মহাভারত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
খালিদ সাইফ (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
খালিদ সাইফ (আলোচনা | অবদান)
→‎রচনাকাল: বানান
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১৫৭ নং লাইন:
[[File:Karwar Pictures - Yogesa 19.JPG|thumb|235x235px|[[কর্ণাটক|কর্ণাটকের]] মুরুদেশ্বর মন্দিরে ([[ভারত]]) রূপায়িত ব্যাস ও গণেশের মহাভারত রচনা]]
 
মহর্ষি [[ব্যাসদেব|বেদব্যাস]] কথিত মহাভারতের কাহিনীকাহিনি রচনা করতে সম্ভবত ৩ বৎসর কাল অতিবাহিত হয়েছিল, এর দ্বারা অনুমান করা যেতে পারে, ঐ সময় লিখন পদ্ধতি তেমন আধুনিক ছিল না, সে কালে প্রচলিত নানা বৈদিক সাহিত্যগুলোকে মুনিঋষিরা গুরু-শিষ্য [[পরম্পরা]] অনুসারে নিজেরা মৌখিক রূপে স্মরণ করে রাখতেন। সে সময় [[আর্য]] ভাষা [[সংস্কৃত]] ঋষিদের মান্য ভাষার মর্যাদা পেয়েছিল।<ref>'''রাজবদ্ রুপ্বেষৌ তে ব্রাহ্মী বাচং বিভর্ষি চ।''''''কো নাম ত্বং কুত চ অসি কস্য পুত্র চ শংস মে ॥'''
 
(মহাভারত আদিপর্ব ৮১/১৩)
</ref> এই রূপে সমগ্র [[বেদ|বৈদিক সাহিত্য]] তথাকথিত গুরু-শিষ্য পরম্পরায় মৌখিক রূপে সংরক্ষিত থাকত। এরপর সময়ের সাথে সাথে বৈদিক যুগের পতন হয় এবং সেই প্রাচীন গুরু-শিষ্য পরম্পরায় স্মরণ করার রীতি লুপ্ত হয়, তখন সেই সমস্ত সাহিত্যগুলিকে লিখিত রূপে সংরক্ষণের রীতি প্রচলিত হয়। এই সময় [[ব্রাহ্মী লিপি পরিবার|ব্রাহ্মী লিপির]] মাধ্যমে লেখার প্রচলন ঘটে। বর্তমান পণ্ডিতগণের ধারণা যে, মহাভারত প্রাচীন অবস্থা থেকে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছানো কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। গবেষকদের মতে, মহাভারতের রচনাকাল ৩টি প্রারম্ভিক স্তরে বিভক্ত।<ref name=":0">'''রামায়ণ-মহাভারত: কাল, ইতিহাস, সিদ্ধান্ত''' -লেখক বাসুদেব পোদ্দার</ref> এই ৩ স্তরের সময়কাল নিম্নরূপ :
* '''৩১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দখ্রিষ্টপূর্বাব্দ'''<ref name=":1">ওমিলোস মেলিটন কালচারাল ইন্সটিটিউট</ref>
ক. সর্বপ্রথমে [[ব্যাসদেব]] ১০০ পর্ব ও এক লাখ শ্লোক সমন্বিত 'জয়' গ্রন্থ রচনা করেন, যা পরবর্তী কালে মহাভারত নামে প্রসিদ্ধ হয়।
 
১৭২ নং লাইন:
* '''১২০০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ'''<ref name=":1" />
 
পরে লিখন পদ্ধতির উন্নতি হলে সৌতি প্রচারিত এই প্রসিদ্ধ মহাভারতের কাহিনীকাহিনি [[পাণ্ডুলিপি]] বা পুঁথিতে [[ব্রাহ্মী লিপি|ব্রাহ্মী]] কিংবা [[সংস্কৃত|সংস্কৃতে]] লিখিত হয়। এর পরও নানা মুনি ও পণ্ডিতরা নিজস্ব শৈলীতে মহাভারতের মূল কাহিনীরকাহিনির সাথে আরও অনেক সমসাময়িক কাহিনির সংযোজন করেন।
[[File:Kan-terra-cota-11.jpg|left|thumb|252x252px|[[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] [[কান্তনগর মন্দির|কান্তনগর মন্দিরে]] খোদিত [[টেরাকোটা|টেরাকোটায়]] মহাভারতের দৃশ্য, ১৮ শতকে জমিদার প্রাণনাথ রায় কর্তৃক নির্মিত।]]
 
=== ঐতিহাসিক প্রমাণ ===
* '''১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দখ্রিষ্টপূর্বাব্দ'''
 
মহাভারতে [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত]] কিংবা [[মৌর্য রাজবংশ|মৌর্য]] সাম্রাজ্য (১০০০-৭০০ খ্রিঃপূঃখ্রি.পূ.) অথবা [[জৈন ধর্ম|জৈন]] বা [[বৌদ্ধ ধর্ম|বৌদ্ধ]] ধর্মের (৭০০-২০০ খ্রিঃপূঃখ্রি.পূ.) কোনো উল্লেখ নেই। তাছাড়া শতপথ ব্রাহ্মণ<ref>দ্য মহাভারত-ই ক্রিটিজ়্ম, সি.ভি. বেদ্যা, পৃষ্ঠা ৭১</ref> (১১০০ খ্রিঃপূঃখ্রি.পূ.) ও ছান্দোগ্য [[উপনিষদ্‌|উপনিষদে]] (১০০০ খ্রিঃপূঃখ্রি.পূ.) মহাভারতের কিছু প্রসঙ্গ পাওয়া যায়। অর্থাৎ মহাভারত ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেরখ্রিষ্টপূর্বাব্দের অনেক আগেই লেখা হয়েছিল।<ref name=":3">महाभारत और सरस्वती सिंधु सभ्यता লেখক সুভাষ কক</ref>
 
