বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস
বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস হচ্ছে প্রতি বছর ১৪ ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে পালিত একটি দিবস। খৃষ্টীয় ৪৯৬ সাল থেকে এ দিবসটি সারা বিশ্বে পালিত হলেও বাংলাদেশে ১৯৮০ সালের পর থেকে এ দিবসটি জনপ্রিয় হয়।
বাংলাদেশে এ দিবসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রকম শুভেচ্ছাসূচক কার্ড, ফুল, চকোলেট বা উপহারসামগ্রী বিনিময় করে বিশেষত তরুণ তরুণীরা।[১][২]
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবসের আবির্ভাব ঘটে সাংবাদিক ও যায় যায় দিন পত্রিকার সম্পাদক শফিক রেহমানের হাত ধরে। তিনি লন্ডনে পড়াশুনার সুবাদে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সাথে পরিচিত ছিলেন।[৩] তিনি যায় যায় দিন পত্রিকার মাধ্যমে বিশ্ব ভালবাসা দিবস বাংলাদেশী মানুষের কাছে তুলে ধরেন। জানা যায়, তার তেজগাঁওয়ের পত্রিকা অফিসে কেউ চাকুরীর জন্য গেলে তাকে সাথে তার মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে যেতে হতো। ভালোবাসা দিবস অভিধা প্রথম ব্যবহার করেন শফিক রেহমান। এ কারণে শফিক রেহমানকে বাংলাদেশে ভালবাসা দিবসের জনক বলা হয়।[৪] তিনি তার অফিসের সামনে সড়কটিরও নামকরণ করেন লাভলেন। বিভিন্ন টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় তার প্রচারণার কারণে এবং বাণিজ্যিক কারণে[৫] বাংলাদেশে এ দিবসটি জনপ্রিয় হয়।[৬]
উদ্যাপন
সম্পাদনাবাংলাদেশের তরুনরা এ দিনটি ব্যপকভাবে পালন করে থাকে। তবে গ্রামগঞ্জে এ দিনটির কোনো প্রভাব পরে না।[২] বাংলাদেশে এ দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয় না।
দিনটিতে প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব, স্বামী-স্ত্রী, মা-সন্তান, ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ মানুষ একে অপরের প্রতি ফুল, চকোলেট, কার্ড ও অন্যান্য উপহার দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকে। এ দিনে দেশের বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো ভালোবাসার মানুষদের দ্বারা পূর্ণ থাকে।[৭][৮]
বিতর্ক
সম্পাদনাবাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস পালন নিয়ে নানামূখী বিতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের কেউ কেউ মনে করেন, এ দিনটি উদ্যাপন করা সংস্কৃতি এবং ইসলাম ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। ভালোবাসা দিবস নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও রয়েছে। ভালোবাসা দিবস পালনের আগে বাংলাদেশে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার বিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হতো। ১৯৮৩ সালে সেই সময়কার সরকারের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে স্মারকলিপি দিতে শিক্ষার্থীরা মিছিল করে সচিবালয়ের দিকে যাবার সময় পুলিশ গুলিতে ১০ জন নিহত হয়েছিলো। তবে ভালোবাসা দিবস পালন করতে গিয়ে সে দিবস ছাপিয়ে গেছে। সরকার নিজেদের স্বার্থেই এ দিবস পালন অব্যাহত রেখেছেন বলে কারো ধারণা করা হয়।[২][৯][১০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "ভালোবাসা দিবসের জানা-অজানা"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ ক খ গ "ভ্যালেন্টাইন্স ডে: অনুভূতি প্রকাশের বাহানা মাত্র?"। বিবিসি বাংলা। ২০১৯-০২-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ "ভালোবাসা দিবস নিয়ে ইতিহাসে যত কথা"। আরটিভি। ২৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ "কবে থেকে ভালোবাসা দিবসের শুরু :: দৈনিক ইত্তেফাক"। archive.ittefaq.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ "ভালোবাসা দিবসের প্রচার বাণিজ্যিক কারণে?"। নয়া দিগন্ত। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ "বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবসের সূচনা শফিক রেহমানের"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ "বিশ্ব ভালবাসা দিবস আজ"। বিএনএ। ২০২০-০২-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "ভালোবাসা দিবস আজ"। খোলা কাগজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ "১৪ ফেব্রুয়ারি : ভালবাসা নয় অশ্লীলতার আগ্রাসন দিবস"। ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।
- ↑ "'ভালোবাসায়' চাপা পড়েছে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪।