প্রোটোপ্লাস্ট
কোষ প্রাচীরের অভ্যন্তরে সমুদয় পদার্থ একসাথে প্রোটোপ্লাস্ট নামে পরিচিত।প্রোটোপ্লাস্ট দুভাগে বিভক্ত।যথাঃ১)সজীব প্রোটোপ্লাজম ২)নির্জীব বস্তু বা অপ্রোটোপ্লাজমীয় উপাদান।নিম্নে এদের বর্ণনা দেওয়া হল।
প্রোটোপ্লাজমসম্পাদনা
কোষের অভ্যন্তরের অর্ধস্বচ্ছ আঠালো এবং জেলির ন্যায় অর্ধতরল,কলয়ডালধর্মী সজীব পদার্থকে প্রোটোপ্লাজম বলে।প্রোটোপ্লাজমই কোষের তথা দেহের সকল মৌলিক জৈবিক কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে। এ জন্যই প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভিত্তি বলা হয়। এতে ৭০ থেকে ৯০% পানি থাকে।
ভৌত বৈশিষ্ট্যসম্পাদনা
- প্রোটোপ্লাজম অর্ধস্বচ্ছ,বর্ণহীন,জেলি সদৃশ্য অর্ধতরল আঠালো পদার্থ।
- এটি দানাদার ও কলয়ডধর্মী।
- ইহা কোষস্থ পরিবেশ অনুযায়ী জেলি থেকে তরলে এবং তরল থেকে জেলিতে পরিবর্তিত হতে পারে।
- প্রোটোপ্লাজমের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানি থেকে বেশি।
- উত্তাপ,অ্যাসিড ও অ্যালকোহলের প্রভাবে প্রোটোপ্লাজম জমাট বাঁধে।[১]
রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যসম্পাদনা
রাসায়নিকভাবে প্রোটোপ্লাজমে জৈব এবং অজৈব পদার্থ আছে।এতে অধিক পরিমাণে পানি আছে।জৈব পদার্থের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন এরপর আছে কার্বোহাইড্রেড ও লিপিড।এছাড়াও আছে অক্সিজেন, ম্যাগনেসিয়াম,নাইট্রোজেন,কার্বন,কপার,জিঙ্ক,সোডিয়াম,পটাশিয়াম,কেলসিয়াম,সালফার, সোডিয়াম,আয়রন প্রভৃতি।
জৈবিক বৈশিষ্ট্যসম্পাদনা
প্রোটোপ্লাজম বিভিন্ন বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় সাড়া দেয়।খাদ্য তৈরি,খাদ্য হজম,আত্তীকরণ,শ্বসন,বৃদ্ধি,জনন ইত্যাদি সকল মেটাবলিক কার্যকালাপ প্রোটোপ্লাজম করে থাকে।প্রোটোপ্লাজমের জৈবিক বৈশিষ্ট্যই জীবের বৈশিষ্ট্য।অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রোটোপ্লাজম পানি গ্রঽণ ও ত্যাগ করতে পারে।
চলনসম্পাদনা
প্রোটোপ্লাজম কখনো স্খির থাকেনা।প্রোটোপ্লাজমের এ গতিময়তাকে চলন বলে।কোষপ্রাচীর যুক্ত প্রোটোপ্লাজম জলস্রোতের মত যে চলন দেখা যায় তাকে আবর্তন বা সাইক্লোসিস বলে।আবর্তন দুই প্রকার হয়ে থাকে।যে চলনে প্রোটোপ্লাজম একটি গহ্বরকে কেন্দ্র করে কোষ প্রাচীরের পাশ দিয়ে নির্দিষ্ট পথে একদিকে ঘুরে তখন তাকে একমুখী আবর্তন বলে।যেমনঃপাতা ঝাঝির কোষ।যে চলনে প্রোটোপ্লাজম কতকগুলো গহ্বরকে কেন্দ্রকে অনিয়মিতভাবে আবর্তন করতে থাকে তখন তাকে বহুমূখী আবর্তন বলে।
কোষঝিল্লিসম্পাদনা
কোষ প্রাচীরের ঠিক নিচে সমস্ত প্রোটোপ্লাজমকে ঘিরে একটি সজীব ঝিল্লি আছে।এ ঝিল্লিকে কোষ ঝিল্লি বলে।একে প্লাজামামেমব্রেন,প্লাজমালেমা,সাইটোমেমব্রেন এসব নামেও অভিহিত করা হয়।তবে বর্তমানে অনেকে একে বায়োমেমব্রেন বলতে চান।ঝিল্লিটি স্থানে স্থানে ভাজ বিশিষ্ট হতে পারে।প্রতিটি ভাজকে মাইক্রোভিলাস বলে।কোষাভ্যন্তরট অধিক প্রবিষ্ট মাইক্রোভিলাসকে বলা হয় পিনোসাইটিক ফোস্কা।
গঠনসম্পাদনা
কোষঝিল্লির গঠন ব্যাখা করতে গিয়ে Danielli আর Davson (১৯৪৩) সর্বপ্রথম একটি সুনির্দিষ্ট মডেল প্রস্তাব করেন।এটি Sandwitch মডেল নামে পরিচিত।তাদের মতে ঝিল্লিটি দ্বিস্তর বিশিষ্ট এবং প্রতি স্তরে প্রোটিন এবং লিপিড উপস্তর আছে।দিস্তর বিশিষ্ট ঝিল্লির উপর ও নিচে প্রোটিন স্তর এবং মাঝখানে লিপিড স্তর আছে।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ *Davey MR, Anthony P, Power JB, Lowe KC (মার্চ ২০০৫)। "Plant protoplasts: status and biotechnological perspectives"। Biotechnol. Adv.। 23 (2): 131–71। ডিওআই:10.1016/j.biotechadv.2004.09.008। পিএমআইডি 15694124।