* '''৬০০-৪০০খ্রিস্টপূর্বাব্দ৪০০খ্রিষ্টপূর্বাব্দ'''
 
[[পাণিনি]] রচিত '''[[অষ্টাধ্যায়ী|অষ্টাধ্যায়ীতে]]''' (৬০০-৪০০ খ্রিঃপূঃখ্রি.পূ.) মহাভারতের কাহিনি ও কৃষ্ণার্জুনের কিছু প্রসঙ্গ রয়েছে। অতএব মহাভারত যে পাণিনির যুগের অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।<ref name=":0" /><ref name=":3" />
 
* '''১ম শতাব্দী'''
১৮৮ নং লাইন:
প্রথম শতাব্দীতে [[ইউনানি|ইউনানের]] রাজদূত ডিও ক্রাইজ়োস্টমের (''Dio Chrysostom'') বর্ণনায় জানা যায়, তৎকালীন [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ এশীয়]] লোকেদের কাছে এক লক্ষ শ্লোক যুক্ত একটি মহাগ্রন্থ ছিল, অর্থাৎ সেই সময়ও মহাভারতে এক লক্ষ শ্লোকই ছিল।<ref name=":2" />
 
[[সংস্কৃত|সংস্কৃতের]] সর্বাপেক্ষা প্রাচীন একটি [[পাণ্ডুলিপি|পাণ্ডুলিপিতে]] (১ম শতাব্দী) মহাভারতের ১৮টি পর্বের একটি অনুক্রমণিকা পাওয়া গিয়েছে, অর্থাৎ সেই কালে ১৮ পর্ব যুক্ত মহাভারতের কাহিনীইকাহিনিই প্রচলিত ছিল, যদিও ব্যাসদেব ১০০টি পর্ব যুক্ত আদি মহাভারত রচনা করেন, যা পরে ১৮টি পর্বে বিবর্তিত হয়।
 
=== পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণ ===
১৯৫ নং লাইন:
মহাভারতে বৈদিক যুগের পশ্চিমবাহিনী সরস্বতী নদীর বর্ণনা বহু জায়গায় করা হয়েছে, যথা – সরস্বতী নদীর তীর বরাবর [[প্লক্ষ]] বৃক্ষ (প্লক্ষ প্রস্রবণ, [[যমুনোত্রী]]র নিকট) থেকে প্রভাস তীর্থ (কচ্ছের রণ অঞ্চল, [[গুজরাত]]) পর্যন্ত [[বলরাম|বলরামের]] তীর্থযাত্রার কথাও মহাভারতে রয়েছে।<ref>মহাভারত-গীতা প্রেস গোরখ্‌পুর, শল্য পর্ব, অধ্যায় ৩৪-৫৪</ref>
 
কিছু ভূবিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, বর্তমানের শুষ্ক ঘগ্গর-হাকরা নদীই বাস্তবে বৈদিক যুগের সরস্বতী নদী, যেটি ৫০০০-৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেখ্রিষ্টপূর্বাব্দে পশ্চিম ভারতে বইত এবং আনুমানিক ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেখ্রিষ্টপূর্বাব্দে ভূ-আলোড়ন জনিত কারণে শুকিয়ে যায়। বৈদিক যুগে লিখিত [[ঋগ্বেদ|ঋগ্বেদে]] সরস্বতী নদীকে ‘নদীতমা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ঋগ্বৈদিক সভ্যতায় সরস্বতী নদীই ছিল সর্বপ্রধান নদী, [[গঙ্গা নদী|গঙ্গা]] নয়।
 
ভূ-আলোড়নে সরস্বতী নদীর মূল প্রবাহ যমুনার সাথে মিশে যায়, যেমন ‘[[ত্রিবেণী সংগম]]’কে [[গঙ্গা নদী|গঙ্গা]], [[যমুনা]] ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থল বলা হয়।<ref>জ়ি নিউজ়-राजस्थान की कहानी</ref> পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে ও [[পুরাণ|পুরাণে]] এও বলা হয়েছে, পরীক্ষিতের ২৮ প্রজন্মের রাজত্বের সময় গঙ্গার বিধ্বংসী বন্যায় [[হস্তিনাপুর]] নগরী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তী রাজারা কৌশাম্বী নগরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।
২০৪ নং লাইন:
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ [[গুজরাত|গুজরাতের]] পশ্চিম উপকূলে সমুদ্রের গভীরে &nbsp;প্রায় ৩৫০০-৪০০০ বছর পুরাতন একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী আবিষ্কার করেছে। এই নগরীকে মহাভারতে বর্ণিত যাদবদের [[দ্বারকা|দ্বারকা নগরী]] বলে অনুমান করা হয়েছে। প্রোফেসর এস. আর. রাও একে [[দ্বারকা]] বলেই চিহ্নিত করেছেন। যদিও এই ধারণার বিরুদ্ধে ইন্ধন জুগিয়েছে ঐ অঞ্চলের নিকটে প্রাপ্ত ৩৫০০ বছর পুরোনো অন্য একটি ডুবন্ত নগরী।
 
&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp;&nbsp; এই সমস্ত তথ্য ও মহাভারতের জ্যোতিষীয় তিথি, ভাষা বিশ্লেষণ ও বিদেশী সূত্রের প্রমাণ নিরীখে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, মূল মহাভারতে রচনা ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দখ্রিষ্টপূর্বাব্দ অথবা ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেরখ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে হয়েছিল। যদিও আধুনিক সংস্করণ গুলি ৬০০-২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেরখ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে তৈরীতৈরি হয়েছিল।
 
== ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ==