বাসন্তী দেবী

ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী

বাসন্তী দেবী (২৩ মার্চ ১৮৮০ - ৭ মে ১৯৭৪) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ কারাগারে কারারুদ্ধ প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী নারী।

বাসন্তী দেবী
জন্ম(১৮৮০-০৩-২৩)২৩ মার্চ ১৮৮০
মৃত্যু৭ মে ১৯৭৪
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)

 ভারত
ভারত ভারত)
পরিচিতির কারণব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিকন্যা
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
আন্দোলনভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন
দাম্পত্য সঙ্গীচিত্তরঞ্জন দাশ
সন্তানঅপর্ণা , কল্যাণী, চিররঞ্জন
পিতা-মাতা
  • বরদানাথ হালদার (পিতা)
  • হরিসুন্দরী দেবী (মাতা)
আত্মীয়সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় (দৌহিত্র)
পুরস্কারপদ্মবিভূষণ (১৯৭৩)

জন্ম পরিবার শিক্ষা সম্পাদনা

বাসন্তী দেবী ২৩ মার্চ ১৮৮০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বরদানাথ হালদার ও মাতার নাম হরিসুন্দরী দেবী। তার পিতা ছিলেন আসামের বিজনি ও অভয়াপুরী এস্টেটের দেওয়ান। দশ বছর বয়েসে তিনি দার্জিলিংয়ের লরেটে কনভেন্টে শিক্ষার জন্যে ভর্তি হন। ১৮৯৬ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সাথে বিবাহ হয়[১]

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

১৯২০ সালে চিত্তরঞ্জন দাশের সাথে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি ১৯২১ সালে নারীদের অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। ১৯২১ সালে চিত্তরঞ্জন দাশ যখন গ্রেপ্তার হন তখন তিনি আইন অমান্য ও হরতালের ঘোষণা দেন। এর পরে তিনিও গ্রেপ্তার হন বড়বাজার এলাকায় হরতাল করার সময়। তাদের গ্রেপ্তারে সারা বাংলা জুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু তাকে 'মা' সম্বোধন করতেন। তিনি ও চিত্তরঞ্জন দাশ মিলে সম্পাদনা করতেন বাঙলার কথা পত্রিকা। ১৯২২ সালে এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামে যে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সেখানে তিনি সভানেতৃত্ব করেন এবং দেশবন্ধুর নতুন কর্মপন্থা ইঙ্গিত করেন। দেশবন্ধু তখনও জেলে ছিলেন। তিনি দেশবন্ধুর সাথে সংগঠন গড়ে তোলা ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন জন্য কাজ করেছেন[১]। ১৯২২ সালে চট্টগ্রামে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে সভানেত্রী ছিলেন। দেশবন্ধু ও তার তিন সন্তান- দুই কন্যা, অপর্ণা ও কল্যাণী ও একপুত্র চিররঞ্জন। ১৯২৬ সালে একমাত্র পুত্র চিররঞ্জনের মৃত্যুর পর রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেন। এর পরেও তাকে অনেক পারিবারিক বিপর্যয় ও ব্যক্তিগত শোক সহ্য করতে হয়েছিল। প্রথমে স্বামী, পুত্র, এরপর নাবালিকা পৌত্রী, পুত্রবধু, জামাতা এবং জ্যেষ্ঠা কন্যার মৃত্যু হয় তার জীবদ্দশায়। তার দৌহিত্র সিদ্ধার্থ শংকর রায় পশ্চিমবঙ্গের ভূতপূর্ব মুখ্যমন্ত্রী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এক দৌহিত্রী মঞ্জুলা বসু প্রথম মহিলা অ্যাডভোকেট জেনারেল।

মৃত্যু সম্পাদনা

বাসন্তী দেবী ৭ মে ১৯৭৪ মৃত্যুবরণ করেন। কলকাতা কেওড়াতলা মহাশ্মশান প্রাঙ্গণে তার স্মৃতি সমাধি মন্দির বর্তমান।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯কলকাতা: র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ৬৫-৬৭। আইএসবিএন 978-81-85459-82-0