বঙ্গ সতী প্রবিধান (আইন), ১৮২৯

ভারতে যে আইন সতী দাহ প্রথা বেআইনি ঘোষণা করেছিল

 

ভারতে বিধবাকে দাহ করা হচ্ছে (অগস্ট ১৮৫২).[১]
১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে জেমস এটকিনসনের সৌত্তি।
কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ , বাংলার শেষ আইনি সতীর ফলক।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অধীনে গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক কর্তৃক ভারতের বঙ্গ সতী প্রবিধান,[২] বা প্রবিধান XVII, যা ভারতের সমস্ত বিচার বিভাগে সতী অথবা সৌত্তি অভ্যাস বেআইনি এবং আইন মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

পাঠ্যাংশ সম্পাদনা

বঙ্গ কোডের সতী প্রবিধান XXVI, ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দ[৩]

সতী বানানোর অভ্যাস, অথবা হিন্দু বিধবাদের জীবন্ত দাহ কিংবা কবর দেওয়া ফৌজদারি বিচারালয় দ্বারা ঘোষিত বেআইনি, এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ; ৪ ডিসেম্বর ১৮২৯ যে আইন পাস করেছেন গভর্নর জেনারেল ইন কাউন্সিল; অনুরূপ তারিখগুলো ছিল: ১২৩৬ বঙ্গাব্দের ২০ অগ্রহায়ণ; ১২৩৭ ফসলির ২৩ অগ্রহায়ণ; ১২৩৭ বিলায়েতির ২১ অগ্রহায়ণ; ১৮৮৬ সমবাতের ৮ অগ্রহয়ণ; এবং ১২৪৫ হিজরির ৬ জামাদি-উস-সানি।

I. সতীর রীতি, অথবা হিন্দু বিধবাদের জীবন্ত দাহ করা কিংবা কবর দেওয়া, হল মানুষের প্রকৃতিগত অনুভূতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ; হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা এই প্রক্রিয়া কোথাও অত্যাবশ্যক কর্তব্য হিসেবে কার্যকর করা যাবেনা; অপরপক্ষে, বারংবার প্ররোচিত করে খুব বিশেষভাবে ও সম্ভাব্যভাবে বিধবার জীবনের স্বচ্ছতা এবং অবসরের ধারণা প্রতিষ্ঠিত করা হোত, এবং সারা ভারতে এক বিরাট সংখ্যাধিক জনগণ এই রীতি গ্রহণ কিংবা পালন করেনি: ব্যাপক ভিত্তিতে কিছু জেলায় এই প্রথার অস্তিত্বই নেই: যেসব জায়গায় এই কুখ্যাত প্রথা বারবার সংঘটিত হয় সেখানে একটা নৃসংশ কাজ হিসেবে স্বয়ং হিন্দুদের কাছেও এটা বেদনাদয়ক, এবং তাদের চোখেও বেআইনি ও দুষ্ট। এখনো পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপ অনুযায়ী এই কাজকে নিরুৎসাহিত এবং প্রতিরোধ করতে সফল হয়নি, এবং গভর্নর জেনারেল ইন কাউন্সিল এব্যাপারে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিল যে, এই প্রথাকে পুরোপুরি রদ না-করে শুধুমাত্র নির্যাতনকারীদের দোষী সাব্যস্ত করে একে আটকানো যাবেনা। ভারতে ব্রিটিশ সরকারের খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রথম এবং প্রধান শাসন নীতির ধারা অনুযায়ী গভর্নর জেনারেল ইন কাউন্সিল বিবেচনায় কাজ করে যাবে, তা থেকে পিছিয়ে আসবেনা; যতক্ষণ পর্যন্ত না সকল শ্রেণির জনগণ যাতে ন্যায় এবং মানবতার প্রধানতম নিয়মের লঙ্ঘন না-করে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতিগুলো ঠিকমতো ধারায় প্রতিপালিত করতে পারে; আইন মেনে সেগুলো অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, যা ফোর্ট উইলিয়ামের সভাপতিত্বের অধীনে সারা ক্ষেত্রে ঘোষণার সময় থেকে অবিলম্বে এতাবৎ কার্যকরভাবে বলবৎ হল।

II. সতীর রীতি, অথবা হিন্দু বিধবাদের জীবন্ত দাহ করা কিংবা কবর দেওয়া, হল এতাবৎ বেআইনি ঘোষিত, এবং ফৌজদারি বিচারালয় দ্বারা শাস্তিযোগ্য।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Widow Burning in India" (পিডিএফ)The Wesleyan Juvenile Offering: A Miscellany of Missionary Information for Young Persons। Wesleyan Missionary Society। IX: 84। আগস্ট ১৮৫২। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  2. For short title of the Regulation, see footnote in Government of India, Legislative Department (১৮৯৭)। The Assam Code: Containing the Bengal Regulations, Local Acts of the Governor-General in Council, Regulations made under the Government of India Act 1870 (33 Vict., C. 3), and Acts of the Lieutenant-Governor of Bengal in Council in force in Assam.। Calcutta: Superintendent of Government Printing। পৃষ্ঠা 81। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  3. Carter ও Harlow 2003, পৃ. 361–363