ইবনে সিনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Masum Ibn Musa ব্যবহারকারী ইবন সিনা পাতাটিকে ইবনে সিনা শিরোনামে পুনির্নির্দেশনার মাধ্যমে স্থানান্...
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২৭ নং লাইন:
}}
 
'''আবু আলী হোসাইন ইবনইবনে সীনাসিনা''' (বুআলী সীনা, [[৯৮০]] - [[১০৩৭]]) মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সেরা চিকিৎসক, গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক। তাকে সর্ববিদ্যায় পারদর্শী হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। তাকে একইসাথে [[ইরান]], [[তুরস্ক]], [[আফগানিস্তান]] এবং [[রাশিয়া|রাশিয়ার]] বিজ্ঞজনেরা তাদের জাতীয় জ্ঞানবীর হিসেবে দাবী করে। মুসলিম বিশ্বে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশী। মধ্যযুগীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভিত রচনায় তার অবদান অনস্বীকার্য। তার মূল অবদান ছিল [[চিকিৎসা শাস্ত্র|চিকিৎসা শাস্ত্রে]]। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের বিশ্বকোষ [[আল-কানুন ফিত-তীব]] রচনা করেন যা ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্তও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল প্রতিষ্ঠানসমূহে পাঠ ছিল। আরবিতে ইবন সীনাকে '''আল-শায়খ আল-রাঈস''' তথা ''জ্ঞানীকুল শিরোমণি'' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ইউরোপে তিনি '''আভিসিনা''' (Avicenna) নামে সমধিক পরিচিত, হিব্রু ভাষায় তার নাম ''Aven Sina''।
 
== জীবনী ==
=== জন্ম ও বংশপরিচয় ===
ইবনইবনে সীনাসিনা [[বুখারা|বুখারার]] (বর্তমান [[উজবেকিস্তান]]) অন্তর্গত [[খার্মাতায়েন]] জেলার আফসানা নামক স্থানে [[৯৮০]] খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে (মতান্তরে, আগস্ট মাস) জন্মগ্রহণ করেন। আরবি পঞ্জিকা অনুসারে সালটি ছিল ৩৭০ হিজরী।<ref>'''ইবন সীনা''' - মোয়াস্‌সাসায়ে ইনতেশারাতে আমিরে কবির, তেহরান; প্রথম প্রকাশ, ১৩৬৪ হিজরী; পৃ. ১২২।</ref> তার পিতার নাম ''আবদুল্লাহ'' এবং মাতার নাম ''সিতারা''। তার মাতৃভাষা ছিল [[ফার্সি ভাষা|ফার্সি]]। ফার্সি ভাষায় তিনি বেশ কিছু কবিতা ও গ্রন্থ রচনা করেন। তবে সমকালীন অন্যান্যদের মত তিনিও [[আরবি ভাষা|আরবি ভাষাকে]] জ্ঞান প্রকাশের মূল বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন। ইবন সীনার পিতা বুখারার [[সামানীয় সম্রাজ্য|সামানীয় সম্রাটের]] অধীনে একজন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন।
 
=== শিক্ষা জীবন ===
জন্মের পর ইবনইবনে সীনাসিনা সপরিবারে আফসানাতে বাস করছিলেন। তার দ্বিতীয় ভাইয়ের জন্মের পর আবদুল্লাহ ও সিতারা সবাইকে নিয়ে বুখারায় চলে আসেন এবং তাদের শিক্ষার জন্য যথোপযুক্ত গৃহশিক্ষক নিয়োগ করেন। এখান থেকেই সীনার শিক্ষার সূচনা ঘটে। সব ভাইয়ের মধ্যে সীনা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই বিশেষ মেধার স্বাক্ষর রাখেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে সমগ্র [[কুরআন]] মুখস্ত করেন। মুখস্তের পাশাপাশি তিনি সকল সূক্ষ্ণ ও জটিল বিষয় নিয়ে ছোটবেলা থেকে চিন্তা করতেন। এতে তার বাবা-মা ও শিক্ষক সকলেই বিস্ময় প্রকাশ করতেন। বাবা বুআলীকে [[ইসমাইলী শাস্ত্র]] বিষয়ে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইবন সীনা ইসমাইলীদের কোন কথাই বিনা যুক্তিতে মেনে নিতেন না। তাদের অনেক বিষয়ই তিনি যুক্তি দিয়ে প্রত্যাখান করেন। মূলত এরা সীনাকে শিক্ষা দেয়ার মত যোগ্য ছিলনা। তাই আবদুল্লাহ পুত্রের জন্য আরও যোগ্য শিক্ষকের খোঁজ করতে থাকেন।
 
আগে থেকেই আবদুল্লাহ সেখানকার এক [[মেওয়া]] বিক্রতার কথা জানতেন। এই বিক্রতা [[ভারতীয় গনিতশাস্ত্র|ভারতীয় গনিতশাস্ত্রে]] বিশেষ পারদর্শী ছিল। বাবা আবদুল্লাহ সীনাকে এই মেওয়া বিক্রতার কাছে গণিত শিখার ব্যবস্থ করে দেন। মেওয়া বিক্রতা এর আগে কাউকে তার জ্ঞান বিতরণের সুযোগ পায়নি। এই সুযোগে সে সীনাকে সানন্দে শিক্ষা দিতে থাকে এবং সীনার মেধা এতে আরও সহযোগীর ভূমিকা পালন করে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতীয় গণিতের অনেক বিষয় তার আয়ত্তে এসে যায়। এরপর তাকে অধ্যয়ন করতে হয় ইসমাইলী শাস্ত্রের আইন অধ্যায়। এতেও তিনি দক্ষতা অর্জন করেন। এর মাঝে আর একজন যোগ্য শিক্ষকের সন্ধান পান সীনার পিতা। তিনি ছিলেন তৎকালীন অন্যতম জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব [[আল নাতেলী]]। নিজ পুত্রকে শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি নাতেলীকে নিজের গৃহে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এই শিক্ষকের কাছে সীনা [[ফিক্‌হ]], [[ন্যায়শাস্ত্র]], [[জ্যামিতি]] এবং [[জ্যোতিষ শাস্ত্র]] শিক্ষা করেন। ছাত্রের মেধা দেখে পড়ানোর সময় নাতেলী বিস্মিত হয়ে যেতেন, তার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভ্যাবাচেকা খেতে হত তাকে। বিস্মিত হয়ে তিনি আবদুল্লাহকে বলেছিলেন, "আপনার ছেলে একদিন দুনিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী হবে। দেখবেন, ওর পড়াশোনায় কোন ব্যাঘাত যেন না ঘটে।"<ref>'''ইবন সীনাঃ সংক্ষিপ্ত জীবনী''' - সৈয়দ আবদুস সুলতান; ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পক্ষে ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, রাজশাহী থেকে প্রকাশিত। প্রকাশক - মাসুদ আলী; প্রকাশকাল: জুন, ১৯৮১; পৃ. ৬-৭</ref>