বড়কুঠি বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলের সর্বপ্রাচীন ইমারত।[১][২][৩][৪] সুনির্দিষ্টভাবে এই ইমারতের নির্মাণকাল নির্ধারণ করা না গেলেও বিভিন্ন সূত্রের বিচারে এর নির্মাণকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বলে ধারণা করা হয়।[৪] এটি প্রথমে ওলন্দাজ বা ডাচদের ব্যাবসাকেন্দ্র ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ডাচরা ভারতে তাদের কর্মকাণ্ড গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৮১৪ সালে ইংরেজদের সাথে একটি চুক্তি করে বড়কুঠিসহ ভারতের সকল বাবসা কেন্দ্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে হস্তান্তর করে। বড়কুঠির দায়িত্ব গ্রহণ করে ১৮৩৩ সাল পর্যন্ত তারা এটিকে তাদের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করে। ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই বড়কুঠি এর প্রথম প্রশাসনিক ভবন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। [২][৫]

বড়কুঠি
বড়কুঠি
অবস্থানরাজশাহী, বাংলাদেশ
নির্মিতঅষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমভাগ
স্থপতিওলন্দাজ বা ডাচ বণিক সংঘ
স্থাপত্যশৈলীপাশ্চাত্য

বিবরণ সম্পাদনা

বড়কুঠি সাহেব বাজার এবং রাজশাহী কলেজের দক্ষিণে এবং পদ্মা নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থিত। ইষ্টক নির্মিত এবং সমতল ছাদ বিশিষ্ট এই ইমারতটি আঠারো শতকের প্রথমার্ধে (১৭২৫ সনের পূর্বে) ওলন্দাজ রেশম ব্যবসায়ীদের নির্মিত এক উল্লেখযোগ্য কীর্তি। কুঠিটির বহির্ভাগ এর দৈর্ঘ্য ২৪ মিটার (৮২-০) এবং প্রস্থ ১৭.৩৭ (৬৭-০)। দ্বিতল বিশিষ্ট এই ইমারতটি বিভিন্ন আয়তনের মোট ১২ টি কক্ষে বিভক্ত। দ্বিতলে একটি সভাকক্ষসহ ৬টি কক্ষ আছে। কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পূর্ব-পশ্চিমে ৯.৬০ মিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে ৬.৩০ মিটার আয়তন বিশিষ্ট আয়তাকার সভাকক্ষের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে বারান্দা (উত্তরের বারান্দা ৯.৬০ ও ৫.৮৫ মিটার এবং দক্ষিণের বারান্দা ৯.১৮ ও ৫.৮৫ মিটার আয়তন বিশিষ্ট) এবং কক্ষের পশ্চিমদিকে দুটি এবং পূর্ব দিকে এক সারিতে তিনটি কক্ষ বিদ্যমান।[২]

প্রকৃতপক্ষে ওলন্দাজ বাবসায়িরা জরুরী সময়ে ইমারতটি দুর্গ হিসাবে ব্যবহার করত। এজন্য ইমারতের ছাদে এবং নিচে বেশকটি কামান শত্রুদের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকত। ১৮৩৩ সালে এটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে আসলে কামানগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। এখানকার তিনটি পুরাতন কামান এখনও রাজশাহী পুলিশ লাইন এ সংরক্ষিত আছে।[২][৪]

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ডাচ্ প্রতিনিধিদলের রাজশাহীর বড়কুঠি পরিদর্শন"দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা। ২০১১-০১-২৯। ২০১৯-০৯-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০২-২৭ 
  2. "সর্ব প্রাচীন ভবন বড়কুঠি"। erajshahi.gov.bd। ২০১৫-০২-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০২-২৭ 
  3. মিছের, কাজী মোহাম্মদ (১৯৬৫)। রাজশাহীর ইতিহাস ১ম খন্ড। বগুড়া: কাজী প্রকাশনী। 
  4. "রাজশাহীর নীলকুঠি হেরিটেজ নয়, হচ্ছে পুলিশ ফাঁড়ি!"banglanews24.com। ঢাকা। ২০১৪-০৮-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০২-২৭ 
  5. বরেন্দ্রের বাতিঘর - অগ্রযাত্রার ৩ বছর - রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন