শ্রীরামপুর, পশ্চিমবঙ্গ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নিবন্ধ সম্প্রসারণ অনুলিপি সম্পাদনা (অনুল্লেখ্য)
১৮৪ নং লাইন:
== প্রশাসন-থানা-ডাকঘর ==
[[চিত্র:Serampore Police Line, Roy Ghat, Serampore -1(712201).jpg|thumb|শ্রীরামপুর পুলিশ লাইন (রায়ঘাট)]]
শ্রীরামপুর শহরে প্রশাসন খুবই কড়া। বর্তমানে এই শহরে ৫টি থানা ও ১৬ টি পোস্টঅফিস / ডাকঘর রয়েছে।
 
=== থানা ===
১৯৫ নং লাইন:
=== ডাকঘর/পোস্টঅফিস ===
শ্রীরামপুর প্রধান ডাকঘর- ৭১২২০১ হল [[হুগলী জেলা]] দঃ ডিভিশনের প্রধান ডাকঘর।[[চিত্র:Serampore Head P.O., Serampore-712201.jpg|thumb|শ্রীরামপুর প্রধান ডাকঘরের সামনের দিক|left|328x328px]][[চিত্র:Serampore Head Post Office, Serampore-712201.jpg|thumb|শ্রীরামপুর প্রধান ডাকঘর, শ্রীরামপুর- ৭১২২০১
ঠিকানাঃ ডঃ বিশ্বনাথ জোত সরণী, শ্রীরামপুর- ১
|292x292px]]
* প্রধান ডাকঘর, শ্রীরামপুর- ৭১২২০১<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.getpincodes.com/postoffice/serampore-ho-hooghly-712201|title=Pincode 712201, Serampore H.O Post Office in Hooghly, West Bengal|last=GetPincodes|website=www.getpincodes.com|access-date=2016-08-10}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://www.google.co.in/maps/place/Serampore+Head+Post+Office/@22.7567236,88.3421856,19z/data=!4m13!1m7!3m6!1s0x39f89b205e0bd7e7:0xa3cf74dcbe4e9808!2sBP+Dey+St,+Serampore,+West+Bengal+712201!3b1!8m2!3d22.7526285!4d88.3413327!3m4!1s0x0:0x9dcfb2b32e54840!8m2!3d22.7569212!4d88.3423982|title=Google মানচিত্র|website=Google মানচিত্র|access-date=2016-09-11}}</ref>
২১৭ ⟶ ২১৬ নং লাইন:
* [[রামমোহন রায়|রাজা রামমোহন রায়]]
* [[উইলিয়াম কেরি]], [[জোশুয়া মার্শম্যান]], [[হ্যানা মার্শম্যান]] এবং [[উইলিয়াম ওয়ার্ড]]
* [[রামরাম বসু]]
* [[পঞ্চানন কর্মকার]]
* [[রামকৃষ্ণ পরমহংস|শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব]]
* [[সারদা দেবী|মা সারদা দেবী]]
২৩২ ⟶ ২৩৩ নং লাইন:
এই শহর কয়েক শতাব্দী পুরনো এবং উভয় বৃদ্ধি এবং সামন্ততন্ত্র, একটি সাংস্কৃতিক রেনেসাঁস ( [[বাংলার নবজাগরণ]] নামে পরিচিত) ব্রিটিশ দ্বারা প্রবর্তিত পূর্ব ভারতীয় নির্মাণের নিম্নলিখিত দিনেমারদের এবং তাদের উপনিবেশ আসার এবং তারপর পতন প্রত্যক্ষ করেছে রেলওয়ে, পরবর্তী শিল্পোন্নয়নের সঙ্গে বরাবর।
 
=== '''হিন্দু স্থাপত্য''' ===
 
* বল্লভপুর রাধাবল্লভ মন্দির (১৮ শতক)<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://www.google.co.in/maps/place/Radha+Ballav+Temple/@22.7464959,88.3513399,15z/data=!4m5!3m4!1s0x0:0xeade0d585e9cdd1d!8m2!3d22.7464959!4d88.3513399|title=Google মানচিত্র|website=Google মানচিত্র|access-date=2016-09-11}}</ref>
* মাহেশ জগন্নাথ মন্দির (১৩৯৬ সাল)<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://www.google.co.in/maps/place/Sri+Jagannath+Mandir+of+Mahesh/@22.7349997,88.3487645,17z/data=!3m1!4b1!4m5!3m4!1s0x39f89b1249f63a87:0x7370b587b9c04d18!8m2!3d22.7349948!4d88.3509532|title=Google মানচিত্র|website=Google মানচিত্র|access-date=2016-09-11}}</ref>
২৪৫ নং লাইন:
* শীতলা মাতা মন্দির ও মেলা (চাতরা শীতলাতলা)<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://www.google.co.in/maps/place/Maa+Sitala+Mandir/@22.7636397,88.3321846,19.5z/data=!4m13!1m7!3m6!1s0x39f89ad067baf561:0xb49d834d8809c321!2sSitalatala+Ln,+Serampore,+West+Bengal+712204!3b1!8m2!3d22.7637217!4d88.3325399!3m4!1s0x0:0xd45e2ea95fdd223a!8m2!3d22.7637612!4d88.3320415|title=Google মানচিত্র|website=Google মানচিত্র|access-date=2016-09-11}}</ref>
* [[নিস্তারিণী কালীমন্দির, শেওড়াফুলি (শ্রীরামপুর)|নিস্তারিণী কালীমন্দির,]] ([[শেওড়াফুলি]] ফেরিঘাট)<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://bn.wikipedia.org/wiki/নিস্তারিণী_কালীমন্দির,_শেওড়াফুলি_(শ্রীরামপুর)|title=নিস্তারিণী কালীমন্দির, শেওড়াফুলি (শ্রীরামপুর)|last=নিস্তারিণী কালীমন্দির|first=(শ্রীরামপুর)|date=|website=|publisher=|access-date=}}</ref>
 
=== '''অন্যান্য স্থপতি''' ===
* হেনরী মার্টিন প্যাগোডা, (ডেনিশ), বল্লভপুর
* সেন্ট ওলাভস চার্চ, (ডেনিশ), ডঃ বিশ্বনাথ জট সরণী, শ্রীরামপুর প্রধান ডাকঘরের পাশে
২৫২ ⟶ ২৫৩ নং লাইন:
 
মাহেশ জগন্নাথ মন্দির ১৩৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। বাংলার ১৫ শতকে শ্রীচৈতন্য বৈষ্ণবধর্মের নেতৃত্বে এখানে এলে, এসব স্থানে একটি হিন্দু তীর্থ কেন্দ্র হিসেবে অগ্রগণ্য ওঠে।
[[চিত্র:SeramporeJT.jpg|left|thumb|240x240px223x223px|দে ঘাট, [[উইলিয়াম কেরি|উইলিয়াম কেরি রোড]], বটতলা]]
রাজা মনোহর রায় '''উত্তর শ্রীরামপুরের''' শেওড়াফুলি এর জমিদা্র ১৭৫৩ সালে শ্রীপুর রাম-সীতার মন্দির তৈরী করলেন আর তার ছেলে রামচন্দ্র রায় পরে দেবতার সেবা 'দেবোত্তর ভূমি' হিসাবে শ্রীপুর, গোপীনাথপুর ও মনোহরপুর গ্রামের নিবেদন করেন। পরবর্তীকালে রাজা নির্মল চন্দ্র ঘোষ এবং '''শেওড়াফুলি রাজ দেবোত্তর এস্টেট, শ্রীরামপুর''' -এর দ্বারা মন্দির যত্ন নেয়া হয়। বর্তমান কালে, মন্দির ও তার প্রাঙ্গন '''শেওড়াফুলি রাজবাড়ী''' নজরদারির আওতায়।
 
===নামকরণের উৎস===
এটা সম্ভব যে '''শ্রীরামপুর''' নামটি সম্ভূত পারে '''শ্রীপুর''', '''শ্রী রাম''' বা উভয় থেকে, অথবা এটি '''সীতারামপুর''' থেকে উদ্ভূত পারে সেখানে একটি খুব বিখ্যাত 'রাম-সীতা' মন্দির ছিল। শ্রীপুরে কিছু সম্ভ্রান্ত পল্লী যথা গোস্বামীপাড়া, লাহিড়ীপাড়া, মুখার্জীপাড়া, ভট্টাচার্যপাড়া, চক্রবর্তীপাড়া, বেণিয়াপাড়া ইত্যাদি, যার অধিবাসীরা বিভিন্ন গোষ্ঠী ও শ্রেণির ব্রাহ্মণ এসেছে। ১৮ এর শতকে '''মাহেশ, বল্লভপুর, আকনা, শ্রীপুর, গোপীনাথপুর, মনোহরপুর, চাতরা, রাজ্যধরপুর, নওগাঁ, শেওড়াফুলি, সিমলা-সাতঘড়া'''-এই সমস্ত গ্রামগুলিকে নিয়ে তৈরি হয় এই '''শ্রীরামপুর''' শহর।
 
২৭৩ ⟶ ২৭৪ নং লাইন:
 
== ডেনিশ রাজত্ব ==
নগরায়ন ফেজ, প্রথম দিকে ১৮ শতকের মধ্যে দিনেমারদের দ্বারা এলাকায় জমি অধিগ্রহণ শুরু হয় ডেনিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে। ১৭৫৫ সালে ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব তার [[চিত্র:Fiebig Danish gate Serampore.jpg|right|thumb|244x244px|ডেনিশ প্রাসাদের মেইন গেট, (বর্তমানে শ্রীরামপুর আদালতের প্রবেশদ্বার)]]অফিস থেকে একটি প্রতিনিধি পাঠান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পরওয়ানা (জেলা অধিক্ষেত্র) তাদের বাংলায় বাণিজ্য করার অনুমতি দেওয়া। তারা নবাব আলীবর্দী খানকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধ করে পরওয়ানা প্রাপ্ত, অনেক উপহার সহ জমির তিন বিঘা একটি নতুন কারখানা আকনা-এ এবং বন্দর নির্মাণের এবং তারপর অন্য সা্তান্ন বিঘা শ্রীপুরে অর্জন, যা দিনেমারদের পরিচালিত।পরবর্তীকালে দিনেমারেরা শেওড়াফুলি জমিদারকে (ট্যাক্স কৃষক) ১৬০১ টাকা বার্ষিক খাজনা পরিশোধ করে শ্রীপুর, আকনা ও পিয়ারাপুর মহাল অর্জন করে। ১৭৭০ এ ডেনিশ বণিকদের দ্বারা বাণিজ্য ও এলাকায় বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করতে শুরু করেছিল। ডেনিশ কর্নেল ওলেবাই থেকে, যারা ১৭৭৬ সালে শ্রীরামপুর-এর প্রথম ক্রাউন শাসক নিযুক্ত হন, সক্ষম প্রশাসনিক কর্মক্ষমতা সহায়তা করেন।
 
দিনেমারদের প্রতিষ্ঠিত '''ক্রাউন বাজার''' (বর্তমান টিনবাজার) ও বেসরকারি গুদামে দেওয়া বা গুদাম রক্ষণাবেক্ষণ করায় ধীরে ধীরে শহর উন্নত এবং মার্জিত এবং সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। উভয় বিদেশী এবং দেশীয় বণিকেরা পৌছান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.anandabazar.com/district/dhaksinbanga/howrah-hoogly/st-olav-church-of-serampore-is-now-open-for-all-after-renovetion-1.361685|title=পুরনো চেহারা ফিরে পেল সেন্ট ওলাভ গির্জা|last=পাল|first=প্রকাশ|access-date=2016-08-26}}</ref>
২৮৪ ⟶ ২৮৫ নং লাইন:
[[চিত্র:WWard.jpg|left|thumb|237x237px|[[উইলিয়াম ওয়ার্ড]]]]
[[চিত্র:HannahMarshman.jpg|thumb|283x283px|[[হ্যানা মার্শম্যান]] ([[জোশুয়া মার্শম্যান]]-এর স্ত্রী)]]
শ্রীরামপুরের প্রাচীন ইতিহাস সম্বন্ধে কমবেশি অনেকেই অবগত আছেন। এখন মনে করা যাক আমরা ২০০ বছরেরও আগে ডেনিশ অধিকৃত ফ্রেডেরিক্সনগরে চলে গেছি। কলকাতা থেকে প্রায় ৩৫ কিমি উজানে গঙ্গা নদীর পশ্চিম উপকূলে মনোরম পরিবেশে সুদৃশ্য শ্রীরামপুর(ফ্রেডেরিক্সনগর) শহর। ১৭৫৫ সাল থেকে এই ফ্রেডেরিক্সনগরে দিনেমারদের(ডেনিশদের) উপনিবেশ ক্রমশ বাণিজ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.anandabazar.com/district/dhaksinbanga/howrah-hoogly/%25E0%25A6%2590%25E0%25A6%25A4-%25E0%25A6%25B9-%25E0%25A6%25AF-%25E0%25A6%2596-%25E0%25A6%2587%25E0%25A7%259F-%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%259C-%25E0%25A6%25B6-%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25AA-%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25A8-%25E0%25A6%258F-%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25B0-1.85888|title=ঐতিহ্য খুইয়ে আজ শিল্পে মলিন এ শহর - Anandabazar|last=বন্দ্যোপাধ্যায়|first=গৌতম|access-date=2016-08-05}}</ref> গঙ্গার ঠিক অপর দিকে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট আর এক মাইল উপকূল জুড়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির গভর্নরসহ উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারিদের অবসর বিনোদনের পরিসর। এপারে ডেনিশ পতাকা গাড়া নিশান ঘাটে উঠেই ডানদিকে '''ডেনিশ ট্যাভার্ণ অ্যান্ড হোটেল'''(১৭৮৬) আর বামদিকে '''গভর্মেন্ট গোডাউন''' রয়েছে। তাদের মাঝখানের পথ ধরে সোজা এগোলে ঘেরা ১৭ বিঘা ফুলগাছে সাজানো বাগানের চওড়া গেটের ভেতরদিকে রাজকীয় '''গভর্মেন্ট হাউস'''(১৭৭১) দেখা যাচ্ছে। গেটের পাশে '''ওয়াচ হাউস'''(১৭৭১) তখনও ২তলা হয়নি। গঙ্গার ধারে '''ক্যাথেলিক চার্চ'''(১৭৬১) তৈরি হলেও '''লিউদেরিয়ান চার্চ সেন্ট ওলাফ''' কিন্তু হয়নি। এমনকি গভর্মেন্ট হাউস এর পিছনের দিকে ৬বিঘা জমিতে '''ক্রাউন বাজার'''(বর্তমানে টিনবাজার) ও তার মধ্যে বিশাল বিশাল স্টোর হাউস বা কাছেই জেলখানার অস্তিত্ব নেই। তবে '''যুগল-আড্ডি ঘাটে''' দু ঘরের বারান্দাসমেত বাড়িটা অসুস্থ মরণাপন্নদের গঙ্গাযাত্রী নিবাস (১৭৫৭) তৈরি হয়েছে। আর কিছু দূরে প্রায় ৯০০০ ফুটের '''পেয়ারাপুর ক্যানেল'''(১৭৮১, ডিসেম্বর) ডেনিশরা কেটে ঐ অঞ্চলে চাষের প্রয়োজনীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। এই বন্দরনগরীর একপাশে ছোটবড় পালতোলা নৌকার আনাগোনায় স্রোতস্মিনী মা গঙ্গা কল্লোল মুখর হয়ে থাকে দিনের আলোয়। রাত্রি নিশিথে শান্ত হয়ে আসে পরিমন্ডল। এমন সময় একদিন অতি প্রত্যুষে দুটো নৌক এসে নোঙর করে নিশান ঘাটে। চার মিশনারি পরিবারের সদস্যেরা নৌক থেকে ডাঙায় অবতরণ করে ১৭৯৯ সালের ১৩ অক্টোবর। তাঁরা হলেন '''উইলিয়াম ওয়ার্ড''' ও স্ত্রী সন্তানাদিসহ '''জশুয়া মার্শম্যান''', তাঁর বন্ধু '''জন গ্র্যান্ট''' ও '''ইমানুয়েল ব্রান্সডন'''। সঙ্গে আনেন লন্ডন ডেনিশ কনসুলেটের লিখিত ছাড়পত্র। প্রথমে তাঁরা সকলে 'মায়ার্স' হোটেলে ওঠেন। পরে ডেনিশ গভর্ণর কর্নেল ওলি বি-র শরণাপন্ন হলে তাঁর বদান্যতায় শ্রীরামপুরে নিরাপদ আশ্রয় লাভের আশ্বাস পেয়ে, একটা বড় বাড়ি ভাড়া করে উঠে যান সেখানে। কর্নেলের পরামর্শ মতো ওয়ার্ড উত্তর বঙ্গে অবস্থানরত ১৭৯৩ সালের শেষদিকে বাংলায় আগত '''উইলিয়াম কেরী'''র সাথে যোগাযোগ করেন। তাঁদের মধ্যে আলোচনার পর ঠিক হয় শ্রীরামপুরেই মিশন গঠন যুক্তিযুক্ত। '''উডনী''' সাহেবের উপহার একটা কাঠের মুদ্রণযন্ত্র সমেত কেরী পরিবারসহ ১৮০০ সালের ১০ জানুয়ারি ওয়ার্ডের সাথে '''শ্রীরামপুর''' চলে আসেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.onushilon.org/corita/cerry-willium.htm|title=উইলিয়াম কেরি|website=www.onushilon.org|access-date=2016-08-05}}</ref> অভিজ্ঞ কেরীর নেতৃত্বে সেইদিনই '''বাংলার প্রথম ব্যাপটিস্ট মিশন''' সংগঠিত হয়। আর মিশন প্রেস থেকে সুদক্ষ ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধানে ছাপার কাজ শুরু হওয়ায় শ্রীরামপুরের ইতিহাসের ধারা নতুন পথে বইতে থাকে। শ্রীরামপুরে কেরীর নেতৃত্বে মিশনের কর্মযজ্ঞের বিস্তারির বিবরণ না দিয়ে কেবলমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রধান কয়েকটা বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করাটাই সমীচীন বোধ হয়। প্রথমত ডেনিশ নগরীতে ইংল্যান্ডীয় মিশনারিদের স্থানীয় গভর্ণরের বদান্যতায় নিরাপদ আশ্রয় লাভ হওয়ার, প্রাচ্যে খ্রিস্টধর্মতত্ত্ব শিক্ষার ব্যাপক প্রসারলাভ করার জন্যেই '''শ্রীরামপুর কলেজ''' প্রতিষ্ঠা সার্থক পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য বাইবেলের নানা ভাষায় অনুবাদ মুদ্রণের মাধ্যমে এদেশে ধর্মপ্রচার পঞ্চানন-মনোহরের মিশনে যোগদানে নানা ভাষার হরফ ঢালাই, কালি ও কাগজ তৈরি, সাধারণের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের মানসে শিক্ষাব্যবস্থার নীতি নির্ধারণ ও পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তাঁর চিন্তাশীলতার মধ্যে মিশনের শতাধিক বিদ্যালয় ও কলেজে মাতৃভাষায় শিক্ষাদান, প্রাচ্যের সাহিত্য ও দর্শনের সাথে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞান সংবলিত পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, কোনো রকম সংকীর্ণতা ও সীমাবদ্ধতার উর্দ্ধে থাকা প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। মিশনের কর্মৎপরতা আরও প্রাণ পায় যখন ১৮০১ সালে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে নবাগত সিভিলিয়ানদের দেশীয় ভাষা শেখানোর কাজে কেরীর যোগদান, আর সেই সুযোগে বিভিন্ন ভষা পন্ডিতদের সহায়তায় আরও প্রাচ্য ভাষা শেখা ও ধর্মপুস্তকের অনুবাদ মুদ্রণ করে প্রকাশিত হয়। তার সঙ্গে নিজের পাঠ্যপুস্তক রচনা, ৭ টা ভাষায় ব্যাকরণ ও ৩ টে ভাষার অভিধান প্রণয়ন, আরও অন্যান্য পন্ডিতদের পুস্তক প্রকাশে উদ্বুদ্ধ করায় বিশেষভাবে বাংলা গদ্যসাহিত্যের সূচনা হয়। কেরীর বাংলা ভাষায় '''কথোপকথন''' ও '''ইতিহাসমালা''' প্রকাশ পাঠ্যপুস্তকের অভাব মেটানো ও বাংলা কথ্যগদ্য সাহিত্যের প্রচলনে তাঁর বিবেচনা ও বিচক্ষনতার পরিচয় দেয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.somewhereinblog.net/blog/kobid/29839632|title=বহু ভাষাবিদ, তাত্ত্বিক, মিশনারি, বাংলা গদ্য সাহিত্যের পথপ্রদর্শক, বাংলা ব্যকরণ ও অভিধান সংকলক স্যার উইলিয়াম কেরির মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি - কোবিদ এর বাংলা ব্লগ । bangla blog {{!}} সামহোয়্যার ইন ব্লগ - বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ|website=somewhere in... blog|access-date=2016-08-05}}</ref> '''রামায়ণ মহাভারতের''' মতো সুপ্রাচীন মহাকাব্যের প্রচার বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগ এবং মূল সংস্কৃত ভাষাসহ ইংরাজীতে রামায়ণের অনুবাদ প্রকাশ করে ভারতীয় দর্শন ও সাহিত্যের প্রতি স্বদেশীয় পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা সত্যই প্রণিধানযোগ্য।
 
মার্ডকের ক্যাটালগ থেকে জানা যায়, মিশন প্রেস থেকে ‘হরকরা’, ‘জ্ঞানোদয়’, ‘লাশকারদের প্রতি’ ও বিভিন্ন খণ্ড বাইবেল ছাড়া নিম্নোক্ত পুস্তকাদি ছাপা হয়েছিল :
২৯৮ ⟶ ২৯৯ নং লাইন:
 
* Good Advice I The Englishtrer পীতাম্বর সিংহ<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.amardeshonline.com/pages/printnews/2013/09/20/217312|title=বাংলা মুদ্রণের সেকাল একাল|website=www.amardeshonline.com|access-date=2016-08-05}}</ref>
অন্যতম জনপ্রিয় অধ্যাপকরূপে কেরীর ৩০ বছর ধরে যুক্ত থেকে [[কলকাতার]] [[ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ|ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের]] মর্যাদা ও গৌরববৃদ্ধি করার কৃতিত্ব অপরিসীম। মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত ৪৫ টি প্রাচ্যভাষায় বাইবেলের অনুবাদ ছেপে প্রকাশের মধ্যে কেরীর ৩৫ টা গ্রন্থ তাঁকে সে যুগে বিশিষ্ট বিরল ভাষাবিদের আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৮১২ সালে মিশন ছাপাখানার প্রভূত দ্রব্যাদি অগ্নিকাণ্ড ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও দেশ-বিদেশের আর্থিক সাহায্যে প্রেসের পণ্ডিত শিল্পীদের সহযোগিতায় তার পুণর্গঠন করে বহুগুণ উৎসাহে হরফ, কালি, কাগজসহ ছাপাশিল্পের উন্নতিসাধন কেরীর দৃঢ়চেতনা মনের পরিচয় দেয়। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে ভাষা শিক্ষণ আর শ্রীরামপুর কলেজে ধর্মতত্ত্বের সাথে [[উদ্ভিদবিদ্যা]], [[জীববিদ্যা]], [[কৃষিবিদ্যা]] প্রভৃতি [[বিজ্ঞান]] বিষয়ের শিক্ষকতায় কেরী[[উইলিয়াম কেরি]] বেশ সুনাম অর্জন করেন। উদ্ভিদ ও কৃষি বিজ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগী কেরী শ্রীরামপুরে বহু বিচিত্র বৃক্ষলতাদি পূর্ণ ৫ একর জমিতে বোটানিক্যাল গার্ডেন রচনা করে এই বিষয়ে গবেষণার পথ প্রশস্ত করেন। হাওড়ার[[হাওড়া]] শহরের শিবপুরে কোম্পানি-উদ্যানের প্রধান রক্সবার্গ, ওয়ালিচ প্রমুখ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে বীজ ও চারাগাছ বিনিময়ের মাধ্যমে উদ্ভিদবিদ্যা চর্চার সুযোগ তৈরি করেন। এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য কেরী তাঁর বক্তৃতা ও প্রতিষ্ঠানের পত্রিকায় শোচনীয় কৃষিব্যবস্থার উন্নয়নপন্থার আলোচনা প্রকাশ, আর কলকাতার এগ্রিহর্টিকালচারাল সোসাইটি সংগঠনের মাধ্যমে দরিদ্র কৃষকেরা দুঃখ দুর্দশা দূর করার চেষ্টা করেন।
 
সে যুগে হিন্দুসমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের মধ্যে উল্লেখ্য সাগরে শিশু বিসর্জন, সতীদাহ প্রথা, কুষ্ঠরোগী হত্যা, গঙ্গাজলি, বাণবিদ্ধ অবস্থায় চড়কে ঘোরা,রথের চাকায় প্রাণদান প্রভৃতি কুপ্রথা প্রতিরোধের জন্য বিরামহীন সংগ্রাম চালান কেরী। হিন্দুসমাজ উন্নয়নে শ্রীরামপুর মিশনের ভূমিকায় গ্রামের দরিদ্র, পীড়িতদের মধ্যে ওষুধ বিতরণ, '''কেরীর রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০২ সালে আইন করে সাগরে শিশু বিসর্জন নিষিদ্ধ করেন''' এবং ১৮২৯ সালে [[রামমোহন রায়]] এবং কেরীর[[উইলিয়াম কেরি|উইলিয়াম কেরির]] সহযোগিতায় লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক '''[[সতীদাহ প্রথা''']] নিষিদ্ধ করেন। কেরীরই উদ্যোগে কলকাতায় কুষ্ঠরোগীদের হাসপাতাল স্থাপন হয়। ১৮১৯ সালে '''শ্রীরামপুর সঞ্চয় ব্যাঙ্ক''' প্রতিষ্ঠা, শ্রীরামপুরে সাধারণ হাসপাতাল স্থাপনের প্রচেষ্টা প্রভৃতি জনহিতকর কর্মে কেরীর নেতৃত্ব তুলনাহীন।
 
তবে এই মিশনারিরা যদি '''ডেনিশ শ্রীরামপুরে''' আশ্রয় না পেতেন ও ধর্মপ্রচারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতেন, যদি [[পঞ্চানন কর্মকার]] সদলবল মিশনের সাথে যোগ না দিতেন, যদি কেরী [[কলকাতার]] [[ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ|ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে]] যোগ না দিতেন, রামরামের[[রামরাম বসু|রামরাম বসুর]] সাথে যদি দেখা না হতো, ভাষাশেখা, মুদ্রণ, অনুবাদ, বাংলাসাহিত্যের বিকাশ, এমনকি সমাজসংস্কারমূলক কাজও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হত। তাহলে আঞ্চলিক ইতিহাস যে কেমন হত তা সহজেই অনুমান করা যায়।
 
মিশনারি কার্যকলাপের জন্য '''শ্রীরামপুরত্রয়ী''' '''ডেনিশ রাজা ষষ্ঠ ফ্রেডেরিক্সের কাছ থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেছিলেন'''। ১৮০৭ সালে ধর্মপুস্তকের প্রাচ্য ভাষায় অনুবাদক হিসাবে কেরী আমেরিকার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত '''ডক্টর অফ ডিভিনিটি''' উপাধি পান। ইংল্যান্ডের লিনিয়র সোসাইটি, জিওলজিক্যাল সোসাইটি, হর্টিকালচারাল সোসাইটি কেরীকে ফেলো নির্বাচন করে সম্মানিত করেন।