পরিবেশ রসায়ন একটি বিজ্ঞান যা প্রকৃতিতে বিদ্যমান রাসায়নিক ও জৈব-রাসায়নিক ক্রিয়াসমূহের বিষয়ে কারণ, ফলাফল ইত্যাদি অনুসন্ধান করে। বায়ু, মাটি এবং জলীয় পরিবেশে বিদ্যমান রাসায়নিক পদার্থ ও বস্তুসমূহের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, বিক্রিয়া, পরিবহন, প্রভাব এবং এসবের উপর মানুষ ও জৈবিক বস্তুর প্রভাব পরিবেশ রসায়নের অন্তর্গত। পরিবেশ রসায়নে জলীয় রসায়ন, মাটি বিজ্ঞান এবং ভূ-মন্ডলীয় রসায়নের বিষয়বস্তু জড়িত, এছাড়া পরিবেশ রসায়ন ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণাত্মক রসায়নের উপর নির্ভরশীল।

ইপিএ পরিবেশগত রসায়ন পরীক্ষাগার

পরিবেশে সংঘটিত বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াসমূহ এবং এগুলোড় উপরে মানুষের ক্রিয়ার প্রভাব পরিবেশ রসায়নের অন্তর্ভুক্ত। এধরনের স্থানীয় ক্রিয়ার প্রভাব কিংবা বায়ুতে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি এবং এর ফলে ভূ-মন্ডলের তথা ওজোন স্তরের নিঃশেষকরণ প্রক্রিয়ার মত বৈশ্বিক ঘটনার প্রভাবও পরিবেশ রসায়নের গবেষণার বিষয়। পরিবেশ রসায়নের লক্ষ্য এসব রাসায়নিক ক্রিয়াসমূহের ব্যাপারে ধারণা প্রদান করা যাতে মানুষের ক্রিয়াকলাপ সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়।

পরিবেশ রসায়ন প্রথমেই স্বাধীন অবস্থায় প্রকৃতির ক্রিয়াসমূহ পর্যবেক্ষণ করে; প্রকৃতিতে কোন রাসায়নিক পদার্থ কী পরিমাণে কোন নির্দিষ্ট বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং তার প্রভাব কী। এসবের উপর ভিত্তি করে জানা সম্ভব যে প্রকৃতিতে মানুষের নিঃসরণ করা রাসায়নিক পদার্থের ক্রিয়ার প্রভাব কী পরিমাণ। পরিবেশ রসায়নে রসায়নসহ পরিবেশ বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় অধ্যয়ন করা হয়। রসায়নের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রাসায়নিক বিক্রিয়া, সমীকরণ, ঘনমাত্রা, রাসায়নিক একক, রাসায়নিক বিশ্লেষণ ও সংশ্লেষণ।[১]

প্রয়োগসম্পাদনা

পরিবেশ রসায়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় পরিবেশ সংস্থাসমূহ ব্যবহার করে। পরিবেশ রক্ষা সংস্থা এবং পরিবেশের উন্নয়নকামী সংস্থাগুলো পরিবেশ রসায়নের জ্ঞান তাদের কার্যক্রমে ব্যবহার করে। এসবের মধ্যে রয়েছেঃ

  • ধাতু দ্বারা ভূমির দূষণ। বিভিন্ন শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত এবং বর্জ্য পদার্থ হিসেবে বের হওয়া ধাতু এসব ক্ষতির কারণ হতে পারে।
  • কৃষিজমি থেকে মাটির পুষ্টি-গুণাবলি নিঃসৃত হয়ে পানিতে মিশে যাওয়া, ফলে আবাদের জন্য মাটির যথেষ্ট গুণাগুণ না থাকা।[২]
  • শহর ও নগরের বিভিন্ন উপরিপৃষ্ঠ যেমন- পার্কিং স্থান, রাস্তা, ছাদ ইত্যাদি থেকে ঝড়-বৃষ্টির পানি নেমে মাটিতে মিশে যায়। এই পানিতে দূষিত পদার্থ থাকতে পারে। এধরনের দূষণকারী পদার্থের মধ্যে গ্যাসোলিন, মোট্রগাড়ির ব্যবহৃত তেল, ধাতু এবং অন্যান্য হাইড্রোকার্বনজাতীয় পদার্থ থাকতে পারে।
  • জৈব-ধাতব পদার্থসমূহ।[৩]

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. Williams, Ian. Environmental Chemistry, A Modular Approach. Wiley. 2001. আইএসবিএন ০-৪৭১-৪৮৯৪২-৫
  2. United States Environmental Protection Agency (EPA). Washington, DC. "Protecting Water Quality from Agricultural Runoff." Document No. EPA 841-F-05-001. March 2005.
  3. Sigel, A. (২০১০)। Organometallics in Environment and Toxicology। Metal Ions in Life Sciences। 7। Cambridge: RSC publishing। আইএসবিএন 978-1-84755-177-1  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)

আরো পড়ুনসম্পাদনা

  • NCERT XI text book.[ unit 14]

বহিঃসংযোগসম্পাদনা