নভেরা আহমেদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা, বিষয়বস্তু সম্পাদনা, নিরপেক্ষতা আনয়ন
কাঠামো যৌক্তিকীকরণ, সম্পাদনা, তথ্য হালনাগাদকরণ, পাদটীকা সংযোজন
৫১ নং লাইন:
 
== প্রাথমিক জীবন ==
নভেরার জন্ম বাংলাদেশের [[সুন্দরবন|সুন্দরবনে]] মার্চ ২৯, ১৯৩৯ সালে।খ্রিস্টাব্দে ।<ref name="oxford">{{cite web |url=http://www.oxfordreference.com/view/10.1093/acref/9780199923014.001.0001/acref-9780199923014-e-2715 |title=অক্সফোর্ড রেফারেন্স |website=oxfordreference.com |publisher=[[অক্সফোর্ড]] |accessdate=মে ০৮, ২০১৫}}</ref> চাচা নাম রাখেন নভেরা। [[ফার্সি]] শব্দ ‘নভেরা’র অর্থ নবাগত, নতুন জন্ম। কর্মসূত্রে তার বাবা সৈয়দ আহমেদ কর্মরত ছিলেন সুন্দরবন অঞ্চলে। তবে পৈতৃক নিবাস [[চট্টগ্রাম|চট্টগ্রামের]] আসকারদিঘির উত্তর পাড়। পরবর্তীতে তার বাবা চাকরিসূত্রে কিছুকাল [[কলকাতা|কলকাতায়]] অবস্থার করায় নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতা শহরে। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তিনি নাচ, গান শেখার পাশাপাশি মাটি দিয়ে মূর্তি তৈরী (মডেলিং) করতেন।<ref name="নভেরা"/> তিনি কলকাতার [[লরেটা]] স্কুল থেকে প্রবেশিকা (ম্যাট্রিক) পাস করেন।<ref name="প্যারিসে প্রদর্শনী"/><ref name="চলে গেলেন"/><ref name="বিস্মৃত নভেরার"/>
 
১৯৪৭ সালেখ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনাধীন [[ভারত বিভাগ|ভারত বিভাগের]] পর তারা [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্ব পাকিস্তানের]] (বর্তমান [[বাংলাদেশ]]) [[কুমিল্লা|কুমিল্লায়]] চলে আসেন। এ সময় নভেরা কুমিল্লার [[কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ|ভিক্টোরিয়া কলেজে]] ভর্তি হন। পিতার অবসরগ্রহণের পর তাদের পরিবার আদি নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে স্থায়ী বসবাস শুরু করে। এরপর [[চট্টগ্রাম কলেজ|চট্টগ্রাম কলেজে]] ভর্তি হন তিনি। পরবর্তী আইন শিক্ষার জন্য তাকে বাড়ি থেকে লন্ডনে পাঠানো হয় ১৯৫০ সালে।খ্রিস্টাব্দে। তবে শৈশব থেকেই নভেরার ইচ্ছা ছিল ভাস্কর্য করার,; তাই তিনি সেখানে সিটি অ্যান্ড গিল্ডস্টোন কার্ভিং ক্লাসে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৫১ সালেখ্রিস্টাব্দে ভর্তি হন [[ক্যাম্বারওয়েল কলেজ অব আর্টস|ক্যাম্বারওয়েল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটসে]] ন্যাশনাল ডিপ্লোমা ইন ডিজাইনের মডেলিং ও স্কাল্পচার কোর্সে। সেখান পাঁচ বছর মেয়াদের ডিপ্লোমা কোর্স করার পর ১৯৫৫ সালে তিনি ইতালির [[ফ্লোরেন্স]] ও [[ভেনিস|ভেনিসে]] ভাস্কর্য বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন।<ref name="নভেরা"/><ref name="প্যারিসে প্রদর্শনী"/><ref name="চলে গেলেন"/><ref name="বিস্মৃত নভেরার"/><ref name="অবদান">{{cite news |author= |date=৩ মার্চ, ২০১৩ |title=নভেরা আহমেদ : বাংলাদেশের ভাস্কর্যে তার অবদান |url=http://online-dhaka.com/newsarchive/ni/12071/ |newspaper=online-dhaka.com |location=[[ঢাকা]] |accessdate=মে ০৮, ২০১৫}}</ref>
 
== কর্মজীবন ==
১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে নভেরা আহমেদ [[ফ্লোরেন্সে]] হামিদুরগমন রহমানকরেন। একসঙ্গেসঙ্গে ফ্লোরেন্সেছিলেন যান।শিল্পী [[হামিদুর রহমান ]]। প্রথমে তারা শিল্পী [[আমিনুল ইসলাম|আমিনুল ইসলামের]] আতিথ্য গ্রহণ করেন এবং পরে তিনজন একত্রে একটি স্টুডিওতে উঠে যান। নভেরা মাসপ্রায় দুয়েকদুই মাস শুধু ঘুরে দেখলেন। ডক্টর ফোগেল [[ভেন্তুরিনো ভেন্তুরির|ভেন্তুরিনো ভেন্তুরির]] নামে এক [[ইতালী|ইতালীয়]] শিল্পীর কাছে নভেরার নামপরিচিতি উল্লেখদিয়ে করে একটি চিঠি দিয়ে দিয়েছিলেন। এই শিল্পীর সাহচর্যে নভেরা [[দোনাতেল্লো|দোনাতেলোসহ]] প্রাচীন কয়েকজন শিল্পীর কাজের সঙ্গে পরিচিত হন এবং দু’মাস তার কাছে কাজ শেখেন। অতঃপর ফ্লোরেন্স থেকে ভেনিসে গেলেন নভেরা ও হামিদ এবং সেখানপরবর্কালে ভেনিস থেকে লন্ডন। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দেই [[বড়দিন|ক্রিসমাসের]] ছুটিতে নভেরা ও হামিদ প্যারিসে [[রঁদার]] মিউজিয়াম দেখতে গিয়েছিলেন। ভাস্কর্যের ছাত্রী স্বভাবতই অত্যন্ত অভিভূত হয়েছিলেন রঁদার কাজ দেখে। <ref name="নভেরা"/>
 
===কাজের ধারাস্টাইল===
=== কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা এবং বিতর্ক ===
[[চিত্র:নভেরা আহমেদ (০১).jpg|thumb|right|নভেরা তার ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে]]
[[চিত্র:First Shaheed Minar 1952.jpg|thumb|240px|right|১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার যেটি পাকিস্তান পুলিশ ও আর্মি ভেঙে ফেলে।]]
 
একজন ভাষ্কর্য্য শিল্পী হিসেবে নভেরা আহমেদের মূল প্রবণতা ''ফিগারেটিভ এক্সপ্রেশন''। তার কাজের প্রধান বিষয়বস্তু হচ্ছে নারী প্রতিমূর্তি। তবে নারী প্রতিমূর্তি নির্মাণে তিনি বিমূর্ততার দিকে ঝুঁকেছেন। কাজেরে স্টাইলের দিক থেকে তিনি ব্রিটিশ ভাষ্কর [[হেনরী মূর]] (১৮৯৮ - ১৯৮৬ খ্রি.) অনুবর্তী। পরবর্তী কালে আরো একজন ভাষ্কর একইভাবে হেনরী মূর দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়েছেন তিনি হলেন [[জুলিয়া কেইক]] (১৯৭৩ - )। নভেরা আহমেদ এবং জুলিয়া কেইক-এর কাজের মধ্যে আশ্চর্যজনক সমিলতা রয়েছে।
শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে নভেরা দেশে ফিরে আসেন। সেসময়ে ঢাকায় [[কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার]] নির্মাণের উদ্যোগ চলছিল। ভাস্কর হামিদুর রহমানের প্রাথমিক নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু করেন। এতে নভেরা আহমেদ জড়িত হন। স্থির হয় যে হামিদুর রহমানের নকশায় নির্মিত শহীদ মিনারে নভেরার তৈরী কিছু ভাষ্কর্য সংস্থাপিত হবে। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে সামরিক আইন জারী হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।<ref name="ফিরে দেখা"/> ফলস্বরূপ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জন্য ভাষ্কর্য নির্মাণের কাজ নভেরা সম্পন্ন করার সুযোগ লাভ করেন নি। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাতা হিসেবে তার নাম আর উচ্চারিত হয় নি। এ নিয়ে মৃদু বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই মনে করেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশাকারী হিসেবে নভেরার অবদান রয়েছে।<ref name="চলে গেলেন"/><ref>[শিল্প ও শিল্পী- চিত্রকলা ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক, ২য় বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, সেপ্টেম্বর সংখ্যা]</ref> <ref name="নভেরা"/> <ref>সৈয়দ শামসুল হক তার হৃৎকলমের টানে সংকলনটিতে এ-প্রসঙ্গে বলেছেন, "…হামিদুর রহমান চিত্রকর, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পরিকল্পনাকারী শিল্পী দু’জনের একজন, অপরজন ভাস্কর নভেরা আহমেদ।" তিনি এছাড়াও লিখছেন, "…মনে পড়ে গেল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন যে দু’জন তাদের একজনের কথা আমরা একেবারেই ভুলে গিয়েছি। প্রথমত আমরা একেবারেই জানি না এই মিনারের নকশা কারা করেছিলেন, যদিও বা কেউ জানি তো জানি শুধু শিল্পী হামিদুর রহমানের নাম, খুব কম লোকে চট করে মনে করতে পারে যে হামিদের সঙ্গে আরো একজন ছিলেন – হামিদের সঙ্গে ছিলেন বলাটা ভুল, বলা উচিত দু’জনে একসঙ্গে এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের রূপটি রচনা করেছিলেন। অপর সেই ব্যক্তিটি হচ্ছেন নভেরা আহমেদ।"<ref name="নভেরা"/></ref> <ref>স্থপতি [[রবিউল হুসাইন]] ‘ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে স্থাপত্য ভাস্কর্যের সর্বপ্রথম উদাহরণ হচ্ছে শিল্পী হামিদুর রাহমান, ভাস্কর নভেরা আহমেদ এবং স্থপতি জাঁ দেলোরা কর্তৃক নকশাকৃত ভাষা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।</ref>
 
তার কাজের প্রধান দিক হচ্ছে নারীদের প্রতিমূর্তি। সমসাময়িক পুরুষ শিল্পীরা ইউরোপীয় ইন্দ্রিয় সুখাবহ নারীদেহে একটি রোমান্টিক ইমেজ দেবার চেষ্ট করেন। এমনকি [[জয়নুল আবেদীন|জয়নুল]], [[কামরুল হাসান|কামরুলরা]] নারীকে মাতা, কন্যা, স্ত্রী এবং অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেখালেও নারীদের যথার্থ কর্মময় জীবন উহ্যই ছিল। তিনিনভেরা আহমেদ নারীকে দেখলেনদেখেছেন সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে, পুরুষ শিল্পীদের উপস্থাপনার বিপরীতে। তার কাজে নর-নারীর কম্পোজিশনগ্রন্থনা একটি ঐক্য গঠন করে। তিনি ভাসা ভাসা সুন্দর আনন্দময়ী আদর্শ ফর্ম গঠনকরার করতে চান নি।পরিবর্তে তার ফর্মগুলোকে সরল, অর্থপূর্ণ, স্বকীয়তায় সমৃদ্ধ করেছেন। উন্মোচন করেছেন সবধরণের বিচলিত, আবেগমথিত, সত্যিকারের নারীর রূপকে। মা শক্তিদায়ী, সংকল্পবদ্ধ, অকপট, মৌন আকর্ষণরূপে উদভাসিত। ''দি লং ওয়েট'' কাজটি তারই নমুনা। তার মায়েরা সুন্দরী নয়, কিন্তু শক্তিময়ী, জোড়ালো ও সংগ্রামী। কখনো কখনো তারা মানবিকতার ধ্রুপদী প্রতীক। নভেরার কজের পর্যালোচনা: বৃটেনের সমালোচক ম্যারি মারশাল নভেরার দি লং ওয়েট কাজটি সম্পর্কে বলেন যে- 'এইটি অত্যন্ত চমৎকার ও অদ্ভুত উদাহরণ যেখানে হতাশায় পিছিয়ে পড়া নারী মুক্তির পথ খুঁজছে দৃঢ়তার সাথে।'{{Cref2|খ}}
১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্ব পাকিস্তানের]] মুখ্যমন্ত্রী [[আতাউর রহমান খান]] শহীদ মিনারের পরিকল্পনা প্রণয়ন করার অনুরোধ করেন প্রধান প্রকৌশলী জব্বার এবং [[জয়নুল আবেদীন|জয়নুল আবেদিনকে]]। জব্বার সাহেবের অন্যতম সহকর্মী ছিলেন প্রকৌশলী শফিকুল হক, নভেরার বড় বোন কুমুম হকের স্বামী। শহীদ মিনারের নকশার জন্য কাগজে কোনো বিজ্ঞাপন হয়নি। জয়নুল আবেদিন সরাসরি হামিদকে বলেছিলেন স্কেচসহ মডেল পেশ করতে। জাঁ দেলোরা তখন সরকারের স্থাপত্যবিষয়ক উপদেষ্টা। হামিদুর রাহমান শহীদ মিনারের যে মডেল ও স্কেচ উপস্থাপন করেছিলেন দেলোরা তার স্তম্ভগুলোর মাপ পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন।
 
