্ত রয়েছে।
 
=== পঞ্চায়েত সমিতির কার্যাবলি ===
১৫৩ নং লাইন:
* গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জমি ও বাড়ির মালিক ও দখলকারীর থেকে আদায়ীকৃত কর। জমি বা বাড়ির বার্ষিক মূল্য ১০০০ টাকার মধ্যে হলে ১% হারে ও ১০০০ টাকার বেশি হলে ২% হারে কর বসানো বা সংগ্রহ করা হয়। তবে বার্ষিক ২৫০ টাকা কম মূল্যের বাড়ি বা জমি, জনস্বার্থে ব্যবহৃত বা ধর্মীয় বা শিক্ষাগত বা দাতব্য উদ্দেশ্যে নির্মিত ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত কর বসানোর অধিকারী নয়।
* এলাকার মধ্যে যাবতীয় স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, দান, বন্ধক, ইজারা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ২% হারে শুল্ক; প্রমোদানুষ্ঠান যথা প্রদর্শনী, সিনেমা, নাটক ও খেলাধুলার প্রবেশমূল্যের উপর ১০% হারে অতিরিক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি বসাতে পারে গ্রাম পঞ্চায়েত।
* এলাকায় গৃহনির্মানগৃহনির্মাণ, গৃহসংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমতি প্রয়োজন। এই অনুমোদনের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত নির্দিষ্ট হারে মাশুল আদায় করতে পারে।
* নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত আইন বা বিধি লঙ্ঘিত হলে গ্রাম পঞ্চায়েত জরিমানাও আদায় করতে পারে।
 
২১১ নং লাইন:
== গ্রামোন্নয়নে পঞ্চায়েতের ভূমিকা ==
পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গ্রামীণ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত সব কর্মসূচির সঙ্গেই পঞ্চায়েত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত। গ্রামোন্নয়নে পঞ্চায়েতের কাজগুলিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে –
* আর্থ-সামাজিক কাঠামোগত উন্নয়ন (যেমন সড়ক, কার্লভার্ট, প্রাথমিক বিদ্যালয়, গৃহনির্মানগৃহনির্মাণ ও সংস্কার ইত্যাদি)।
* মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তন (যেমন ভূমি সংস্কার, উদ্বৃত্ত জমি বণ্টন, বর্গাদার রেকর্ড ও ঋণের ব্যবস্থা)।
* কেন্দ্র, রাজ্য সরকার ও স্বগৃহীত বিভিন্ন মানবসম্পদ উন্নয়নগত পরিকল্পনা রূপায়ন।