উসুলে ফিকহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
৩১ নং লাইন:
 
 
এই সংজ্ঞার মাধ্যমে এই দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, একজন উসুলবিদ কোন বিশেষ নস বা নসের ইসতিদলাল নিয়ে আলোচনা করেন না। অর্থাৎ উসুলবিদের আলোচনাতেই এই প্রসংগপ্রসঙ্গ আসবে না যেঃ
{وأحل الله البيع وحرَّم الربا..}
{فمن شَهِد منكم الشهر فليصمه}
৪৫ নং লাইন:
 
উসুলে ফিকহের উতস মুলঃ
কুরান-সুন্নাহ উসুলে ফিকহের মুল উতস, কারন এই দুই উতস থেকেই মুজতাহিদগণ ইসলামী বিধি-বিধান ইসতিমবাত করার পথ-পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা লাভ করেছেন। কুরান-সুন্নাহের পরে আসে আরবী ভাষার গুরুত্ব, যেহেতু কুরান-হাদিস আরবী ভাষায় অবতীর্ন হয়েছে এবং এর প্রামানিক ও প্রয়োগিক ব্যাখ্যাও আরবীতেই হয়েছে সেজন্য আরবী ভাষার সাধারনসাধারণ নিয়ম-কানুন ও ব্যকরান জ্ঞানের বিস্তারিত আলোচনা যেমনঃ আম-খাস, সরিহ-কিনায়াহ, মুতলাক-মুকাইয়াদ, হাকিকত-মাযাজ, মানতুক-মাফহুম ইত্যাদি ভাষা-সংক্রান্ত বিষয় উসুলে ফিকহের মৌলিক আলোচনা হিসাবে গন্য হয়েছে।
 
উসুলে ফিকহের শুরুর ইতিহাস ও রচনা শুরুঃ
৫৮ নং লাইন:
 
একঃ নবুওয়াত-যুগঃ
নবুওয়াতের যুগে ইসলামী বিধান বা তাশরীর উতস ছিল স্বয়ং আল্লাহর রাসুল, যেকোন বিষয় বা সমস্যা দেখা দিলে সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর রাসুলের কাছে উপস্থিত হয়ে তা উল্লেখ করতেন, এরপর আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হয়ত কুরানের ওহীর মাধ্যমে বা তার হাদিসের মাধ্যমে সেই বিষয়ে ইসলামী সমাধান প্রদান করতেন। সুতরাং কুরান-হাদিসের নসের মাধ্যমে ইসলামী ফিকাহের মৌলিক অংশ নবুওয়াতের যুগে ভিত্তি পায়। আল্লাহর রাসুলের হাদিস আল্লাহর অনুমোদনের মাধ্যমে উম্মতের সামনে এসেছে। আর হাদিসের মধ্যে তিন ধরনের বিষয় পাওয়া যায়ঃ রাসুলের নিজের কর্ম, রাসুলের কথা বা বক্তব্য আর রাসুলের অনুমোদন অর্থাৎ কোন সাহাবীকে কোন কাজ করতে দেখে তিনি যদি চুপ থেকে তার অনুমোদন করে থাকেন তাহলে সেখান থেকে সেই কাজের বৈধতা প্রমানিত হয়ে যায়। আল্লাহর রাসুল তার একাধিক সাহাবীর ইজতিহাদকে অনুমোদন দিয়েছেন, উদাহরন হিসাবে হযরত মুয়াজ ইবনে জাবালের প্রসংগপ্রসঙ্গ উল্লেখ করা যেতে পারে। হযরত মুয়াজকে যখন আল্লাহর রাসুল গভর্নর হিসাবে ইয়ামেনে প্রেরন করলেন, তখন তাকে জিজ্ঞাসা করেলেনঃ
فقد سأله النبي - صلى الله عليه وسلم -: ((بِمَ تقضي إذا عُرض لك قضاء؟))، قال معاذ: أقضي بكتاب الله، قال: ((فإن لم تجد؟))، قال: أقضي بسُنَّة رسول الله، قال: ((فإن لم تجد؟))، قال: أجتهدُ رأيي ولا آلو، قال: ((الحمد لله الذي وفَّق رسولَ رسولِ الله لما يرضي الله ورسوله))
মুয়াজ, বিচার কার্য কিভাবে পরিচালনা করবে? তিনি উত্তরে বললেনঃ আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী বিচার করবো, আল্লাহর রাসুল বললেনঃ যদি আল্লাহর কিতাবে সেই বিষয়ের সমাধান না থাকে? আল্লাহর রাসুলের হাদিস অনুযায়ী বিচার করবো, যদি আল্লাহর রাসুলের হাদিসেও সেই সমাধান না থাকে? তাহলে ইজতিহাদ করে ফয়সালা দিবো আর এই ইজতিহাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করবো না। আল্লাহর রাসুল তার এই উত্তর শুনে বললেনঃ “সমস্ত প্রসংশাপ্রশংসা মহান আল্লাহর যিনি তার রাসুলের রাসুলকে এমন কথা বলার তৌফিক দিয়েছেন যাতে তার রাসুল সন্তুষ্ট হয়েছেন” ।
সুতরাং এই বর্নানার মাধ্যমে আমরা এই ধারনাতে আসতে পারি যে, নবুওয়াতের যুগে ইসলামী বিধানের প্রধান উতস যদিও ছিল কুরান-হাদিস, তথাপি সেই যুগেও ইজতিহাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
 
দুইঃ সাহাবী-যুগঃ
আল্লাহর রাসুলের ইন্তেকালের পরে আসে সাহাবীদের যুগ। সাহাবায়ে কিরামের যুগের সাধারনসাধারণ অবস্থা ছিল এই যে, এই যুগে তাদের হাতে বিরাট সংখ্যক মাসায়িল বা বিধান মাওজুদ ছিল আল্লাহর কিতাব ও তার রাসুলের হাদিসের ভাষ্য বা নসের মধ্যে। কিন্তু সেই সাথে তাদের সময়ে এমন অনেক বিষয় বা সমস্যা দেখে দিল যা আল্লাহর রাসুলের যুগে ছিল না বিধায় তার সমাধানও তাদের সামনে উপস্থিত ছিল না। তাই তাদের জন্যে এবার আবশ্যক হয়ে পরল যে তারা এ সমস্ত উদ্ভূত বিষয়ে ইজতিহাদ বা গবেষনা করে তার সমাধান উদ্ঘাটন করবেন। তাই তারা তাদের ইজতিহাদ করা শুরু করলেন, রাসুলের যুগে ঘটেছে বা সেখানে তার বিধান আছে এমন বিষয়ের সাথে সদৃশ্য বিষয়কে তার সাথে যুক্ত করে অনুরুপ বিধান ইস্তিম্বাত করতেন, আর যে বিষয়ে পুর্বে কোন সাদৃশ পাওয়া না যায় সেখানে তারা শরীয়াতের সাধারন “মাসলাহাত” বা উদ্দেশ্যে সামনে রেখে গবেষণা করে সমাধান পেশ করতেন।
 
সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী মুজতাহিদের মাঝে যে পার্থক্য বা ব্যবধান তা ছিল নিম্নরুপ, প্রথমত সাহাবায়ে কেরাম ছিলেন আরবী ভাষার অধিকারী, আবার তারা ছিলেন ওহীর প্রত্যক্ষদর্শী, ওহীর প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার কারনে তাদের সামনে হাদিসের ইসনাদ বা বর্ননা-ধারা, হাদিস-বর্ননাকারীর অবস্থা, ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা তাদের জন্য প্রয়োজনীয় কোন বিষয় ছিল না। তাদের সামনে ছিল শুধু “আল্লাহর কিতাবে বলা হয়েছে…” আল্লাহর রাসুল বলেছেন …”।
৭৫ নং লাইন:
 
