দ্বিজেন শর্মা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৭৯ নং লাইন:
* ''চার্লস ডারউইন ও প্রজাতির উৎপত্তি'' (১৯৯৭)
* ''ডারউইনঃ বিগল্-যাত্রীর ভ্রমণকথা'' (১৯৯৯)
 
কুরচি তোমার লাগি - দ্বিজেন শর্মা
 
বিখ্যাত প্রাণী বিজ্ঞানী ড. রেজা খানের সঙ্গে মরু অভিযানের কথা, গোলাপ নিয়ে বিশেষণ। ‘বনে এমন ফুল ফুটেছে’ শিরোনামের লেখায় লেখকের শৈশব কৈশরের বর্নিল উদ্যানের একটি চমকপ্রদ বর্ণনা স্থান পেয়েছে। আছে কন্যাসম পারুল আর কনকচাঁপার বিদায় নিয়ে হৃদয়স্পর্শী আলোচনা। সব কথার ফাঁকে আমাদের শ্যামলী নিসর্গের যে চিত্রকল্প উঠে এসেছে তা শুধু আমাদের কল্পনা শক্তিকেই উর্বর করে না, মূল-মন্ত্রের দিকেও ধাবিত করে।
 
বৃটিশদের মাধ্যমেই আমাদের উদ্ভিদবিদ্যার হাতেখড়ি। এ ক্ষেত্রে রক্সবার্গ, হুকার ও অন্যান্যের সঙ্গে ডেভিড প্রেইনও (১৮৫৭-১৯৪৪) নমস্য। দুই খ-ণ্ডে লিখিত তাঁর বেঙ্গল প্ল্যান্টস (১৯০৩) আমাদের দেশে এ যাবৎ বহুল ব্যবহৃত। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে অধ্যাপক সালার খানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশে হার্বেরিয়াম কেন্দ্রিক উদ্ভিদ গবেষণার কাজ শুরু হয়। তৈরি হতে থাকে কিছু কিছু নির্ভুল তালিকা। বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত হয় এফ এম মনিরুজ্জামানের উদ্ভিদ সংহিতা। এই ধারাকে আরো সমৃদ্ধ করেন অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা ও ড. নওয়াজেশ আহমেদ। সম্পৃক্ত হন আরো কয়েকজন নিসর্গী ও উদ্ভিদ গবেষক। দ্বিজেন শর্মা ইতোমধ্যেই আমাদের বেশ কিছু প্রতিনিধিত্বশীল গ্রন্থ উপহার দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্যামলী নিসর্গ (১৯৮০), নিসর্গ নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা (২০০০), ফুলগুলি যেন কথা (১৯৮৮), চার্লস ডারইন ও প্রজাতির উৎপত্তি (১৯৯৭), গহন কোন বনের ধারে (১৯৯৪), হিমালয়ের উদ্ভিদরাজ্যে ড্যালটন হুকার (২০০৪) ইত্যাদি। তাঁর এসব গ্রন্থের প্রতিটিই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তার কুরচি তোমার লাগি গ্রন্থটি।
 
বুদ্ধদেব গুহ’র মাধুকরী উপন্যাসের নায়িকা কুরচি। পাহাড়ি অঞ্চলের পটভূমিতে লেখা এই কাহিনীর কুরচি চরিত্র তারুণ্যের আবেগঘন ভালোবাসার প্রতীক। যদিও উপন্যাস হিসেবে মাধুকরী কোনো অলংকৃত আসন পায় না তবুও এই গল্পের সূত্র ধরেই কুরচির সঙ্গে সখ্য। বাস্তব কুরচির সঙ্গে পরিচয় আরো অনেক পরে, রাঙামাটির পাহাড়ে। কুরচি দেখলেই মাধুকরীর কথা মনে পড়ে। বুদ্ধদেবের এই চরিত্রটি এতই জীবন্ত যে পাঠকমাত্র তা উপলব্ধি করবেন। বিজ্ঞান লেখক দ্বিজেন শর্মাও কুরচির প্রেমে মজেছেন। রবীন্দ্রনাথের ‘কুরচি তোমার লাগি’ কাব্যাংশটি তিনি একাধিকবার গ্রন্থ শিরোনাম করার চেষ্টা করে এবার সফল হলেন। মূলত প্রাসঙ্গিকতার জন্যই যেটুকু দেরি। কেন এই পক্ষপাত? সে সম্পর্কে খানিকটা বলেছেনও তিনি। ‘কুরচি আমাদের বনকুসুম, অযতেœ জন্মে, শুভ্র ফুল ফুটিয়ে সুগন্ধ বিলায়, ওষধ যুগিয়ে মানুষকে বাঁচায়।’
 
[ লেখকের কথা ]
 
 
শিরোনাম দেখেই আমরা ধরে নিতে পারি গ্রন্থের পরতে পরতে লেখক কাব্য সুষমা ঢেলেছেন, তার সঙ্গে আছে বিজ্ঞানের মিশেল। গ্রন্থভুক্ত প্রায় সকল লেখাই বিভিন্ন সাময়িকীতে প্রকাশিত। মূল বক্তব্য বৃক্ষ হলেও উপস্থাপনবৈচিত্র্য প্রতিটি লেখাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। অনেক কথার ফাঁকে লেখক কৌশলে মূল কথাটি বলে দিয়েছেন। একমাত্র ভাবনার গভীরতা থেকেই এটা সম্ভব। দ্বিজেন শর্মা যখন প্রকৃতি বিজ্ঞানের কোনো জটিল তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেন সেটিও বেশ স্বাদু করেই করেন। এটা তাঁর বিশেষ একটা গুণ। কারণ সবকিছুর সঙ্গেই থাকে নিজের অভিজ্ঞা ও দর্শন। আর এসব কথা হয়ে ওঠে গল্পের মতো। পাঠক বেশ আগ্রহ ভরেই তাঁর এসব লেখাগুলো পড়েন। তিনি ডারউইনের বিবর্তনবাদ বা তাঁর বিগল ভ্রমণের কথা এত চমৎকার ভাষাশৈলীতে তুলে এনেছেন যা কখনোই একঘেঁয়ে বা বিরক্তিকর মনে হয় নি। কারণ তিনি কোনো শাব্দিক অনুবাদ করেন নি। ভাবানুবাদ করতে গিয়ে নিজের ভালোবাসা ও একাগ্রতা ঢেলে দিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে হিমালয়ের উদ্ভিদরাজ্যে ড্যালটন হুকার গ্রন্থের কথা বলা যায়।
 
হুকারের এই দুর্লভ জার্নালটি তিনি অনেক খোঁজাখুঁজির পর যোগাড় করতে সক্ষম হন। তারপর যথারীতি অবর্ণনীয় পরিশ্রম করে এর সরলীকরণ করেন। নিশ্চিত করে বলতে পারি, যদি কোনো অনুৎসাহী পাঠকও বইটি হাতে নেন তাহলে শেষ না করে রাখতে পারবে না। কারণ পাঠক পড়বেন একটি চমৎকার ভ্রমণ কাহিনী। অথচ তার পরতে পরতে আছে বিচিত্র গাছগাছালির বর্ণনা। সেই সূত্রে আলোচ্য বিশটি প্রবন্ধকে প্রবন্ধ না বলে গল্প বলাই শ্রেয়। কারণ লেখক সর্বত্রই অকপটে তাঁর অভিজ্ঞতার গল্পগুলো শোনাতে চেয়েছেন। আর তাতে আপনা আপনিই জুটেছে প্রকৃতি ও পরিবেশ, তার ব্যাপ্তি ও বিলয়, নন্দনতত্ত্ব ও নানামাত্রিক অসঙ্গতি। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে বৃক্ষ বন্দনাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, তিনি কিছু নতুন নতুন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আমাদের ভাবনাকে আরো সম্প্রসারিত করেছেন। ঢাকায় কিভাবে রমনাকেন্দ্রিক নিসর্গ নির্মাণের সূত্রপাত সেসম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তিনি এখানে তুলে ধরেছেন।
 
[...] প্রাউডলক ঢাকায় কোনো পার্ক তৈরি করেন নি। রমনা পার্কের কুসুমগাছের বীথি তাঁর লাগানো হতে পারে। রমনা পার্কের নীলনকশা তৈরি ও বৃক্ষরোপণের সূত্রপাত কলকাতার ইডেন উদ্যানের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ফজলুল করিমের হাতে। আঁকাবাঁকা পথ ও ইনফর্মাল গড়নের তৃণাঙ্গন থেকে সুস্পষ্ট যে তিনি ছিলেন রোমান্টিক শৈলীর অনুসারী। তাঁর লাগানো নাগেশ্বর, বকুল, কৃষ্ণচূড়া, মণিমালা বীথিগুলো এখনো নজরকাড়া। [পৃ. ২৫]
 
 
এখানে আমরা রমনাগ্রীন তৈরির দুই নায়কের সন্ধান পাই। যদিও দু’জনই ছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত। কিন্তু ভালোবাসা ব্যতীত এমন একটি নান্দনিক কাঠামো দাঁড় করানো সত্যিই অসম্ভব। ফজলুল করিম এঅঞ্চলের মানুষ হলেও রবার্ট লুইস প্রাউডলক ছিলেন লন্ডনের কিউ উদ্যানের কর্মী। বর্তমানে এখানে বিভিন্ন উষ্ণম-লীয় অঞ্চলের যে-সব গাছপালা দেখি তার অধিকাংশই প্রাউডলকের অবদান। তিনি এখানকার সন্তানতুল্য গাছপালার ভালোবাসায় এতটাই মুগ্ধ ছিলেন যে বিদায় নেবার পরও তিনি আরো কয়েকবার এখানে এসেছিলেন।
 
কোথাও কোথাও লেখক বলেছেন আত্মপীড়নের কথা,
 
 
[...] চল্লিশের দশকে, আজ থেকে প্রায় ষাট বছর পেছনে তাকালে দেখি পাথারিয়া পাহাড়ের মহারণ্যে কুড়াল দিয়ে গাছ কাটছি। সঙ্গে অগ্রজ ও তাঁর আদিবাসী লোক লস্কর। অনেকটা জায়গা আবাদ করেছিলাম আমরা-কয়েকটি টিলা, সমতল জমিও খাদ। স্কুলে পড়ি নিচের ক্লাশে, বনের গাছপালা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। কত গাছ কাটা হয়েছিল কোনো হিসাব নেই। [ পৃ. ১৯ ]
 
 
লেখক জীবনের বর্নাঢ্য কিছু সময় কাটিয়েছেন মস্কোয়। সেই সুবাদে চষে বেড়িয়েছেন গোটা ইউরোপ। এসব অভিজ্ঞতার অনুপক্সক্ষ কথামালা সাজিয়েছেন ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক’, ‘ভুবন ভ্রমিয়া শেষে’, ‘চেলসি পুষ্প মেলায়’, ‘বসন্ত জাগ্রত: লন্ডন’, ‘আলমদের দেওদার গাছ’ ইত্যাদি প্রবন্ধে। এসব প্রবন্ধের সিংহভাগ জুড়েই আছে প্রকৃতির নানা আয়োজন, পুষ্প-বৃক্ষের রকমফের, নামি দামি উদ্যানের অনুপম বর্ণনা। সব কিছুর সঙ্গে দেশের উপমাও খুঁজেছেন, মতামত দিয়েছেন, অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। ব্যাখ্যা করেছেন অনেক জটিল তত্ত্ব-তথ্য। ভিনদেশি নিসর্গশোভা ও উদ্যান বিষয়ে এসব কথা বলতে গিয়ে তিনি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেশে ফিরে এসেছেন, আমাদের হারিয়ে যাওয়া উদ্যান ঐতিহ্যের কথা বলেছেন, খুঁজেছেন আলোচিত বাগানের ইতিহাস ও অন্যান্য অনুষঙ্গ। পশ্চিমাদের উদ্যান ভাবনার যে আধুনিকীকরণ ঘটেছে সে সম্পর্কে তিনি জানাচ্ছেন,
 
[...] একটি ঘর ও উঠোন নিয়ে তৈরি হয়েছে বয়স্কদের বাগান। উন্নত দেশে লোকদের আয়ুবৃদ্ধির ফলে কর্মিদলে তরুণদের সংখ্যা যতই কমবে ততই বাড়বে বয়স্কদের অংশভাগ। বৃদ্ধরা যাতে বাড়ি বসে কাজ করতে পারে সেভাবেই তৈরি হয়েছে এই বাগান। [ পৃ. ৬০ ]
 
ভাবুকদের ভাবনার দৌড় কত বিস্তৃৃত! অথচ আমরা এখনো গুছিয়ে একটা বোটানিক উদ্যানই করতে পারলাম না।
গ্রন্থের সবচেয়ে অভিনব উপস্থাপন ‘লাঈক ফতেহ্আলির সঙ্গে কল্পসংলাপ’। ভারতের প্রখ্যাত উদ্যানবিদ ফতেহ্আলির ‘গার্ডেনস’ গ্রন্থটি পড়ে লেখক অনেক ক্ষেত্রেই তার একান্ত ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা খুঁজে পেয়েছেন। সেই সুবাদে বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে আমাদের নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও উদ্যান গড়ার নানা কৌশল সম্পর্কে কাল্পনিক মতবিনিময় করেছেন। ফত্হেআলির সঙ্গে নিজের ভাবনার মেল বন্ধন তৈরি করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন,
 
 
[...]আপনি বলেন আকাশ যেকোন প্রাকৃতিক দৃশ্যের অঙ্গ, সেজন্য বাগানেরও। আমার জন্মভূমি সিলেট জেলায় অনেকগুলো চা-বাগান আছে। সেইসব বাগানে আছে হালকা ছায়ার জন্য চাকুয়া করই গাছ। উঁচু পাহাড়ের গায়ে এসব গাছের আড়ালে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময় আকাশে যে আশ্চর্য সৌন্দর্য ফোটে তাকে স্বর্গীয় ছাড়া আর কিই-বা বলা যায়। ছেলেবেলায় দেখা এই দৃশ্য আমার মনে চিরদিনের জন্য গেঁথে আছে। [ পৃ. ৩১ ]
 
 
প্রসঙ্গত আমাদের বোটানিক গার্ডেনগুলোর বিচ্যুতি, উত্তরণের উপায় এবং সমভাবাপন্ন জলবায়ু অঞ্চলের বন-বাগান নিয়েও একাধিক বক্তব্য পাওয়া যায়।
একটি বর্ণিল উদ্যান কী করে ধ্বংস হয়, তারপর ধ্বংসস্তূপের ওপর আবার গড়ে ওঠে আরেকটি সুরম্য বাগান, আর সেই বাগান কিভাবে তার বিনোদন ধারা পাল্টে দিয়ে বেমালুম একটি গবেষণা উদ্যানে পরিণত হতে পারে সেই চমকপ্রদ কাহিনী উঠে এসেছে ‘বিনোদন উদ্যানের রূপবদল’ শিরোনামের লেখায়। মোঘল স্মৃতি বিজড়িত লক্ষেèৗ বোটানিক্যাল গার্ডেনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা এসেছে এখানে। যে-কোনো বাগানের নকশা ও আলঙ্করিক উপাদান প্রসঙ্গে দ্বিজেন শর্মা কলকাতার শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রসঙ্গ এনেছেন বার বার। প্রসঙ্গত আমাদের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সঙ্গে অপরাপর বোটানিক্যাল গার্ডেনসমূহের একটি তুলনাও হাজির করেছেন। ল্যন্ডস্কেপিং-এর কথাও এসেছে সুগভীর আলোচনায়। কাজটি আমাদের দেশে একেবারেই অবহেলিত। ফলে আমাদের সবকিছুই অগোছাল, শৈল্পিক সৌন্দর্য বিবর্জিত।
 
