ফতুল্লা থানা

নারায়ণগঞ্জ জেলার থানা
(ফতুল্লা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ফতুল্লা বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার অন্তর্গত একটি থানা।

ফতুল্লা
ফতুল্লা বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ফতুল্লা
ফতুল্লা
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৮′৪৬″ উত্তর ৯০°২৯′৮″ পূর্ব / ২৩.৬৪৬১১° উত্তর ৯০.৪৮৫৫৬° পূর্ব / 23.64611; 90.48556
দেশ বাংলাদেশ
জেলানারায়ণগঞ্জ জেলা
উপজেলানারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+০৬:০০)

অবস্থান

সম্পাদনা

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার একটি থানা ফতুল্লা। ফতুল্লার থানার পুর্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদী, উওরে রাজধানী ঢাকা এবং দক্ষিণে মুন্সীগঞ্জ জেলা।

নামকরণ

সম্পাদনা

কথিত আছে, শাহ ফতেহ উল্লাহ নামক একজন দরবেশের নাম হতে এলাকার নাম হয় ফতেহুল্লা। যার অপভ্রংশ ফতুল্লা। []

প্রশাসনিক এলাকা

সম্পাদনা
  1. কুতুবপুর ইউনিয়ন
  2. ফতুল্লা ইউনিয়ন
  3. এনায়েতনগর ইউনিয়ন
  4. কাশীপুর ইউনিয়ন
  5. বক্তাবলি ইউনিয়ন
  6. আলীরটেক ইউনিয়ন

ইতিহাস

সম্পাদনা

কথিত আছে যে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ধর্মপ্রচারক শাহ ফতেহ উল্লাহ এই অঞ্চলে আসেন। তার নান থেকেই পরগনা নামে পরিচিত এই এলাকাটির নাম হয় ফতুল্লা। দিল্লি সালতানাতের সোনারগাঁও প্রদেশের রাজধানী ছিল ফতুল্লার অদূরে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাও উপজেলায়। পরে বাংলা স্বাধীন হলে সোনারগাও হয় স্বাধীন বাংলা সালতানাতের রাজধানী। তারপর, ১৬১০ সালে সুবাদার ইসলাম খান চিশতি বারো ভুইয়াদের পরাজিত করে ঢাকাকে সুবে বাংলার রাজধানী ঘোষণা করেন। চিশতি ঢাকার অদূরে ফতুল্লা থানর হাজীগঞ্জ এলাকায় একটি দুর্গ নির্মাণ করেন যা হাজীগঞ্জ দুর্গ বা খিজিরপুর দুর্গ নামে পরিচিত। পরে ব্রিটিশ আমলে ১৮৪২ সালে বিক্রমপুর মহকুমা স্থাপিত হলে ফতুল্লা সহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও ঢাকা জেলার কিছু অংশ সেই মহকুমার অন্তর্ভুক্ত হয়। তারপর ১৮৮২ সালে নারায়ণগঞ্জকে বিক্রমপুর থেকে পৃথক করে আলাদা মহকুমা স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে, ১৯৩০ সালে বর্তমান ফতুল্লা ও কুতুবপুর ইউনিয়নকে নিয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন বোর্ড গঠীত হয়। ১৯৬২ সালে ইউনিয়ন বোর্ডটি ভেঙ্গে কুতুবপুর ও ফতুল্লা নামে দুটি ইউনিয়ন স্থাপিত হয়। তার আগে কাশীপুর ইউনিয়ন স্থাপিত হয় ১৯৪৩ সালে।১৯৬৫ সালে শহর রক্ষা বাধ ডিএনডি প্রকল্পে ফতুল্লার ৩ টি ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে,১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ফতুল্লায় অনেকে হতাহত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফতুল্লায় নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মিত হয় এবং ফতুল্লা পরিণত হয় বিখ্যাত শিল্প নগরীতে।

জনসংখ্যার উপাত্ত

সম্পাদনা

ফতুল্লা থানা দেশের অন্যতম জনবহুল থানা। ফতুল্লার জনসংখ্যা ৭৪২,৯৭৬ এবং আয়তন ৬৫ বর্গ কিলোমিটার। ফতুল্লা থানা এলাকার জনঘনত্ব ১১,৪৩০।

শিক্ষা

সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ফতুল্লা থানার সাক্ষরতার হার ৬০ শতাংশের অধিক। ফতুল্লায় কয়েকশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। একাধিক কলেজও আছে ফতুল্লায়। প্রস্তাবিত নারায়ণগঞ্জ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ফতুল্লায় স্থাপন করার কথা রয়েছে।

অর্থনীতি

সম্পাদনা

ফতুল্লা শিল্পের জন্য বিখ্যাত । ফতুল্লা থানায় ছোট বড় প্রায় ৭০০ টি কারখানা রয়েছে। ফতুল্লার এনায়েতনগরে অবস্থিত ফতুল্লা বিসিক শিল্প নগরী। বেলজিয়ামের রাণি মাথিল্ডে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সফরকালে ফতুল্লার একটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি

সম্পাদনা

দর্শনীয় স্থান

সম্পাদনা

মেরি আন্ডারসন ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও বার’ বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনকর্তৃক পরিচালিত একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাএলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতেএকটি পুরানো ব্রিটিশ প্রমোদতরীতে এ রেস্টুরেন্টটি অবস্থিত। এ রেস্টুরেন্টের সাথে একটি বাররয়েছে। মাত্র তিন হাজার টাকায় রাত্রিযাপনের জন্য এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের সুবিধা রয়েছে। এছাড়া প্রতি ঘণ্টা আটশ টাকা হারে এসব কক্ষ ভাড়া নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ইঞ্জিন চালিত নৌকায়মাঝ নদীতে বসে মেরি আন্ডারসনের মজাদার খাবার আস্বাদনের সুযোগ এ রেস্টুরেন্টটির অনন্য আকর্ষণ। ঢাকাশহরের কেন্দ্রস্থল হতে এ ব্যতিক্রমী রেস্টুরেন্টটি মাত্র বিশ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় এটি ইতোমধ্যে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

এছাড়াও ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশের ৩য় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা প্রায় ২৫,০০০।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "বাংলাদেশের জেলা উপজেলা ও নদ-নদীর নামকরণের ইতিহাস - ড. মোহাম্মদ আমীন"www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১৪ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা