পৃথিবীর গঠন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Mmibappybd (আলোচনা | অবদান)
সম্প্রসারণ
Mmibappybd (আলোচনা | অবদান)
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Earth poster.svg|থাম্ব|পৃথিবীর গঠন]]'''পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন''' অনেকটা পেয়াজের মতো বিভিন্ন খোলসাকৃতির স্তরে বিন্যস্ত। এই স্তরগুলোকে তাদের বস্তুধর্ম এবং রাসায়নিক ধর্ম দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যায়। পৃথিবীর বাহিরের দিকে রয়েছে সিলিকেট দিয়ে তৈরি কঠিন ভূত্বক বা ক্রাস্ট (Crust), তারপর অত্যন্ত আঠালো একটি ভূ-আচ্ছাদন বা ম্যান্টল (Mantle), একটি বহিঃস্থ মজ্জা বা কোর (Core) যেটি ম্যান্টলের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম আঠালো এবং সব শেষে একটি অন্তঃস্থ মজ্জা। পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন বৈজ্ঞানিক ভাবে বোঝার জন্য কোন স্থানের [[ভূসংস্থান]] এবং গভীরতা, বহিঃস্থ এবং অন্তঃস্থ [[শিলাস্তর]], আগ্নেয়গিরি এবং অগ্ন্যুৎপাত, মহাকর্ষীয় এবং [[তরিৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের]] পরিমাপ, ভূকম্পন তরঙ্গের বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়।
[[চিত্র:Earth poster.svg|থাম্ব|পৃথিবীর গঠন]]
'''পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন''' অনেকটা পেয়াজের মতো বিভিন্ন খোলসাকৃতির স্তরে বিন্যস্ত। এই স্তরগুলোকে তাদের বস্তুধর্ম এবং রাসায়নিক ধর্ম দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যায়। পৃথিবীর বাহিরের দিকে রয়েছে সিলিকেট দিয়ে তৈরি কঠিন ভূত্বক, তারপর অত্যন্ত আঠালো একটি ভূ-আচ্ছাদন বা ম্যান্টল (Mantle), একটি বহিঃস্থ মজ্জা বা কোর (Core) যেটি ম্যান্টলের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম আঠালো এবং সব শেষে একটি অন্তঃস্থ মজ্জা। পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন বৈজ্ঞানিক ভাবে বোঝার জন্য কোন স্থানের [[ভূসংস্থান]] এবং গভীরতা, বহিঃস্থ এবং অন্তঃস্থ [[শিলাস্তর]], আগ্নেয়গিরি এবং অগ্ন্যুৎপাত, মহাকর্ষীয় এবং [[তরিৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের]] পরিমাপ, ভূকম্পন তরঙ্গের বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়।
 
<br />
 
=== পৃথিবীর ভর ===
পৃথিবীর ভর নির্ণয় করার জন্য [[অভিকর্ষজ বল]] এর কারণে নির্গত শক্তি পরিমাপ করা হয়ে থাকে। এছাড়া জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম উপগ্রহের ঘূর্ণন থেকেও এটি পরিমাপ করতে পারেন। পৃথিবীর গড় ঘণত্ব পরিমাপ করা হয় অভিকর্ষীয় দোলক ব্যবহার করে।
পৃথিবীর ভর হলো ৬×১০<sup>২৪</sup> কিলোগ্রাম. [http://asa.usno.navy.mil/static/files/2016/Astronomical_Constants_2016.pdf]
৩৩ ⟶ ৩২ নং লাইন:
|-
| ৫,১৫০-৬,৩৬০ || ৩,১৬০-৩,৯৫৪ || অন্তঃস্থ মজ্জা
|}পৃথিবীর এই ধরনের স্তর বিন্যাস পরোক্ষ ভাবে বিভিন্ন সময়ে ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ভূ-কম্পন তরঙ্গের প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। ভূ-মজ্জার কোন একটি অংশে যখন শিয়ার ওয়েভের চেয়ে ভিন্ন গতিবেগের ভূ-কম্পন তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, তখন সাধারণত [[শিয়ার ওয়েভ|শিয়ার]] ওয়েভ বা মাধ্যমিক ভূ-তরঙ্গ ভূ-মজ্জার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না। আলো যে ভাবে প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাবার সময় বেঁকে যায়, সে ভাবে সেভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন স্তরে ভূ-কম্পন তরঙ্গ তার গতিবেগের ভিন্নতার কারণে প্রতিসৃত হয়; এই প্রতিসরণ হয়ে থাকে স্নেলের সূত্র অনুযায়ী। একইভাবে প্রতিফলনের কারণে ভূ-কম্পন তরঙ্গের গতিবেগ অনেক বেশি বেড়ে যায়, ঠিক যেভাবে আয়নায় প্রতিফলিত হয়ে আলো ছড়িয়ে যায় অনেক দিকে।
 
== ভূ-ত্বক ==
[[চিত্র:Earthquake wave paths.svg|থাম্ব|ভূমিকম্প তরঙ্গের সাহায্যে পৃথিবীর অভ্যন্তরীন চিত্র দেখানো হয়েছে। ]]
[[চিত্র:Slice earth.svg|থাম্ব|পৃথিবীর অভ্যন্তরীন অংশের বিন্যস্ত চিত্র।
1. মহাদেশীয় ভূ-ত্বক – 2. মহাসাগরীয় ভূ-ত্বক – 3. উপরস্থ ভূ-আচ্ছাদন – 4. নিম্নস্থ ভূ-আচ্ছাদন – 5. ভীঃস্থ মজ্জা – 6. অন্তঃস্থ মজ্জা – A: [[মহো বিচ্ছিন্নতা]]  – B: [[গুটেনবার্গ বিচ্ছিন্নতা]] – C: [[লেমান-বুলেন বিচ্ছিন্নতা]]
]]
[[চিত্র:Mohomap.png|থাম্ব|পৃথিবীর মানচিত্রে মহো বিচ্ছিন্নতা দেখানো হয়েছে।]]
সর্ববহিঃস্থ স্তরে পৃথিবীর ভূ-ত্বকের গভীরতা সাধারণত ৫-৭০ কিলোমিটার (৩.১-৪৩.৫ মাইল) হয়ে থাকে। এই পাতলা স্তরটিকে বলা হয় মহাসাগরীয় ভূ-ত্বক; যেটি [[সমুদ্র অববাহিকা]]<nowiki/>র (Ocean Baisn) (৫-১০ কিমি) নিচে অবস্থিত এবং ঘণ লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, সিলিকেট এবং বিভিন্ন ধরনের [[আগ্নেয় শিলা]] (যেমন, ব্যাসাল্ট) দিয়ে গঠিত। অপরদিকে, ভূ-ত্বকের তুলনামূলক পুরু স্তরটিকে বলে মহাদেশীয় ভূত্বক; যেটির ঘণত্ব মহাসাগরীয় ভূ-ত্বকের চেয়ে কম এবং সোডিয়াম, পটাশিয়াম, এলুমিনিয়াম ও সিলিকেট শিলা (যেমন- গ্র্যানাইট) দিয়ে গঠিত। ভূত্বকের শিলাগুলোকে দু’টো প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। তা হলো, ১-সিয়াল এবং ২-সিমা। হিসেব করা দেখা গেছে, [[কোনার্ড বিচ্ছিন্নতা]] (দ্বিতিয় ধাপের বিচ্ছিন্নতা) যেখানে শুরু হয়, তার ১১ কিমি নিচ থেকে শুরু হয় সিমা স্তর। সর্ববহিঃস্থ ভূ-আচ্ছাদন এবং ভূত্বককে নিয়ে [[অশ্বমন্ডল]] গঠিত।
 
দু’টো প্রাকৃতিক ঘটনার মধ্য দিয়ে ভূ-ত্বক এবং ভূ-আচ্ছাদনের মধ্যকার সীমারেখা তৈরি হয়েছে। প্রথমত, ভূকম্পন-গতিবেগ বা সিসমিক গতিবেগের বিচ্ছিন্নতা, যেটাকে মহো বিচ্ছিন্নতা হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। শিলাস্তরের উপর দিকে [[প্লেজিওক্লেস ফ্লেডস্পার]] (এক ধরনের এলুমিনিয়াম-পটাশিয়াম সংমিশ্রণ) থাকা এবং নিচের দিকে না থাকার তারতম্যের কারণে তৈরি হয় মহো বিচ্ছিন্নতা। দ্বিতীয়ত, মহাসাগরীয় ভূ-ত্বকের পুঁজিভূত আগ্নেয়শিলা এবং সুগঠিত পাতালিক শিলার মধ্যে এক ধরনের রাসায়নিক বিচ্ছিন্নতা কাজ করে। এই ঘটনাটি দেখা যায় মহাসাগরীয় ভূত্বকের সুগভীর অংশে, যেখানে [[অফিওলাইট ক্রম]] (ophiolite sequence) অনুযায়ী মহাদেশীয় ভূত্বকের উপর মহাসাগরীয় ভূ-ত্বক অভিলেপিত বা প্রলেপিত হয়েছে।
 
ভূত্বকের অনেক শিলাই গঠিত হয়েছে ১০ কোটি বছর আগে। সবচেয়ে পুরনো খনিজ পদার্থ যেটি পাওয়া গেছে তার বয়স হলো ৪.৪ বিলিয়ন বছর। অর্থাৎ ভূত্বকের বয়স অন্তত ৪.৪ বিলিয়ন বছর। [http://spaceflightnow.com/news/n0101/14earthwater/]
 
== ভূ-আচ্ছাদন ==
ভূ-আচ্ছাদনের গভীরতা ২,৮৯০ কিলোমিটার। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরু স্তর। দু'টো ভাগে ভাগ করা যায় ভূ-আচ্ছাদনকে; উচ্চ আচ্ছাদন এবং নিম্ন আচ্ছাদন। এই দু'টো স্তর একটি পরিবৃত্তি এলাকা (Transition Zone) দ্বারা বিভাজিত হয়েছে। ভূ-ত্বকের সর্বনিম্ন অংশ, যেটা ভূ-ত্বক এবং ভূ-আচ্ছাদনের সীমারেখায় অবস্থিত, সেটাকে বলা D″ (ডি ডাবল প্রাইম)। [http://www.sciencemag.org/news/2004/03/d-layer-demystified]