প্রথম কায়েদাঃ
সাহাবায়ে কিরামের পদ্ধতি থেকে আমাদের সামনে এই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে উঠে যে, ইজতিহাদের পুর্বেই সর্বপ্রথম স্থান দিতে হবে কুরান-হাদিসকে, কুরান-হাদিসে কোন সমাধান থাকলে ইজতিহাদের বৈধতা নেই। হযরত আবু বকর ও হযরত উমরের আমল থেকে এই বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট। কুরান-হাদিসে না থাকলে তারা ফকিহ সাহাবায়ে কেরামকে একত্রিত করে তাদের মতামত গ্রহনগ্রহণ করতেন, যদি এখানে কোন সম্মিলিত মত পাওয়া যেত তাহলে সেই মতকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হত, সম্মিলিত মতে না পৌছলে সেখান থেকে কোন একটি মত গ্রহনগ্রহণ করা হত। সম্মিলিত মতের গ্রহনগ্রহণ বর্তমান সময়ে আমাদের ফিকাহ একাডেমীর সাথে অনেকটা সাদৃশ্য রাখে।
 
দ্বিতীয় কায়েদাঃ
৯৯ নং লাইন:
 
চতুর্থ কায়েদাঃ
এক ধরনের বিষয়কে ইল্লতের ভিত্তিতে এক করে তার বিধান নির্নয়নির্ণয় করা হয়েছে। এই উদাহরন হিসাবে মদ্যপের হদ্দের মাসালা উল্লেখ করা যায়ঃ হযরত আলী থেকে বর্নিত যে তিনি হযরত উমর ফারুক রাঃ কে বলেনঃ “মানুষ মদ পান করার পরে মাতাল হয়ে পরে, আর মাতাল হলে আবল- তাবল বকতে থাকে, আর আবল-তাবল বলায় অবস্থায় অন্যকে অপবাদ দিয়ে থাকে আর অন্যকে অপবাদ দিলে তার উপর ৮০ দোরররা লাগানো হয়”। যখন হযরত উমর রঃ তার কাছে মদ্যপের হদ্দের ব্যাপারে জানতে চাইলেন, কারন হযরত উমরের ধারনাধারণা হচ্চিল যে, মানুষ মদ পানে থেকে বেচে থাকার ব্যাপারে শিথীলতা দেখাচ্ছে। এই ধরনের ইস্তিম্বাতকে উসুলের পরিভাষায় “কিয়াস” বলা হয়ে থাকে।
 
পঞ্চম কায়েদাঃ
১৩৯ নং লাইন:
ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম বাকির রাঃ এর আলোচনা নিচে উল্লেখ করা হলঃ
ইমাম বাকির রাঃ – আপনি কুরান-হাদিস দ্বারা প্রমানিত দ্বীনকে কিয়াস/যুক্তি-বুদ্ধির অনুগত বানিয়েছেন
ইমাম আবু হানিফা রাঃ – যথাযত সন্মানসম্মান প্রদর্শন পুর্বক ইমাম বাকির রাঃ কে তিনটি পালটা প্রশ্ন করলেনঃ
প্রথম প্রশ্নঃ পুরুষ দুর্বল না মহিলা
ইমাম বাকির রাঃ মহিলা দুর্বল
১৬২ নং লাইন:
 
উসুলে ফিকাহের গবেষণা-রচনা পদ্ধতিঃ
ইলমে উসুলে ফিকহের গবেষনাগবেষণা ও রচনাতে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ধারা-পদ্ধতি লক্ষ্য করা যায়। ইমাম শাফী রাঃ তার রিসালতে যে সকল ধারনাধারণা পেশ করেছেন তার সাথে অধিকাংশ মুজতাহিদ ফকিহ একমত হলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে তারা তার সাথে মতবিরোধ করেছেন, উদাহরন হিসাবে বলা যায় যে, ইসতিহসানের ক্ষেত্রে হানাফি মাজহাবের মতবিরোধ রয়েছে, আবার মদিনাবাসীদের আমল, যারায়ি, মাসলাহা মুরসালার ক্ষেত্রে মালিকি মাজহাবের মতবিরোধ রয়েছে। এই হিসাবে উসুলে ফিকহের গবেষনাতে একধিক পদ্ধতি দেখা যায়। এই সকল পদ্ধতির মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে দুইটি পদ্ধতিঃ
একঃ ইমাম শাফেয়ী বা মুতাকাল্লিমিনদের পদ্ধতি
দুইঃ হানাফি পদ্ধতি