ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত একটি উচ্চ বিদ্যালয়। এটি কুড়িগ্রাম জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া বিদ্যালয়ের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় সেরা হয় এই বিদ্যালয়।[১]

ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
অবস্থান

তথ্য
প্রতিষ্ঠিত১৮২০ (মাদ্রাসা হিসেবে)
১৯৩৮ (বিদ্যালয় হিসেবে)
প্রধান শিক্ষকমোঃ আবেদ আলী খন্দকার

অবস্থান সম্পাদনা

ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ফুলবাড়ী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের পশ্চিম প্রান্তে পুলিশ স্টেশন, পিছনে হ্যালিপ্যাড এবং উত্তরে ঐতিহ্যবাহী ফুলসাগর লেক অবস্থিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ১৯৩৮ সালে হলেও মূলত ইতিহাস আরও শত বছরের পুরনো। ১৮২০ সালে ফুলবাড়ীর কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক মিলে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফুলবাড়ী জুনিয়র মাদ্রাসা। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই মাদ্রাসায় ধর্মীয় ও সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকে। উনিশ শতকের শুরুর দিকে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও আর্থিকভাবে অবস্থাশীল ব্যাক্তিত্ব আবুল হোসেন খন্দকার মাদ্রাসাটির ব্যায়ভার গ্রহণ করেন। বিদ্যালয় উন্নয়নে তিনি ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। প্রায় পাঁচ একর অখণ্ড জমির উপরে আবুল হোসেন খন্দকারের অর্থায়নে গড়ে তোলা হয় টিনসেড শ্রেনি কক্ষ, অফিস রুম, গ্রন্থাগার, খেলার মাঠসহ সুবিশাল ক্যাম্পাস। পরবর্তীতে মাদ্রাসা থেকে রুপান্তরিত বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় আবুল হোসেন খন্দকারের বাবা জছিমিঞার নামে। অর্থাৎ ফুলবাড়ী জুনিয়র মাদ্রাসার নাম হয় ফুলবাড়ী জছিমিঞা উচ্চ বিদ্যালয়।

১৯৩৮ সালে বিদ্যালয়টি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মঞ্জুরি লাভ করে। যার স্মারক নং ছিল- ৪০৬৯/১০৫৯। অনুমোদিত পাঠ্যক্রম ছিল সমাজবিজ্ঞান ও সাধারণ বিজ্ঞান। তৎকালীন সময়ে এই অঞ্চলের প্রথম গ্র্যাজুয়েট ব্যাক্তিত্ব নজিরুদ্দিন মিঞা বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় অবিভক্ত বাংলার নানা স্থান থেকে এসে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতো এই বিদ্যালয়ে। ১৯৭৭ সালে ফুলবাড়ী জছিমিঞা উচ্চ বিদ্যালয় পাইলট স্কিমভুক্ত হয় এবং বিদ্যালয়ের নতুন নাম হয় ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। ২০১৫ সালে এই বিদ্যালয়ে ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের তৎকালীন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া এমপি[২]। ২০১৮ সালের ২৯ মে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ সারা দেশের ৩৬ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাথে ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করে[৩]

গঠন সম্পাদনা

  • শ্রেণী- বিদ্যালয়টি বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
  • শিফট- দিবা শিফট
  • ভাষা- বাংলা
  • মোট শিক্ষক- ২৯ জন
  • মোট শিক্ষার্থী- প্রায় ৭০০ জন
  • তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী- ৭ জন।

ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদনা

ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়  বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষানীতি অনুসারে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

প্রধান শিক্ষকদের তালিকা সম্পাদনা

১. মোঃ নজিরুজ্জামান মিঞা ০১-০৯-১৯৩৮ থেকে ২৮-০২-১৯৭৩

২. মোঃ আবুবকর মিঞা ০১-০৩-১৯৭৩ থেকে ১১-০২-১৯৯৩

৩. মোঃ আব্দুস ছোবহান মিঞা (ভারপ্রাপ্ত) ১২-০২-১৯৯৩ থেকে ০৫-১০-১৯৯৩

৪. মোঃ আব্দুল মজিদ সরকার ০৬-১০-১৯৯৩ থেকে ০৭-০৩-২০০৭

৫. মোঃ সাউদ হারুনার রশীদ (ভারপ্রাপ্ত) ০৮-০৩-২০০৭ থেকে ১৭-০১-২০০৯

৬. মোঃ ওবায়দুল হক (ভারপ্রাপ্ত) ১৭-০১-২০০৯ থেকে ০৪-০৯-২০০৯

৭. মোঃ আইয়ূব আলী (ভারপ্রাপ্ত) ০৫-০৯-২০০৯ থেকে ১৯-১২-২০১১

৮. মোঃ আবেদ আলী খন্দকার ২০-১২-২০১১ থেকে বর্তমান।

সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পাদনা

  • ক্রীড়া
  • বিতর্ক প্রতিযোগিতা
  • সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা
  • সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।

সংগঠন সম্পাদনা

  • ফুলবাড়ী জছিমিঞা উচ্চ বিদ্যালয় স্কাউটস দল[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা