ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি
জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এন এস এ) হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের জাতীয় পর্যায়ের গোয়েন্দা সংস্থা যার কর্তৃত্বে রয়েছে জাতীয় গোয়েন্দার পরিচালক। এন এস এ সিগ্ন্যালস ইন্টেলিজেন্স বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ, বিদেশী গোয়েন্দা এবং প্রতিগোয়েন্দার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে। এন এস এ যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং তথ্য ব্যবস্থার সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এন এস এ তার উদ্দেশ্য সাধন করতে বিভিন্ন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে যার বেশিরভাগই গোপন করা হয়ে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগাযোগ-সঙ্কেতলিপির পাঠোদ্ধার করতে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হেনরী এস. ট্রুম্যান ১৯৫২ সালে এন এস এ গঠন করেন। তখন থেকে এটা লোকসংখ্যা এবং বাজেটের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম গোয়েন্দা সংস্থার একটিতে পরিণত হয়েছে। এন এস এ বিশ্বব্যাপী গণ-তথ্য সংগ্রহ করে এবং এর জন্য একটি কার্যপদ্ধতি হিসেবে ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমে আড়িপাতে। এন এস এ স্টাক্সনেটের মত আক্রমণ সফটওয়ারও বানায় যেটা কিনা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম গুরুতরভাবে নষ্ট করেছিলো। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সি আই এর মত এন এস এ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করে; সি আই এ/ এন এস এর যুক্ত বিশেষ সংগ্রহ সেবা বিভিন্ন আড়িপাতার যন্ত্র উচ্চ-গুরুত্বের লক্ষ্যসমুহে বসিয়ে থাকে। তাদের তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি্র ভিতরে নিবিড় নজরদারি, সিঁধকাটা, টেলিফোনে আড়িপাতা, দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকা অন্তর্গত বলে কথিত আছে।
সি আই এ এবং ডি আই এ মূলত বিদেশী মানব-গুপ্তচরবৃত্তিতে পারদর্শী, কিন্তু এন এস এ মানব উৎস থেকে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য জনসমক্ষে সংগ্রহ করেনা। অন্যান্য সরকারী সংস্থাকে SIGNIT উপাদান দিয়ে সাহায্য এবং এর সমন্বয়ের ভার এন এস এর উপর অর্পিত, এই সংস্থাগুলোর নিজে থেকে SIGNIT নিয়ে কাজ করার আইনানুযায়ী অনুমতি নেই। এই দায়িত্বের অংশ হিসেবে এন এস এর সেন্ট্রাল সিকিউরিটি সার্ভিস (এই এস এস) নামে একটি সহ-অবস্থিত সংস্থা আছে যার কাজ এন এস এ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিরক্ষা-ক্রিপ্ট্যানালাইসিস উপাদানের সমন্বয় সাধন করা। সিগ্ন্যালস ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটি বিভাগসমূহের ভিতর মসৃণ যোগাযোগের জন্য এন এস এর পরিচালক একই সাথে সেন্ট্রাল সিকিউরিটি সার্ভিসের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এন এস এর কার্যক্রম বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, যেমনঃ ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী নেতাদের উপর গুপ্তচরবৃত্তি এবং অর্থনৈতিক গুপ্তচরবৃত্তি। ২০১৩ সালে এন এস এর প্রাক্তন ঠিকাদার এডওয়ার্ড স্নোডেন এন এস এর বহু গোপন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জনসমক্ষে প্রকাশ করেন। ফাঁসকৃত নথিপত্রে পাওয়া যায় যে এন এস এ যুক্তরাস্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী এক বিলিয়ন লোকের যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য গ্রহণ ও সংরক্ষণ করে। নথিপত্র থেকে এও জানা যায় যে এন এস এ ফোনের মেটাডেটার মাধ্যমে বহু লোকের গতিবিধিও নজরে রাখে। গবেষণায় এও প্রকাশ পেয়েছে যে এন এস এ বুমেরাং রাউটিং এর মাধ্যমে বিদেশের ইন্টারনেট ট্রাফিক নজরে রাখতে পারে।
ইতিহাস
সম্পাদনাগঠন
সম্পাদনান্যশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির শুরুর সময় বলে ধরা যায় মার্কিন কংগ্রেসের জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার তিন সপ্তাহ পরে এপ্রিল ২৮, ১৯১৭তে। সাইফার ব্যুরো বা ক্যাবল ও টেলিগ্রাফ সেকশন নামক একটি কোড এবং সাইফার ডিক্রিপশন ইউনিট গঠিত হয়। এর সদরদপ্তর ছিলো ওয়াশিংটন ডিসিতে এবং কংগ্রেসের সরাসরি অনুমোদন বাদে যুদ্ধে সাহায্যের প্রচেষ্টা হিসেবে গঠিত হয়। যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর সাংগাঠনিক তালিকায় এটির কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করা হয়। জুলাই ৫, ১৯১৭তে হারবারট ও. ইয়ারডলিকে এই ইউনিটের প্রধান নিযুক্ত করা হয়। সে সময় এই ইউনিটে শুধু হারবারট এবং দুইজন বেসামরিক কেরানী ছিলেন। পরবর্তীতে জুলাই ১৯১৮ তে নেভীর ক্রিপ্ট্যানালাইসিস কার্যক্রম এর সাথে যুক্ত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নভেম্বর ১১, ১৯১৮ তে শেষ হয় এবং মে ২০, ১৯১৯ এ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স-৮ (MI-8) এর আর্মি ক্রিপ্টোগ্রাফিক সেকশন নিউ ইয়র্ক সিটিতে স্থানান্তর করা হয় এবং সেখান থেকে এটি ইয়ারডলির নেতৃত্বে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
দ্য ব্ল্যাক চেম্বার
সম্পাদনাযুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেনা-গোয়েন্দার ক্রিপ্টোগ্রাফিক সেকশন MI-8 বিয়োজিত হবার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার সাইফার ব্যুরো গঠন করে যার অন্য নাম দ্য ব্ল্যাক চেম্বার। দ্য ব্ল্যাক চেম্বার যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিকালীন একমাত্র ক্রিপ্ট্যানালাইটিক সংস্থা। সাইফার ব্যুরোর তহবিল আসে সেনাবাহিনী এবং রাজ্য বিভাগ থেকে এবং একে নিউ ইয়র্ক শহরের কমার্শিয়াল কোড কোম্পানির ছদ্মবেশ দেয়া হয়েছিল; এটি আসলেই ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য কোড প্রণয়ন এবং বিক্রি করত। এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সফলতা আসে ওয়াশিংটন নেভাল সম্মেলনে