নূর আহমদ

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

নূর আহমদ (নুর আহমদ চেয়ারম্যান নামে অধিক পরিচিত;[] ২৫ ডিসেম্বর ১৮৯০- ২ অক্টোবর ১৯৬৪) ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা বাঙালী মুসলমান। সুদূর ব্রিটিশ আমল থেকে প্রায় ৪০ বছরের সুদীর্ঘ কাল পরিক্রমায় নূর আহমদ ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, বক্তা, লেখক, সমাজ সেবক প্রভৃতি সর্বগুণে গুণান্তিত এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব। দৈনিক সংবাদের কলামে অতীত ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে “অল্পদর্শী” উল্লেখ করেন,“ব্রিটিশ-বিরোধী সংগ্রাম যখন উতুঙ্গে তখন ফরমান বলেই দেশ শাসিত হত কিন্তু ক্ষমতা সীমিত হলেও তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইন পরিষদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য যোগ্য প্রতিদ্বন্ধীর অভাব হতো না। বয়স ভিত্তিক ভোটাধিকার ছিল না। বিত্তবান ব্যক্তিরা ছিলেন ভোটদাতা। এই ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে যতদূর মনে পড়ছে ভি জি পেটেল, বল্লভ ভাই পেটেল, স্যার ত্যাজ বাহাদূর সপ্রু, এস সত্যমূর্তি, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আসামের আব্দুল মতিন চৌধুরী, চট্টগ্রামের নূর আহমদ, ডক্টর বি আর আম্বেদকর প্রমুখ তৎকালীন ভারতের শ্রেষ্ঠ আইনজীবী এবং অন্যান্য পেশাজীবি ছিলেন”।

নূর আহমদ
জন্ম(১৮৯০-১২-২৫)২৫ ডিসেম্বর ১৮৯০
আলকরন, চট্টগ্রাম, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২ অক্টোবর ১৯৬৪(1964-10-02) (বয়স ৭৩)
পেশারাজনীতিবিদ
চট্টগ্রামের পৌরপিতা
কাজের মেয়াদ
১৯২১ – ১৯৫৪
বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৩৭ – ১৯৪৭
পাকিস্তান প্রথম গণ পরিষদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৪৭ – ১৯৫৪

নূর আহমদের কর্মজীবন ছিল বিশাল। ১৯১৭ সালে আইনজীবী হিসাবে তিনি চট্টগ্রাম বারে যোগদান করেন। [] ১৯১৮ সালে চট্টগ্রাম পৌরসভার কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯২১ সালে তিনি চট্টগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। [] এরপর হতে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত একটানা ৩৩ বছর তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। [] ১৯৩৭-১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ১০ বছর তিনি বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার (বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল) সদস্য ছিলেন। ১৯৪৭-১৯৫৪ পর্যন্ত ৭ বৎসর তিনি পাকিস্তান প্রথম গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫৪ সালে চট্টগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে তিনি স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেন এবং কর্মজীবন হতে অবসর গ্রহণ করেন। [] নুর আহমদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় খেলাফত আন্দোলনে যোগদানের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তিনি ছিলেন ধর্মপ্রাণ এবং অসাম্প্রদায়িক। ব্রিটিশ সরকার নূর আহমদকে তার সমাজকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘খান সাহেব’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করার প্রস্তাব করলে তিনি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। পাকিস্তান সরকার তার আজীবন সমাজসেবার স্বীকৃতি দিয়ে ‘সিতারা এ খেদমত’ উপাধি ও মাসিক ৫০০ টাকা সাহিত্য-বৃত্তি মঞ্জুর করেন। ১৯৬৪ সালের ২২শে অক্টোবর, এই মহান কর্মবীর চট্টগ্রাম তথা উপমহাদেশের আপামর জনগণকে কাঁদিয়ে ইহধাম ত্যাগ করেন।

অবদান সমূহ

সম্পাদনা
  • অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক সার্বজনীন প্রাইমারী শিক্ষার প্রবর্তন
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম প্রস্তাবনাপূর্ব পাকিস্তানের প্রতি কেন্দ্রের বিমতাসুলভ আচরনের প্রতিবাদ
  • বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য সর্বপ্রথম নোটিশ প্রদানজনহিতকর আইন প্রণয়নে ভূমিকা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "আহমদ, নুর"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০২০ 
  2. "নূর আহমদ চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম পৌরসভায় শিক্ষা বিপ্লব : একটি পর্যালোচনা"dailypurbodesh.com। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০২০ 
  3. "When History is not on your Side"thedailystar.net। ২৫ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০২০ 
  4. "চট্টগ্রামে শিক্ষা, উন্নয়ন ও রাজনীতিতে সফল মানুষ নূর আহমদ চেয়ারম্যান"paathok.news। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০২০