নভেরা তার শিল্পকর্মে একঘেয়েমি কাটাতে পরবর্তীতে কতগুলো কাজে ভিন্নমাত্রা সংযোজন করেছিলেন। যেমন: নগ্ন নারী মুর্তি, লম্বা গ্রীবা ও মাথার এনাটমিতে বাংলাদেশের ‘কণ্যা‘কন্যা-পুতুলের’ আঙ্গিকের পাশাপাশি হাত-পা-শরীরের অবস্থান স্থাপনের ক্ষেত্রে [[মদীয়ানির]] ফর্ম ও ড্রইভের সুষমা, স্তন ও শরীরের উপস্থাপনায় মহেঞ্জোদারোর ‘বালিকা-মূর্তির’ প্রাচ্য অভিলাষকে একত্রিত করেছেন। অন্যদিকে প্লাস্টার অব প্যারিসে নির্মিত দু’টি ভাস্কর্যে মুখমন্ডল বহুলাংশে বাস্তবধর্মী, সামান্য [[গান্ধারা শিল্পধারায়]] প্রভাবিত। সম্ভবত এই মস্তক দু’টি বুদ্ধের মস্তকের অণুকরনেঅনুকরণে অণুকৃতি।<ref name="অবদান"/>
==কাজের ধারা==
[[চিত্র:নভেরা আহমেদ (০১).jpg|thumb|right|নভেরা তার ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে]]
 
নভেরার বেশকিছু ভাস্কর্যে আবহমান বাংলার লোকজ আঙ্গিকের আভাস পাওয়া যায়। তবে লোকজ ফর্মের সাথে সেখানে পাশ্চাত্য শিক্ষার সমন্বয়ও বর্তমান। লোকজ [[টেপা পুতুলের]] ফর্মকে সরলীকৃত করে তাকে দক্ষতার সাথে বিশেষায়িত করেছেন তিনি। এভাবে ঐতিহ্যের সাথে পাশ্চাত্য শিক্ষার স্বার্থক ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা তার আধুনিক চিন্তার লক্ষণ। এক্ষেত্রে তার ভাস্কর্যগুলো আদলে তিনকোনা, চোখ ছিদ্র, লম্বা গ্রীবা অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হিসেবে আসে।
শহীদ মিনারের মূল যে-স্তম্ভটি, যাকে মাতৃমূর্তির রূপক মনে করা হয় তার আনতভঙ্গি প্রথমে যেটি হামিদুর রাহমান ও নভেরা আহমেদের উপস্থিতিতে নির্মিত হয় সেটি বর্তমানের মাতৃমূর্তিটির মতো কৌণিক ছিল না। নভেরার Seated Woman নামে তিনটি কাজ আছে – কোমল ভঙ্গিতে মা দৃষ্টিনত করে রেখেছে কোলের সন্তানের প্রতি। নভেরার এই মাতৃমূর্তিগুলো [[সুইজারল্যান্ড|সুইজারল্যান্ডের]] জারম্যাটে ম্যাটার হর্ন (মাদার হর্ন) নামে যে-পর্বত শৃঙ্গটি আছে তার সঙ্গে তুলনা করা যায় – নভেরা সেখানে গিয়ে না দেখলেও অন্তত ছবিতে দেখেছেন – সেই সুউচ্চ পর্বত আর তার আনত শৃঙ্গের সঙ্গে নভেরার ঈষৎ আনত মাতৃমূর্তির সাদৃশ্য আছে, বিশেষভাবে সাদৃশ্য আছে শহীদ মিনারের মাতৃমূর্তির সঙ্গে, সেই পর্বতের সঙ্গে দেশমাতৃকার তুলনা চলে – সন্তানের প্রতি আশীর্বাদ ও স্নেহ আনত যার অপরাজেয় শৃঙ্গ। সাদেক খান বলেন, ‘এ ধরনের বিমূর্ত কাজ তখন নভেরা ছাড়া আর কেউ করেনি।' ‘৫৮ সালের অক্টোবর মাসে সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর শহীদ মিনারের কাজ সাময়িকভাবে স্থগিত থাকে। তবে মিনারের মূল বা সম্পূর্ণ পরিকল্পনা কোনোদিনই বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর হামিদ একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে যোগ দেবার জন্য আমেরিকায় যান এবং নভেরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ শুরু করেন। কিন্তু হাবার্ট রিডের উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে হয়, ‘ভাস্করের কাজ কবি বা চিত্রশিল্পীর মতো নয়, ভাস্কর্যের জন্য দরকার খোলা জায়গার, চার্চ বা মার্কেট প্লেসের কারণ সে কাজ রাজসিক ভঙ্গিতে সবকিছুকে ছাড়িয়ে যাবে এবং সকলের দৃষ্টিগ্রাহ্য হবে। কিন্তু এ-ধরনের সুযোগ তখন আমাদের দেশে বিশেষ ছিল না এবং সরকার বা ধনী লোকের পৃষ্ঠপোষকতার একান্ত প্রয়োজন ছিল। নভেরা তেজগাঁওয়ের এক ধনী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একটি কমিশন পেয়েছিলেন – এর ওপর [[সৈয়দ শামসুল হক|সৈয়দ শামসুল হকের]] একটি মন্তব্য আছে, ‘… একটু হকচকিয়ে যেতে হতো এই ভেবে যে সে একজন বাঙালি মুসলমান তার বাড়ির বাগান সাজাবার জন্যে একটি ভাস্কর্য কিনেছেন। এবং সে-ভাস্কর্যটি নারী মূর্তি নয়, কোমলপ্রাণ ও চিত্রিত দেহ কোনো পশুমূর্তি নয় কিংবা ছাঁচে ঢালা কারখানা থেকে বেরিয়ে আসা কোনো সস্তা কাজও নয়, এক প্রতিভাবান তরুণ শিল্পীর বিমূর্ত ও পরীক্ষামূলক একটি কাজ।’ এ কাজটিতে নভেরা গ্রামীণ একটি বিষয় ব্যবহার করেছেন – এখানে মানুষ ও গরুর পা এবং শরীর একীভূত হয়ে গেছে – এভাবেই গরুর ও মানুষ উভয়ের ওপর উভয়ের নির্ভরশীলতা বোঝানো হয়েছে। ভাস্কর্যটির কিছু কিছু অংশ বৃত্তাকারে কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের রেকিট অ্যান্ড কোলম্যান অফিস এবং ঢাকার [[বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন|অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের]] সামনের লনে নভেরার আরো দুটি কাজ আছে। কাজ দুটি আয়তনে তেমন বড় নয়, উচ্চতায় তিন ফুটের মতো। প্রথমটি অ্যাবস্ট্রাক্ট কাজ, দ্বিতীয়টি অ্যাবস্ট্রাকটেড মাতৃমূর্তি। ’৫৯ সালে নভেরা বার্মা (মিয়ানমার) গিয়েছিলেন বৌদ্ধমন্দির দেখার জন্য – সেখান থেকে ফিরে বুদ্ধের আসন বা পিস নামকরণে কয়েকটি কাজ করেছেন এবং কয়েকটি ফর্মে কাজটি করেছেন।<ref name="নভেরা"/>
 
