পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান
পদার্থবিজ্ঞানে পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান বলতে একটি গাণিতিক পরিকাঠামোকে বোঝায় যাতে বহুসংখ্যক আণুবীক্ষণিক বস্তুর বৃহৎ সমবায়ের উপরে পরিসংখ্যানিক পদ্ধতিসমূহ ও সম্ভাবনা তত্ত্ব প্রয়োগ করা হয়। এটিতে কোনও প্রাকৃতিক সূত্র পূর্বানুমান বা স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করা হয় না, বরং ঐ জাতীয় সমবায়ের আচরণ থেকে প্রকৃতিতে পর্যবেক্ষণকৃত বৃহৎবীক্ষণিক বস্তুসমূহের আচরণ ব্যাখ্যা করা হয়।
চিরায়ত তাপগতিবিজ্ঞানের বিকাশের সাথে সাথে পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞানের উদ্ভব ঘটে। চিরায়ত তাপগতিবিজ্ঞানে গড় মানের চারপাশে বিচলমান ও সম্ভাবনা বিন্যাস দ্বারা চরিত্রায়িত আণুবীক্ষণিক প্রচলসমূহের সাপেক্ষে পর্যবেক্ষণকৃত বৃহৎবীক্ষণিক ভৌত ধর্মসমূহ, যেমন তাপমাত্রা, চাপ, তাপ ধারকত্ব, ইত্যাদির ব্যাখ্যা দিতে পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান সফলতা প্রদর্শন করে। এর ফলে পরিসংখ্যানিক তাপগতিবিজ্ঞান ও পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ক্ষেত্রগুলি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে প্রধানত তিনজন পদার্থবিজ্ঞানীর নাম উল্লেখ করা হয়:
- লুডভিগ বোলৎসমান, যিনি কতগুলি অণু-অবস্থার একটি সমবায় হিসেবে এনট্রপি নামক ধারণাটির মৌলিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
- জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল, যিনি ঐ জাতীয় অবস্থাগুলির জন্য সম্ভাবনা বিন্যাসের প্রতিমানসমূহ নির্মাণ করেন
- জোসায়া উইলার্ড গিবস, যিনি ১৮৮৪ সালে ক্ষেত্রটির নামকরণ করেন।
যেখানে চিরায়ত তাপগতিবিজ্ঞানের মূলত তাপগতীয় সাম্যাবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়, সেখানে পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞানের পদ্ধতিগুলিকে অসাম্যাবস্থা পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ক্ষেত্রে অসাম্য দ্বারা পরিচালিত অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়াসমূহের দ্রুতির আণুবীক্ষণিক প্রতিমান সংক্রান্ত সমস্যাগুলিতে প্রয়োগ করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং কণা ও তাপের প্রবাহ দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ্য। কোনও বহুকণাবিশিষ্ট ব্যবস্থার একটি স্থিতাবস্থা প্রবাহের সরলতম অসাম্যাবস্থা পরিস্থিতিটির গবেষণায় অসামাবস্থা পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান প্রয়োগ করে মৌলিক জ্ঞানস্বরূপ বিচলন-অবক্ষয় উপপাদ্যটি (fluctuation–dissipation theorem) পাওয়া গেছে।