সৈয়দ হাসান ইমাম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট ওয়েব লিঙ্ক ঠিক করেছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
৯ নং লাইন:
|death_date=
|death_place=
|known_for= [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র| স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের]] শব্দসৈনিক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার ,পরিচালক
|occupation = ব্যাংক কর্মকর্তা
|awards = [[একুশে পদক]]
১৬ নং লাইন:
'''সৈয়দ হাসান ইমাম''' (জন্ম: [[জুলাই ২৯|২৯ জুলাই]], [[১৯৩৫]]) [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একজন অভিনেতা,আবৃত্তিকার এবং স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব।<ref>{{cite web|url=http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=29-07-2010&type=gold&data=Income&pub_no=238&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=26|title= সৈয়দ হাসান ইমামের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত|last= |first= |date= ২৯ জুলাই, ২০১০ |work=দৈনিক কালের কন্ঠ|accessdate=জানুয়ারি ১৯, ২০১১}}</ref>
 
== প্রাথমিক জীবন ==
হাসান ইমাম মাত্র দুই বছর বয়সে তাঁর বাবাকে হারান।সৈয়দ হাসান ইমামের শিক্ষাজীবন শুরু হয় [[বর্ধমান]] টাউন স্কুলে । তারপর তিনি অধ্যয়ন করেন ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত রাজ কলেজ ও ১৯৫৪ সালে থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত টেকনিক্যাল কলেজে। <ref name="Hassan Imam1"/> তিনি ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে করেন। সৈয়দ হাসান ইমাম রাজ কলেজের সাংস্কৃতিক সম্পাদক, কমনরুম সম্পাদক নিযুক্ত হন। বর্ধমান জেলা গণনাট্য সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ হাসান ইমাম মাত্র ১৬ বছর বয়সে ।ছাত্রজীবনে ১৯৫২ সালে অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ফেস্টিভালে তিনি রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম স্থান পেয়েছিলেন। বর্ধমানে হাসান ইমাম মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করে বিশেষ প্রশংসিত হন এবং ১৯৫৫ সালে কলেজের অনুষ্ঠানে তাঁর গান শুনে [[দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়]] তাঁকে বিনা পারিশ্রমিকে গান শেখানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু মাত্র এক বছর তিনি [[উচ্চাঙ্গ সংগীত|উচ্চাঙ্গ সংগীতে]] তামিল নেন।<ref name="Hassan Imam"/>
== কর্মজীবন ==
সৈয়দ হাসান ইমাম ১৯৫৭ সালে ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তানে যোগ দেন। ১৯৬০ সাল থেকে হাসান ইমামের অভিনয় জীবন শুরু হয়। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি [[চলচ্চিত্র|চলচ্চিত্রে]] এবং ১৯৬৪ সাল থেকে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। <ref name="Hassan Imam1"/> তাঁর প্রথম দিকের ছবির মধ্যে রাজা এল শহরে, শীত বিকেল, জানাজানি, ধারাপাত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৫ সালে সমগ্র [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] চলচ্চিত্র উৎসবে হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন [[খান আতাউর রহমান|খান আতাউর রহমানের ]] অনেক দিনের চেনা ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
 
তিনি ১৯৬১ সালে [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্র]] শতবর্ষের কেন্দ্রীয় উৎসবে ডামা সার্কেল প্রযোজিত তাসের দেশ, রাজা ও রানী এবং রক্তকরবী নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন । তিনি ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন ১৯৬৪ সালে তাঁর অভিষেক হয় টেলিভিশন নাটকে। বেতার ও [[বাংলাদেশ টেলিভিশন|বাংলাদেশ টেলিভিশনের]] জন্মলগ্ন থেকেই তিনি নাটকে নিয়মিত অংশ নেন। টিভির দুই শতাধিক নাটকের মধ্যে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক, [[মুস্তাফা মনোয়ার]] নির্দেশিত [[শেক্সপিয়ার|শেক্সপিয়ারের ]] মুখরা রমণী বশীকরণ, [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্রনাথের]] রক্তকরবী, [[মোস্তফা কামাল সৈয়দ]] প্রযোজিত স্বপ্ন বিলাস ইত্যাদি।১৯৬৬ থেকে '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পূর্ব সময়ে তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের মঞ্চে নাটক-নাটিকা ও গণসঙ্গীত পরিচালনা করেন। হাসান ইমাম পরিচালিত নাটকগুলোর মধ্যে [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর|রবীন্দ্রনাথের]] রক্তকরবী, [[ম্যাক্সিম গোর্কী|ম্যাক্সিম গোর্কীর]] মা, সোমেন চন্দের না ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৯-এর গণ আন্দোলনের সময় সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত প্রায় ১০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে [[বাংলা একাডেমী]]র বটমূলে মঞ্চায়িত রক্তকরবী নাটকটি বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল।<ref name="Hassan Imam"/>
== মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ==
১৯৭১ সালে [[ফেব্রুয়ারি]] মাসে হাসান ইমামকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় শিল্পীদের প্রতিবাদী সংগঠন বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ যারা [[শেখ মুজিবুর রহমান|বঙ্গবন্ধুর]] নির্দেশে [[পাকিস্তান]] বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বর্জন করেন। গণআন্দোলনের চাপে পাকিস্তানী সরকার ৮ মার্চ থেকে বেতার টেলিভিশনের দায়িত্ব বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজের হাতে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ২৫ মার্চের পর হাসান ইমাম মুজিব নগরের চলে যান এবং [[মুক্তিযুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধে]] যোগ দিয়ে ১৯৭১-এ [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র|স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের]] নাট্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। সৈয়দ হাসান ইমাম মুজিবনগর [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র]] থেকে সালেহ আহমেদ নামে বাংলা সংবাদ পাঠ করতেন। <ref name="Hassan Imam"/> হাসান ইমাম ১৬ই [[ডিসেম্বর]] পর্যন্ত সংবাদ পাঠ এবং নাট্য বিভাগের দায়িত্বভার বহন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় [[জহির রায়হান]]কে সভাপতি ও হাসান ইমামকে সাধারণ সম্পাদক করে মুজিব নগরে চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলী সমিতি গঠন করা হয় যাদের উদ্যোগে [[মুক্তিযুদ্ধ| মুক্তিযুদ্ধের]] চলচ্চিত্র দলিল 'লেট দেয়ার বি লাইট' নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর [[শেখ মুজিবুর রহমান|বঙ্গবন্ধুর]] নির্দেশে [[বাংলাদেশ]] [[শিল্পকলা একাডেমী]] প্রতিষ্ঠায় হাসান ইমাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। <ref name="Hassan Imam1">{{cite web|url=http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=42&dd=2010-07-29&ni=27500|title= সৈয়দ হাসান ইমামের ৭৫তম জন্মদিন আজ
|last= |first= |date= ২৯ জুলাই, ২০১০ |work=দৈনিক জনকন্ঠ|accessdate=জানুয়ারি ১৯, ২০১১}}</ref>
 
== স্বাধীনতার পর ==
সৈয়দ হাসান ইমাম [[জাহানারা ইমাম|জাহানারা ইমামের]] মৃত্যুর পর বাংলাদেশের প্রধান মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’-এর আহ্বায়কের দায়িত্ব পান। ২০০১ সালে বিএনপি-[[জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ|জামাত]] জোট ক্ষমতায় আসায় হাসান ইমাম দেশত্যাগে বাধ্য হন। দেশত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি [[বাংলাদেশ টেলিভিশন]] নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ, বাংলাদেশ [[উদীচী]] শিল্পী গোষ্ঠীসহ বহু সংগঠনের সভাপতি-আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।<ref name="Hassan Imam1"/> হাসান ইমাম টেলিভিশন নাট্যকার, নাট্যশিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন সুদীর্ঘ ৩৮ বছর।বঙ্গবন্ধু [[শেখ মুজিবুর রহমান]] হত্যা চক্রান্তের ওপর রচিত [[আবদুল গাফফার চৌধুরী]] রচিত 'পলাশী থেকে ধানমণ্ডি' পরিচালনার কাজেও তিনি নিয়োজিত ছিলেন। চলচ্চিত্রটি তাঁর নির্দেশনায় সফলভাবে মঞ্চায়িত হয় ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ লন্ডনের লোগান হলে। <ref name="Hassan Imam2">{{cite web|url= http://ittefaq.com.bd/content/2010/07/27/news0464.htm |title= সৈয়দ হাসান ইমামের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী আজ |last= |first= |date= ২৯ জুলাই, ২০১০ |work=দৈনিক ইত্তেফাক|accessdate=জানুয়ারি ১৯, ২০১১}}</ref>
 
== ব্যক্তিগত জীবন ==
হাসান ইমাম শিল্পী [[লায়লা হাসান]]কে বিয়ে করেন।লায়লা হাসানের বাবা আওয়াল সাহেব ব্যাংকে যাতেন লেনদেনের কাজে। এভাবে তিনি হাসান ইমামের সাথে পরিচিত হন। পরবর্তীকালে হাসান ইমামের শ্বশুর হন। লায়লা হাসান বলেনঃ “স্বামী হিসেবে হাসান ইমাম এক কথায় অতুলনীয়, যা প্রতিটি মেয়ের একান্ত কাম্য। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্বামী, বন্ধু, গাইড ও অভিভাবক। উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর তাঁর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ওর ঐকান্তিক অনুপ্রেরণা ও ইচ্ছাই আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে বাধ্য করেছে। বিবাহিত জীবনে শিল্পী হিসেবে যে প্রতিষ্ঠা আমি পেয়েছি, তার মূলেও তিনিই।” <ref name="Hassan Imam">{{cite web|url=http://archive.prothom-alo.com/detail/news/81973|title= চিরপথের সঙ্গী আমার
|last= হাসান |first= লায়লা |date= ২৭ জুলাই,২০১০ |work=দৈনিক প্রথম আলো|accessdate=জানুয়ারি ১৯, ২০১১}}</ref>
 
== সন্মাননা ==
সৈয়দ হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার পান। [[মুক্তিযুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধের]] বিশেষ অবদানের জন্য সিকোয়েন্স পুরস্কার লাভ করেন।তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান [[একুশে পদক]]সহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে হাসান ইমাম জুরির দায়িত্ব পালন করেন।<ref name="Hassan Imam1"/> বলেনঃ "বাংলাদেশের নাট্যশিল্পীদের জন্য এত দরদ দিয়ে সংগঠন তৈরি করা, সংগঠন নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা, সাংগঠনিক কাজ করা এবং বিপদাপদে সংগঠনের শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো ;এসব কাজে বাংলাদেশে হাসান ইমামের মতো নিষ্ঠাবান মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি।"” <ref>{{cite web|url=http://www.samakal.com.bd/print_news.php?news_id=81541&pub_no=409
|title= শিল্প-সংস্কৃতিতে পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধেও
|last= চৌধুরী |first= আতিকুল হক |date= |work=দৈনিক সমকাল|accessdate=জানুয়ারি ১৯, ২০১১}}</ref>
 
== তথ্যসূত্র ==
<references />
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.voanews.com/bangla/news/8-26-2010-syed-hasan-imam-voabangla-interview-101561798.html ভয়েজ অব আমেরিকার সাথে সাক্ষাৎকার]
 
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৩৫-এ জন্ম]]