ফাতমাগুল (টিভি ধারাবাহিক)

ফাতমাগুল'উন সুচু নে? (বাংলাঃ ফাতমাগুলের দোষটা কী?) হল ভেদাত তুরকালির একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল 'ক্যানাল ডি' তে সম্প্রচারিত [১] একটি তুর্কি ধারাবাহিক নাটক। পরিস্থিতির চাপে পড়ে ফাতমাগুল নামের এক ধর্ষিতা নারীর নিজ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত করিম নামের এক লোকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এবং এরপরের নানামূখী বৈচিত্রময় কাহিনীকে ঘিরে ধারাবাহিকটির গল্প আবর্তিত হয়েছে।

ফাতমাগুল
নির্মাতাভেদাত তুরকালি
লেখকএচে ইয়োরেঞ্চ
মেলেক গেঞ্চোগ্লু
পরিচালকহিলাল সারাল
অভিনয়েবেরেন সাত
এঙ্গিন আকায়ুরেক
ফিরাত চেলিক
মুসা উযুনলার
মুরাত দালতাবান
বুশরা গুলসয়
এঙ্গিন অযতুরক
সুরকারতয়গার ইশিক্লি
মূল দেশতুরস্ক
মূল ভাষাতুর্কি
মৌসুমের সংখ্যা
পর্বের সংখ্যা৮০
নির্মাণ
ব্যাপ্তিকাল৯১ মিনিট
নির্মাণ কোম্পানিআয়াপিম
মুক্তি
মূল নেটওয়ার্কক্যানাল ডি
মূল মুক্তির তারিখতুরস্ক
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ – ২১ জুন ২০১২
বহিঃসংযোগ
ওয়েবসাইট

কাহিনী সংক্ষেপ সম্পাদনা

ফাতমাগুল (বেরেন সাত) ইজমির প্রদেশের ইলদির গ্রামে তার ভাই রাহমি'র (বুলেন্ত সেইরান) সাথে থাকে, যে সেখানে একটা ডেইরি ফার্ম চালায়। সেখানে মুস্তফা (ফেরাত চেলিক) নামের এক জেলের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়, যার ফলে ফাতমা তার ভাবি মুকাদ্দেসের (এসরা দেরমান্সিওগ্লু) দুর্ব্যবহার হতে মুক্তি পেয়ে এক নতুন জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখে। একই গ্রামে কেরিম নামে এক লোহার কারিগর তার কবিরাজ বোন মরিয়মের (বুসুম্রু ইয়ারভুচুক) সাথে থাকে। কেরিম (এনগিন আকায়ুরেক) তার চাচা ইয়াশারানের ছেলে অর্থাৎ চাচাতো ভাই সেলিম ইয়ারাশানের (এনগিন ওযতুর্ক) বিবাহ উৎসবে গিয়ে আরেক চাচাতো ভাই এরদোয়ান ইয়ারাশান (কা'ন তাশানের) ও বন্ধু ভুরালের (বুশরা গুলসয়) সাথে মিলিত হয়। রাতে তারা মাতাল হয়ে নদীর পারে জড়ো হয়। ফাতমাগুল মুস্তফার সাথে দেখা করে সেই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় এরদোয়ান, ভুরাল ও সেলিম ফাতমাকে গণধর্ষণ করে এবং কেরিম বাড়িতে ফিরে গিয়ে জ্ঞান হবার পর রাতের ঘটনা সাময়িকভাবে ভুলে যায়। পরদিন সকালে কেরিমের খালা মারিয়াম ভেষজ লতা তুলতে যাবার সময় ফাতমাকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ও অজ্ঞান অবস্থায় নদীর পারে খুজে পায়। ভুরাল এই ঘটনায় প্রতি রাতে দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকে আর এরদোয়ান ও সেলিম কিছুই হয় নি ভাব দেখিয়ে চলতে থাকে। গ্রামজুড়ে ধর্ষণের কথা ছড়িয়ে পড়ার পর কেরিম নিজেকে এর জন্য দায়ী ভেবে দোষ স্বীকার করে এবং নিজের বন্ধুদের বাচাতে ফাতমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়। ফলে কেরিম ও ফাতমার পরিবার তাদের সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে নতুন জীবন সূচনার উদ্দেশ্যে ইস্তাম্বুলে পাড়ি জমায়।

কেরিম ফাতমার প্রেমে পড়ে যায়, কিন্তু অতীতের স্মৃতির কারণে ফাতমা করিমকে ক্ষমা করতে পারে না। ওদিকে ইয়ারাশান ভ্রাতৃদ্বয় তাদের উকিল মুনিরের (মুরাত দালতাবান) সহায়তায় নিজেদের বাঁচাতে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে, ওদিকে প্রতিশোধ নিতে মুস্তফাও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়, যার ধারণা করিম ও ফাতমার মধ্যে আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। ফলশ্রুতিতে মুস্তফা ও ইয়ারাশান ভ্রাতৃদ্বয়, করিম, ফাতেমা ও তাদের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকে। এদিকে বিয়ের কয়েক মাস পেরিয়ে যাবার পর, করিম ফাতমার কাছে দাবি করে যে সে ফাতমার ধর্ষণে জড়িত ছিল না। ফাতেমা করিমের প্রতি দুর্বল হলেও তার দাবি বিশ্বাস করে না, এবং করিমকে তা প্রমাণ করতে বলে। নিজ ভালোবাসাকে প্রমাণ করতে করিম নিজের কথিত ধর্ষণের জন্য মামলা করে, এবং পুলিশকে নিজের পাশাপাশি বাকি তিন জনকেও গ্রেফতার করতে বলে, যার ফলশ্রুতিতে ফাতমা করিমের ভালোবাসাকে মেনে নেয়। এদিকে মুস্তফা ফাতমা কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব দেয় কিন্তু ফাতমা তা প্রত্যাখ্যান করে। ইয়ারাসান ভ্রাতৃদ্বয় করিম ও ফাতমাকে কেস তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে এবং মুস্তফাকেও তাদের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে তোলে। মামলা চলাকালে করিম ছাড়া বাকি তিনজনই মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় এবং পাশাপাশি ঘুষ দিয়ে কিছু মিথ্যা সাক্ষীও হাজির করে।

পরিস্থিতি আরও একধাপ জটিল হয় যখন করিম ও ভুরালের ঝগড়া চলাকালীন সময় পেছনে লুকিয়ে থাকা মুস্তফা ভুরালকে খুন করে এবং করিমের উপর খুনের দোষ চাপিয়ে দেয়, ফলে পুলিশ করিমকে গ্রেফতার করে। এ সুযোগে মুস্তফা আরেকবার ফাতমাকে পেতে চেষ্টা করে, কিন্তু আবারও ব্যর্থ হয়। এদিকে ইয়ারাসান ভ্রাতৃদ্বয় তাদের হুমকি অব্যহত রাখে এবং মৃত ভুরালের উপর সকল দায় চাপানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এক স্থানীয় সাংবাদিকের মাধ্যমে ফাতমার মামলার খবর সাড়া বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়, যিনি ফাতমাকে গণসমর্থন লাভে সহায়তা করেন। মামলার সমাপ্তির দিকে ফাতমা দেশের ও বিদেশের নারীদের কাছ থেকে ব্যপক সমর্থন পেতে শুরু করেন এবং তার সমর্থন এতোই বেড়ে যায় যে, সে তুলনায় ইয়ারাশান ভ্রাতৃদ্বয়ের ক্ষমতা ও জনসমর্থন প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে।

অভিনয়ে সম্পাদনা

  • বেরেন সাত - ফাতমাগুল
  • এনগিন আকায়ুরেক - করিম
  • ফেরাত চেলিক - মুস্তফা
  • কা'ন তাশানের - এরদোয়ান
  • এনগিন ওযতুর্ক - সেলিম
  • বুশরা গুলসয় - ভুরাল
  • মুরাত দালতাবান - মুনির
  • বুলেন্ত সেইরান - রেহমি
  • এসরা দেরমান্সিওগ্লু - মুকাদ্দেস
  • বুসুম্রু ইয়ারভুচুক- মরিয়ম

সম্প্রচারসূচি পর্যালোচনা সম্পাদনা

মৌসুম পর্বসংখ্যা পর্ব মৌসুম সূচনা মৌসুম সমাপ্তি সম্প্রচার সময় (ইইটি) টিভি মৌসুম টিভি চ্যানেল
মৌসুম ১ ৩৯ ১-৩৯ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৬ জুন ২০১১ রাত ৮টা ২০১০-২০১১ ক্যানাল ডি
মৌসুম ২ ৪১ ৪০-৮০ (চূড়ান্ত) ৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২১ জুন ২০১২ রাত ৮টা ২০১১-২০১২ ক্যানাল ডি

আন্তর্জাতিক সম্প্রচার সম্পাদনা

ধারাবাহিকটি বিশ্বের প্রায় ৩৬টিরও অধিক দেশে ভাষান্তর করে প্রচারিত হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা