প্লোতিনোস (গ্রিক: Πλωτῖνος, লাতিন: Plotinus) (২০৪/৫ - ২৭০) প্রাচীন মিশরে জন্মগ্রহণকারী গ্রিক বংশোদ্ভূত দার্শনিক যাকে নয়াপ্লাতোবাদের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্লেটোর দর্শন থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি একটি জটিল আধ্যাত্মিক বিশ্বতত্ত্ব তৈরি করেন যার মৌলিক উপাদান তিনটি- একক সত্ত্বা, বুদ্ধিমত্তা এবং আত্মা। তার মতে এই তিন সত্ত্বার সৃজনশীল সমন্বয়ের মাধ্যমেই সকল সত্ত্বা অস্তিত্ব লাভ করে। এই উৎপত্তি কেবল কার্যকারণ নয় বরং এক ধরনের ধ্যানের উপরও নির্ভর করে। বুদ্ধিবৃত্তিক ধ্যানকে তিনি সৃষ্টির মূলনীতির সাথে মিলিয়েছেন, তার বিশ্বে ধ্যানের মাধ্যমেই সকল সত্ত্বা একত্রিত হয়ে সর্বব্যাপী বাস্তবতা তৈরি করে। প্লোতিনোসকে পুরোপুরি সর্বপ্রাণবাদী বলা যাবে না কিন্তু এটা সত্য যে তার জগতে শূন্য থেকে কিছু সৃষ্টি হতে পারে না।

প্লোতিনোস
জন্ম২০৪/৫
মৃত্যু২৭০ (বয়স ৬৪–৬৫)
যুগপ্রাচীন দর্শন
অঞ্চলপাশ্চাত্য দর্শন
ধারানব্য-প্লেটোবাদ
প্রধান আগ্রহ
প্লেটোবাদ, অধিবিদ্যা, মরমীবাদ
উল্লেখযোগ্য অবদান
The One, Emanationism, Henosis, Nous
ভাবগুরু
  • Ammonius Saccas, প্লেটো, Numenius of Apamea, Alexander of Aphrodisias, পিথাগোরাসবাদ, পারস্য দর্শন, ভারতীয় দর্শন
ভাবশিষ্য

বিশ্বতাত্ত্বিক চিন্তাভাবনার পাশাপাশি প্লোতিনোস অনুভূতি উপলব্ধির প্রক্রিয়া এবং জ্ঞান নিয়ে একটি অনন্য তত্ত্ব প্রস্তাব করেছিলেন। এই তত্ত্বের ভিত্তি হিসেবে যে ধারণা কাজ করেছিল তা হচ্ছে, মন কেবল একটি জড় তথ্য সংগ্রাহক নয়, সে কম্পিউটারের মত কেবল তথ্য সংগ্রহ করে চলে না, বরং তার অনুভবের বস্তুটিকে সে তার মত করে রূপ ও গড়ন দেয়। এ হিসেবে তাকে আধুনিক রূপতত্ত্বের (ফেনোমেনোলজি) অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করা যায়। উল্লেখ্য মাত্র বিংশ শতকে জার্মান দার্শনিক এডমুন্ড হুসার্ল রূপতত্ত্বের জন্ম দিয়েছেন।

প্লোতিনোস মনে করতেন আত্মার দুটি অংশ রয়েছে- উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষ অপরিবর্তনীয় ও স্বর্গীয় এবং নিম্নকক্ষ থেকে পুরোপুরি আলাদা থাকা সত্ত্বেও সে নিম্নকক্ষকে প্রাণ দেয়। নিম্নকক্ষ ব্যক্তিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে, সুতরাং এতেই সব ধরনের আবেগ-অনুভূতি ও কলঙ্কের অবস্থান। এই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আত্মাকে সমর্থন করতে গিয়ে তিনি মানুষের ব্যক্তিগত নৈতিকতাবোধকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করেন এবং কেবলমাত্র কোন মরমী উপায়ে উচ্চকক্ষের সাথে মিলিত হওয়াকেই নৈতিকতা অর্জনের একমাত্র উপায় হিসেবে গণ্য করেন। প্লোতিনোসের দর্শনের প্রায় পুরোটাই তার প্রবন্ধসমগ্রে পাওয়া যায় যা তার ছাত্র পোরফিরিওস ছয় খণ্ডে সংকলন করেছিলেন, প্রতি খণ্ডে নয়টি করে প্রবন্ধ ছিল। এই রচনাসমগ্র বর্তমানে Enneads নামে পরিচিত।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Edward Moore, Plotinus, Internet Encyclopedia of Philosophy,

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
Enneads-এর রচনাসমগ্র
  • Greek original (Adolf Kirchhoff ১৮৫৬ সালের সংস্করণের স্ক্যান) ইংরেজি ও কিছু অংশের ফরাসি অনুবাদ সহ
  • Greek original, আরেকটি
অনলাইন ইংরেজি অনুবাদ
বিশ্বকোষ
বিবলিওগ্রাফি