পিঞ্চবেক (সংকর ধাতু)

সংকর ধাতু

পিঞ্চবেক (সংকর ধাতু) হল পিতলের একটি রূপ। তামা এবং দস্তার মিশ্রণে তৈরি হয় পিতল। পিঞ্চবেক সংকর ধাতুতে তামা এবং দস্তা এমন ভাবে মেশানো হয় যাতে এটি দেখতে সোনার মতো লাগে। এই সংকর ধাতুটি আঠারো শতকের গোড়ার দিকে লন্ডনের ঘড়ি নির্মাতা ক্রিস্টোফার পিঞ্চবেক আবিষ্কার করেছিলেন।[১] সেই সময় কেবল ১৮ ক্যারেট মানের সোনার গয়না বিক্রি হতো, যা অনেক সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। পিঞ্চবেকের বিকাশের ফলে সাধারণর মানুষেরা সোনার গহনার সাধ মেটাতে পিঞ্চবেক দিয়ে তৈরি গয়না কিনতেন। সেইসময় সাধারণ কোচগাড়িতে যেখানে চুরির সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে পিঞ্চবেকের গহনা ব্যবহার করা হত। ১৮শ শতকের তিরিশের দশক পর্যন্ত ক্রিস্টোফার পিঞ্চবেক এবং তার অনুগামীরা আসল পিঞ্চবেক তৈরি করেছিলেন।[১]পরে অসাধু স্বর্ণকারেরা পিঞ্চবেককে সোনা হিসাবে বাজারে ছেড়ে দিয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে পিঞ্চবেক সংকর ধাতুর তৈরি গয়না সস্তা নকল সোনার গয়না হিসাবে চলে আসছে।[২] বর্তমানে স্বর্ণকারদের উপর নির্ভর করে, গয়নাটি আসল পিঞ্চবেক, নাকি ধাতুর উপর পিঞ্চবেকের প্রলেপ। সাধরণভাবে ধাতুর প্রলেপ দেওয়া বস্তুকে গিল্ট ধাতু বলে।[১]

মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের সংগ্রহে একটি পিঞ্চবেক ঘড়ি

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে পিঞ্চবেকের ব্যবহার একেবারেই কমে যায়। এর পরিবর্তে কম ক্যারেটযুক্ত সোনার চল বাড়ে। ১৮৫৪ সালে কম ক্যারেটযুক্ত সোনার গয়নাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল।[৩]

পিঞ্চবেক সংকর ধাতুতে সাধারণত শতকরা ৮৯ ভাগ তামা এবং শতকরা ১১ ভাগ দস্তা থাকে অথবা শতকরা ৯৩ ভাগ তামা এবং শতকরা ৭ ভাগ দস্তা দেখা যায়।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Tolkien, Tracy; Wilkinson, Henrietta (১৯৯৭)। A Collector’s Guide to Costume Jewelry Key Styles and how to recognize them। Firefly Books। পৃষ্ঠা 33। আইএসবিএন 1552091562 
  2. World Wide Words, Pinchbeck
  3. Levine, Gilbert; Vookles, Laura L (১৯৮৬)। The Jeweler's Eye: Nineteenth-century Jewelry in the Collection of Nancy and Gilbert Levine। Hudson River Museum। পৃষ্ঠা 28। 
  4. Pinchbeck on Chemistry Learner