১৯৫৮তে সম্পন্ন ''পরিবার'' নামীয় কাজটিতে নভেরা গ্রামীণ একটি বিষয় ব্যবহার করেছেন – এখানে মানুষ ও গরুর পা এবং শরীর একীভূত হয়ে গেছে – এভাবেই গরুর ও মানুষ উভয়ের ওপর উভয়ের নির্ভরশীলতা বোঝানো হয়েছে। ভাস্কর্যটির কিছু কিছু অংশ বৃত্তাকারে কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের রেকিট অ্যান্ড কোলম্যান অফিস এবং ঢাকার [[বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন|অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের]] সামনের লনে নভেরার আরো দুটি কাজ আছে। কাজ দুটি আয়তনে তেমন বড় নয়, উচ্চতায় তিন ফুটের মতো। প্রথমটি অ্যাবস্ট্রাক্ট কাজ, দ্বিতীয়টি অ্যাবস্ট্রাকটেড মাতৃমূর্তি। ’৫৯ সালে নভেরা বার্মা (মিয়ানমার) গিয়েছিলেন বৌদ্ধমন্দির দেখার জন্য – সেখান থেকে ফিরে বুদ্ধের আসন বা পিস নামকরণে কয়েকটি কাজ করেছেন এবং কয়েকটি ফর্মে কাজটি করেছেন।<ref name="নভেরা"/>
নভেরার বেশকিছু ভাস্কর্যে আবহমান বাংলার লোকজ আঙ্গিকের আভাস পাওয়া যায়। তবে লোকজ ফর্মের সাথে সেখানে পাশ্চাত্য শিক্ষার সমন্বয়ও বর্তমান। লোকজ টেপা পুতুলের ফর্মকে সরলীকৃত করে তাকে দক্ষতার সাথে বিশেষায়িত করেছেন তিনি। এভাবে ঐতিহ্যের সাথে পাশ্চাত্য শিক্ষার স্বার্থক ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা তার আধুনিক চিন্তার লক্ষণ। এক্ষেত্রে তার ভাস্কর্যগুলো আদলে তিনকোনা, চোখ ছিদ্র, লম্বা গ্রীবা অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হিসেবে আসে।
 
== নির্মিত ভাস্কর্য ==
তার কাজের প্রধান দিক হচ্ছে নারীদের প্রতিমূর্তি। সমসাময়িক পুরুষ শিল্পীরা ইউরোপীয় ইন্দ্রিয় সুখাবহ নারীদেহে একটি রোমান্টিক ইমেজ দেবার চেষ্ট করেন। এমনকি [[জয়নুল আবেদীন|জয়নুল]], [[কামরুল হাসান|কামরুলরা]] নারীকে মাতা, কন্যা, স্ত্রী এবং অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেখালেও নারীদের যথার্থ কর্মময় জীবন উহ্যই ছিল। তিনি নারীকে দেখলেন সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে, পুরুষ শিল্পীদের উপস্থাপনার বিপরীতে। তার কাজে নর-নারীর কম্পোজিশন একটি ঐক্য গঠন করে। তিনি ভাসা ভাসা সুন্দর আনন্দময়ী আদর্শ ফর্ম গঠন করতে চান নি। তার ফর্মগুলোকে সরল, অর্থপূর্ণ, স্বকীয়তায় সমৃদ্ধ করেছেন। উন্মোচন করেছেন সবধরণের বিচলিত, আবেগমথিত, সত্যিকারের নারীর রূপকে। মা শক্তিদায়ী, সংকল্পবদ্ধ, অকপট, মৌন আকর্ষণরূপে উদভাসিত। দি লং ওয়েট কাজটি তারই নমুনা। তার মায়েরা সুন্দরী নয়, কিন্তু শক্তিময়ী, জোড়ালো ও সংগ্রামী। কখনো কখনো তারা মানবিকতার প্রতীক। নভেরার কজের পর্যালোচনা: বৃটেনের সমালোচক ম্যারি মারশাল নভেরার দি লং ওয়েট কাজটি সম্পর্কে বলেন যে- 'এইটি অত্যন্ত চমৎকার ও অদ্ভুত উদাহরণ যেখানে হতাশায় পিছিয়ে পড়া নারী মুক্তির পথ খুঁজছে দৃঢ়তার সাথে।'
১৯৬১ সালেখ্রিস্টাব্দে ''অল পাকিস্তান পেইন্টিং অ্যান্ড স্কাল্পচার এক্সিবিশন'' আয়োজন হয়। সে সময়ে দশ বছর বয়সি একটি ছেলে ঘরের কাজে নভেরাকে সাহায্য করত। এই প্রদর্শনীর জন্য নভেরা তারই একটি আবক্ষমূর্তি তৈরি করলেন এবং নাম দিলেন ''[[চাইল্ড ফিলোসফার]]''। এই ভাস্কর্যের জন্য তিনি সেই প্রদর্শনীতে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন।<ref name="ফিরে দেখা"/> অবয়বধর্মী ভাস্কর্য ''[[এক্সট্রিমিনেটিং এঞ্জেল]]'', ছয় ফুটের অধিক উচ্চতাবিশিষ্ট স্টাইলাইজড ভাস্কর্যটিতে বিধৃত হয়েছে শকুনের শ্বাসরোধকারী একজন নারীর অবয়ব; নারীর হাতে অশুভ শক্তি ও মৃত্যুর পরাভবের প্রতীক।
 
তৎকালীন [[পাকিস্তান|পশ্চিম পাকিস্তানে]] ভাস্কর হিসেবে নিজের একটা দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে সমর্থ হয়েছিলেন নভেরা। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অধিকাংশই বেশ বড় আকারের; ৫ ফুট থেকে শুরু করে এমনকি ৭ ফুট ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত উচ্চতাবিশিষ্ট। একই বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মিত একাধিক ভাস্কর্যের মধ্যে ''পরিবার'' (১৯৫৮), ''যুগল'' (১৯৬৯), ''ইকারুস'' (১৯৬৯) ইত্যাদি কাজে মাধ্যমগত চাহিদার কারণেই অবয়বগুলি সরলীকৃত। ওয়েলডেড স্টিলের ''জেব্রা ক্রসিং'' (১৯৬৮), দুটি ''লুনাটিক টোটেম'' ইত্যাদির পাশাপাশি রয়েছে ব্রোঞ্জ মাধ্যমে তৈরি দন্ডায়মান অবয়ব। এছাড়া কয়েকটি রিলিফ ভাস্কর্য ও স্ক্রল। ''লুনাটিক টোটেম'' বা ''মেডিটেশন'' (১৯৬৮) এই দুটি ভাস্কর্যে শিল্পীর মরমি অনুভবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কোথাওবা রয়েছে আদিম ভাস্কর্যরীতি থেকে পরিগ্রহণ। তবে একেবারে ভিন্ন রীতির কাজও ছিল এই প্রদর্শনীতে। বস্ত্ততপক্ষে তেত্রিশটি শিল্পকর্মের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ এগারোটিই ছিল পরিত্যক্ত ভাস্কর্য। ইন্দোচীনে ভূপাতিত মার্কিন যুদ্ধবিমানের ভগ্নাবশেষ থেকে তৈরি।
নভেরা তার শিল্পকর্মে একঘেয়েমি কাটাতে পরবর্তীতে কতগুলো কাজে ভিন্নমাত্রা সংযোজন করেছিলেন। যেমন: নগ্ন নারী মুর্তি, লম্বা গ্রীবা ও মাথার এনাটমিতে বাংলাদেশের ‘কণ্যা-পুতুলের’ আঙ্গিকের পাশাপাশি হাত-পা-শরীরের অবস্থান স্থাপনের ক্ষেত্রে মদীয়ানির ফর্ম ও ড্রইভের সুষমা, স্তন ও শরীরের উপস্থাপনায় মহেঞ্জোদারোর ‘বালিকা-মূর্তির’ প্রাচ্য অভিলাষকে একত্রিত করেছেন। অন্যদিকে প্লাস্টার অব প্যারিসে নির্মিত দু’টি ভাস্কর্যে মুখমন্ডল বহুলাংশে বাস্তবধর্মী, সামান্য গান্ধারা শিল্পধারায় প্রভাবিত। সম্ভবত এই মস্তক দু’টি বুদ্ধের মস্তকের অণুকরনে অণুকৃতি।<ref name="অবদান"/>
 
২০১৫ অবধি বিস্তৃত জীবনের দৈর্ঘের তুলনায় নভেরা আহমেদের শিল্পকর্মের সংখ্যা কম। ষাট দশকের শেষভাগের মধ্যেই তাঁর যা কিছু সৃষ্টি ও নির্মাণ। ১৯৭৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত প্যারিসের স্বেচ্ছানির্বাসনের জীবন পরিধিতি তিনি খুবই কম কাজ করেছেন। এ সময় অবশ্য তিনি কিছু ছবি এঁকেছেন।
 
== অংকিত চিত্রকর্ম ==
১৯৭৩ থেকে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্যারিসের স্বেচ্ছানির্বাসনের জীবন পরিধিতি তিনি তিনি কিছু ছবি এঁকেছেন। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর পর ৪৩টি চিত্রকর্র্মের হদিশ করা গেছে।
 
=== সংগ্রহ ===
নভেরা আহমেদের কাজের সর্ববৃহৎ সংগ্রহ রয়েছে ঢাকাস্থ [[বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর|বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর]]। এছাড়া প্যারিসে তার স্বামীর স্টুডিয়োতে ৯টি ভাষ্কর্য ও ৪৩টি অঙ্কিত চিত্র রয়েছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়ের লবিতে দীর্ঘকাল রক্ষিতি একটি ভাষ্কর্য ২০১৫’র শেষ ভাগে জাতীয় জাদুঘরে সংগ্রহ করা হয়। নভেরা আহমেদের ''পরিবার'' ও আরো একটি কাজ জাতীয় জাদুঘরের ৩৭ সংখ্যক গ্যালারিতে প্রদর্শন করা হয়। ''পরিবার'' কাজটি ফার্মগটের কাছে জনাব এম আর খানের বাড়ীর উদ্যানে স্থাপিত ছিল যা ইতোপূর্বে জাতীয় জাদুঘর সংগ্রহ করে ২০১৬]র মধ্যভাগ জাদুঘরের উদ্যানে স্থাপিত রাখে। পরে প্রাকৃতিক ক্ষতি এড়ানোর জন্য তা জাদুঘরের মূল ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। চট্টগ্রামের [[রেকিট অ্যান্ড কোলম্যান]]-এর বাংলাদেশ কার্যালয়ে এবং ঢাকার [[বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন|অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের]] সামনের উদ্যানে নভেরার আরো দুটি কাজ সংস্থাপিত আছে।<ref name="নভেরা"/>
 
=== কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা এবং বিতর্ক ===
[[চিত্র:First Shaheed Minar 1952.jpg|thumb|240px|right|১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার যেটি পাকিস্তান পুলিশ ও আর্মি ভেঙে ফেলে।]]
 
শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে নভেরা দেশে ফিরে আসেন। সেসময়েসে সময়ে ঢাকায় [[কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার]] নির্মাণের উদ্যোগ চলছিল। ভাস্কর হামিদুর রহমানের প্রাথমিক নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু করেন। এতে নভেরা আহমেদ জড়িত হন। স্থির হয় যে হামিদুর রহমানের নকশায় নির্মিত শহীদ মিনারে নভেরার তৈরী কিছু ভাষ্কর্য সংস্থাপিত হবে। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে সামরিক আইন জারী হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।<ref name="ফিরে দেখা"/> ফলস্বরূপ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জন্য ভাষ্কর্য নির্মাণের কাজ নভেরা সম্পন্ন করার সুযোগ লাভ করেন নি। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাতা হিসেবে তার নাম আর উচ্চারিত হয় নি। এ নিয়ে মৃদু বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই মনে করেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশাকারী হিসেবে নভেরার অবদান রয়েছে।<ref name="চলে গেলেন"/><ref>[শিল্প ও শিল্পী- চিত্রকলা ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক, ২য় বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, সেপ্টেম্বর সংখ্যা]</ref> <ref name="নভেরা"/> <ref>সৈয়দ{{Cref2|গ}} শামসুল হক তার হৃৎকলমের টানে সংকলনটিতে এ-প্রসঙ্গে বলেছেন, "…হামিদুর রহমান চিত্রকর, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পরিকল্পনাকারী শিল্পী দু’জনের একজন, অপরজন ভাস্কর নভেরা আহমেদ।" তিনি এছাড়াও লিখছেন, "…মনে পড়ে গেল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন যে দু’জন তাদের একজনের কথা আমরা একেবারেই ভুলে গিয়েছি। প্রথমত আমরা একেবারেই জানি না এই মিনারের নকশা কারা করেছিলেন, যদিও বা কেউ জানি তো জানি শুধু শিল্পী হামিদুর রহমানের নাম, খুব কম লোকে চট করে মনে করতে পারে যে হামিদের সঙ্গে আরো একজন ছিলেন – হামিদের সঙ্গে ছিলেন বলাটা ভুল, বলা উচিত দু’জনে একসঙ্গে এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের রূপটি রচনা করেছিলেন। অপর সেই ব্যক্তিটি হচ্ছেন নভেরা আহমেদ।"<ref name="নভেরা"/></ref> <ref>স্থপতি [[রবিউল হুসাইন]] ‘ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে স্থাপত্য ভাস্কর্যের সর্বপ্রথম উদাহরণ হচ্ছে শিল্পী হামিদুর রাহমান, ভাস্কর নভেরা আহমেদ এবং স্থপতি জাঁ দেলোরা কর্তৃক নকশাকৃত ভাষা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।</ref>{{Cref2|ঘ}}
 
১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্ব পাকিস্তানের]] মুখ্যমন্ত্রী [[আতাউর রহমান খান]] শহীদ মিনারের পরিকল্পনা প্রণয়ন করার অনুরোধ করেন প্রধান প্রকৌশলী জব্বার এবং [[জয়নুল আবেদীন|জয়নুল আবেদিনকে]]। জব্বার সাহেবের অন্যতম সহকর্মী ছিলেন প্রকৌশলী শফিকুল হক, নভেরার বড় বোন কুমুম হকের স্বামী। শহীদ মিনারের নকশার জন্য কাগজে কোনো বিজ্ঞাপন হয়নি। জয়নুল আবেদিন সরাসরি হামিদকে বলেছিলেন স্কেচসহ মডেল পেশ করতে। জাঁ দেলোরা তখন সরকারের স্থাপত্যবিষয়ক উপদেষ্টা। হামিদুর রাহমান শহীদ মিনারের যে মডেল ও স্কেচ উপস্থাপন করেছিলেন দেলোরা তার স্তম্ভগুলোর মাপ পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন।
 
== প্রদর্শনী ==
৮১ ⟶ ৯৬ নং লাইন:
নভেরার দ্বিতীয় একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে ব্যাংককে। এই প্রদর্শনীটি ছিল ব্যাংককে ধাতব ভাস্কর্যের প্রথম মুক্তাঙ্গন প্রদর্শনী। এতে নভেরা ধাতব মাধ্যমে কিছু ভাস্কর্য প্রদর্শন করেন। [[ব্রোঞ্জ]] ছাড়াও এ-পর্বে নভেরা তাঁর ভাস্কর্যের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেছেন শিট মেটাল এবং ঝালাইকৃত বা ওয়েলডেড ও স্টেইনলেস স্টিল। ব্যাংকক আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের আয়োজনে প্রদর্শনী চলেছিল ১৯৭০ সালের ১৪ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত, ২৯ থানন সাথর্ন তাই, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভবনে। প্রদর্শনী আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন থাইল্যান্ডে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত রব, শিল্পাকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলংকারিক শিল্পকলা অনুষদের ডিন যুবরাজ ইয়াৎচাই চিত্রাবংস, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের ডিরেক্টর মাহমুদ-আল-হক। উদ্বোধন করেছিলেন শৌখিন চিত্রকর ও ভাস্কর যুবরাজ কারাবিক চক্রবন্ধু।
 
