ফাদল ইবনে আব্বাস
ফাদল ইবন আব্বাস(মৃত্যু-৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দ) মুহাম্মদ এর একজন একনিষ্ঠ সাহাবা । তিনি রাসুল ছোট চাচা আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব এর বড় ছেলে ছিলেন । তিনি হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবা ছিলেন ।[১]
নাম ও বংশ পরিচয়
সম্পাদনাফাদল ইবনে আব্বাস এর ডাক নাম আবু মুহাম্মাদ ।তার পিতা ছিলেন প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব এবং ছিলেন মাতা লুবাবা বিনতুল হারেস আল হিলালিয়্যাহ ।ফাদল ইবনে আব্বাস রাসূল এর চাচাতো ভাই ছিলেন । ফাদল পিতার বড় সন্তান ছিলেন ।
বদর যুদ্ধের পূর্বেই পরিবারের সবাই সাথে ইসলাম গ্রহণ করেন । কিন্তু মক্কার কুরাইশদের ভয়ে প্রকাশ করতে পারেননি । মক্কা বিজয়ের অল্প কিছুদিন পূর্বে পিতা আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ও ছোট ভাই আবদুল্লাহর সাথে মদীনায় হিজরত করেন। হিজরতের সময় তার বয়স ছিল ১৩ বছর এবং ছোট ভাই আবদুল্লাহর বয়স ছিল ৮ বছর ।[২]
যুদ্ধে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাতিনি মদীনায় হিজরতের পর সর্ব প্রথম মক্কা অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন। অতঃপর হুনাইনের যুদ্ধেও যোগদান করেন ।হুনাইনের যুদ্ধে আক্রমণের প্রথম পর্যায়ে মুসলিম বাহিনী যখন পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়ে পালাতে শুরু করে তখনও তিনি বীরত্বের সাথে রাসূল সাথে ময়দানে অটল থাকেন। বিদায় হজ্জে তিনি রাসূলুল্লাহর সাথে একই বাহনে বসা ছিলেন। এ কারণে সেই দিন থেকে তিনি রাদিফুর রাসূল উপাধিতে ভূষিত হন ।তার বিয়ের দেনমোহর রাসূল নিজে পরিশোধ করেন ।[৩]
রাসুলের অন্তিম জীবনে
সম্পাদনারাসুলের অন্তিম জীবনে খেদমতের সুযোগ হয় ফাদল ইবনে আব্বাসের । রাসুল অন্তিম রোগশয্যায় রাসূলুল্লাহ সর্বশেষ ভাষণ দিবেন,এই ঘোষণা দেন ফাদল । অতঃপর ফাদল ও অন্য একটা সাহাবার সাহায্য নিয়ে রুম থেকে বাইরে বের জনগণের সামনে শেষ ভাষণ দেন । এরপরে রাসুল ইন্তিকালের পর ফাদল ও কয়েকজন সাহাবা মিলে রাসুল এর গোসলের কাজ সম্পন্ন করেন,আউস ইবন খাওলী নামক এক আনসার সাহাবা তাকে পানি এগিয়ে দেন গোসল করানোর জন্য ।[৪]
হাদিস বর্ণনা
সম্পাদনাফাদল ইবনে আব্বাস হতে ২৪টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে । অনেক সাহাবা ও তাবেয়ী তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন ।
সাহাবাদের মধ্যে
ইবন আব্বাস ও আবু হুরাইরার উল্লেখযোগ্য ।
তাবেয়ীদের মধ্যে
কুরাইব
আবু সাঈদ
শাবী
উমাইর বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ।[৫]
মৃত্যু
সম্পাদনাফাদল ইবনে আব্বাসের মৃত্যুসন সম্পর্কে বেশ মতপার্থক্য রয়েছে । ওয়াকিদী বলেনঃ হযরত ফাদল খলিফা উমারের খিলাফতকালে আমওয়াসের প্লেগের মহামারিতে মারা যান। আবার অনেকে বলেছেন, হযরত আবু বকরের খিলাফতকালে আজনাদায়ন অথবা ইয়ামামার যুদ্ধে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, হিজরী ১৫ সনে ইয়ামামার যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। তবে ইমাম বুখারী আজনাদাইনের মতটি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন ।[৫]