আছে বিখ্যাত প্রাণী বিজ্ঞানী ড. রেজা খানের সঙ্গে মরু অভিযানের কথা, গোলাপ নিয়ে বিশেষণ। ‘বনে এমন ফুল ফুটেছে’ শিরোনামের লেখায় লেখকের শৈশব-কৈশোরের বর্ণিল উদ্যানের একটি চমকপ্রদ বিবরণ স্থান পেয়েছে। আছে কন্যাসম পারুল আর কনকচাঁপার বিদায় নিয়ে হৃদয়স্পর্শী আলোচনা। সব কথার ফাঁকে আমাদের শ্যামলী নিসর্গের যে চিত্রকল্প উঠে এসেছে তা শুধু আমাদের কল্পনা শক্তিকেই উর্বর করে না, মূল-মন্ত্রের দিকেও ধাবিত করে। ‘বনফুলের বিনোদমালা’ প্রবন্ধটির প্রারম্ভেই আছে দুজন বিখ্যাত কবির পঙক্তি। একজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যজন ঋৎধহশ খরড়ুফ ডৎরমযঃ। যেকোনো স্থাপনা তৈরিতে ল্যান্ডস্কেপিং যে খুবই গুরত্বপূর্ণ বিষয় সে-সম্পর্কে এখানে তিনি আলোকপাত করেছেন। প্রসঙ্গত একজন তরুণ স্থপতির প্রসঙ্গও এনেছেন। যিনি ল্যান্ডস্কেপিংয়ের অনেক খুঁটিনাটি ভাবনা নিয়ে সারা দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। প্রশংসনীয় এই উদ্যোগ সম্পর্কে লেখক জানাচ্ছেন,
 
[...]গাছপালা নির্বাচনে শহুরে ও গ্রামীণ মানুষের রুচি ও সৌন্দর্যবোধের পার্থক্যও এই গবেষক লক্ষ করেছেন। গ্রামাঞ্চলে সৌন্দর্যের তুলনায় উপকারিতাই অধিক প্রাধান্য পায়। তারা মৌসুমি শাকশব্জির ফুল, গাছের ডাল থেকে ঝুলন্ত ফল, সেগুলোর সুগন্ধ, রঙবদল, নতুন পাতার ঝলমলানি ইত্যাদিতে অধিকতর আকৃষ্ট হয়ে থাকেন। গাছপালার সঙ্গে মৌমাছি, প্রজাপিত এবং ভালো ও মন্দ কীটপতঙ্গের সম্পর্ক তথা জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব গ্রামের মানুষ ভালোই বোঝেন। [ পৃ ১০১ ]
 
 
দ্বিজেন শর্মা প্রতিনিয়ত তার নান্দনিক ভাবনায় নিসর্গ নির্মাণের যে বীজ বপন করে চলেছেন তা তাঁর কর্মকা-ে স্পষ্টতই ফুটে ওঠে। তিনি আমাদের বনের নান্দনিক পুষ্প-বৃক্ষগুলোকে নাগরিক উদ্যানে ঠাঁই দেবার কথা বলেছেন বার বার। প্রসঙ্গত সে-সব বৃক্ষের একটি তালিকাও জুড়ে দিয়েছেন। সব শেষে আছে একটি সাক্ষাৎকার। তাতে প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে লেখকের নিজস্ব ভাবনার কথামালা সাজানো আছে। এমন সুখপাঠ্য গদ্য আমাদের ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে নিঃসন্দেহে।
 
== আরো দেখুন ==