প্রতারণা

সুবিধা অর্জনের উদ্দেশ্যে নিয়ম লঙ্ঘন

প্রতারণা হচ্ছে অসদুপায় অবলম্বন করে কোন কিছু সমাধানের সক্ষমতার কারণে পুরস্কার গ্রহণ করা। সাধারণত প্রতারণা করা হয় আইন অমান্য করে, যাতে প্রতিযোগিতা মুলক পরিস্থিতিতে অসম সুবিধা পাওয়া যায়। এর বিশদ সংজ্ঞার পরিধিতে ঘুষ, ক্রোনিজম, নেপোটিজম, স্লিইজ এবং অন্য যেকোনো পরিস্থিতি যেখানে অবৈধভাবে অন্যকে সুযোগ দেয়া হয় ইত্যাদি সবকিছুই যুক্ত।[১] এগুলো স্পষ্টত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে অথবা এই সব আচরণবিধি গুলো অলিখিতও হতে পারে যার ভিত্তি নৈতিকতা, নীতিশাস্ত্র অথবা প্রথা, যা এর শনাক্তকরণকে বিষয় ভিত্তিক প্রক্রিয়া করে ফেলেছে। প্রতারণা বিশেষভাবে নির্দেশ করতে পারে বৈবাহিক অবিশ্বাসকে। যে প্রতারণা করে, অর্থাৎ প্রতারককে ব্রিটিশ ইংরেজিতে "cheat" এবং আমেরিকান ইংরেজিতে "cheater" বলা হয়। একজন প্রতারক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তি সব সময় প্রতারণা করে না, বরং নির্ভর করে অন্যায্য কার্যকলাপ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উপর।[২]

অধ্যয়ন বিষয়ক সম্পাদনা

 
পরীক্ষার সময় ব্যবহারকৃত ছোট নকল

যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চবিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়ন বিষয়ক প্রতারণা একটি খুবই সাধারণ বিষয়। পরিসংখ্যানে দেখা যায় ৭০ ভাগ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়গুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় গুরুতর প্রতারণার সাথে জড়িত। ৬০ ভাগ বলে তারা অন্যান্যদের লেখা নিজের বলে চালিয়ে দিয়েছে। যদিও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন উচ্চবিদ্যালয়গুলোর শুধুমাত্র ৫০ ভাগ ছাত্রছাত্রীরা এই বিষয় স্বীকার করে। এই সংবাদটি ২০০৫ সালে রুটগারস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডোনাল্ড ম্যাকক্যাব একাডেমিক অখণ্ডতা কেন্দ্রের জন্য করেন। তথ্যগুলো একটি গেলাপ জরিপ এর মাধ্যমে পাওয়া যায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ২০০১ সালে ম্যাকক্যাবের জরিপকৃত ৪৫০০ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৭৪ ভাগ পরীক্ষাতে প্রতারণা, ৭২ ভাগ লিখিত কাজে প্রতারণা এবং ৯৭ ভাগ জানায় তারা অন্য কারো বাড়ির কাজ বা পরীক্ষার খাতা থেকে দেখেছে। এক-তৃতীয়াংশ পুনঃপ্রতারণার কথা স্বীকার করেছে।"[৩] উচ্চ প্রযুক্তির বিপ্লব প্রতারণাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অনলাইন টার্ম পেপার মিল গুলো যেকোনো বিষয়ের উপর লেখা বিক্রয় করে থাকে, যেকোনো ধরনের বাসারকাজ অথবা ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইন পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে,[৪] ক্যামেরা, মুঠোফোন ব্যবহার করা হয় পরীক্ষায় চিত্র আদানপ্রদানের জন্য, এমপি৩ প্লেয়ারগুলো ডিজিটালনোট ধরে রাখতে পারে, গণিতের সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রাফিং গণকযন্ত্রগুলো সুত্র সংরক্ষণ করতে পারে; যদিও এই বিষয়গুলো অথবা ওয়েবসাইটগুলোর কথা শিক্ষকদের জানা আছে।[৫]

খেলাধুলা, গেমস ও জুয়া সম্পাদনা

খেলাধুলা সম্পাদনা

খেলাধুলাতে প্রতারণা হচ্ছে অন্য দল বা খেলোয়াড় এর থেকে বেশি সুবিধা নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক নিয়মের ভাঙ্গন। কোন একটি অনুষ্ঠান বা এর বাহিরে খেলা পরিচালনা করা হয় প্রথা এবং বিধি নিষেধের ভিত্তিতে। নিষেধ কৃত নিয়ম গুলোর মধ্যে রয়েছে কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ঔষধ সেবন করা (যা "ডোপিং" নামে পরিচিত), নিয়ম বহির্ভূত সরঞ্জাম ব্যবহার করা অথবা খেলার মাঝে কোন সরঞ্জামের অবস্থার পরিবর্তন এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রতিপক্ষকে আহত করা।

 
ল্যান্স আর্মস্ট্রং

উঁচু মাত্রার অভিযোগ কৃত ডোপিং প্রতারণাগুলোর মাঝে আছে ল্যান্স আর্মস্ট্রংয়ের পেশাদার সাইক্লিংয়ে স্টেরয়েড এর ব্যবহার - বিশেষকরে যখন বেশিরভাগ পেশাদার সাইক্লিস্টকে নিষেধ কৃত বস্তূ ব্যবহারের জন্য সন্দেহ করা হত, বেন জনসন এর ১৯৮৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ১০০ মিটারের ফাইনাল থেকে বাতিল হয়ে যাওয়া এবং জোসে কেন্সিক ও কেন কেমেন্টি এর মত বেসবল খেলোয়াড়দের অবসরের পর স্টেরয়েড ব্যবহারের কথা স্বীকার করা।[৬][৭] একটি পরিচিত স্ক্যানডাল ১৯৪৪ সালের ফিগার আইস স্কেটিং এর হয়রানি ও আহত করার মাধ্যমে প্রতারণা যেখানে তনিয়া হার্ডিং এর পূর্ব স্বামী জেফ গিললী এবং তার দেহ রক্ষী শন এখহার্ডকে ভাড়া করে নান্সি কেরিগান এর পা ভেঙে দেয়ার জন্য যাতে সে সেই বছরের প্রতিযোগিতায় অংশ না নিতে পারে এবং হার্ডিং এর সাথে প্রতিযোগিতা না করে। অনেকগুলো বিখ্যাত প্রতারণার ঘটনার মধ্যে ১৯৮৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ডিয়াগো মেরাডোনার হাতের আঘাতে ইংল্যান্ডের গোল রক্ষক পিটার শিল্টন এর জালে বল পাঠানো অন্যতম।[৮] ফুটবলের রীতি অনুসারে গোলরক্ষক ছাড়া অন্য কারো হাত ব্যবহারের অনুমতি নেই।

যেসব খেলা খুব বেশি সরঞ্জামের অবস্থার উপর নির্ভর করে যেমন বেসবল এবং ক্রিকেট খেলার ব্যাট ইত্যাদি সেগুলোর অবৈধ ভাবে অবস্থার পরিবর্তন প্রায়ই দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ বেসবলে ডক্টরড বেসবল (বেসবলে গ্রাফাইট অথবা ভেসলিন রাখা) পিচার ব্যবহার অথবা ফাঁপা ব্যাটে প্রহার করা কিছু সাধারণ উদাহরণ। টেনিস এবং গলফ ইত্যাদি সরঞ্জামে প্রতারণায নতুন কিছু নয়। এখানে খেলোয়াড়দের অভিযোগ করা হয় অবৈধ টানের তার ও বিভিন্ন ওজন, আকার ও প্রকারের গলফ ক্লাব ব্যবহারের জন্য। সরঞ্জামের বাইরেও অনেক কিছু ব্যবহারের মাধ্যমেও প্রতারণা করা যেতে পারে যেমন আমেরিকান ফুটবলে হাত দিয়ে সহজে বল ধরার জন্য আঠা ব্যবহার করা। এর একজন উদাহরণ হচ্ছেন হলের ফেমার জেরি রাইস নামক একজন খেলোয়াড়, যাকে তার বল ধরার রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুরো কর্মজীবনে অবৈধভাবে আঠা ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন।[৯][১০][১১]

ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রতারণা একটি বড় সমস্যা। উদাহরণস্বরূপ পেশাদার শরীরগঠনে প্রতারণাকে এতোটাই সার্বজনীন ধরা হয়ে থাকে যে প্রতারণা এবং বাতিলকৃত বস্তূ ব্যবহার ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা অসম্ভব পর্যায়ে পড়ে; যেসব শরীরগঠনকারী এসব বাতিল বস্তু গ্রহণে অসম্মতি জানায় তারা প্রাকৃতিক শরীর গঠন লীগে প্রতিযোগিতা করে।

প্রশিক্ষণেও প্রতারণা হতে পারে। খুবই সাধারণ একটি প্রকার হচ্ছে খেলোয়াড় বাছাইকরণ প্রক্রিয়াতে ঘুষ ও উপঢৌকনের ব্যবহার। এর চর্চা পুরো ক্রীড়া জগতেই রয়েছে বিশেষ করে মহাবিদ্যালয় খেলার খেলোয়াড় সংগ্রহ প্রক্রিয়াতে। পাতানো খেলা এবং জুয়ার মাধ্যমে কোন একটি সংগঠনের সাথে প্রশিক্ষণের প্রতারণা একটি খুবই সাধারণ বিষয় (আরও দেখুন প্রতারণার জুয়া শিল্পের নিচের অংশে)। নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয় লাস ভেগাসের রানিং রেবেলস বাস্কেটবল দলের সবচাইতে জনপ্রিয় প্রশিক্ষক জেরি টারকানিয়ানের বিরুদ্ধে তার পুরো কর্মজীবনে সংগ্রহ ও জুয়া জালিয়াতির অভিযোগ ছিল এবং এন সি সি এ এর পর্যবেক্ষণের মধ্যে ছিলেন। এর আরেকটি প্রকার হচ্ছে একজন দলের প্রশিক্ষক অথবা ম্যানেজার কর্পোরেট গুপ্তচরবৃত্তি অথবা অন্য কোন নীতি বহির্ভূত গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে অন্যান্য দলের খেলার ধরনের বর্ণনা জেনে নেয়া। ২০০৭ সালের জাতীয় ফুটবল লিগ ভিডিও চিত্র বিতর্ক অন্যতম, যেখানে নিউ ইংল্যান্ড পেট্রিওট দলকে অনুনমদিত স্থানে বিপরীত দলের বিরুদ্ধে খেলার ধরন নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। পিটারসবারগ স্টিলারস দের সময়ের মধ্যে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিকারক এর ব্যবহার দেখা যায়। যাইহোক ৯০ এর দশকে ডেনভার ব্রঙ্কস দের পর পর লিগ টাইটেল জেতা বেতন জালিয়াতির মাধ্যমে এবং খেলোয়াড় সংগ্রহ করা ও রাখা যা প্রতারণা ছাড়া সম্ভব ছিল না তা প্রমাণিত হয়। খেলোয়াড় প্রণেতাদের আইনের জালিয়াতিকেও প্রতারণা হিসেবে ধরা যেতে পারে। ২০০৭ সালে ফরমুলা ওয়ান মৌসুমের সময়, চালক ফারনান্ডো আলনসোকে প্রতারক বলা হয় স্কুডেরিয়া ফেরারি এবং ম্যাকলারেন দলের কাছে গোপন তথ্য হস্তান্তরের জন্য,[১২] চুক্তির ভিত্তিতে। আরেকটি উদাহরণ হিসেবে ধরা হয় ২০০২ সালের অলিম্পিক ফিগার স্কেটিং এ যখন কানাডার দলকে বাদ দিয়ে রাশিয়ার দলকে স্বর্ণপদক দেয়া হয় যদিও রাশিয়ার দলে ভুল ছিল; কানাডার দলকে দ্বিতীয় স্বর্ণপদক দেয়া হয় তবে রাশিয়ার স্বর্ণপদক বাতিল করা হয়নি।

