উইকিপিডিয়া:খেলাঘর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট: স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার করেছে
MohammadGolamrabbi (আলোচনা | অবদান)
FBI Story in Bangla @MohammadGolamrabbi
১ নং লাইন:
 
<!-- অনুগ্রহপূর্বক এই লাইনটি অপসারণ করবেন না -->{{খেলাঘর}}<!-- অনুগ্রহপূর্বক এই লাইনটি অপসারণ করবেন না -->
Mohammad Golamrabbii
<!-- এই লাইনের নিচ থেকে আপনার সম্পাদনা পরীক্ষা করা শুরু করুন। মনে রাখবেন, এই পাতাটি প্রতি ৩০ মিনিট পরপর পরিষ্কার করা হয়, ধন্যবাদ। -->
একজন আমেরিকান মুসলিমের জীবনের
সতেরটি বছর দিতে হল শুধুমাত্র সত্যের
পক্ষে কথা বলার জন্যে - ড. তারেক মে...
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
ঠিক চার বছর আগের এই
দিনে আমি একটি লোকাল
হাসপাতালে আমার শিফটিং ডিউটি শেষ
করছিলাম। কাজ
শেষে আমি যখন আমার গাড়ির
দিকে হাঁটছিলাম তখন
দুজন ফেডারেল এজেন্ট (FBI) এসে আমার
গতিরোধ করল। তারা আমাকে দুটি প্রস্তাব
করলঃ আমি সহজ কাজটাও করতে পারি আবার
কঠিন
কাজটাও করতে পারি। সহজ কাজটা হল,
তারা আমাকে ব্যাখা করে বলল
যে তারা আমাকে সরকারের পক্ষে একজন চর
হিসেবে নিয়োজিত করতে চায়, আর
আমি যদি সেই
টিকটিকির কাজ গ্রহণ
করি তাহলে আমাকে আর
কখনো কোর্টরুম,
আদালতপাড়া কিংবা কয়েদখানা দেখতে হবে না।
আর
যদি কঠিন কাজটা করি, আর আমি তাই
করেছি যার
ফলে আমি আজ এখানে। আমি আজ এখানে,
সেই
দিনের পর থেকে গত চারটি বছরের অধিকাংশ
সময়
আমি পার করেছি ক্ষুদ্র একটি কয়েদি কক্ষে,
একটা আলমারির খোপের মতন কক্ষে,
নিঃসংগ অবস্থায়
যেখানে আমি দিনের ২৩ ঘন্টা সময়
আটকে থেকেছি। প্রতিদিন। এফ বি আই
এবং এই
লোকগুলো সত্যিই খুব পরিশ্রম করে কাজ
করেছে- আর সরকার খরচ করেছে মিলিয়ন
টাকা যা এসেছে সাধারণ মানুষের ট্যাক্স
থেকে-
আমাকে সেই সেলে রাখার জন্যে,
আমাকে সেখানে আটকে রাখা, বিচারের
সামনে দাঁড়
করানো, আর শেষমেষ আজকের
দিনে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে কিছু
কথা বলার
জন্যে, আমার এই কাজগুলো করতে আপনাদের
অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, আর আমার
জবানবন্দী শেষে এখন আবার কত কালের জন্য
আমাকে কাটাতে হবে সেই কয়েদ খানার
কক্ষে কত কত বছর।
আর এখানে আসার আগে অনেকেই
আমাকে পরামর্শ দিয়েছে, আপনাদের
সামনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কি বললে আমার
উপকার
হবে, আমার কি কথা বলা উচিত ইত্যাদি।
অনেকে বলেছে, আমার উচিত আপনাদের
কাছে দয়া প্রার্থনা করা যেন আমার
শাস্তি লঘু করা হয়,
আবার অনেকে বলেছে আমার আরো কঠোর
ভাবে আপনাদের প্রতি আঘাত করা উচিত।
কিন্তু
আমি এসব কিছুই করব না,
আমি আপনাদেরকে শুধু
আমার কথা বলব, আমার গল্প বলব। কয়েক
মিনিটের
জন্যে মাত্র।
যখন আমি একজন গুপ্তচর হতে অস্বীকার
করলাম,
তখন সরকার তাদের
প্রতিক্রিয়া জানালো আমাকে মুজাহিদীনদের
সহায়তা করার “অপরাধ” এ অভিযুক্ত করে,
যারা বিশ্বের
বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিম সংখ্যাপ্রধান
দেশগুলোতে দখলদারী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই
করছে। অথবা সরকারী ভাষায়
বলতে “টেররিস্ট,
জঙ্গী”। আমি কোন মুসলমান দেশে জন্মাই নি,
তবুও। এই এখানে আমেরিকাতেই আমার জন্ম
আর
বেড়ে উঠা আর এ কারণেই অনেক মানুষের রাগ
আমার উপর। তাদের মতে, কিভাবে এই
লোকটা একজন আমেরিকান হয়ে এইরকম
অবস্থান
নিতে পারলো, কিভাবে ওদের
বিশ্বাসে বিশ্বাসী হল ! আরে আমি তো আর
কিছুই
করিনি, একটা মানুষ তো সেভাবেই তার
দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে যেগুলো তার
আশেপাশের পরিবেশে ঘটে। চারপাশের
উপাদান
নিয়েই তো একটা মানুষের আউটলুক তৈরি হয়।
আর
এই একাধিক কারণেই, এই আমেরিকার
কারণেই
আজকে আমার এইখানে আসা ও অবস্থান।
যখন আমার বয়স ছয় বছর,
তখন আমি কমিক বইয়ের একটা বিশাল
সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে লাগলাম। ব্যাটমান
চরিত্রটা আমার
মনে একটা কনসেপ্ট স্থাপন করল,
আমাকে একটা ধারণা দিল, এই দুনিয়াটার
কাঠামো কি রকম
সেই বিষয়ে একটা মডেলের
সাথে আমাকে পরিচয়
করিয়ে দিল; কার্টুনের চরিত্রগুলোর মতন এই
সত্যিকারের দুনিয়াতেও কিছু মানুষ
আছে যারা অত্যাচারী, যালিম আর কিছু মানুষ
আছে যাদেরকে অত্যাচার,যুলুম করা হয়, আবার
আরো এক দল মানুষ আছে যারা কিনা এই দুর্বল
অত্যাচারের শিকার মানুষকে রক্ষা করার
জন্যে পাশে এসে দাঁড়ায়, তাদের সমর্থন
করে ।
দুনিয়ার এই ছবিটা আমার মনে কার্টুনের
চরিত্রগুলোর
মত এমনভাবে গেঁথে গেলো ! আমার
মনে পড়ে শৈশবের সেই দিনগুলিতে বারবার
এই
ছবি আমার মাথায় ঘুরতে থাকতো- সেই মডেল-
আংকেল টম’স কেবিন, ম্যালকম এক্স এর
আত্মজীবনী... এমনকি এদের
মাঝে আমি একটি নৈতিক বোধ পর্যন্ত
খুঁজে পেলাম
‘দ্য ক্যাচার ইন দ্য রে’ বইতে।
দিন কাটতে লাগলো আর
আমি হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে ঠিক করলাম
একটু ইতিহাস সম্পর্কে জানা দরকার, তাই
আমি ইতিহাস
ক্লাসে ভর্তি হলাম। আমি অবাক হয়ে দেখলাম
সেই
ব্যাটমানের কমিকের মতোই
তো লাগছে সবকিছু !
সেই একই মডেল, একদল যালিম, আরেকদল মযলুম
আর এদের সাথে একদল যারা নিরীহ এই
মযলুমদের
পাশে এসে দাঁড়ায় ! আমি জানলাম নেটিভ
আমেরিকানদের অর্থাৎ এই আমেরিকার
আদিম
অধিবাসীদের কি করুণ পরিণতি হয়েছিল যখন
দলে দলে ইউরোপ থেকে লোকজন
এখানে এসে বসতি স্থাপন করা শুরু করল।
আমি দেখলাম সেই ইউরোপ আগত লোকদের
বংশধরেরা কিভাবে অত্যাচারী চরিত্রের রুপ
নিল
সাথে যোগ দিল অত্যাচারী শাসক তৃতীয়
কিং জর্জ।
আমি পড়লাম পল রিভিয়ার এর কথা, টম
পেইনের
কথা আর কিভাবে আমেরিকার লোকজন
ইউরোপ
আগত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ
গড়ে তুলতে লাগলো- এই সেই প্রতিরোধ
যা আজকে আমরা উদযাপন করি ‘ দ্য
আমেরিকান
রিভুলশনারি ওয়ার’ নামে !
ছোট্ট সেই বয়সে স্কুলের
মাঠে আমি ঘুরতে যেতাম,
এই এখান থেকে কয়েক ব্লকের দূরত্বে।
আমি জানতে লাগলাম হারিয়েট টাবম্যান,
নাট টার্নার, জন
ব্রাউন এবং দাসত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রামের
ইতিহাস।
আমি ধীরে ধীরে পড়তে লাগলাম
ইমা গোল্ডম্যান, ইউগেন ডেবস এবং লেবার
ইউনিয়নের সংগ্রামের কথা, সমাজের
খেটে খাওয়া মানুষ, গরীব লোকদের দুঃখের
ইতিহাস। আমি আরও জানলাম আনি ফ্রাংক,
নাজিদের
বর্বরতার কথা, কিভাবে তারা সংখ্যালঘু
মানুষদের
হত্যা করেছে এবং বিরোধী পক্ষকে কারারুদ্ধ
করেছে। আমি আরও জানলাম রোসা পার্ক,
ম্যালকম
এক্স, মার্টিন লুথার কিং এবং সিভিল রাইট’স
এর
জন্যে সাধারণ মানুষের সংগ্রামের কথা।
আমি জানলাম
হো চি মিন, এবং কিভাবে ভিয়েতনামের
মানুষ এক দশক
ধরে লড়াই করেছে একের পর এক হানাদার
বাহিনীদের থেকে নিজেদের
স্বাধীনতাকে বাঁচিয়ে রাখতে।
আমি জানতে পারলাম
নেলসন ম্যাণ্ডেলা এবং দক্ষিণ
আফ্রিকাতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তাঁর
লড়াইয়ের কথা।
সেই বছরগুলোতে আমি যা কিছুই শিখছিলাম
না কেন সবই যেন সেই ছয় বছর
বয়সে পড়া কমিক বইয়ের তিন দল মানুষের কথা;
(অত্যাচারী, অত্যাচারিত
এবং সুপারহিরো যারা অত্যাচারীদের
পাশে দাঁড়ায়)
মানুষের ইতিহাসের পুরোটাই যেন এক চিরন্তন
যুদ্ধ, যালিমের সাথে মযলুমের সেই অন্তহীন
যুদ্ধ।
প্রতিটি ঐতিহাসিক ঘটনা, প্রতিটি লড়াই আর
সংগ্রামের
ঘটনা আবিষ্কারের সাথে সাথে আমি আরও
একটি জিনিস
আবিষ্কার করলাম, আমি দেখলাম
প্রতিটি ঘটনাতেই
আমি নিজের অজান্তেই সেই দুর্বল মযলুম
মানুষগুলোর জন্যে নিজের
ভেতরে একটা মমতা অনুভব করছিলাম,
প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধারাবাহিকভাবে,
প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই লোকদের জন্য, সেই
নায়কদের জন্যে নিজের ভেতরেই এক
অজানা সমর্থন তৈরি হচ্ছিল যারা নিরীহ
দুর্বল মানুষের
সাহায্যার্থে, তাদের রক্ষা করার
জন্যে সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। সেই
নায়কদের
আমি শ্রদ্ধা করেছি, জাতি ধর্ম বর্ণ
নির্বিশেষে। আর
আমি কখনোই আমার ক্লাসের
খাতা ফেলে দিতাম না।
এমনকি এই
যে আজকে আমি এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি,
আমার
বাড়িতে গিয়ে আলমারিতে খোঁজ করলে সব
কিছুই
পাবেন।
ইতিহাসের সব মহানায়কদের
মাঝে একটি বিষয়ে মিল
ছিল ,
আমি সেই মিলটা খুঁজে পেয়েছি, আর তা হল
তাদের
সবাইকেই সেই মযলুম নির্যাতিত লোকদের
হয়ে উঠে দাঁড়াতে হয়েছে। আমি ম্যালকম এক্স
এর অনেক বিষয় সম্পর্কে জেনে প্রভাবিত
হয়েছি, কিন্তু
সবচেয়ে বেশি যে বস্তুটা আমাকে অবাক
করেছে তা হল, তার আচমকা আমূল পরিবর্তন,
‘আই
ওয়াজ ফ্যাসিনেটেড বাই দ্য আইডিয়া অফ
ট্রান্সফরম্যাশন’, তার বদলে যাওয়া।
আমি জানি না আপনারা স্পাইক
লি পরিচালিত ‘এক্স’
ছবিটি দেখেছেন কিনা, এটা প্রায়
সাড়ে তিন ঘন্টার
উপরে একটা সিনেমা, আর সিনেমার শুরর
ম্যালকম আর
শেষের ম্যালকম সম্পূর্ণ আলাদা দুটি মানুষ,
দুটি ভিন্ন
চরিত্র। তাঁর শুরু হয়েছিল একজন অশিক্ষিত
ক্রিমিনাল
হিসেবে, কিন্তু শেষ হয়েছে একজন স্বামী,
পিতা,
একজন রক্ষাকর্তা ও বাগ্মী নেতা হিসেবে,
শেষ
হয়েছে একজন সুশৃংখল মুসলিম হিসেবে মক্কায়
হজ
পালনের দ্বারা, এবং সবশেষে , একজন শহীদ।
ম্যালকমের জীবন আমাকে শিখিয়েছে সেই
মূল্যবান শিক্ষাটি,
আর তা হল ইসলাম উত্তরাধিকারসূত্
রে পাওয়া কোন
সম্পত্তি নয়, জন্মসূত্রে শুধুমাত্র মুসলিম
পরিবারে জন্মালেই কেউ মুসলিম
হতে পারে না,
ইসলাম কোন সংস্কৃতি বা জাতিগোষ্ঠীর মত
নৃতাত্ত্বিক কিছু নয়। এটা একটা “ওয়ে অফ
লাইফ”
একটিজীবনধারা, একটি জীবন বোধ, মানসিক
আদর্শ; আর যে কেউই তা গ্রহণ করতে পারে;
আর এটা গ্রহণ করার জন্যে কেউ কোথায়
জন্মগ্রহণ
করেছে কিংবা কি পরিবেশে বেড়ে উঠেছে
এগুলো কোন ব্যাপারই না। এই , এই জিনিসটাই
আমাকে ইসলামের দিকে একটা গভীর
দৃষ্টিপাতের
শিক্ষা দিল, আর আমি এতে আটকে গেলাম
একটি আংটার মত, “আই ওয়াজ হুকড” ।
তখন আমার বয়স কম,
জাস্ট এ টিনএজার কিন্তু ইসলাম আমাকে সেই
সকল
প্রশ্নের উত্তর দিল
যে প্রশ্নগুলো সম্পর্কে বড় বড় বিজ্ঞানমনস্ক
লোকেরাও কোন নিদর্শন বা ক্লু পাচ্ছিলেন
না,
যে প্রশ্নের জবাব খুঁজে না পেয়ে ধনাঢ্য-
খ্যাতিমান
লোকেরাও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে,
অনেকে আত্মহত্যা করে : আমাদের জীবনের
লক্ষ্য উদ্দেশ্য কি ?
এই বিশ্বে আমাদের অবস্থানের কারণ কি ?
কেন ?
ইসলাম শুধু আমাকে এই প্রশ্নগুলোর জবাব
দিয়েই
উপকার করল
না বরং কিভাবে এখানে অবস্থান করা উচিত
তাও জানিয়ে দিল ! আর যেহেতু
এখানে অন্যান্য
ধর্মের মতন যাজক পুরোহিতদের
ক্রমবিন্যাসের
মই বেয়ে উঠার মতন কিছু নেই,
আমি সরাসরি কুর’আন
এবং নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বাণীগুলো, শিক্ষাগুলো পড়তে লাগলাম, এটাই
ছিল
আমার চলার শুরু, আমি বুঝতে লাগলাম একজন
মানুষ
হিসেবে আমার উপর ইসলাম কি প্রয়োগ করে,
একজন ব্যক্তি হিসেবে, একজন
প্রতিবেশি হিসেবে, আমার আশেপাশের
লোকদের উপর এমনকি সারা পৃথিবীর মানুষের
জন্যে আমার কি করার আছে। আর আমি যতই
জানতে লাগলাম, শিখতে লাগলাম ততই
ইসলামকে আমার
কাছে এক টুকরো স্বর্ণের মতন
মনে হতে লাগলো। এগুলো হয়েছিল যখন
আমি উঠতি বয়সে ছিলাম, কিন্ত
আজকে পর্যন্ত, এই
গত বছর কয়েকের নানাবিধ চাপ সামলেও এই
আজকের দিনে আমি আপনাদের
সামনে দাঁড়িয়ে, এই
আদালতকক্ষের সবার সামনে আমি দাঁড়িয়ে,
আমি একজন গর্বিত মুসলিম।
এরই সাথে, আমার মনোযোগ ঘুরে গেল বিশ্বের
নানা প্রান্তে কোথায় মুসলিমদের
কি হচ্ছে তার
দিকে। আর আমি যেদিকেই তাকালাম,
আমি দেখলাম
একটি শক্তি আমার সেই ভালোবাসাকে ধ্বংস
করার
চেষ্টা করছে। আমি জানলাম সোভিয়েত
ইউনিয়ন
আফগানিস্তানে কি করেছিল, আমি জানলাম
সার্বরা বসনিয়ার মুসলিমদের সাথে কি আচরণ
করেছিল।
আমি জানলাম রাশিয়ানরা চেচনিয়ার
মুসলিমদের
সাথে কি আচরণ করছে। আমি আরও জানলাম-
ইসরায়েল কি করছে লেবাননে-আর
কি করে যাচ্ছে প্যালেস্টাইনে-যুক্তরাষ্ট্রের
পূর্ণ
সমর্থন সাথে নিয়ে। এবং আমি আরো জানলাম
স্বয়ং আমেরিকা কি করছে মুসলিমদের সাথে।
আমি গালফ ওয়ার তথা উপসাগরীয় যুদ্ধ
সম্পর্কে জানলাম, দেখলাম তারা ইউরেনিয়াম
বোমা ফেলেছে যাতে হাজার হাজার মানুষ
মারা গেছে আর তাতে ক্যান্সারের রেট
একটা রকেটের মতন বেগে বেড়ে গিয়েছিল
ইরাক জুড়ে। আমি জানলাম আমেরিকানদের
অর্থনৈতিক
অবরোধের কথা- যা মানুষের মুখে খাবার
কেড়ে নিত, ওষুধ কেড়ে নিত, এবং ইরাক
জুড়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে বাধা দিত—আর
আমি দেখলাম, জাতিসংঘের হিসাব
অনুযায়ী কিভাবে এগুলোর ফলে প্রায় অর্ধ
মিলিয়ন
শিশুর জীবন কেড়ে নেয়া হল।
আমার আজকে মনে পড়ছে মেডেলিন
অলব্রাইটের ষাট মিনিটের একটি ভিডিও
ক্লিপের
কথা যেখানে তিনি তার মতামত ব্যক্ত
করে বলেছেন, এই মরা শিশুদের এরকম
ভাবে মৃত্যু নাকি “পাওনা ছিল ”। সেপ্টেম্বর
মাসের
এগার তারিখে আমি দেখতে পেলাম
কিভাবে একদল
মানুষকে বাধ্য করা হলো বিমান ছিনতাই
করতে,
কিভাবে এই নিষ্পাপ শিশুদের মুখগুলো, এই মৃত্যু
তাদেরকে তাড়িত করেছিল
বিমানগুলো নিয়ে একের
পর এক ভবনে উড়ে আসতে। আমি দেখলাম
এরপর
কিভাবে সরাসরি গায়ের
জোরে আমেরিকা ইরাক
আক্রমণ ও দখল করে বসল। সেই আকস্মিক
আক্রমণের ‘শক ও ভয়’ কাটতে না কাটতেই
প্রথম
দিনের ফলাফল দেখলাম—দেখলাম
কিভাবে আমেরিকান মিসাইলগুলোর
শার্পনেলের
দ্বারা আহত শিশুদেরকে হাসপাতালের
ওয়ার্ডে জায়গা পর্যন্ত দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না,
এত
বেশি সংখ্যায় ওরা আহত হয়েছিল, দেখলাম
সেই
নিষ্পাপ বাচ্চাগুলোর কপাল
থেকে কিভাবে শার্পনেলের
স্প্লিন্টারগুলো বের করা হচ্ছে আর তাদের
আর্তনাদ ও যন্ত্রণাক্লিষ্ট চেহারা, আর হ্যাঁ,
এসব কিছু
কখনোই সিএনএন-এ দেখানো হয়নি।
আমি আরও একটি শহরের খবর জানলাম,
শহরের নাম হাদীথা, যেখানে ২৪ জন মুসলিম
ছিলেন,
তাদেরমধ্যে কয়েকজনের
কথা আমি আপনাদেরকে বলছি, একজন ছিলেন
৭৬
বছর বয়স্ক বৃদ্ধ মানুষ, হুইলচেয়ারে বসা, নারী,
এমনকি এমন শিশুরাও ছিল
যারা ঠিকমতো হাঁটতেও
পারতো না- এদের
সবাইকে গুলি করে উড়িয়ে দেয়া হয়েছিল- আর
তা করা হয়েছে এমন একটা সময়ে যখন
তারা নিজেদের বিছানায় রাতের
বেলা ঘুমাচ্ছিলেন।
আমি আরো জানতে পারলাম আবির আল-
যানাবী,
একজন চৌদ্দ বছরের ইরাকি বালিকার কথা;
সে পাঁচজন
আমেরিকান সৈন্য দ্বারা একসাথে ধর্ষিত
হয়েছে,
এরপর সেই সৈন্যরা তার মাথায় গুলি করেছে,
তার
পরিবারের বাকি সদস্যদেরকেও
একইভাবে হত্যা করেছে, এতেই ঘটনার শেষ নয়,
সেই মরা দেহগুলোতে আগুন পর্যন্ত
লাগিয়ে দিয়েছে।
আমি আপনাদেরকে একটা বিষয়
এখানে একটু আলোকপাত করতে চাই, জানেন
নিশ্চয়ই, মুসলিম নারীরা পরপুরুষের
সামনে তাদের
মাথার একটা চুল, হ্যাঁ একটা চুল পর্যন্ত প্রদর্শন
করে না। তাই একটু চিন্তা করার
চেষ্টা করে দেখুন,
ভাবুন এই হতভাগ্য বালিকাটির
কথা যে একটি রক্ষণশীল
গ্রামে বেড়ে উঠছিল তাকে বিবস্ত্র
করা হচ্ছে,
তার গায়ের পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে; আর
একজন নয়, দুইজন নয়, তিনজনও নয়, আর
না চারজন, পাঁচ
পাঁচজন আমেরিকান সৈন্য
দ্বারা সে নির্যাতিত হয়েছে।
এমনকি আজকে, এই যে আমি জেলখানার
কক্ষে বসে,
আমি এখনো দেখছি চালকবিহীন আমেরিকান
বিমান
হামলে পড়ছে, বোমা ফেলছে সাধারণ
মানুষের
উপর, প্রতিদিন, রুটিনের মত করে পাকিস্তান,
সোমালিয়া এবং ইয়েমেনে। *
এইতো গত মাসের কথা, হয়তো শুনে থাকবেন
সতের জন আফগানিস্তানের মুসলিমের কথা-
অধিকাংশই
গ্রামের মহিলা , মা ও তাদের বাচ্চাদের -
গুলি করে বিনা কারণে হত্যা করল
একটা মার্কিন সেনা,
সেও তাদের মরা লাশগুলোতে আগুন
না দিয়ে শান্তি পেলনা।
এগুলো তো শুধু একের পর এক ঘটে চলা ঘটনা,
কখনো খবরের শিরোনাম, কিন্তু জানেন
কি ইসলাম
সম্পর্কে সবার প্রথম
যে বিষয়গুলো আমি শিখেছিলাম তার
মধ্যে একটা ছিল
আনুগত্য, আর ভাতৃত্ববোধ- এটা হল
প্রতিটি মুসলিম
নারী আমার বোন, প্রতিটি পুরুষ মুসলিম আমার
ভাই, আর
সবাই একত্রে একটা দেহের মতন
যেখানে সবাই
একে অপরকে রক্ষা করে। সহজ কথায়,
আমি দেখলাম আমার এই বিষয়গুলো পালন
করা হচ্ছে না আমার ভাই ও বোনদের প্রতি-
এমনকি আমেরিকাকে সাথে নিয়েও- আর শুধু
চুপ
করে বসে থাকা। আমার সেই ছোটবেলার
কমিক
বইয়ের থেকে যে অনুভূতি অর্জন করেছিলাম;
নির্যাতিত মানুষের জন্য সহানুভূতি শুধু বেড়েই
চলল,
কিন্তু এখন আরও একটু
বেশি ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য
করার চেষ্টা করা, আমি তাদের
পাশে দাঁড়িয়ে তাদের
রক্ষা করার সম্মানটুকু করতে চাইছিলাম।
আমি পল রিভিয়ার এর কথা বলছিলাম,
(আপনারা যারা আমেরিকান বিপ্লবের
ইতিহাস জানেন)
যখন তিনি তারঁ মাঝরাতের টহলে বের হলেন,
এর
উদ্দেশ্য ছিল লোকদেরকে সতর্ক
করে দেয়া যে,
ব্রিটিশরা আসছে লেক্সিনটনের
দিকে স্যাম এডামস এবং জন হানকক
কে গ্রেপ্তার
করতে ... ইতিমধ্যে যখন ব্রিটিশরা কনকর্ড
নামক
স্থানে পৌঁছল, গিয়ে দেখল
সেখানে মাইনুটম্যান
নিজেই তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন,
হাতে অস্ত্র। তারা ব্রিটিশদের
দিকে গুলি বর্ষণ
করলেন, লড়াই করলেন এবং পরাজিত করলেন।
আর
সেই লড়াই থেকেই জন্ম নিল আমেরিকান
রিভুলিউশন। জেনে অবাক হবেন মাইনুটম্যান
সেদিন
যা করেছিল আমি সেই
ঘটনাকে একটি আরবি শব্দ
দিয়ে অতি সহজে ব্যাখা করে দিব।
শব্দটা হলঃ জিহাদ,
আর এটা নিয়েই তো আমার আজকের এই
বিচার। সব
ঐ ভিডিও, অনুবাদ আর আপনাদের শিশুতোষ
কান্না “ওহ ! সে এই প্যারাগ্রাফের অনুবাদ
করেছে !”
এবং “ওহ ! সেই এই লাইনটা এডিট
করে দিয়েছে !”
আর এই সব কিছু একটা ঘটনাকেই কেন্দ্র
করে ঘুরপাঁক খেয়েছেঃ আমেরিকানদের
বিরুদ্ধে মুসলিমরা যা করছে সেই কাজ
তো আমেরিকা নিজেরাই ব্রিটিশদের
বিরুদ্ধে করেছে।
আর আমার বিচারের প্রক্রিয়াতে এটা জলের
মতই
পরিষ্কার হয়েছে যে, আমি কখনোই শপিং মল
বা ইত্যাদি জায়গায় আমেরিকানদের হত্যার
কোন
ষড়যন্ত্র করিনি। সরকারপক্ষের নিজেদের
সাক্ষীরাই তাদের দাবির
পক্ষে বিরোধীতা করেছে, আর আমরা একটার
পর একটা কাগজ পাঠালাম ঐ
ওখানে উপরে যিনি বসে আছেন (বিচারক) ,
যারা ঘন্টার
পর ঘন্টা সময় ব্যয় করে আমার
লেখা প্রতিটি শব্দের
ময়না তদন্ত করলেন, আমার বিশ্বাস
কি তা ব্যাখা করলেন। আর কি আশ্চর্য ! যখন
আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল তখন সরকার
আমার
কাছে একজন টিকটিকি গুপ্তচর
পাঠালো যাতে আমি তাদের কাছে যাবতীয়
“টেরর
প্লট” এর কথা ফাঁস করে দেই ! কিন্তু
আমি তাতে অংশ
নিতে অসম্মত হলাম। রহস্যজনক ব্যাপার,
জুরি যেন এই
ঘটনার কিছুই শুনেনি !
সুতরাং, এই মামলার মূল কারণ হল
মুসলিমদের দ্বারা আমেরিকান নাগরিক
হত্যা নিয়ে আমার
অবস্থান। প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল
আমেরিকানদের
দ্বারা মুসলিম নাগরিক হত্যা সম্পর্কে আমার
অবস্থানের
কারণে, আর তা হল মুসলিমরা তাদের
নিজেদের
ভূমিকে বাইরের শত্রুদের থেকে রক্ষা করার
ন্যায্য
অধিকার রাখে, তারা অবশ্যই নিজেদের
রক্ষা করবে বহিঃশত্রুর থেকে- সোভিয়েত,
আমেরিকান কিংবা ইউরোপিয়ান যেই হোক
না কেন।
এটাই হল যা আমি বিশ্বাস করি, এটা আমি সব
সময় বিশ্বাস
করে এসেছি, এবং ভবিষ্যতেও সব সময়
আমি এই
বিশ্বাস করে যাব (ইনশা আল্লাহ্)।
এটা টেররিজম নয়,
আর এটা চরমপন্থাও নয়। এটা হল আপনার মাথার
উপরের
যেই তীর চিহ্নটা আছে, সেটা (বিচারকের
মাথার
উপরে অংকিত প্রতিরক্ষা বাহিনীর লোগোর
দিকে ইংগিত করে) নিজের
বাসভূমিকে রক্ষা করা।
এজন্যই আমার ল’ ইয়ার দের সাথে আমি একমত
হতে পারিনি, যখন তারা আমাকে এই প্রস্তাব
করলেন
যে, আমাকে আমার বিশ্বাসের সাথে একমত
হওয়ার
দরকার নেই- (তাদেরকে আমি বলেছি) ‘নো ’।
যে কেউ যার সাধারণ বুদ্ধি আছে আর
মানবতা আছে সে আমার সাথে একমত
না হয়ে পারেই না। যদি কেউ আপনার
বাড়িতে ডাকাতি করতে ঢুকে পড়ে আর
আপনার,
আপনার পরিবারের ক্ষতি করা শুরু করে, লজিক
বলে দেয় ঐ
আক্রমণকারীকে বাড়ি থেকে বের করার জন্য
আপনার যা যা করার দরকার আপনি সবই
করবেন। কিন্তু
তামাশাটা হল, যখন সেই বাড়িটা একটা মুসলিম
ভূমিতে আর
আক্রমণকারীর ভূমিকায় ইউ এস মিলিটারী,
তখন কেন
জানি সব নীতি নৈতিকতার
মাপকাঠি উলটে যায় ! সাধারণ
কমন সেন্স এর নাম দেয়া হয় “টেররিজম” আর
যেই লোকেরা নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর
জন্য
আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের
বলা হয় “ জংগী”, “টেররিস্ট” যারা নাকি
“কিলিং আমেরিকানস” !
আজ থেকে আড়াইশ বছর আগে
ব্রিটিশ সৈনিকদের দ্বারা যে মানসিকতায়
ভিকটিম
করা হয়েছিল আমেরিকাকে আজ সেই একই
আওয়াজের বুলি ছুঁড়ে আমেরিকান সৈনিকদের
দ্বারা মুসলিমদেরকে ভিকটিম বানানো হচ্ছে।
এটা কলোনিয়ালিজম মানসিকতা। যখন
সার্জেন্ট বেলস
গতমাসে ঐ আফগানদের হত্যা করল, মিডিয়ার
সমস্ত
ফোকাসটা গিয়ে পড়ল তার উপর, -তার জীবন,
তার
মানসিক চাপ, তার পিএসটিডি, তার
বাড়িতে বন্ধকের কথা-
মনে হচ্ছিল যেন সে নিজেই ভিকটিম ! খুব
সামান্যই
সমবেদনা জানানো হয়েছে সেই লোকগুলোর
প্রতি যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল,
মনে হয় যেন
তারা মানুষই না, যেন বাস্তবের কিছু না , যেন
ভিডিও
গেমের জগত ! (আর সেই গেইম খেলে মানসিক
বিপর্যস্ত সৈনিক সার্জেন্ট বেলস )
দুর্ভাগ্যজনকভাবে,
আজকের সমাজে এই মানসিকতা আমাদের
গ্রাস
করে নিয়েছে, আমরা বুঝি আর না বুঝি।
এমনকি আমার
পক্ষের আইনজীবীদেরকেও ! আমার নিজের
পাক্কা বছর দুই সময় লেগেছে তাদেরকে এই
কথাটা বুঝাতে,
আলোচনা করতে এবং পরিষ্কার
করতে যার আগ পর্যন্ত তারা ‘আউট অব দ্য বক্স’
চিন্তাই করতে পারছিলেন না,
আমি যে সাধারণ
কমনসেন্সের যুক্তির কথা বলছিলাম
সেটা গ্রহণ করা
তো দূরে থাক ! দুই বছর ! যদি আইনজীবীদের
মত বুদ্ধিমান ঘাঘু লোকদেরকে এই
কথা বুঝাতে দুই
বছর সময় লাগে, যাদের কাজ আমাকে সমর্থন
দেয়া ! তাদেরকে এই
গুলে খাওয়ানো প্রোগ্রাম
কে ডি-প্রোগ্রাম করতে যদি আমার এই
পরিমাণ কষ্ট
করতে হয় তাহলে যদি আমাকে একজন যেকোন
জুরির সামনে এনে বলা হয়, ‘এরা নিরপেক্ষ’,
আমি শুধু
বলব; পালাও !
কাঠগড়ায় আমাকে দাঁড় করিয়ে বিচারের
কোন
পর্যায়েই আমার সাথে কোন উকিল ছিল না।
কারণ
আমেরিকাকে আজ যে মানসিকতা গ্রাস
করে নিয়েছে তাতে আমার মতের পক্ষে কোন
উকিল নেই। এই ঘটনাকে গণায়
ধরে তারা আমাকে অভিযুক্ত করেছে,
এটা করা তাদের দরকার ছিল না, কিন্তু
আসলে তারা দেখাল যে তারা পারে।
আমি ইতিহাসের ক্লাসে আরও একটা বিষয়
সম্পর্কে শিখেছি;
আমেরিকা তার
বিরোধীতাকারী সংখ্যালঘুদের
বিরুদ্ধে ঐতিহাসিকভাবে একের পর এক
সবচেয়ে অন্যায় নীতিসমূহ তৈরি করে চলেছে-
আর তাদের এই অভ্যাসটা তারা আইন
করে করে রক্ষা করেছে- শুধু পেছন
ফিরে তাকানো এবং প্রশ্ন করাঃ “আমরা যেন
কি ভাবছিলাম?” দাসত্ব, জিম ক্রো, দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধে যখন জাপানীদের (হিরোসিমা,
নাগাসাকি)
কবর খোঁড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হল –
প্রতিটি সিদ্ধান্ত
ব্যাপক হারে আমেরিকান সমাজ গ্রহণ
করেছে,
প্রতিটি কাজকে সুপ্রিম কোর্ট সমর্থন
করেছে।
কিন্তু সময় গড়াতে লাগল আর
আমেরিকা বদলে গেল, কোর্ট আর আমেরিকান
সমাজ উভয়েই অতীতের দিকে পেছন
ফিরে তাকালো আর প্রশ্ন করল, “আমরা যেন
কি ভাবছিলাম?”
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের কাছে নেলসন
ম্যাণ্ডেলার পরিচয় ছিল সন্ত্রাসী,
এবং তাকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু
সময়
চলতে লাগল, দুনিয়াও বদলাতে লাগল, একসময়
তারা বুঝতে পারলো কি ভয়াবহ
অত্যাচারী ছিল তাদের
গৃহীত নীতিসমূহ, আরে এই
লোকটা তো সন্ত্রাসী না ! আর
তাকে কারামুক্তি দেয়া হল।
এমনকি তিনি একসময় তাদের
প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেন ! আর তাই, সবকিছুই
বৈষয়িক—এমনকি এই “জংগীবাদ” এর নামের
যে ব্যস্ততা আর “জংগী” নাম দিয়ে মগজ
ধোলাই
করা। এর সবকিছুই সময় আর স্থানের উপর নির্ভর
করে, যারা সুপার পাওয়ার হয়ে এই সময়ে কাজ
করে যাচ্ছে।
আপনাদের চোখে, আমি একজন জংগী,
এবং আপনাদের কাছে পুরোপুরি যৌক্তিক
যে আমি এখানে কমলা রংয়ের স্যুট
পরে কাঠগড়ায়
দাঁড়িয়ে। কিন্তু একদিন অবশ্যই
আমেরিকা বদলে যাবে, এবং এই
দিনটিকে স্মরণ
করবে । তারা দেখবে কিভাবে হাজারের
হাজার পূরণ
করে মুসলিমদের
হত্যা করা হয়েছে এবং তারচেয়েও
বেশি মানুষকে আহত,
অঙ্গহানী করা হয়েছে আমেরিকার
মিলিটারী দ্বারা বিদেশের মাটিতে। আর
কিভাবে যেন, এই হত্যাযজ্ঞের মাঝে আমিই
নাকি সেই লোক যে কিনা জেলখানায়
যাচ্ছি, কারণ
“হত্যা ও অংগহানীর ষড়যন্ত্রকারী” সেই সব
দেশে- কারণ আমি সেই দেশগুলোর
মুজাহিদিনদের
সমর্থন করি যারা মযলুম লোকদের
পাশে দাঁড়ায়। মানুষ
একসময় দেখবে কিভাবে তাদের সরকার
মিলিয়ন
মিলিয়ন ডলার খরচ করে আমার মত মানুষদের
“টেররিস্ট” লেবেল এঁটে দিয়ে কয়েদখানায়
নিক্ষেপ করেছে, হায়
যদি কোনভাবে ইরাকের
সেই মেয়েটি আবির আল-যানাবীকে জীবন
দান
করে এই মুহুর্তে এখানে হাজির করা যেত
যাকে আপনাদের সৈনিকদের
দ্বারা গ্যাং রেইপ
করা হয়েছে, তাকে আমি সাক্ষী করতাম,
তাকে সাক্ষী দাঁড়া করিয়ে আমি জিজ্ঞেস
করতাম
কারা “টেররিস্ট”, সে নিশ্চিতভাবেই আমার
দিকে আঙ্গুল তাক করত না। সরকার বলছে,
আমি নাকি ভায়োলেন্স নিয়ে উন্মাদ
হয়ে আছি, পাগল
হয়ে চিন্তা করছি “আমেরিকান হত্যা”য় ।
কিন্তু, একজন
বর্তমান সময়ের মুসলিম হিসেবে, “I can think of
a
lie no more ironic” এর চেয়ে হাস্যকর
মিথ্যা আর
কিছু নেই।
-ড. তারেক মেহান্না ১২ এপ্রিল, ২০১২
তারেক মেহান্নাকে আমেরিকান সরকার
সতের
বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে।
----------------------------------------------------------------
আরো একটি দীর্ঘশ্বাসঃ MGR
ডিসেম্বর ২০০৯ এ ইয়েমেন দাবী করে তারা ৩০
জন আল-কায়িদার সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।
সাংবাদিক আব্দুল্লাহ হায়দার শাঈ
সেখানে গিয়ে দেখেন মিসাইলের
গায়ে লেখা
'Made in USA' নিহতদের মধ্যে ১৪জন
নারী এবং ২১ জন শিশু । ইয়েমেন সরকার শাঈ'র
সংবাদটা প্রত্যাখান করে, মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চুপ
থাকে। এই সংবাদের
পরে শাঈকে জেলে যেতে হয় আল-কায়িদার
সদস্য হওয়ার অপবাদে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ
দাড়
করাতে না পেরে , ইয়েমেন সরকার
তাকে ছেড়ে দিতে চায়। ওবামার একটি ফোন
তার
মুক্তি বন্ধ করে দেয়। আহা ন্যায়বিচার!
Photo সরকার বলছে, আমি নাকি ভায়োলেন্স
নিয়ে উন্মাদ হয়ে আছি, পাগল
হয়ে চিন্তা করছি “আমেরিকান হত্যা”য় ।
কিন্তু, একজন
বর্তমান সময়ের মুসলিম হিসেবে, “I can think of
a
lie no more ironic” এর চেয়ে হাস্যকর
মিথ্যা আর
কিছু নেই।