নিষ্ক্রিয় গ্যাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎অবস্থান ও উৎস: ইং উইকি তেকে ছক আমদানী
→‎আবিষ্কারের ইতিহাস: ইং উইকি থেকে চিত্র আমদানী
৩৫ নং লাইন:
 
== আবিষ্কারের ইতিহাস ==
 
নিষ্ক্রিয় গ্যাস মৌলসমূহের আবিষ্কার রসায়নের ইতিহাসে একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ক্যাভেনডিস একটি আবদ্ধ পাত্রে [[কস্টিক সোডা]] দ্রবণের উপর অতিরিক্ত অক্সিজেনযুক্ত বায়ুতে বার বার বিদ্যুৎ স্ফুলিংগ প্রয়োগ করে অতি সামান্য পরিমাণ বায়ুর মূল আয়তনের প্রায় ১২০/১ ভাগ গ্যাসীয় অবশেষ পেলেন। তিনি পর্যবেক্ষণ করলেন যে, এই প্রক্রিয়ায় সমস্ত নাইট্রোজেনই [[অক্সাইড|অক্সাইডে]] পরিণত হয় এবং দ্রবণে অবশোষিত হয়ে সামান্য পরিমাণ গ্যাসীয় অবশেষ থাকে। তিনি আরও পর্যবেক্ষণ করলেন যে,এই অবিশষ্ট গ্যাস নাইট্রোজেন অপেক্ষাও নিষ্ক্রিয়। ক্যাভেনডিসের এই পরীক্ষার তাৎপর্য বিজ্ঞানীদের নিকট পরবর্তী প্রায় একশত বর্ষ উপেক্ষিত ছিল। <br />১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন প্রভৃতি বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের ঘনত্ব পরিমাপ করতে গিয়ে লর্ড রেলে (Lord Rayleigh) পর্যবেক্ষণ করেন যে, বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত অক্সিজেনের ঘনত্ব প্রতি ক্ষেত্রে অভিন্ন হলেও নাইট্রোজেনের ক্ষেত্রে ফলাফল ভিন্নরূপ। তিনি তিন পদ্ধতিতে নাইট্রোজেন আহরণ করলেন। যথাঃ (ক) [[অ্যামোনিয়াম নাইট্রাইট|অ্যামোনিয়াম নাইট্রাইটকে]] উত্তাপিত করে, (খ)[[নাইট্রোজেন অক্সাইড|নাইট্রোজেন অক্সাইডকে]] উত্তপ্ত লৌহ যোগে বিজারিত ক'রে ও (গ) [[সোডিয়াম হাইপোব্রোমাইট|সোডিয়াম হাইপোব্রোমাইটের]] ক্রিয়ায় [[ইউরিয়া]] থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করা। বিস্ময়ের সঙ্গে তিনি লক্ষ্য করলেন যে বায়ু হতে প্রাপ্ত নাইট্রোজেন রাসায়নিক উপায়ে প্রাপ্ত নাইট্রোজেন অপেক্ষা ভারী। এতে প্রতীয়মান হলো যে, বায়বীয় নাইট্রোজেনে নাইট্রোজেন ব্যতীত ভিন্ন কোন উপাদান রয়েছে। অতঃপর রেলে ক্যাভেনডিসের অনুরূপ পরীক্ষাকার্য চালিয়ে প্রাপ্ত গ্যাসীয় অবশেষে (residual gas) বর্ণালী বিশ্লেষণ ক'রে বায়ুতে বিদ্যমান, নাইট্রোজেন অপেক্ষা ভারী অথচ তদাবধি অনাবিষ্কৃত কোন গ্যাসের অস্তিত্ব কল্পনা করেন। পরে বিজ্ঞানী রেলে'এর অনুমতিক্রমে রামজে (Ramsay) গ্যাসীয় অবশেষটি পৃথক করতে চেষ্টা করেন। কার্বন ডাই-অক্সাইড ও জলীয় বাষ্পবিহীন বায়ু নিয়ে সেই বায়ু বার বার তপ্ত [[ম্যাগনেসিয়াম|ম্যাগনেসিয়ামের]] ওপর দিয়ে প্রবাহিত করে নাইট্রোজেনকে [[ম্যাগনেসিয়াম নাইট্রাইড]] হিসেবে দ্রবীভূত করা হয়ঃ 3Mg +N2 = Mg3N2; এবং পরিলক্ষিত হয় যে, মূল আয়তনের ৮০/১ ভাগ গ্যাসীয় অবশেষে থেকে যায়। অথচ NO, N2O, NH4NO2 প্রভৃতি থেকে উৎসারিত নাইট্রোজেনকে ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত [[তামা]] ও ম্যাগনেসিয়ামের ওপর দিয়ে চালনা করে পরিলক্ষিত হয় যে, কোন গ্যাসীয় অবশেষ আদৌ থাকে না। রেলে ও রামজে প্রাপ্ত গ্যাসীয় অবশেষের বর্ণালী বিশ্লেষণে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত সবুজ ও লাল রেখা বর্ণালীর সন্ধান লাভ করেন। পরিলক্ষিত হলো যে, এর ঘনত্ব ১৯.৯৪ (H-1), পারমাণবিক ভর ৪০ এবং এটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এটি সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এমনকী বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ প্রয়োগেও [[ক্লোরিন]] বা [[ফ্লোরিন|ফ্লোরিনের]] সাথে এর কোন রাসয়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয় না। রেলে ও রামজে রাসায়নিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে নতুন গ্যাস মৌলের নামাকরণ করেন [[আর্গন]] বা অলস। কিন্তু পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয় যে, উক্ত গ্যাসীয় অবশেষটি বিশুদ্ধ আর্গন নয় এবং এতে আরও বিভিন্ন গ্যাস মৌল রয়েছে।<br />
১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই আগস্ট তারিখে ফরাসি জ্যোতির্বিদ জানসেন (Janssen) ভারতে দৃষ্ট পূর্ণ সূর্য গ্রহণের সময় গ্যাসীয় সৌর আবরণের মধ্যে বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করে একটি স্পষ্ট পীত রেখা D3 আবিষ্কার করেন। এই রেখা সোডিয়ামের D1 ও D2 রেখা থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। পরে লকিয়ার (LocKyer) ও ফ্রাঙ্কল্যান্ড (Frankland) বিবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে এমত সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, যে উক্ত রেখা কোন অপার্থিব মৌলের সূচক—যা কেবল গ্যাসীয় সৌর আবরণেই বিদ্যমান। এ কারণে গ্রীক ‘হেলিওস’ (halios-সূর্য) শব্দানুক্রমে এর নামাকরণ করা হয় হিলিয়াম (Helium)।<br />
[[File:Helium spectrum.jpg|thumb|left|300px|Helium was first detected in the Sun due to its characteristic [[spectral line]]s.|alt=A line spectrum chart of the visible spectrum showing sharp lines on top.]]
অপর দিকে বিজ্ঞানী রামজে বায়ু ছাড়া ভিন্ন কোন উৎসে আর্গন সন্ধান অব্যাহত রাখলেন। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী হিলেব্রাণ্ড (Hillebrand) ক্লিভাইট (clevite) নামক ইউরেনিয়াম আকরিককে লঘু সালফিউরিক এসিডে উত্তপ্ত করে আকরিকে অন্তর্ধৃত (occluded) একটি গ্যাসের অস্তিত্ব প্রমাণ করেণ। তিনি এই গ্যাসকে ভুলক্রমে নাইট্রোজেন জ্ঞান করেন; ফলে নতুন গ্যাস মৌল হিলিয়াম আবিষ্কারের গৌরব লাভে অসমর্থত হয়। রামজে হিলেব্রাণ্ডের প্রণালী অনুসারে ক্লিভাইটকে লঘু সালফিউরিক এসিড সহযোগে উত্তপ্ত ক'রে প্রাপ্ত গ্যাসে ২০% নাইট্রোজেনের অস্তিত্ব লাভ করেন। উপরন্তু কস্টিক অ্যালকালির উপর বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ প্রয়োগে নাইট্রোজেন বিদূরিত ক'রে বর্ণালী বিশ্লেষণেও D3-রেখা প্রাপ্ত হন। এটি ছিল জানসেন কর্তৃক গ্যাসীর সৌর আবরণে প্রাপ্ত D3-রেখা ব্যতীত আর কিছুই নয়। এবূপে প্রথম পার্থিব হিলিয়াম আবিষ্কৃত হয়। হিলিয়ামের ঘনত্ব, পারমাণবিক ভর ও এক পরমাণুকতা নির্ণীত হল। দেখা গেল এর ঘনত্ব ও পারমাণবিক ভর যথাক্রমে ১.৯৯ ও ৪।
রামজে ও ট্রাভার্স (Travers) হিলিয়ামের ঘনত্ব পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখেন যে বিভিন্ন আকরিক হতে প্রাপ্ত হিলিয়ামের ঘনত্ব বিভিন্ন। কাজেই তাঁরা প্রাপ্ত গ্যাসকে ব্যাপন (diffusion) প্রণালীর সাহায্যে দুটি অংশে পৃথক করে তাদের ঘনত্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রকম ব্যবধান পর্যবেক্ষণ করেন, এবং বর্ণালী বিশ্লেষণ করে অপেক্ষাকৃত ভারী অংশকে আর্গন ও হাল্কা অংশকে হিলিয়াম বলে নিরূপণ করেণ। এরূপে খনিজ পদার্থে আর্গনের অসিস্তত্ব আবিষ্কৃত হয়।<br />
৪৩ ⟶ ৪৫ নং লাইন:
এক কয়েক বছর পর ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে র্ডন (Dorn) রেডিয়ামের তেজস্ক্রিয় ক্ষয়জাত পদার্থ হতে সর্বশেষ নিষ্ক্রিয় গ্যাস র্যা ডন আবিষ্কার করন। ৮৮/২২২ জধ ৮৬/২২২ জহ + ২/৪ ঐব
১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে রামজে ও সডি (Soddy) রেডিয়ামের তেজস্ক্রিয় বিভাজনের ফলে হিলিয়াম প্রাপ্ত হন এবং দেখা যায় অনেক তেজস্ক্রিয় মৌল হতেই হিলিয়াম বিচ্ছুরিত হয়।
এইভাবে স্যার উইলিয়াম রামজে-এর নিরলস, নিপুণ ও সুদীর্ঘ গবেষণার ফলে একটি শ্রেণীর সব কয়টি মৌলই একের পর এক আবিষ্কৃত হয়।
 
==অবস্থান ও উৎস==