পাতি জহুর

হেসপেরিডি পরিবারের প্রজাপতি

পাতি জহুর[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Pelopidas mathias (Fabricius)) 'হেসপারিডি' (Hespaeriidae) বা স্কিপারস (Skippers) গোত্র ও হেসপারিনি (Hesperiinae) উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি।[২]

পাতি জহুর
Small Branded Swift
ডানা বন্ধ অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Hesperiidae
গণ: Pelopidas
প্রজাতি: P. mathias
দ্বিপদী নাম
Pelopidas mathias
(Fabricius, 1798)
প্রতিশব্দ
  • Hesperia mathias Fabricius, 1798
  • Baoris mathias
  • Parnara parvimacula Rothschild, 1915
  • Gegenes elegans Mabille, 1877
  • Pamphila umbrata Butler, 1879
  • Hesperia octofenestrata Saalmüller, 1884
  • Pamphila albirostris Mabille 1887 in Grandidier, [1885-7]
  • Hesperia chaya Moore, [1866]
  • Hesperia julianus Latreille, [1824]
  • Pamphila repetita Butler, 1882

আকার সম্পাদনা

পাতি জহুর এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৩২-৩৮ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৩][৪]

বিস্তার সম্পাদনা

ভারত, ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়।[৫][৬]

বর্ণনা সম্পাদনা

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল বাদামি ও সোনালী-জেল্লা যুক্ত (কিছু নমুনাতে জলপাই বাদামি)। সামনের ডানা কিছুটা তীক্ষ্ণভাবে কৌণিক ও পিছনের ডানা অধিবৃত্তসদৃশ (parabolic) এবং ডানার গোড়াগুলি হালকা সবজে আভাযুক্ত। সামনের ডানায় কতকগুলি হলদেটে বা সাদা অর্ধ-স্বচ্ছ ছোপ বক্রভাবে সজ্জিত। উক্ত ছোপগুলির মধ্যে সেল-এর প্রান্তভাগে ২ টি মাঝারি আকারের ছোপ এবং ২ থেকে ৪ ও ৬ থেকে ৮ নং শিরামধ্যে (inter-space) ৬ টি ছোটবড় পোস্ট-ডিসকাল ছোপের একটি সারি বর্তমান। ২ ও ৩ নং শিরামধ্যের ছোপদুটি অন্যগুলির তুলনায় বড় (২ নং এর টি সর্বোবৃহদ ও প্রায় চতুষ্কৌণিক)। পোস্ট-ডিসকাল ছোপসারির ২ ও ৩ নং শিরামধ্যের ছোপদুটি সারির থেকে বেশ খানিকটা ভিতরদিকে তেরচাভাবে সরে গেছে। পিছনের ডানার উপরিতল সাধারণত দাগ-ছোপ হীন, তবে কিছু কিছু নমুনাতে ৩, ৪ ও ৬ নং শিরামধ্যে ছোপ দেখা যায়।

ডানার নিম্নতল ধূসর বাদামি। সামনের ডানায় উপরিতলের ছোপগুলি স্বচ্ছতার কারণে নিম্নতলেও দৃশ্যমান। পিছনের ডানার ছোপগুলি খুব ছোট। সেল-এর বহিঃপ্রান্তে একটি সাদা ছোপ ও সাদা ডিসকাল ছোপের একটি বক্রাকার সারি বিদ্যমান। উক্ত ডিসকাল ছোপগুলি সাধারণত ১সি থেকে ৬ নং শিরামধ্য পর্যন্ত বিস্তৃত, যদিও কিছু নমুনাতে ১বি থেকে ৭ নং শিরামধ্য পর্যন্ত সম্পূর্ণ ডিসকাল সারিটি চোখে পড়ে। শুস্ক-ঋতুরূপে ডানার নিম্নতলে ধূসর ছাপ (patch) দেখা যায়।

উভয় ডানাতেই টার্মিনাল প্রান্তরেখা সরু ও কালচে এবং সিলিয়া (cillia) ফ্যাকাশে সাদা। শুঙ্গ সাদায়-কালোয় ডোরাকাটা এবং শীর্ষ কালো ও মুগুরের ন্যায়। মাথা, বক্ষদেশ ও উদর উপরিতলে জলপাই- বাদামি ও নিম্নতলে ফ্যাকাশে বাদামি।[৪][৭][৮][৯]

আচরণ সম্পাদনা

সুলভ-দর্শন এই প্রজাতি অন্যান্য সুইফটদের ন্যায় দ্রুত উড়ান বিশিষ্ট। ফুলের মধু, পাখির বিষ্ঠা এবং ভিজেমাটি ও পাথরের ভিজে ছোপ থেকে রস আহরণ করতে এদের প্রায়শই দেখা যায়। দক্ষিণ ভারতে নিচু উচ্চতা বিশিষ্ট অঞ্চল থেকে ২,২৫০ মি. উচ্চতা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার বাসস্থানে এদের দর্শন মেলে, তবে উত্তর ভারতে অপেক্ষাকৃত নিচু উচ্চতায় এদের বিচরণ নজরে আসে। মাঝেমধ্যেই পাতায় বসে ডানা বন্ধ ও আংশিক খোলা অবস্থায় এই সুইফ্টদের রোদ পোহাতে দেখা যায়। যদিও সারাদিনই এদের বিচরণ চোখে পরে, সকালের প্রথম ভাগ ও বিকালেই এরা অতি সক্রিয় থাকে; দুপুরের দিকে কম দেখা পাওয়া যায়। এই প্রজাতি স্থানীয়ভাবে পরিযায়ী। উপযুক্ত আবাসস্থলে (habitat) মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এদের বিচরণ লক্ষ্য করা যায়।[৩]

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বসু রায়, অর্জন; বৈদ্য, সারিকা; রায়, লিপিকা। সুন্দরবনের কিছু পরিচিত প্রজাপতি (মার্চ ২০১৪ সংস্করণ)। সুন্দরবন জীবপরিমণ্ডল,Department of Forest Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ১০৯। 
  2. R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 57। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  3. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ৩১৯। 
  4. Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 121। আইএসবিএন 9789384678012 
  5. W. H., Evans (১৯৪৯)। A Catalogue of the Hesperiidae from Europe, Asia, and Australia in the British Museum। London: British Museum (Natural History). Department of Entomology। পৃষ্ঠা 441। 
  6. Swinhoe, Charles (১৯১২–১৯১৩)। Lepidoptera Indica. Vol. X। London: Lovell Reeve and Co.। পৃষ্ঠা 320। |
  7. E. Y., Watson (১৮৯১)। Hesperiidae Indicae: being a reprint of descriptions of the Hesperiidae of India, Burma, and Ceylon। Madras: Vest and Company। পৃষ্ঠা 31। 
  8. Wynter-Blyth, M.A. (1957) Butterflies of the Indian Region, pg ৪৮৬.
  9. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৮৩। আইএসবিএন 978 019569620 2