শক্তি প্রশিক্ষণের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানোকেও প্রতারণা বলা যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ক্লান্ত পেশি থেকে ভিন্ন একটি পেশিতে ভারকে স্থানান্তর করা হয়। এটি একজন প্রতারককে বেশি ওজন সরাতে সাহায্য করে (যদি প্রতারণাটি সম্পূর্ণ সময় ধরে চলে) অথবা পেশি ক্লান্ত হওয়ার সময় সীমার পরেও একজন ব্যায়াম করতে পারে। যেহেতু শক্তির প্রশিক্ষণ একটি খেলা নয় তাই এখানে প্রতারণার নিয়ম ভিত্তিক কোন ফলাফল নেই তবে আহত অথবা নির্দিষ্ট উদ্দেশে পৌছাতে ব্যর্থ করতে পারে। এর কারণ হচ্ছে সব ব্যায়ামই নির্ধারণ করা হয় নির্দিষ্ট পেশীর জন্য যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হয় তবে ওজন অন্য কোন পেশিতে যেতে পারে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ভিডিও গেমস সম্পাদনা

 
অ্যাকশন রিপ্লে ভিডিও গেমে প্রতারণা

ভিডিও গেমসে প্রতারণা হতে পারে গোপন কোডের মাধ্যমে যেখানে একক খেলোয়াড় গেমসে থাকে যেমন (যেমন কনামি কোড[১৩]) যা একজন খেলোয়াড়ের প্রবেশের সময় বোনাস দিয়ে দেয়, হ্যাক এবং অন্যান্য কাজ একজন খেলোয়াড়কে মাল্টিপ্লেয়ার অথবা এককপ্লেয়ার গেমসে অনেক অসম সুবিধা প্রদান করে অথবা অনলাইন খেলাতে অন্যায় চুক্তি (যেমন দর্শক খেলোয়াড়ের সীমানা সরিয়ে দেয়া এবং বিপরীত পক্ষকে শত্রুদলের চলাচল বলে দেয়া) সৃষ্টি করে।

প্রতারণার প্রতি মনোভাব বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এককপ্লেয়ার গেমসে বিভিন্ন ধরনের কাজ করাকে সাধারণভাবে একধরনের খেলার বিষয়ে অন্বেষণকে বোঝায়, যদি না খেলোয়াড়ের অর্জনগুলো কোন প্রতিযোগিতায় জমা দেয়া হয় এবং তা উচু মাত্রার কঠিন এককপ্লেয়ার খেলার ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ; যাইহোক মাল্টিপ্লেয়ার খেলাতে প্রতারণাকে অনৈতিক ধরা হয় এবং কঠোর ভাবে নিন্দা করা হয় সঠিক খেলোয়াড় এবং ডেভ্লপার দ্বারা। একদিকে প্রতারণা সাধারণ খেলোয়াড়দেরকে খুবই দ্রুত কোন খেলা শেষ করতে সাহায্য করে, যা সাহায্য করে সিনেমাটিক বা এককপ্লেয়ার গেমসে যা শেষ করতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হয় যেমন চরিত্র ভিত্তিক (আরপিজি) খেলাতে। এটিকে একটি ছোট সুবিধা যা কারো কোন ক্ষতি করে না মনে করা হয়, তবে মাল্টিপ্লেয়ার খেলাতে যেমন MMORPG তে এই প্রতারণা অনেক ক্ষতি করে থাকে, খেলাতে ঝুঁকি/পুরস্কারের রেখচিত্র ভেঙে ফেলে এবং ন্যায্য খেলোয়াড়দের অনলাইন খেলাতে হারিয়ে দেয় অথবা চরিত্রের উন্নতি করতে দেয় না। এই সব খেলাতে প্রতারণা নিষিদ্ধ - যদিও এর বহুল ব্যবহার আছে। অনেক খেলার চক্রে খেলার বাহির থেকে কোন কিছু কেনাকেও প্রতারণা হিসেবে ধরা হয়। খেলার অনেক সেবার শর্তে এটি সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয় যদি সেই খেলাতে এসব কাজ করা সম্ভব হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আধুনিক ফ্রি টু প্লে এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে এর স্বল্প অনুমতি আছে যা ব্যাবসার সাথে জড়িত যা সমর্থন করে বা সমর্থিত হয় সত্যিকার দুনিয়ার অর্থের পরিবর্তে সেবা, সরঞ্জাম এবং সুবিধার মাধ্যমে। যেসব খেলাতে শুধু অর্থের বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ সুবিধা প্রদান করে তাদেরকে 'জেতার জন্য অর্থ প্রদান করুন' বলে সমালোচনা করা হয়।[১৪] -মাঝেমধ্যে যেগুলোকে "প্রতারণা" হিসেবে ধরা হয় তা আইনের প্রক্রিয়াতে বৈধ- যেখানে বাস্তব অর্থের মাধ্যমে সুবিধা নেয়াতে সীমাবদ্ধতা আছে সেগুলকে ন্যায্য বলে গ্রহণ করা হয়।

ভিডিও গেমে প্রতারণার আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে যখন খেলোয়াড় প্রোগ্রামারদের দ্বারা দেখা যায় নি এমন বস্তূর সাথে যুক্ত হওয়ার কাজ করে এবং বস্তূর সাথে পুরস্কার প্রদানের সকল প্রক্রিয়া ভেঙে ফেলে। এটি যেকোনো মাধ্যমে হতে পারে। যেমন শত্রুপক্ষের মোকাবেলা, উদ্দেশ্য পাওয়া, ব্যবহার করা সরঞ্জাম অথবা অন্য যেকোনো বস্তূ যা সফটওয়ার বাগ ধারণ করে। একটি সাধারণ উদাহরণ হচ্ছে শত্রুপক্ষের পথখোঁজার মধ্যে ভুল দিয়ে দেয়া, যদি কোন খেলোয়াড় তার কোন শত্রুকে কোন একটি যায়গায় আটকে রাখতে পারে, সেই খেলয়ারটি তখন খুব সহজভাবে শত্রুকে দূর থেকে ঘায়েল করতে পারে, যদিও কিনা বেশি শক্তি এবং বড় পুরস্কার ঐ লেভেলেই খেলোয়াড়টি অর্জন করতে পারে। আরেকটি উধাহরন যা খুবই সাধারণ ছিল প্রথম দিকের ফার্স্ট পারসন শুটার খেলাতে তা হচ্ছে গুলি পুনরায় ভরার সময় নিয়ে যেখানে বদুক কে সামনে পেছনে করলেই তা হয়ে যেত যদিও গুলি পুনরায় ভরা না হয় এবং তা সময় বাচাত। এটা ভিন্ন ভাবেও অর্জন করা যেতে পারে একটি গেম ফাইলকে অন্য একটি ফাইল দিয়ে প্রতিষ্ঠাপিত করার মাধ্যমে অথবা দেখার সুবিধার জন্য চিত্রের গ্রাফিক্স পরিবর্তনের মাধ্যমে ইত্যাদি। উধাহরনের জন্য বলা যেতে পারে কাল রঙের শত্রুর জন্য ব্যাকগ্রাউন্ডে এমন রং যোগ করা যাতে দ্রুত দেখা এবং টার্গেট করা যায়। সাধারণ ভাবে বলতে গেলে এটাকে সত্যিকার অর্থে প্রতারণা ধরা হয় না, কারণ এটি এটি তৈরিকারির ভুল যা তিনি রেখে দিয়েছেন। যাইহোক প্রজুক্তিগতভাবে সরাসরি খেলাতে যদি একজন খেলোয়াড় সঠিকপদ্ধতিতে না খেলেন , অলিখিত নিয়ম ভাঙেন তবে তা প্রতারণা। কিছুক্ষেত্রে এই কাজকে সরাসরি নিষেধ করা হয় খেলার সেবা প্রদানের শর্ত হিসেবে।[১৫]

জুয়াখেলা সম্পাদনা

 
প্রতারকের সাথে ডায়মণ্ডের টেক্কা জর্জেস ডি লা ট্যুরের মাধ্যমে

একটি ঘটনাতে টাকার বাজির পরিমাণ সরাসরি প্রতিযোগীদের সাথে খেলাতে অংশগ্রহণ না করেও প্রতারণার ইচ্ছাকে বাড়িয়ে দেয়। খেলা অথবা গেমে, জুয়া খেলাতে প্রতারণা বলতে সাধারনণ সরাসরি আইন অথবা নীতি অমান্য অথবা যেই ঘটনার উপর বাজি ধরা হয়েছে তার ভুল প্রকাশ অথবা ফলাফলে হস্তক্ষেপ করাকে বোঝায়।

একজন মুষ্টিযোদ্ধার ঝাঁপ দেয়া, একটি ক্যাসিনো যা গোপনে লোড কৃত ঘুঁটি ব্যাহার করে, একটি সাজানো রাওলেটে চাকা অথবা স্লট যন্ত্র, অথবা কার্ডের ডক্টরড ডেক ইত্যাদিকে সাধারণত প্রতারণা হিসেবে ধরা হয়। কারণ এটি যৌক্তিকতার বাইরে একজন বাজিকরকে বাঁচানোর জন্য খেলার ফলাফলকে ভুলভাবে প্রকাশ করে। যাই হোক, বাজি বাড়ানোর জন্য একজন টিকেট বিক্রেতা তার ঘোড়ার প্রশংসা করতে পারে। একে টিকেট বিক্রির কৌশল বলা যেতে পারে, তবে প্রতারণা নয়। কারণ একজন বাজিকর এটা রোধ করতে পারে সন্দেহপ্রবণতার মাধ্যমে এবং নিজেদেরকে আরও তথ্য দিয়ে।

বাজির মধ্যে কোন সরঞ্জামের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে একটি ঘোড়াকে ডোপিং করা স্পষ্টত প্রতারণার উদাহরণ। আবার সকল হস্তক্ষেপই প্রতারণা নয়; একটি ঘোড়া যার উপর বাজি ধরা হয়েছে তার স্বাস্থ্য ও ভালোর জন্য অর্থ খরচ করা প্রতারণার হিসেবে ধরা হয়না, একজন খেলোয়াড়কে উজ্জীবিত করার মাধ্যমে নৈতিকতা বৃদ্ধি করাকেও প্রতারণা হিসেবে মনে করা হয় না। সাধারণভাবে হস্তক্ষেপকে তখনই প্রতারণা হিসেবে ধরা হবে যখন কোন প্রতিযোগিতার আদর্শের মানকে কম করে দেয়, প্রতিযোগীর ক্ষতি করে অথবা খেলা অথবা অনুষ্ঠানের সরঞ্জামের পরিমার্জন করে।[১৬]

জুয়া খেলার দুনিয়াতে একটি গোপন তথ্য জানা (যা বেশীরভাগই জানে না) তা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে যা প্রতারণাকে উজ্জীবিত করতে পারে। যাইহোক বৈধ প্রক্রিয়াতে এই গোপন জ্ঞানের দরকার হয় না যেভাবে অপরাধীরা নিজেরাই এই ছলচাতুরী করে। বিপরীতভাবে এটি অর্থনৈতিক বিশ্বে কিছু নিশ্চিত শ্রেণীর মানুষ আছে যাদেরকে সংগঠনের সাথে সম্পর্ককে বাধা প্রদান করে যা ভেতরের আদানপ্রদানের অপরাধ গঠন করে। এটা হতে পারে বিনিয়োগকারীদের সমতার বিষয়ে মজবুত অনুমান থাকলে, অথবা একজনের সংগঠনের লেনদেনের ব্যাপারে সঙ্ঘরসিক আগ্রহ থাকলে যদিও তিনি সংগঠনের কর্মচারীও হতে পারেন এবং এভাবে নিজেই সংগঠনকে ভুলভাবে প্রকাশ করছেন।

একজন সুবিধান্বেষী খেলোয়াড় সাধারণত তার মানসিক, পর্যবেক্ষণ করার এবং প্রযুক্তিগত পটুতাকে ব্যবহার করেন। কখন এবং কী পরিমাণ বাজি ধরতে হবে এবং এর কোনটাই সরঞ্জামের উপর হস্তক্ষেপ করে না অথবা নিয়মের ভাঙ্গনও হয় না। ক্যাসিনো শিল্পের প্রতিনিধিরা দাবি করেন যে সকল সুবিধাময় খেলাই প্রতারণা তবে এই দৃষ্টিকোণ সাধারণ সমাজ এবং আইন কোনটাতেই প্রকাশ পায় না। যেমন ২০১০ সালের একমাত্র উদাহরণ হচ্ছে একজন খেলোয়াড়ের একটি গৌণ যন্ত্র ব্যবহার করেছিল যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের নেভডা রাজ্যে অবৈধ ছিল। যার আইন বড় কাসিনো সংগঠন দ্বারা অনন্য ভাবে প্রভাবিত। কম নয় তবে এটি বিস্তৃত ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় যে একজন বৈধ ভাবে গ্রহণ কৃত তথ্যের সাহায্যে কীভাবে খেলাতে বাজির সিধান্ত নিবে তার উপর কোন বাঁধা থাকবে না যা খেলার নিয়মের বাহিরে নয়। হোল কার্ডে একজন খেলোয়াড় চেষ্টা করে কার্ডের সামনের অংশ দেখার জন্য, এবং এজন্য নিচের দিকে রেখে বণ্টন করেন। জুয়ার মাধ্যমে প্রতারণা এবং ব্যবসা করার আরেকটি ধরন হচ্ছে নিজের বিপরীতে বাজি ধরা এবং তারপর ইচ্ছাকৃত ভাবে হেরে যাওয়া। এটি পরিচিত খেলাকে ছুঁড়ে মারা অথবা একটি ডুব দেয়া নামে। অনিচ্ছাকৃত হেরে যাওয়া থকে বাচার জন্য এবং যেন জুয়া খেলোয়াড়রা লাভ করতে পারে সেজন্য তারা খেলোয়াড়দের ঘুষ দিয়ে থাকে হারার জন্য। মনে কারার মত একটি বিশেষ মামলা হচ্ছে ব্লাক সক্স স্ক্যান্ডাল, যখন ১৯১৯ সালে শিকাগো হোয়াইট সক্স এর ৮ জন খেলোয়াড় ঘুষ নেয় এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে খারাপ খেলে। আরেকটি ঘটেছিল মুষ্টিযুদ্ধে যখন জেক লামটটা চ্যাম্পিয়নশিপ খেলাতে মারসেল কারডেন এর বিপরীতে অংশগ্রহণের জন্য বিলি ফক্স এর বিরুদ্ধে একটি ঝাপ দেন, যা ঘটে পেশাদার মুষ্টিযুদ্ধ নিয়ন্ত্রণকারী ডাকাতদের সাথে চুক্তি করে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "California State University, East Bay"। Csuh.iii.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. http://site.ebrary.com.proxylib.csueastbay.edu/lib/csueastbay/docDetail.action?docID=10155877
  3. The Case of the Purloined Paper by Brigid Schulte
  4. "Ohiomatyc.org" (পিডিএফ)। ২০১৩-১১-১০ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১ 
  5. Reader's Digest, pp. 123-7, March 2006; প্রতারণা: "but everybody is doing it".
  6. "Canseco:Steroids made my baseball career possible"। Usatoday.com। ২০০৫-০২-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৯ 
  7. "Sports Illustrated:Steroids in baseball"। Sportsillustrated.cnn.com। ২০০২-০৬-২৩। ২০০৯-০২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৯ 
  8. "Sportsillustrated.cnn.com"। Sportsillustrated.cnn.com। ২০০৫-০৮-২৪। ২০০৯-০৮-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৯ 
  9. http://www.cbssports.com/nfl/eye-on-football/25061154/jerry-rice-admitted-to-প্রতারণা-just-days-before-calling-pats-cheaters[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. http://www.nj.com/giants/index.ssf/2015/02/whos_প্রতারণা_now_jerry_rice_admits_stickum_use_af.html[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  11. https://sports.yahoo.com/blogs/nfl-shutdown-corner/jerry-rice-calls-out--প্রতারণা--patriots-but-admitted-to-using-stickum-200324269.html
  12. Spearman, Michael (২০০৭-০৯-১৫)। "Fernando is just a 'cheat'"। London: thesun.co.uk। ২০১২-০১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৩-২১ 
  13. "Gradius Cheats & Codes" (English ভাষায়)। IGN। ২০ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৬ 
  14. "Separating Free-to-Play and Pay-To-Win"। IGN.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-২৬ 
  15. "California State University, East Bay"। Csuh.iii.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  16. "California State University, East Bay"। Csuh.iii.com। ২০১৩-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা