আকবর আলি খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
৪১ নং লাইন:
 
== মুক্তিযুদ্ধ ==
যুদ্ধ শুরুর আগের অসহযোগ আন্দোলনে তিনি সমর্থন দেন। পাকাস্তান বাহিনীর আক্রমণ শুরু হলে হবিগঞ্জ পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিতঅণুপ্রাণিত করেন। যোগান দেবার সিদ্ধান্ত নেন। [[মুজিবনগর সরকার]] তখনো প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় অনেক সরকারি কর্মচারীই লিখিত অনুমতিঅণুমতি ছাড়া অস্ত্র যোগান দিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে আকবর আলী খান নিজ হাতে লিখিত আদেশ তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র, খাদ্য ও অর্থ যোগান দেবার আদেশ প্রদান করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য তহবিল তৈরি করতে ব্যাংকের ভল্ট থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা উঠিয়ে ট্রাকে করে আগরতলায় পৌছে দেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য যোগান দেবার জন্য গুদামঘর খুলে দেন এবং পরবর্তীতে [[আগরতলা]]য় চলে যান। আগরতলায় যাওয়ার পর সহযোগীদের নিয়ে তিনি একটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসন গড়ে তোলার চেষ্টা করি যার লক্ষ্য ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করা এবং একই সঙ্গে উদ্বাস্তু শিবিরে যারা আশ্রয় নিয়েছিল সেই শরণার্থীদের সহায়তা করা। প্রথমদিকে তাদের প্রচেষ্টা ছিল স্বনির্ভর। এপ্রিলে মুজিবনগর সরকার গঠিত হবার পর মে মাসে তিনি যোগাযোগ শুরু করেন। জুলাই মাসে (১৯৭১) তাকে সরকারে যোগ দেবার জন্য [[কলকাতা|কলকাতায়]] যেতে বলা হয় এবং সেখানে তিনি মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে ডেপুটি সেক্রেটারি বা [[উপসচিব]] হিসাবে পদস্থ হন। আগস্ট মাসে তাকেঁ উপসচিব হিসাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বদলী করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ অবধি তিনি এই পদেই চাকুরি করেছেন।
 
== পরবর্তী জীবন ==
১৯৭১-এর ডিসেম্বরে স্বাধীন [[বাংলাদেশ]] প্রতিষ্ঠার দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং সচিবালয়ে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। তিনি সেখানে ছয় মাস চাকরি করেন এবং [[মুক্তিযোদ্ধা]] ও [[পাকিস্তান]] থেকে ফেরত ব্যক্তিদের চাকরি পেতে সহায়তা করেন। পরে তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। ১৯৭৩ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতায় যোগ দানের জন্য সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তার পদত্যাগপত্র জমা দিলেও [[শেখ মুজিবর রহমান]] তা গ্রহণে অস্বীকৃত জানান। তাকে অবসর না দিয়ে শিক্ষকতা করার জন্য ছুটি দেয়া হয়। কমনওয়েলথ বৃত্তির জন্য মনোনীত হবার আগে তিনি অল্প সময়ের জন্য [[জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়|জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে]] শিক্ষকতা করেন। বৃত্তির জন্য তিনি [[কানাডা]]র [[কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়]]এ যোগ দেন এবং সেখানে অর্থনীতি বিভাগে মাস্টার্স এবং পি. এইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৯ সালে দেশে ফেরত আসার পরে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তাকে আবারো প্রশাসনের মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে যোগ দেবার জন্য আহ্বান জানানো হয়। ১৯৮৪ সালে তিনি সাভারের বিপিএটিসি-তে মেম্বার ডাইরেক্টিং স্টাফ হিসেবে যোগ দেন। অত:পর ১৯৮৭ সালের আগ পর্যন্ত তিনি পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং কর্মকমিশন সচিবালয়ে কাজ করেন।
 
তিনি ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসে অর্থমন্ত্রী পদে যোগ দেন। ঢাকায় ফিরে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগে অতিরিক্ত সচিব পদে যোগ দেন। তার সময়ে তিনি বিসিসিএল ব্যাংকের পূণর্গঠন এবং বেসিক ব্যাংক অধিগ্রহণের কাজ করেন। অল্প সময়ের জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে কাজ করে তিনি ১৯৯৩ এ সরকারের সচিব হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত তিনি জাতীয়জাতিয় রাচস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি অর্থ সচিব হিসাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বদলী হন। ২০০১ সালে তিনি বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে বিকল্প এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর পদে যোগদান করেন। বিশ্ব ব্যাংকে তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কাজ করেন।
 
== ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক ==
শেখ মুজিবর রহমান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে কে রাজাকার আর কে নয় তা নিয়ে রেষারেষি দেখা দেয়। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীকে ডেকে এ বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিলে তিনি এর দায়িত্ব আকবর আলি খানকে হস্তান্তর করেন। রাজাকারদের জন্য তখন একটি আইন প্রচলিত থাকায় এবং সে আইনের অধীনে এ তদন্ত সম্ভব নয় বলে খান নির্দেশানুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন পরিবেশন করে তার অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে তার নোটসহ তদন্ত প্রতিবেদন তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি [[আবু সাঈদ চৌধুরী]]র কাছে গেলে তিনি বিষয়টি অনুধাবনঅণুধাবন করেন। তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে ডেকে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে বলার পরামর্শ দেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, যখনই যা আমার কাছে পছন্দ বা আইনসিদ্ধ মনে হয়নি আমি লিখিত নোট দিয়েছি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা বলছে যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা গৃহীত হতে বাধ্য।
 
== সমসাময়িক কার্যাবলী ==
বিশ্ব ব্যাংক থেকে অবসর গ্রহণের তিনি [[ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়]] সেন্টার ফর গভরর্ণমেণ্ট স্টাডিজ প্রতিষ্ঠিত করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে (২০১০-) তিনি বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে উপস্থিত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার জন্য জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। ২০১৪'র মার্চ মাসে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, প্রধান মন্ত্রী হাসিনার হাতে যত ক্ষমতা মুঘল সম্রাটেরও তত ক্ষমতা ছিলনা।<ref>[http://www.youtube.com/watch?v=OwgsRfYZBFM একুশে টিভি কর্তৃক প্রচারিত]</ref> ৫ জানুয়ানি ২০১৪ অনুষ্ঠিতঅণুষ্ঠিত ১০ম সংসদীয় নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক অনুষ্ঠিতঅণুষ্ঠিত হলেও নৈতিকভাবে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয় নি। ১৫৩ টি আসনে নির্বাচনই হয়নি। ১৪৭ টি আসনে নির্বাচন হলেও ১০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি।"<ref>[http://www.deshsangbad24.com/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0/ গণতন্ত্র রক্ষায় নতুন নির্বাচন দরকার]</ref> তিনি আরো অভিমত ব্যক্ত করেন যে, দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নির্বাচন পদ্ধতি। গত দশম জাতীয়জাতিয় সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন ব্যর্থ হওয়ার পেছনে রয়েছে তত্বাবধায়ক সরকার। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সমাধান না হলে কখনো কোন সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়।<ref>[http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=142251 সংবিধান সংশোধন ছাড়া বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে জাল-জালিয়াতি হবেই]</ref> অন্যত্র তিনি বলেছিলেন, "দেশের উন্নয়ন করতে হলে সাম্প্রদায়িকতা বন্ধ করতে হবে।<ref>[http://www.campusnews24.com/content/news/3670#sthash.EeQPfcFz.dpuf ক্যাম্পাসনিউজ]</ref> তিনি আরো মনে করেন,"বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আজ দেশ থেকে নির্বাসিত। মানুষকে ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করার কোন তাৎপর্য নেই।"<ref>[http://mcjnews.wordpress.com/2012/08/15/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B6-%E0%A6%86%E0%A6%9C-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6-%E0%A6%A5/ ]</ref> ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে তিনি বলেন, "সংবিধান মানুষের জন্য, মানুষ সংবিধানের জন্য নয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।"<ref>[http://dailynabaraj.com/2013/09/29/38196.html#sthash.fi2QzCW5.dpuf]</ref>
 
নানা কর্মকাণ্ডের মধ্যে নিমগ্ন আকবর আলী খান দেশের ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ও অগ্রগতি নিয়ে গবেষণা করছেন। একই সঙ্গে তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা নিয়ে গবেষণা করছেন (২০১২-১৩।