প্রকৃতি বনাম প্রতিপালন
প্রকৃতি বনাম প্রতিপালন নামক বিতর্কটি মূলত ব্যক্তিভেদে বৈশিষ্ট্যের পার্থক্যের পেছনে কোন ব্যক্তির "জন্মগত বৈশিষ্ট্য (প্রকৃতি) বনাম ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা (প্রতিপালন)" সম্পর্কিত কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করে। জনসংখ্যা বংশগতিবিদ্যায়, পূর্বপুরুষ হতে কোন বৈশিষ্ট্যের পরবর্তী প্রজন্মে প্রবাহিত হওয়ার ক্ষমতা সেসকল বৈশিষ্ট্যে মাঝে সীমাবদ্ধ যেগুলো জিনগতভাবে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায়। এ সকল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আচরণিক ও চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যও অন্তর্গত। যদিও এই বিতর্কটি মানব প্রজাতিকে কেন্দ্র করে সাধারণত ঘটে থাকে, তবুও প্রাণী ও উদ্ভিদসহ অন্য যে কোন জীবের ক্ষেত্রে এই অনুসন্ধান-নীতি প্রয়োগ করা যায়।
যমজ সন্তানগণ জিনগতভাবে একই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী বলে তারা প্রকৃতিগতভাবে অভিন্ন, তাই প্রতিপালনের অভিন্নতা ও বিভিন্নতার মাধ্যমে তাদের উপরই এই বিতর্কের গবেষণাটি বেশিরভাগ করা হয়েছে। এরকম কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যমজ শিশুদের রক্তের গ্রুপ চোখের মণির রং জিনগত; উচ্চতা ও ওজন আংশিক জিনগত ও আংশিক পরিবেশগত; মেধাবিকাশ অনেকটাই জিনগত এবং ভাষাজ্ঞান পুঁতাই পরিবেশগত। ফ্রান্সিস গ্যাল্টন প্রথম এই গবেষণাটি করেন, যিনি সম্পর্কে ডারউইনের একজন আত্মীয় ছিলেন।[১] গ্যাল্টন প্রকৃতি ও প্রতিপালনকে পরস্পরের বিকল্প নামক তত্ত্বের কোন বিরোধিতা করেন নি।[১] তবে উক্ত পরিভাষাটি অতিরিক্ত-সরলীকরণের অভিযোগে সমালোচিত হয়েছে। তবে সকল লেখকই স্বীকার করেন যে আমাদের পরিবর্ধনে দুটি উপাদানেরই ভূমিকা রয়েছে। দার্শনিক জন লেক মনে করতেন যে মানুষ তার মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলো প্রতিপালন থেকে পায়। তিনি এক্ষেত্রে শুধু আমাদের চেতনাগত জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া নিয়েই গবেষণা করেছিলেন।
প্রকৃতি এবং প্রতিপালন উভয়েই আমাদের বৃদ্ধিতে আন্তঃপ্রতিক্রিয়াশীলভাবে অবদান রাখে, এবং বহু মনস্তত্ত্ববিদ ও নৃতত্ত্ববিদ এদের মধ্যে তুলনা করাকে অযৌক্তিক বলে মনে করেন। তারা একে আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মেয়াদ-উত্তীর্ণ ও সেকেলে মতবাদ বলে মনে করেন।[২][৩][৪][৫]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Galton, Francis 1875. Proceedings of the Royal Institution of Great Britain, volume 7. Of Men of Science, their nature and their nurture. [১] Also, later, Galton, Francis 1895. English men of science: their nature and nurture. Macmillan, London and Appleton, New York.
- ↑ Dusheck, Jennie 2002. The interpretation of genes. Natural History, October 2002.
- ↑ Carlson N.R. et al. 2005. Psychology: the science of behaviour. 3rd ed, Pearson. আইএসবিএন ০-২০৫-৪৫৭৬৯-X
- ↑ Ridley, Matt 2003. Nature via Nurture: genes, experience, & what makes us human. Harper Collins. আইএসবিএন ০-০০-২০০৬৬৩-৪
- ↑ Westen D. 2002. Psychology: brain, behavior & culture. Wiley. আইএসবিএন ০-৪৭১-৩৮৭৫৪-১
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Ceci, Stephen J.; Williams, Wendy M., সম্পাদকগণ (১৯৯৯)। The Nature–nurture debate: the essential readings। Malden (MA): Blackwell Publishing। আইএসবিএন 978-0-631-21739-8। lay summary (২৯ জুলাই ২০১০)।
- Coll, Cynthia Garcia; Bearer, Elaine L.; Lerner, Richard M., সম্পাদকগণ (২০০৪)। Nature and Nurture: The Complex Interplay of Genetic and Environmental Influences on Human Behavior and Development। Mahwah (NJ): Lawrence Erlbaum। আইএসবিএন 978-0-8058-4387-3। lay summary (২১ নভেম্বর ২০১০)।
- Rutter, Michael (২০০৬)। Genes and Behavior: Nature-Nurture Interplay Explained। Malden (MA): Wiley-Blackwell। আইএসবিএন 978-1-4051-1061-7। lay summary (৩ সেপ্টেম্বর ২০১০)।
- Goldhaber, Dale (৯ জুলাই ২০১২)। The Nature-Nurture Debates: Bridging the Gap। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-14879-5। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৩। lay summary (২৪ নভেম্বর ২০১৩)।
- Keller, Evelyn Fox (২১ মে ২০১০)। The Mirage of a Space between Nature and Nurture। Duke University Press। আইএসবিএন 978-0-8223-4731-6। lay summary (১২ নভেম্বর ২০১৩)।