গণিতের ভিত্তি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
১৩ নং লাইন:
রাসেল বললেন যে গণিত [[যুক্তিবিজ্ঞান|যুক্তিবিজ্ঞানের]] একটি শাখা এবং ধারণাসমূহের প্রকার বা "type" অগ্রাহ্য করার ফলে কূটাভাসের সৃষ্টি হয়। তিনি গাণিতিক ধারণাগুলোকে এমনভাবে বিভিন্ন প্রকারে ভাগ করার চেষ্টা করেন যাতে কোন ধারণার সংজ্ঞায় ঐ ধারণাটিকেই আবার ব্যবহার করার প্রয়োজন না পড়ে এবং যুক্তির দুষ্টচক্র সৃষ্টি না হতে পারে। তাঁর মতে গণিতে বিধিবদ্ধভাবে গঠনসমূহ আলোচনা করা হয় এবং এই আলোচনা গঠনগুলোর বাস্তব অর্থ (concrete meaning) থেকে স্বাধীন। আদিকাল থেকেই এই ধরনের বিজ্ঞানের নাম দেয়া হয়েছে যুক্তিবিজ্ঞান। রাসেলের মতে যুক্তিবিজ্ঞান হল গণিতের যৌবন, আর গণিত হল যুক্তিবিজ্ঞানের পূর্ণবয়স্ক রূপ। রাসেল আরও বললেন যে, এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গণিত নির্মাণ করতে হলে মানুষের মুখের স্বাভাবিক ভাষা দিয়ে কাজ হবে না, কেন না তা দীর্ঘ ও ত্রুটিপূর্ণ। গণিতের জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের প্রতীক ব্যবস্থা। রাসেল তাই [[প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞান]] (symbolic logic) ব্যবহার করে গণিত পুনর্গঠন করতে চেষ্টা করলেন। তবে এ ক্ষেত্রে রাসেল প্রথম ব্যক্তি ছিলেন না।
 
রাসেলের আগে [[গট‌ফ্রিড লাইব‌নিৎস]] তাঁর Dissertatio de arte combinatoria (১৬৬৬) গ্রন্থে, [[অগাস্টাস ডি মর্গান]], [[জর্জ বুল]], [[চার্লস স্যান্ডার্স পেয়ার্স]], [[শ্র্যোডার]], [[গটলবগট্‌লব ফ্রেগে]], [[পেয়ানো]], ও আরও অনেকে যুক্তিবৈজ্ঞানিক চিহ্ন ব্যবহার করে গণিত পুনর্বিন্যাস করা প্রয়াস নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ফ্রেগে ও পেয়ানোর ব্যবহৃত প্রতীকগুলোই বর্তমান কালের গণিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। রাসেল তাঁর আগের এই সমস্ত কাজ অধ্যয়ন করেন এবং এ সম্পর্কে তাঁর নিজের তত্ত্ব [[আলফ্রেড নর্থ হোয়াইটহেড|হোয়াইটহেডের]] সাথে একসাথে তিন খণ্ডের এক বিশাল গ্রন্থে প্রকাশ করেন, যে গ্রন্থের নাম ''[[প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেম্যাটিকা]]'' (প্রথম সংস্করণ ১৯১০-১৯১৩)। এ গ্রন্থে যুক্তিবিজ্ঞানের মৌলিক বিধিসমূহ ব্যবহার করে স্বাভাবিক সংখ্যা, বাস্তব সংখ্যা এবং বিশ্লেষণী জ্যামিতির তত্ত্বগুলো পুনঃনির্মাণ করা হয়।
 
যদি রাসেল ও হোয়াইটহেডের এই কাজ সম্পূর্ণ সফল হত, তাহলে এটি গণিতে কূটাভাসের আবির্ভাব সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে সক্ষম হত। কিন্তু লেখকদ্বয় গণিত নির্মাণ করতে গিয়ে এমন একটি স্বতঃসিদ্ধের আশ্রয় নিতে বাধ্য হলেন যেটি তৃপ্তিকর ছিল না (unsatifactory)। তাঁরা প্রকার বা টাইপের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বললেন কোন সেট তার উপাদানগুলো যে টাইপের অন্তর্গত, তার চেয়ে উচ্চতর টাইপের অন্তর্ভুক্ত। এর ফলে কিছু কূটাভাস দূর হলেও অন্য ধরনের সমস্যা দেখা দিল। যেমন মূলদ সংখ্যার তত্ত্ব থেকে বাস্তব সংখ্যার তত্ত্ব তৈরি করতে গিয়ে দেখা গেল বাস্তব সংখ্যার তত্ত্ব অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়ে। এই জটিলতা নিরসন করতে গিয়ে রাসেল axiom of reducibility প্রস্তাব করলেন, কিন্তু তিনি নিজেই এই স্বতঃসিদ্ধটি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। এছাড়া রাসেলের প্রস্তাবিত axiom of infinity এবং axiom of choice-ও সমস্যাসঙ্কুল প্রতিভাত হয়। যাই হোক, এই বইয়ে উল্লিখিত যুক্তিবিজ্ঞান ও এই বইয়ের ওপর ভিত্তি করে করে র‌্যামসের উদ্ভাবিত টাইপ তত্ত্ব এখনও গণিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।