১৯৭৩ সালেখ্রিস্টাব্দে জুলাই মাসে তার তৃতীয় একক প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছিল প্যারিসের [[রিভগেস]] গ্যালারিতে। সর্বশেষ ২০১৪ সালেখ্রিস্টাব্দে প্যারিসে তার পূর্বাপর কাজের একশ দিনব্যাপী একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। ১৯৮৮ সালেখ্রিস্টাব্দে প্যারিসে অবস্থানকালে ব্যাংককের আলিয়ঁস ও পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস যৌথভাবে তার একটি একক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ৪১ বছর পর ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি প্যারিসের গ্যালারি রিভগেসে নভেরা আহমেদের রেট্রোসপেকটিভ প্রদর্শনী শিল্পকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।<ref name="বিস্মৃত নভেরার">{{cite news |author=রফি হক |date=মার্চ ০৭, ২০১৪ |title=বিস্মৃত নভেরার ফিরে আসা |url=http://www.jugantor.com/founding-special-issue/2014/03/07/75153 |newspaper=[[দৈনিক যুগান্তর]] |location=[[ঢাকা]] |accessdate=মে ০৮, ২০১৫}}</ref> প্রায় একশো দিন ব্যাপী (১৬ জানুয়ারি–২৬ এপ্রিল ২০১৪) প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছে তার ১৯৬৯–২০১৪ কালপর্বের ৫১টি শিল্পকর্ম, যার মধ্যে রয়েছে ৪২টি চিত্রকর্ম ও নয়টি ভাস্কর্য।<ref name="প্যারিসে প্রদর্শনী">{{cite news |author=আনা ইসলাম |date=জানুয়ারি ১৭, ২০১৪ |title=প্যারিসে নভেরার প্রদর্শনী |url=http://www.prothom-alo.com/art-and-literature/article/124657/প্যারিসে-নভেরার-প্রদর্শনী |newspaper=[[দৈনিক প্রথম আলো]] |location=[[ঢাকা]] |accessdate=মে ০৭, ২০১৫}}</ref>
 
২০১৫ খ্রিস্টাব্দে [[বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর]] নভেরার জীবন ও কর্মেরআদ্যন্ত শিল্পকর্মের ওপর একটি মাসব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ৭ থেকে ১৯ অক্টোবর ২০১৫ এই দুই সপ্তাহব্যাপাী প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী চিত্রশালায়। এতে নভেরার ৩৫টি শিল্প কর্ম প্রদর্শিত হয়।
 
== নির্মিত ভাস্কর্য ==
১৯৬১ সালে ''অল পাকিস্তান পেইন্টিং অ্যান্ড স্কাল্পচার এক্সিবিশন'' আয়োজন হয়। সে সময়ে দশ বছর বয়সি একটি ছেলে ঘরের কাজে নভেরাকে সাহায্য করত। এই প্রদর্শনীর জন্য নভেরা তারই একটি আবক্ষমূর্তি তৈরি করলেন এবং নাম দিলেন ''[[চাইল্ড ফিলোসফার]]''। এই ভাস্কর্যের জন্য তিনি সেই প্রদর্শনীতে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন।<ref name="ফিরে দেখা"/> অবয়বধর্মী ভাস্কর্য ''[[এক্সট্রিমিনেটিং এঞ্জেল]]'', ছয় ফুটের অধিক উচ্চতাবিশিষ্ট স্টাইলাইজড ভাস্কর্যটিতে বিধৃত হয়েছে শকুনের শ্বাসরোধকারী একজন নারীর অবয়ব; নারীর হাতে অশুভ শক্তি ও মৃত্যুর পরাভবের প্রতীক।
 
তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে ভাস্কর হিসেবে নিজের একটা দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে সমর্থ হয়েছিলেন নভেরা। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অধিকাংশই বেশ বড় আকারের; ৫ ফুট থেকে শুরু করে এমনকি ৭ ফুট ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত উচ্চতাবিশিষ্ট। একই বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মিত একাধিক ভাস্কর্যের মধ্যে ''পরিবার'' (১৯৫৮), ''যুগল'' (১৯৬৯), ''ইকারুস'' (১৯৬৯) ইত্যাদি কাজে মাধ্যমগত চাহিদার কারণেই অবয়বগুলি সরলীকৃত। ওয়েলডেড স্টিলের ''জেব্রা ক্রসিং'' (১৯৬৮), দুটি ''লুনাটিক টোটেম'' ইত্যাদির পাশাপাশি রয়েছে ব্রোঞ্জ মাধ্যমে তৈরি দন্ডায়মান অবয়ব। এছাড়া কয়েকটি রিলিফ ভাস্কর্য ও স্ক্রল। ''লুনাটিক টোটেম'' বা ''মেডিটেশন'' (১৯৬৮) এই দুটি ভাস্কর্যে শিল্পীর মরমি অনুভবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কোথাওবা রয়েছে আদিম ভাস্কর্যরীতি থেকে পরিগ্রহণ। তবে একেবারে ভিন্ন রীতির কাজও ছিল এই প্রদর্শনীতে। বস্ত্ততপক্ষে তেত্রিশটি শিল্পকর্মের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ এগারোটিই ছিল পরিত্যক্ত ভাস্কর্য। ইন্দোচীনে ভূপাতিত মার্কিন যুদ্ধবিমানের ভগ্নাবশেষ থেকে তৈরি।
 
== পুরস্কার ওবং স্বীকৃতি ==
১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে ভাস্কর হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তিনি। ''ন্যাশনাল এক্সিবিশন অব পেইন্টিং স্কাল্পচার এ্যান্ড গ্রাফিক আর্টস'' শিরোনমে এই প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া তার ছ’টি ভাস্কর্যের মধ্যে ''[[চাইল্ড ফিলোসফার]]'' নামে একটি ভাস্কর্য বেস্ট স্কাল্পচারে পুরস্কৃত হয়।<ref name="ফিরে দেখা"/>
 
পরে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ রেসামরিকবেসামরিক সম্মাননা [[একুশে পদক|একুশে পদকে]] ভূষিত হয়েছেন।<ref name="চলে গেলেন"/> তাকে নিয়ে ''নভেরা'' (১৯৯৫) শিরোনামে জীবনী উপন্যাস রচনা করেছেন [[হাসনাত আবদুল হাই]]।<ref name="ফিরে দেখা">{{cite news |author=মিলু শামস |date=জুলাই ২৯, ২০১২ |title=ফিরে দেখা নভেরা আহমেদ |url=http://oldsite.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=13&dd=2012-07-29&ni=104614 |newspaper=[[দৈনিক জনকণ্ঠ]] |location=[[ঢাকা]] |accessdate=মে ০৭, ২০১৫}}</ref> নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্য চিত্র ''নহন্যতে'' (১৯৯৯)। এক সময় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের একটি হলের নামকরণ করা হয়েছিল "ভাস্কর নভেরা আহমেদ হল"। বর্তমানে [[বাংলা একাডেমী]]’র একটি হলের নাম ''নভেরা হল''।
 
== ব্যক্তিগত জীবন ==
স্থায়ীভাবে চট্টগ্রামে বসবাস করার সময় এক পুলিশ অফিসারের সাথে নভেরার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।<ref name="নভেরা"/><ref name="নভেরা=হাই">{{cite book |author=[[হাসনাত আব্দুল হাই]] |title=নভেরা আহমেদ |url= |accessdate= |type= |edition= |publication-date= |publisher= |location=[[ঢাকা]] |language=[[বাংলা ভাষা|বাংলা]] |isbn= |page=৩৮৯ |chapter= |quote= }}</ref> প্যারিসে অবস্থান কালে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে পঁয়তাল্লিশ বৎসর বয়সে তিনি গ্রেগরি দ্য বুনস (Gregoire de Brouhns) বিয়ে করেন। ২০১৫-এ মৃত্যু অবধি এই দম্পতি এক সঙ্গেই ছিলেন।
 
=== শেষ জীবন ===
১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে দেশ ত্যাগ করার পর প্যারিসে বসবাস কালে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন নভেরা, তবে বড় কোন আঘাত পাননি। মৃত্যু অবধি তিনি মানুষের সংসর্গ বাঁচিয়ে চলেছেন। রহস্যময় কারণে তিনি আর কখনো বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন নি। এমনকী বাঙ্গালী সংসর্গ এড়িয়ে চলেছেন। বাংলায় কথা বলতেও তাঁর অনীহা ছিল প্রকট। কিন্তু ২০১০ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে [[স্ট্রোক|স্ট্রোকের]] ফলে হুইলচেয়ারে বসেই তার শেষ জীবন কাটাতে শুরু করেন।কাটে।<ref name="প্যারিসে প্রদর্শনী"/><ref name="বিস্মৃত নভেরার"/> ১৯৭৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে তার সৃষ্টি ও নির্মাণের সংখ্যা খুব কম।
 
=== মৃত্যু ===
বছর২০১৪ খানেক ধরেথেকে নভেরা আহমেদ শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ২০১৫ সালেরখ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। মৃত্যুর দুই দিন আগে তিনি কোমায় চলে যান। ২০১৫কয়েকদিন সালেরপর ৫ মে, মঙ্গলবার [[প্যারিস|প্যারিসের]] স্থানীয় সময় ভোর তিনটা থেকে চারটার মধ্যে ৭৬ বছর বয়সে তিনিতার মৃত্যুবরণমৃত্যু করেন।হয়।<ref name="চলে গেলেন">{{cite news |author= |date=মে ০৭, ২০১৫ |title=চলে গেলেন নভেরা আহমেদ |url=http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/521584/চলে-গেলেন-নভেরা-আহমেদ |newspaper=[[দৈনিক প্রথম আলো]] |location=[[ঢাকা]] |accessdate=মে ০৭, ২০১৫}}</ref><ref name="আহমেদ মারা গেছেন">{{cite news |author= |date=মে ৭, ২০১৫ |title=ভাস্কর নভেরা আহমেদ মারা গেছেন |url=http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2015/05/150507_rh_novera |newspaper=[[বিবিসি বাংলা]] |location= |accessdate=মে , ২০১৫}}</ref>
 
== পাদটীকা ==
{{Cnote2|ক| বৃটেনের সমালোচক ম্যারি মারশাল নভেরার ''দি লং ওয়েট'' কাজটি সম্পর্কে বলেন যে, 'এইটি অত্যন্ত চমৎকার ও অদ্ভুত উদাহরণ যেখানে হতাশায় পিছিয়ে পড়া নারী মুক্তির পথ খুঁজছে দৃঢ়তার সাথে।'}}
 
{{CnoteCnote2||সাধারণতসাধারণতঃ এই নকশা প্রণেতা হিসেবে কেবল ভাস্কর হামিদুর রহমানের নামোচ্চারণ করা হয়। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারীর [[দ্য পাকিস্তান অবজারভার]] পত্রিকার প্রথম পাতায় শহীদ মিনার নির্মাণ সম্পর্কিত খবরে লেখা হয়েছিল:.. "The memorial has been designed by Mr. Hamidur Rahman in collaboration with Miss. Novera Ahmed...।}}
 
{{Cnote2|গ| কবি সৈয়দ শামসুল হক এ-প্রসঙ্গে বলেছেন, "…হামিদুর রহমান চিত্রকর, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পরিকল্পনাকারী শিল্পী দু’জনের একজন, অপরজন ভাস্কর নভেরা আহমেদ।"অধ্যাপক প্রবাহ বহিয়া চলিয়াছে।” <ref>[[সৈয়দ শামসুল হক]]: ''হৃৎকলমের টানে’’</ref>}}
 
{{Cnote2|ঘ| কবি [[রবিউল হুসাইন]] ‘ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে স্থাপত্য ভাস্কর্যের সর্বপ্রথম উদাহরণ হচ্ছে শিল্পী হামিদুর রাহমান, ভাস্কর নভেরা আহমেদ এবং স্থপতি জাঁ দেলোরা কর্তৃক নকশাকৃত ভাষা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।}}
 
== আরও দেখুন ==
{{প্রবেশদ্বার দণ্ড|জীবনী|বাংলাদেশ}}
 
== পাদটীকা ==
{{Cnote|ক|সাধারণত এই নকশা প্রণেতা হিসেবে কেবল ভাস্কর হামিদুর রহমানের নামোচ্চারণ করা হয়। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারীর [[দ্য পাকিস্তান অবজারভার]] পত্রিকার প্রথম পাতায় শহীদ মিনার নির্মাণ সম্পর্কিত খবরে লেখা হয়েছিল:.. "The memorial has been designed by Mr. Hamidur Rahman in collaboration with Miss. Novera Ahmed...।}}
 
== তথ্যসূত্র ==