পারারিয়ার গণধর্ষণ (১৯৮৮)

পারারিয়ার গণধর্ষণ জাতিভিত্তিক সহিংসতার একটি ঘটনা ছিল, যা ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে ভারতের বিহারের বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে প্রভাবিত করেছিল। ঘটনাটি মন্দির শহরের দেওঘর থেকে ৩০ কিমি (১৯ মা) অবস্থিত পারারিয়া গ্রামে সংঘটিত হয়। বিহার পুলিশ বাহিনীর একটি গোষ্ঠী ২৬ টি পরিবারের মহিলাদের গণধর্ষণ করেছে।[১] নিহতরা যাদব বর্ণ শ্রেণিবদ্ধ ছিলেন, যা অন্যান্য পশ্চাৎপদ শ্রেণি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ ছিল।[২]

ঘটনা সম্পাদনা

বিহার পুলিশের একটি টহল দল ১৯৮৮ সালে পরারিয়ার যাদব গ্রামে অভিযান চালায়। ১৩ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী কমপক্ষে ১৪ জন মহিলা (কিছু সূত্র বলছে সর্বোচ্চ ১৯ জন[৩] ও সর্বোনিন্ম ৫ জন[৪]) গণধর্ষণ করা হয় এবং পরিবারের পুরুষ সদস্যদের নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র, গয়না ও বাসপত্র লুট করে। নারীদের পরা নাকের রিং এবং আনুষাঙ্গিকগুলি জোরপূর্বক লুট করে, যার ফলে মহিলারা শারীরিকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়। একজন ৭৬ বছর বয়সী ব্যক্তিকে ধর্ষিত হওয়া থেকে তার মেয়েকে রক্ষা করার চেষ্টা করার সময় মারধর করা হয় এবং পায়ুপথে একটি লাঠি - পুরু বাঁশের লাঠি প্রবেশ করানো হয়। কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি বলেছিলেন যে কয়েকদিন আগে একজন পুলিশ কনস্টেবলকে লাঞ্ছিত করার জন্য ধর্ষণের প্রতিশোধ নেওয়া।[৩] কিন্তু সরকারি প্রতিক্রিয়ায় বলা হয় যে গ্রামবাসীদের পুনাসি বাঁধ প্রকল্পের জন্য বাস্থান ছেড়ে যেতে অস্বীকার করার প্রতিক্রিয়ায় এটি করা হয়েছিল; নির্যাতিত মহিলাদের মধ্যে কয়েকজন বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলেন।[১] মামলার সভাপতিত্বকারী বিচারক ওপি সিনহা বলেন, "রাধিয়া দেবী জানিয়েছেন যে তাকে পিঠের দিকে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। দুইজন চৌকিদার তার পা ও হাত ধরে এবং তিনজন পুলিশ সদস্য ধর্ষণ করে [সিক]। প্রতিরক্ষার যুক্তি ছিল যে ধর্ষণের সময় এই ধরনের ভঙ্গি অকল্পনীয়। আমি যুক্তিতে অনেক ওজন খুঁজে পাই।"[১]

এই মামলায় বিচারক পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বল প্রয়োগের জন্য "অন্যায়ভাবে কারাবাস" করার জন্য এবং অন্য ১৪ জনকে গণধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এটি ছিল বিহারে পুলিশি অত্যাচারের অন্যতম বড় অভিযোগ।[৪]

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে সম্পাদনা

সাগরি ছাব্রা পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র রেপ অ্যাজ অ্যাসারশন অব পাওয়ার-এ ঘটনাটি চিত্রিত করেছে। মুভিটি একটি বড় বাঁধ প্রকল্পের জন্য পানির নিচে ডুবে যাওয়া একটি গ্রাম ও গ্রামবাসীরা ক্ষতিপূরণের জন্য প্রতিমিকে কেন্দ্র করে নির্মিত। একগুঁয়ে গ্রামবাসীর উপর প্রকাশ্যে অপমানের মাধ্যমে প্রতিবাদ দমন করার জন্য ধর্ষণ সংঘটিত হয়।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sengupta, Uttam। Pararia mass rape: After it shocked India, judgement doubts character of the womenIndia Today। ৯ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২১ 
  2. Shiri Ram Bakshi; Shiri Ram Bakshi (১৯৯৮)। Contemporary Political Leadership in India George Fernandes, Defence Minister of India। APH Publishing। পৃষ্ঠা 100–102। আইএসবিএন 8170249996। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. Geetanjali Gangoli (২০১৬)। Indian Feminisms: Law, Patriarchies and Violence in India। Routledge। পৃষ্ঠা 91। আইএসবিএন 978-1317117469। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২১ 
  4. United States. Congress. Senate. Committee on Foreign Relations (১৯৯১)। Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women: Hearing Before the Committee on Foreign Relations, United States Senate, One Hundred First Congress, Second Session, August 2, 1990, Volume 4। U.S. Government Printing Office। পৃষ্ঠা 103। 
  5. Amitabh Roy (২০০৫)। The God of Small Things: A Novel of Social Commitment। Atlantic Publishers & Dist। আইএসবিএন 8126904097 – Google Books-এর মাধ্যমে।