উমাপতিধর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সন্দীপ সরকার (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সন্দীপ সরকার (আলোচনা | অবদান)
১০ নং লাইন:
 
==সাহিত্যকর্ম==
[[শ্রীধরদাসকৃত|শ্রীধরদাস]] 'সদুক্তিকর্ণামৃতে' উমাপতিধরের নামে অন্তত ৯০টি শ্লোক গৃহীত হ'য়েছে। তাঁর অসাধারণ কবিত্বশক্তি থাকলেও অনুমিত হয় তিনি কোন পুরোমাপের কাব্য লেখেন নি। গৌড়ীয় রীতির আদর্শে [['অক্ষর ডম্বর']] ও [['অলংকার ডম্বর']]-এর সাহায্যে উমাপতির রচনাশৈলীর বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। কবিত্ব যতটুকু থাক, পল্লবিত বাক্য রচনার আসক্তিই তাঁকে বেশি আকৃষ্ট করত। 'দেওপাড়া প্রশস্তি' ও মাধাইনগরের তাম্রশাসনে' উমাপতির রচনাকৌশল লক্ষ্য করা যাবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন তাম্রশাসন বা লিপি লেখনে কবিদের রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্যই ছিল রচনার সহজ স্বাভাবিকতাকে উপেক্ষা করে অলংকার সজ্জার আতিশয্যকে বরণ করা। উমাপতি ছিলেন এই রীতির প্রধান হোতা।<br />
'সদুক্তিকর্ণামৃতে' উমাপতিধর নামাঙ্কিত একটি অদ্ভুত শ্লোক গৃহীত হয়েছে যার থেকে সমসাময়িক ইতিহাসের কিছু প্রচ্ছন্ন ধারণা পাওয়া যায় :<br />
:'সাধু ম্লেচ্ছ নরেন্দ্র সাধু সাধু। ভবতো মাতৈব বীরপ্রসূর্নীচেনাপি<br />
:ভবদ্বিধেন বসুধা সুক্ষত্রিয়া বর্ততে।'<br />
অর্থাৎ, -হে ম্লেচ্ছরাজ! সাধু সাধু। আপনার জননী সত্যই বীরপ্রসবিনী। নীচ (সম্প্রদায়) হলেও আপনার মত বীরের জন্যই পৃথিবী এখনও সুক্ষত্রিয় আছে।<br />
উপরিউক্ত সূত্র থেকে অনুমান করা যেতেই পারে যে, আনুমানিক ১২০২-১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে [[ইফতিয়ারউদ্দিন-বিন-বখতিয়ার খলজীর|ইফতিয়ারউদ্দিন-বিন-বখতিয়ারখলজী]] নেতৃত্বে বঙ্গে তুর্কি আক্রমণ সঙ্ঘটিত হয়েছিল এবং এর ফলে নবদ্বীপ ও তার পারশ্ববর্তী অঞ্চল বিজাতীয় মুসলিম শাসকের অধীনস্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গত কারণে বহু হিন্দু ব্রাহ্মণপণ্ডিত আপন ধর্ম ও প্রাণরক্ষার তাগিদে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যান। পরাজিত লক্ষ্মণসেন সপরিবারে বর্তমান বাংলাদেশের [[সুবর্ণগ্রামে|সুবর্ণগ্রাম]] (সোনারগাঁ) পাড়ি দেন। স্বাভাবিকভাবে ব্রাহ্মণ ও অভিজাত বংশীয়রাও মুসলমান শাসকের স্পর্শ বাঁচাতে তৎপর হয়ে পড়েন। কবি জয়দেব স্ত্রী পদ্মাবতীকে নিয়ে পুরীধামে পৌঁছালেন, আর যারা নিজভূমে রয়ে গেলেন তাদের মুসলিম চণ্ডশাসনকে মেনে নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর রইল না। অনুমান করা হয় এই শেষোক্তদের মধ্যে উমাপতিধরও ছিলেন আর ঘনীভূত সংকটের সরলীকরণে মুসলিম শাসককে সেলাম বাজিয়ে এমনিভাবে জয়ধ্বনি দিয়েছিলেন।
 
==দেওপাড়া প্রশস্তি==
এটি প্রাচীন বাংলা লিপির উদ্ভবের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলা যায়। লিপিটিতে সেনরাজাদের বিশেষত বিজয়সেনের রাজত্বকালের অতি মূল্যবান ইতিহাস লিপিবদ্ধ। বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার দেওপাড়া নামক গ্রাম থেকে ১৮৬৫ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক [[সি . টি মেটকাফ]] এটি আবিষ্কার করেন এবং জার্নাল অব দি এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল (সংখ্যা-৩৪, পার্ট-১) তিনি এই লিপিটি প্রকাশ করেন। শিলালিপিটিতে রাজা বিজয়সেনের অতিমাহাত্ম্যপূর্ণ প্রশস্তিসহ সেন রাজাদের বংশতালিকার উল্লেখ আছে। ৫-৯ নং শ্লোকে দক্ষিণ ভারতের [[কর্ণাটক]] থেকে আগত সেনরাজাদের ব্রহ্মক্ষত্রিয় রূপে নির্দেশ করা হয়েছে । আবার ১৪-২২ নং শ্লোকে বিজয়সেনকে মহান ও পরাক্রমশালী রাজার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বিজয়সেন সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে যে, তিনি বীর, রাঘব, নান্য ও বর্ধন রাজাদের বন্দী করেন আর [[গৌড়]], [[কলিঙ্গ]] ও [[কামরূপরাজাকে|কামরূপরাজা]] পরাজিত করে তাঁর রাজশক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন।
 
==তথ্যসূত্র==