ধ্যান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৩ নং লাইন:
{{wikify|date=মার্চ ২০১২}}
'''ধ্যান''' শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক বা মনঃসংযোগ জাতীয় ক্রিয়াকে বোঝাতে ব্যবহার হয়। যেমন অন্তর্দৃষ্টি লাভের চেষ্টা, কোন বিশেষ বস্তু বা ব্যক্তিকে স্মরণ, মনকে চিন্তাশূন্য করার চেষ্টা, ধর্মীয় অনুশাসনের সম্বন্ধে গভীর চিন্তা, মনকে "মুক্ত" করে কোন কল্পিত বা ঐশী শক্তির হাতে ছেড়ে দেওয়া, [[হঠযোগ|হঠযোগের]] কয়েকটি [[যোগাসন|আসন]], হিন্দু [[পুরাণ|পুরাণে]] "তপস্যা" ইত্যাদি।
 
== ধ্যান বা মেডিটেশন কী? ==
 
মেডিটেশন হচ্ছে মনের ব্যায়াম। নীরবে বসে সুনির্দিষ্ট অনুশীলন বাড়ায় মনোযোগ, সচেতনতা ও সৃজনশীলতা। মনের জট যায় খুলে। সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। হতাশা ও নেতিবাচকতা দূর হয়। প্রশান্তি ও সুখানুভূতি বাড়ানোর পাশাপাশি ঘটে অন্তর্জাগৃতি।
 
 
১২ ⟶ ১৬ নং লাইন:
 
কিছু সুশৃঙ্খল কার্যপদ্ধতির মাধ্যমে মেডিটেশন পরিচালিত হয়ে থাকে। যার অনেক ধাপ আছে। কে না জানে, সুশৃঙ্খল জীবনই সুন্দর পরিশীলিত জীবন। আর তাই মেডিটেশনের চর্চার মাধ্যমে আমরা লাভ করতে পারি সুন্দর জীবন। মেডিটেশন করার জন্য আমাদের প্রথমে জানতে হবে ধ্যানাবস্থা সৃষ্টির উপায়, এর পরিবেশ ও এর কথা। মেডিটেশন এমন একটি উপায়, যেখানে আপনাকে ধ্যানাবস্থা তৈরির জন্য প্রথমে কল্পনা করতে শেখানো হবে কিভাবে তৈরি করা যাবে মনের বাড়ি এবং আলফা স্টেশন।
 
== মেডিটেশন-৩ টি বিষয় ==
 
* সচেতনভাবে দেহ এবং স্নায়ুর শিথিলায়ন
* মনকে বর্তমানে নিয়ে আসা
* আত্ম-নিমগ্নতা
 
* সচেতনভাবে দেহ এবং স্নায়ুর শিথিলায়ন
ঘুমের সময় একজন মানুষের দেহ ও স্নায়ু শিথিল হলে তার চেতনাও তখন হয়ে পড়ে অচেতন। কিন্তু মেডিটেশনে আমাদের দেহ ও স্নায়ু যেমন শিথিল হয়, তেমনি চেতনাও থাকে সজাগ। ফলে সচেতন মন তখন অবচেতন মনকে যথাযথ নির্দেশ প্রদান করতে ও সৃজনশীলভাবে কাজে লাগাতে পারে।
 
* মনকে বর্তমানে নিয়ে আসা
আমাদের মন হয় অতীত নিয়ে অনুশোচনা করে, না হয় ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা করে, বর্তমানে থাকতে চায় না। মেডিটেশন মনকে বর্তমানে নিয়ে আসে। ফলে দুশ্চিন্তা বা আশঙ্কায় সময় নষ্ট না করে মনের শক্তি নিয়োজিত হয় দেহের স্বাস্থ্য উদ্ধারে, সৃজনশীলতার বিকাশে, চেতনার অভ্রভেদী বিস্তারে।
 
* আত্ম-নিমগ্নতা
মেডিটেশন মানে একজন মানুষের নিজের গভীরে নিমগ্ন হওয়া এবং অন্তরতম আমি-র সাথে সংযুক্ত হওয়া। তখনই একজন মানুষের অনুভবের দরজা খুলে যায় এবং সে নতুন সত্যকে অনুভব করতে পারে।
 
== ধ্যান বা মেডিটেশন - বিজ্ঞানের চোখে ==
 
<gallery>
http://quantummethod.org.bd/sites/default/files/images/story_image/bn_brain_wave.jpg
</gallery>
 
আমরা জানি বিশ্রাম, তন্দ্রা বা নিদ্রাকালীন সময়ে অবচেতন মন সবচেয়ে সৃজনশীল থাকে ও ভালভাবে কাজ করে। আর বিশ্রাম বা তন্দ্রাকালীন সময় দেহ মন পুরোপুরি শিথিল হয়ে গিয়ে ব্রেন ওয়েভ নেমে যায় প্রতি সেকেন্ডে ১৩ থেকে ৪ সাইকেলে, বিজ্ঞানের পরিভাষায় আলফা/থিটা লেভেলে।
আসলে সক্রিয় অবস্থায় ব্রেন থেকে প্রতিনিয়ত খুব মৃদু বিদ্যুৎ তরঙ্গ বিকিরিত হয়। বিজ্ঞানীরা একে বলেন, ব্রেন ওয়েভ। ১৯২৯ সালে ডা. হ্যান্স বার্জার ইলেকক্ট্রো এনসেফেলোগ্রাফ (ইইজি) যন্ত্র দ্বারা এই ওয়েভ বা তরঙ্গ মাপেন। মানসিক চাপ, সতর্কতা, তৎপরতামূলক পরিস্থিতিতে ব্রেনের বৈদ্যুতিক বিকিরণ বেড়ে যায়। তখন ব্রেন ওয়েভের ফ্রিকোয়েন্সি দাঁড়ায় প্রতি সেকেন্ডে ১৪ সাইকেল থেকে ২৬ সাইকেল পর্যন্ত। একে বলা হয় বিটা ব্রেন ওয়েভ।
চোখ বন্ধ করে বিশ্রামকালে একটু তন্দ্রা তন্দ্রা ভাব সৃষ্টি হলে ব্রেনের বৈদ্যুতিক তৎপরতা কমে যায়। এ অবস্থায় ব্রেন ওয়েভের ফ্রিকোয়েন্সি দাঁড়ায় প্রতি সেকেন্ডে ৮ থেকে ১৩ সাইকেল। একে বলা হয়, আলফা ব্রেন ওয়েভ। থিটা ব্রেন ওয়েভ আলফার চেয়ে ধীর। এর ফ্রিকোয়েন্সি হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ৪ থেকে ৭ সাইকেল।
এরপর রয়েছে গভীর নিদ্রাকালীন ব্রেন ওয়েভ। এর ফ্রিকোয়েন্সি হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ০.৫ থেকে ৩ সাইকেল। একে বলা হয় ডেল্টা ব্রেন ওয়েভ। ব্রেন ওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি প্রতি সেকেন্ডে ২৭ বা তার ওপরে উঠে যেতে পারে হঠাৎ উত্তেজিত অবস্থার ফলে। একে বলা হয় গামা ব্রেন ওয়েভ।
এখন যদি আমরা কৃত্রিমভাবে শিথিলায়নের (Relaxation) মাধ্যমে শরীর-মনে বিশ্রাম ও তন্দ্রাকালীন আবহ সৃষ্টি করতে পারি, তাহলেও ব্রেন ওয়েভ নেমে আসবে আলফা/থিটা লেভেলে। আর ব্রেন ওয়েভকে আলফা/থিটা লেভেলে নামিয়ে আনতে পারলেই ধ্যানাবস্থা সৃষ্টি হবে। অবচেতন মনের গভীরের শক্তিকে কাজে লাগানোর পথ হবে মুক্ত। আপনি প্রবেশ করতে পারবেন মনের আরও গভীরে। সচেতন মন যেমন অবচেতনকে যথাযথ নির্দেশ প্রদান করতে ও সৃজনশীলভাবে কাজে লাগাতে পারবে, তেমনি পারবে অচেতন বলয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে। আর অবচেতন তখন সেই নির্দেশকে বা ধারণাকে যুক্তিসঙ্গত পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে অনুকূল ব্রেন ফ্রিকোয়েন্সিতে নিরলস কাজে নেমে পড়বে।
শরীর-মনকে শিথিলায়নের মাধ্যমে ব্রেন ওয়েভকে আলফা লেভেলে নিয়ে মনের ধ্যানাবস্থা সৃষ্টিই হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন, মন নিয়ন্ত্রণ, মেডিটেশন বা পরিকল্পিত ধ্যানের প্রথম ধাপ। আর ধ্যান বা মেডিটেশনের প্রয়োজনীয়তাও এখানেই।
 
==আলফা স্টেশন==