বায়ুগতিবিজ্ঞান

গতিবিজ্ঞানের শাখা যেখানে বায়ুপ্রবাহের গতি অধ্যয়ন করা হয়

বায়ুগতিবিজ্ঞান (ইংরেজি: Aerodynamics) বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে বায়ুপ্রবাহের গতির, বিশেষ করে কঠিন বস্তুর সাথে আন্তঃক্রিয়াশীল বায়ুপ্রবাহের গতির অধ্যয়ন করা হয়। এটি প্রবাহী গতিবিজ্ঞান ও বায়বীয় পদার্থের গতিবিজ্ঞানের একটি শাখা। বায়ুগতিবৈজ্ঞানিক তত্ত্বের অনেক দিকই উপযুর্ক্ত ক্ষেত্রগুলিতেও প্রযোজ্য। বায়ুগতিবিজ্ঞানকে কখনও কখনও বায়বীয় পদার্থের গতিবিজ্ঞানের সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হল "বায়বীয় পদার্থ বা গ্যাসের গতিবিজ্ঞান" ক্ষেত্রে সব ধরনের গ্যাসের প্রবাহের গতি আলোচিত হয়, কিন্তু বায়ুগতিবিজ্ঞানে কেবল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত বায়ুর প্রবাহ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

১৯৯০ সালে ওয়ালপস দ্বীপে মার্কিন জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (নাসা) কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণা, যেখানে ধোঁয়ার মাধ্যমে একটি উড়োযানের পাখার চলনের ফলে বায়ুতে সৃষ্ট ঘূর্ণি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। বায়ুগতিবিজ্ঞানে অধীত বহুবিধ ঘটনাগুলির মধ্যে ঘূর্ণি অন্যতম।

বায়ুগতিবিজ্ঞান ক্ষেত্রে আধুনিক প্রণালীবদ্ধ গবেষণা শুরু হয় ১৮শ শতকে। তবে এর অনেক আগেই বায়ুগতীয় পিছুটান (aerodynamic drag) জাতীয় ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে নথিবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। বায়ুগতিবিজ্ঞানের প্রাথমিক গবেষণা প্রচেষ্টার সিংহভাগই বাতাসের চেয়ে ভারী বস্তুর উড্ডয়ন-সংক্রান্ত ক্ষেত্রে নির্বাহিত হয়। ১৮৯১ সালে অটো লিলিয়েনটাল প্রথম এরকম উড্ডয়ন প্রদর্শন করে দেখাতে সক্ষম হন।[১] এরপর থেকে গাণিতিক বিশ্লেষণ, পরীক্ষাভিত্তিক আসন্নীকরণ, বায়ুপ্রবাহ সুড়ঙ্গ পরীক্ষণ এবং কম্পিউটার ছদ্মায়নের মাধ্যমে বায়ুগতিবিজ্ঞানকে যৌক্তিক ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা বাতাস অপেক্ষা ভারী যানের উড্ডয়ন ও অন্যান্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নতিসাধন করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে বায়ুগতিবিজ্ঞানে সংনমনযোগ্য প্রবাহ, বিক্ষোভ এবং সীমানা স্তর নিয়ে গবেষণাকর্ম সম্পাদিত হচ্ছে এবং এগুলি উত্তরোত্তর গণনামূলক চরিত্র ধারণ করছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা