পুলিনবিহারী দাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
মামুলি সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৩ নং লাইন:
}}
 
'''পুলীনবিহারী দাশ''' (১৮৭৭-১৯৪৯ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক। ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য যারা জান কবুল করে সংগ্রাম করেছেন তিনি তাদের অন্যতম। তিনি "বিপ্লবী পুলীনবিহারী" নামে সমধিক খ্যাত। তিনি [[ঢাকা অনুশলিন সমিতি|ঢাকা অনুশলিন সমিতির]] প্রতিষ্ঠাতা।
 
== প্রারম্ভিক জীবন ==
১৮৭৭ সালে [[শারিয়তপুর]] জেলার লনসিং গ্রামের শিক্ষিত স্বছল মধ্যবিত্ত দাস পরিবারে নব কুমার দাসের পুত্ররূপে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন পুলীনবিহারী দাশ<ref name="samsad">সেনগুপ্ত, এস. (ed.) (১৯৮৮). ''সমসদ বাংলা চরিতাভিধান'' (বাংলা), কলকাতা: সাহিত্য সমসদ, পৃষ্ঠা.২৮৮</ref>। পারিবারিক বেশ কিছু জমি জমা থাকা সত্ত্বেও ওনাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা চাকুরীজীবী ছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন [[মাদারীপুরে]]র সাব ডিভিসনাল কোর্টের উকিল এবং তাঁর খুল্লতাতরা ছিলেন যথাক্রমে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও মুন্সেফ। ১৮৯৪ সালে ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হওয়ার হওয়ার পর [[ঢাকা কলেজ]]এ ভর্তি হন এবং সেইখানে শিক্ষাগ্রহণ কালেই তিনি ঐ কলেজের গবেষণাগারের সাহায্যকারী তথা ব্যবহারিক শিক্ষক হিসাবে কাজ করতে থাকেন। বাল্যকাল থেকেই পুলীনবিহারির শরীরচর্চার দিকে ছিল প্রবল ঝোঁক এবং বাস্তবিক তিনি একজন দক্ষ [[লাঠিয়াল]]ও ছিলেন। [[কলকাতা]]য় [[সরলা দেবী]]র আখড়ার সাফল্য দেখে তিনি টিকাটুলিতে ১৯০৩ সালে একটি নিজস্ব [[আখড়া]] চালু করেন। ১৯০৫ সালে তৎকালীন বিখ্যাত লাঠিয়াল মুর্তাজার কাছ থেকে লাঠিখেলা ও অসিক্রীড়ার কৌশলও রপ্ত করেছিলেন তিনি।
 
২৭ ⟶ ২৮ নং লাইন:
সেই বছরেই ওনাকে ভূপেশ চন্দ্র নাগ, শ্যাম সুন্দর চক্রবর্তী, কৃষ্ণ কুমার মিত্র, সুবোধ মল্লিক, অশ্বিনী দত্ত সহযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং [[মন্টোগোমারি]] কারাগারে নিক্ষিপ্ত করা হয় কিন্তু শত অত্যাচার, শত নিষ্পেষণ তাঁর বিপ্লবী সত্তাকে অবদমিত করে রাখতে পারেনি। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে জেলের অন্ধকার কুঠুরি থেকে বেরিয়ে আসার পর আবার তাঁর বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এই সময়েই অনুশীলন সমিতির ঢাকা দল [[কলকাতা]] শাখাটিকে পরিচালনা করতে থাকে। যদিও প্রমথনাথ মিত্রের মৃত্যুর পর এই দুটি দল পৃথক হয়ে যায়।
 
১৯১০সালের১৯১০ সালের জুলাই মাসে ৪৬জন বিপ্লবী সহযোগে পুলীন বিহারি দাসকে ঢাকা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরও ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিচারে পুলীনবাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া এবং [[সেলুলার জেল]]এ স্থানান্তর করা হয় যেখানে হেমচন্দ্র দাস, [[বারীন্দ্র কুমার ঘোষ]], [[বিনায়ক সাভারকর]]এর মত বিখ্যাত বিপ্লবীদের সান্নিধ্যে তিনি আসেন।
১৯১৮ সালে পুলিনের সাজা কিছুটা কমে এবং তাঁকে বাড়িতে নজরবন্দী করে রাখা হয় এবং ১৯১৯ সালে তাঁকে পুরিপুরিভাবে মুক্তি দেওয়া হয় এবং মুক্তি পাওয়ার পর সমিতির কাজে আত্মনিয়োগ করার চেষ্টা করেন কিন্তু তখন তাঁর সেই সংগঠনকে সরকার নিষিদ্ধ করার ফলে তার সদস্যরা এখানে ওখানে ছড়িয়ে পড়েন। এরপর [[নাগপুর]] ও পরে [[কলকাতা]]য় কংগ্রেস অধিবেশনে অবশিষ্ট বিপ্লবীরা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন কিন্তু পুলীন বিহারি দাস কখনও মোহনদাসের আদর্শের সাথে আপোস করতে চাননি এবং তাঁকে তাঁর নেতা বলে মানতে পারেন নি। সেই সময় তাঁর সমিতির নিষিদ্ধকরণ হওয়ার ফলে ১৯২০ সালে ভারত সেবক সঙ্ঘ নামে আর একটি দল গঠন করেন। এরপর ব্যারিস্টার এস.আর.দাসের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘হক কথা’ এবং ‘স্বরাজ’ নামে দুটি সাময়িক পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং সেখানে গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের সমালোচনা করেন। সমিতির কাজ গোপনে চললেও সমিতির সাথে তাঁর বিরোধ এরপর প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপর সমিতির সাথে তিনি সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন এবং ভারত সেবক সঙ্ঘকে ভেঙ্গে দিয়ে ১৯২২ সালে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।
১৯২৮ সালে কলকাতার মেছুয়া বাজারে বঙ্গীয় ব্যয়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। এটা ছিল শারীরিক প্রশিক্ষণের একটি কেন্দ্র এবং ভালো করে বলতে গেলে এটি ছিলকার্যত: একটি আখড়া যেখানে যুবকদের লাঠি চালনা, তরোয়ালতলোয়ার চালনা ও কুস্তি শেখানো হত।
== পরবর্তীশেষ জীবন ==
তিনি বিবাহিত ছিলেন এবং তাঁর তিন পুত্র এবং দুই কন্যা ছিল। পরবর্তীকালে এক যোগীর সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর মধ্যে ত্যাগের বাসনা জাগ্রত হয়। এরপর ১৯৪৯সালের১৯৪৯ সালের ১৭ই অগাস্ট ৭২ বৎসর বয়সে তাঁর এই সুদীর্ঘ কর্মবহুল জীবনে ছেদ পরে। ১৯২৮ সালে থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পুলীন বাবুর দ্বিতীয় পুত্র সৌরেন্দ্রর তত্ত্বাবধানে সেই বঙ্গীয় ব্যয়াম সমিতি সাফল্যের সাথে পরিচালিত হয়েছিল। বর্তমানে ওনার নাতিদ্বয় বিশ্বরঞ্জন ও মনীশরঞ্জন পুলীন বিহারি দাসের আদর্শকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের কাছে সাহায্যপ্রার্থী হয়েছেন। সেই সময়ে [[স্বামী সত্যানন্দ গিরি]] এবং তাঁর বন্ধুগণ তাঁর বাড়ির কাছেই একটি স্থানে মিলিত হতেন এবং সৎসঙ্গ করতেন<ref>{{cite book|title=A Collection of Biographies of 4 Kriya Yoga Gurus by Swami Satyananda Giri|last=যোগা নিকেতন|publisher=iUniverse|url=http://books.google.co.in/books?id=nJcFB8iarboC|isbn=978-0-595-38675-8|page=188}}</ref>।
== সম্মাননা ==
[[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] ওনার সম্মানে পুলীন বিহারি দাস স্মৃতি পদক নামে একটি পদক প্রচলন করেছে।
 
==''''' তথ্যসূত্র''''' ==
{{Reflist}}