আইন কমিশন (বাংলাদেশ)
আইন কমিশন হল বাংলাদেশে প্রচলিত আইন পুনর্নিরীক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ পেশ করার উদ্দেশ্যে জাতীয় সংসদে প্রণীত আইনবলে গঠিত একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।[১] আইন কমিশনের প্রধান কাজ হচ্ছে সকল আইন সর্বদা বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইন সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করা।[১]
গঠিত | ১৯৯৬ |
---|---|
সদরদপ্তর | ঢাকা, বাংলাদেশ |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
ওয়েবসাইট | আইন কমিশন |
কমিশনের কার্যাবলী
সম্পাদনা১৯৯৬ সালের আইন কমিশন আইনের ৬ নং ধারায় আইন কমিশনের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি বর্ণিত হয়েছে।[২][৩]
৬। কমিশনের কার্যাবলী হইবে-
(ক) বিভিন্ন স্তরের আদালতে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলাসমূহ নিষ্পত্তিতে বিলম্বের কারণসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং উহাদের নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করার এবং ন্যায় বিচার যথাসম্ভব দ্রুত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে- (১) সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে উহাদের সংশোধন বা ক্ষেত্রমত নূতন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা; (২) বিচার ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের জন্য উহার প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ করা; (৩) বিচার ব্যবস্থার সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অর্থাৎ বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন কর্মকর্তা ও আইনজীবীগণের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য পদক্ষেপের সুপারিশ করা; (৪) সামগ্রিকভাবে বিচার ব্যবস্থা এবং বিশেষতঃ সংশ্লিষ্ট আইনের অপব্যবহার রোধকল্পে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা; (৫) আদালত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক, যথা, বিচারকদের মধ্যে কার্যবণ্টন, নকল সরবরাহ, নথি প্রেরণ ও সংরক্ষণ, নোটিশাদি জারী ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় আধুনিকীকরণ সম্পর্কে সুপারিশ করা; (৬) ফৌজদারী মামলার অভিযোগ তদন্ত করিবার জন্য স্বতন্ত্র তদন্তকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠার এবং সরকারের পক্ষে বিভিন্ন মামলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি অধিকতর দক্ষ এবং জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সম্ভাব্যতা যাচাই করতঃ তত্সম্পর্কে গ্রহণীয় পদক্ষেপের সুপারিশ করা; (খ) দেশী-বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া- (১) শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টির এবং একচেটিয়া আধিপত্য পরিহারের উদ্দেশ্যে কোম্পানী আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ সংশোধন বা ক্ষেত্রমত নূতন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা; (২) সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন বিশেষতঃ কপিরাইট, ট্রেড মার্ক, পেটেন্ট, আরবিট্রেশন, চুক্তি, রেজিষ্ট্রেশন এবং অনুরূপ অন্যান্য বিষয়াদি সংক্রান্ত আইনসমূহ পরীক্ষান্তে সুপারিশ করা; (৩) বাণিজ্য এবং ব্যাংক ঋণ বিষয়ক মামলা নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালত স্থাপনের বিষয় পরীক্ষান্তে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা; (গ) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত নির্বাচন সংক্রান্ত প্রচলিত নির্বাচনী আইনসমূহের প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী সংশোধন ও সংস্কারের উদ্দেশ্যে সুপারিশ করা; (ঘ) শিশু ও নারীদের অধিকার সংরক্ষণ এবং নারী নির্যাতন রোধকল্পে প্রচলিত আইন পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও ক্ষেত্রমত নূতন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা; (ঙ) আইনগত সহায়তা (লিগ্যাল এইড) কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য তত্সংক্রান্ত প্রচলিত আইন সংস্কার, ক্ষেত্রমত নূতন আইন প্রণয়ন এবং তদ্বিষয়ে গ্রহণীয় অন্যান্য পদক্ষেপ সম্পর্কে সুপারিশ করা; (চ) একই বিষয়ের উপর একাধিক আইন বা পরস্পর বিরোধী আইন চিহ্নিত করা এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে একাধিক আইনের বিধান একীভূত করার সুপারিশ করা; (ছ) মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী কোন আইন প্রচলিত থাকিলে তাহা বাতিল বা ক্ষেত্রমত সংশোধনের সুপারিশ করা; (জ) অচল ও অপ্রয়োজনীয় আইন চিহ্নিত করিয়া উহা রহিতকরণের সুপারিশ করা এবং প্রয়োজনবোধে অন্য যে কোন বিষয়ে আইন প্রণয়নে সুপারিশ করা; (ঝ) আইন-শিক্ষার মানোন্নয়নকল্পে গ্রহণীয় পদক্ষেপের সুপারিশ করা; (ঞ) সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রেরিত অন্যান্য আইনগত বিষয়ে সুপারিশ করা৷ |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "আইন কমিশন - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২২।
- ↑ "আইন কমিশন আইন, ১৯৯৬"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২২।
- ↑ "আইন কমিশন লক্ষ্য অর্জনে বিফল | উপসম্পাদকীয়"। দৈনিক যুগান্তর। ২০১৯-০৪-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২২।