বসব
বসব (অন্যান্য নাম বসবেশ্বর, বসবন্ন) ছিলেন দ্বাদশ শতাব্দীর ভারতীয় রাষ্ট্রনীতিবিদ, দার্শনিক, কবি, সমাজ সংস্কারক এবং শৈব ভক্তিবাদী লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের সন্ত।[৪] কল্যাণী চালুক্য/কলচুরি রাজবংশের শাসনকালে তিনি সমাজ সংস্কারে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন। উভয় রাজবংশের রাজত্বকালেই বসব সক্রিয় ছিলেন, কিন্তু তাঁর প্রভাব সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছিল রাজা দ্বিতীয় বিজ্জলের শাসনকালে।[২][৫][৬]
জগজ্যোতি বসব | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১১৩১ খ্রিস্টাব্দ[১] |
মৃত্যু | ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দ [১] কুদলসঙ্গম, কর্ণাটক, ভারত |
ধর্ম | লিঙ্গায়েত ধর্ম |
সম্প্রদায় | লিঙ্গায়েত (শরণ)[২][৩] |
যে জন্য পরিচিত | সামাজিক-ধর্মীয় সংস্কার, অনুভব মন্তপ, বচন সাহিত্য, দক্ষিণ ভারতে নারী ক্ষমতায়ন আন্দোলন |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
সাহিত্যকর্ম | বচন |
পেশা: বিজয়পুর প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী | রাষ্ট্রনীতিবিদ, কবি, সমাজ সংস্কারক, দার্শনিক |
‘বচন’ নামে পরিচিত স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে বসব সামাজিক সচেতনতার প্রসার ঘটাতেন। তিনি সামাজিক বৈষম্য, কুসংস্কার ও আচার-অনুষ্ঠান প্রত্যাখ্যান করেন[১] এবং ‘ইষ্টলিঙ্গ’ নামক কণ্ঠহারের প্রচলন ঘটান। শিবলিঙ্গ-সম্বলিত এই কণ্ঠহারটির[৭] উদ্দেশ্য ছিল বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রত্যেককে প্রতি নিয়ত শিবভক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি অনুভব মন্তবের মতো নাগরিক প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিষ্ঠা করেন।[৮] এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানে সকল প্রকার সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে আগত নরনারী ধর্মীয় ও জীবনের দৈনন্দিন জিজ্ঞাস্য বিষয়গুলি সকলের সঙ্গে আলোচনা করত।[৯]
প্রথাগত কিংবদন্তি ও ধর্মীয় জীবনীসাহিত্যগুলিতে বসবকে লিঙ্গায়েত ধর্মের প্রবর্তক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যদিও আধুনিক গবেষকেরা কলচুরি অভিলেখ ইত্যাদি ঐতিহাসিক প্রমাণের উপর নির্ভর করে মনে করেন যে, কবি ও দার্শনিক বসব পূর্বাবধি বিদ্যমান একটি ধর্মবিশ্বাসকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলেছিলেন।[১][২][১০] কন্নড় কবি হরিহর রচিত বসবরাজদেবর রাগালে (যার ২৫টির মধ্যে ১৩টি অংশই পাওয়া যায়, আনুমানিক ১১৮০) হল বসবের জীবন-সংক্রান্ত তথ্যের আদি উৎস। এই গ্রন্থটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়, কারণ এর রচয়িতা ছিলেন বসবের প্রায় সমসাময়িক ব্যক্তিত্ব।[১১] বসবের জীবন ও ধ্যানধারণার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যায় পলকুরিকি সোমনাথ রচিত ত্রয়োদশ শতাব্দীর তেলুগু ধর্মগ্রন্থ বসবপুরাণ-এ।[১২]
কন্নড় ভাষায় রচিত বচন সাহিত্যের মধ্যে বসবের রচনাও অন্তর্ভুক্ত। তিনি ‘ভক্তিভাণ্ডারী’ (অর্থাৎ ‘ভক্তির কোষাধ্যক্ষ’) নামেও পরিচিত ছিলেন।[১৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ Carl Olson (2007), The Many Colors of Hinduism: A Thematic-historical Introduction, Rutgers University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮১৩৫৪০৬৮৯, pages 239–240
- ↑ ক খ গ Basava Encyclopædia Britannica (2012), Quote: "Basava, (flourished 12th century, South India), Hindu religious reformer, teacher, theologian, and administrator of the royal treasury of the Kalachuri-dynasty king Bijjala I (reigned 1156–67)."
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;blake7
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Jestice, Phyllis G. (২০০৪)। Holy People of the World: A Cross-cultural Encyclopedia (ইংরেজি ভাষায়)। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 107। আইএসবিএন 978-1-57607-355-1।
- ↑ A. K. Ramanujan (১৯৭৩)। Speaking of Śiva । Penguin। পৃষ্ঠা 175–177। আইএসবিএন 978-0-14-044270-0।
- ↑ Gene Roghair (২০১৪)। Siva's Warriors: The Basava Purana of Palkuriki Somanatha। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 11–14। আইএসবিএন 978-1-4008-6090-6।
- ↑ Fredrick Bunce (2010), Hindu deities, demi-gods, godlings, demons, and heroes, আইএসবিএন ৯৭৮৮১২৪৬০১৪৫৭, page 983
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;janpeter4
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;skdas163
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;edrice
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Shiva Prakash (1997), p. 179
- ↑ Velchuri Rao and Gene Roghair (2014), Siva's Warriors: The Basava Purana of Palkuriki Somanatha, Princeton University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৬৯১৬০৪৮৭৯, pp. 1–14
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;janpeter
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Speaking of Siva, by A. K. Ramanujan. Penguin. 1973. আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৪০৪৪-২৭০-০
- Shiva Prakash, H.S. (১৯৯৭)। "Kannada"। Ayyappapanicker। Medieval Indian Literature:An Anthology। Sahitya Akademi। আইএসবিএন 978-81-260-0365-5।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Understanding Basavana: history, hagiography and a modern Kannada drama, Julia Leslie (1998), Bulletin of the School of Oriental and African Studies, Volume 61, Issue 2, pages 228–261
- "Linga" as Lord Supreme in the Vacancies of Basava, R Blake Michael (1982), Numen, Volume 29, Issue 2, pages 202–219
- Lingayats as a Sect, William McCormack (1963), The Journal of the Royal Anthropological Institute of Great Britain and Ireland, Vol. 93, No. 1, pages 59–71
- Work as Worship in Vīraśaiva Tradition, R Blake Michael (1982), Journal of the American Academy of Religion, Vol. 50, No. 4, pages 605–619